![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আগামী ৫ জানুয়ারি দশম সংসদ নির্বাচনের প্রথম বর্ষপূর্তি। দিনটিকে সামনে রেখে অন্তর্র্বতী নির্বাচন অনুষ্ঠানে সরকারকে বাধ্য করতে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট আন্দোলনের ছক কষছে। নির্দলীয় সরকারের অধীনে দ্রুত নির্বাচন দেওয়ার এক দফা দাবিতে নতুন আন্দোলনের ‘রোডম্যাপ’ ঘোষণা করতে যাচ্ছে তারা। রোডম্যাপে ৫ জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত কর্মসূচি থাকবে।
আন্দোলনে ২০ দলীয় জোটের সঙ্গে বিভিন্ন ইসলামী দল ও জঙ্গি সংগঠন সংশ্লিষ্ট হয়ে অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকা- ঘটাতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। রাজধানীসহ বিভিন্ন স্থানে অচলাবস্থা সৃষ্টির লক্ষ্যে অবরোধসহ নানা কর্মসূচির আড়ালে অরাজকতা, নাশকতা, বিশৃক্সখলা ঘটিয়ে আইনশৃক্সখলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর আশঙ্কা রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, এসবের নেপথ্যে জামায়াতের ভূমিকা থাকবে সর্বাধিক।
আন্দোলনের পক্ষে আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায়ের লক্ষ্যে কূটনৈতিক তৎপরতাও জোরদার করবে জোট। পাশাপাশি নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও আইন বিশেষজ্ঞ ড. কামাল হোসেনসহ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের আন্দোলনে সম্পৃক্ত করার কৌশল নিচ্ছে বিএনপি।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সরকারের একটি বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থার গোপন প্রতিবেদনে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। এর ভিত্তিতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ওই প্রতিবেদনে ২০ দলীয় জোটের সম্ভাব্য আন্দোলন কর্মসূচি, বিদেশি মিশনগুলোয় জোট নেতাদের কূটনৈতিক তৎপরতা, বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং সরকারের করণীয় উল্লেখ করা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘গোপন প্রতিবেদনটি হাতে পেয়েছি। মধ্যবর্তী নির্বাচনের দাবি অমূলক। পাঁচ বছর পর নিয়ম অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বিএনপি-জামায়াত জোট আন্দোলনের নামে কোনো ধরনের বিশৃক্সখলা সৃষ্টি করলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাদের কোনো প্রচেষ্টাই ফলপ্রসূ হবে না।’ তিনি বলেন, ‘সরকার গণতান্ত্রিক আন্দোলনে বিশ্বাসী। কেউ অহিংস কর্মসূচি দিলে সরকার বাধা দেবে না। তবে আন্দোলনের নামে গাড়িতে পেট্রল ঢেলে মানুষ পোড়ানো, গাছকাটা প্রভৃতি নাশকতা বা সহিংসতা মেনে নেওয়া হবে না।’
প্রতিবেদনে যা বলা হয়েছে : সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সরকারবিরোধী আন্দোলনের অংশ হিসেবে প্রতিটি সমাবেশ, জনসংযোগ ও আলোচনায় সরকারের নেতিবাচক কর্মকা- সম্পর্কে বক্তব্য তুলে ধরবেন ২০ দলীয় জোটের নেতারা। জনমত গঠনে শেয়ার মার্কেট কেলেঙ্কারি, তেল-গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি, সংখ্যাগুরুর ধর্মীয় অনুভূতি, সরকার ও সরকার-সমর্থক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের অসংলগ্ন ও আপত্তিকর কথাবার্তা প্রভৃতিকে কাজে লাগাবেন তাঁরা। বিদেশি কূটনৈতিক মিশনের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করাসহ তৎপরতা বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন জোটপ্রধান খালেদা জিয়া।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সরকার জনগণের আস্থা হারিয়ে ফেলেছে- ২০ দলীয় জোটের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের ধারণা এ রকম। তাঁরা মনে করেন, এ মুহূর্তে সংসদ নির্বাচন হলে তাঁদের জোট নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে ক্ষমতায় যাবে। তাই যেকোনো মূল্যে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারকে ক্ষমতা ছেড়ে নির্বাচন দিতে বাধ্য করার পরিকল্পনা তাঁরা এঁটেছেন এবং সে মোতাবেক তৎপরতা চলছে।
জোটের নেতারা নতুন বছরের শুরুতেই সরকারবিরোধী আন্দোলনকে তুঙ্গে তুলতে চাইছেন। গণসম্পৃক্ততার বিষয়টিতে গুরুত্ব দিয়ে জোরালো আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণা ও সমাবেশ করবেন তাঁরা। আগামী ৫ জানুয়ারি সেই ‘দুর্বার’ আন্দোলনের সূচনাবিন্দু।
বলা হয়েছে, অতীতে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটের সরকারবিরোধী আন্দোলন কর্মসূচি ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’ মাঠে মারা গিয়েছিল। এ কারণে বিএনপির নেতা-কর্মীদের মধ্যে হতাশা দেখা দেয়। এবারের আন্দোলনে হতাশ নেতা-কর্মীরা উজ্জীবিত হয়ে অংশ নেবে বলেই আশা করা হচ্ছে।
বিএনপির সম্ভাব্য আন্দোলনের পাশাপাশি দলটির আন্তঃকোন্দলের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। বলা হয়েছে, দীর্ঘদিনের অনৈক্য, অনিয়ম ও নেতৃত্বহীনতার কারণে ঢাকা মহানগর বিএনপিসহ জেলা-মহানগর-উপজেলা-ইউনিয়ন পর্যায়ে দলটির সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে; কেন্দ্রীয় যুবদল ও ছাত্রদলের অবস্থাও একই। এসব কারণে সরকারবিরোধী আন্দোলন জোরদার হচ্ছে না।
সাংগঠনিক এ পরিস্থিতির মধ্যেই দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর অন্তর্র্বতী নির্বাচনের দাবিতে ইস্যুভিত্তিক আন্দোলন করেছে বিএনপি ও ২০ দলীয় জোট। গত ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনগুলো মোট ১৫০ দিন এবং জোট ১৬ দিন কর্মসূচি পালন করেছে। এসবের মধ্যে মানববন্ধন, গণসংযোগ, কালো পতাকা মিছিল, বিক্ষোভ সমাবেশ, প্রতিবাদ মিছিল, শোভাযাত্রা ছিল; হরতাল, গণ-অনশন, অবস্থান কর্মসূচি ও লংমার্চ কর্মসূচিও ছিল।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আন্দোলনের রোডম্যাপ তৈরির লক্ষ্যে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া পেশাজীবী নেতাদের, নির্বাচিত বিএনপিপন্থী জনপ্রতিনিধি ও জোটের নেতাদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করেছেন। এসব বৈঠকে অন্তর্র্বতী নির্বাচনের এক দফা দাবি আদায়ের কর্মপরিকল্পনা নিয়ে মতবিনিময় করা হয়।
নাশকতার পরিকল্পনা : আন্দোলনের নামে গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় স্থাপনায় বড় ধরনের হামলা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন গোয়েন্দারা। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নাশকতা চালাতে প্রথমে জঙ্গি সংগঠনগুলোকে কাজে লাগানো হবে। পাশাপাশি শিবির ক্যাডারদের দিয়ে স্কুল-কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় শোডাউনের নামে অস্থিরতা সৃষ্টি করা হবে। শিবির-জামায়াত নেতাদের মুক্ত করার সুযোগ তৈরির চেষ্টা করবে।
কূটনৈতিকদের সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করার তাগাদা : কূটনৈতিক মিশনগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক জোরালো করাসহ তৎপরতা বাড়ানোর তাগাদা দিয়েছেন খালেদা জিয়া। এ জন্য তিনি বিএনপির স্থায়ী কমিটির কয়েকজন নেতার ওপর দায়িত্ব দিয়েছেন। ইতিমধ্যে খালেদা জিয়া নরওয়ে, যুক্তরাজ্য, সিঙ্গাপুর, ফ্রান্স, পাকিস্তান, সৌদি আরব, চীন, সুইডেন, ইইউ, কানাডা, ভারত, ডেনমার্ক, অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, কাতার, জার্মানি, শ্রীলঙ্কা ও তুরস্কের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। কূটনৈতিক তৎপরতা জোরদার করতে বিএনপির একটি প্রতিনিধিদল চীন ও যুক্তরাজ্য সফর করেছে।
জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত সতর্ক থাকার নির্দেশ : ২০ দলীয় জোটের আন্দোলনের সময় যেকোনো ধরনের নাশকতা প্রতিরোধ করতে আইনশৃক্সখলা রক্ষাকারী বাহিনীকে বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। সে মোতাবেক পুলিশ সদর দপ্তর ৬৪ জেলার পুলিশ সুপারদের কাছে জরুরি চিঠি পাঠিয়েছে। ছয় মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনারের কাছেও নির্দেশনা পাঠানো হয়েছে। সার্বক্ষণিকভাবে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে পুলিশ ও র্যাবকে; প্রয়োজন পড়লে বিশেষ অভিযান চালাতে বলা হয়েছে। সে আলোকে গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় স্থাপনাগুলোয় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। কা:ক:
©somewhere in net ltd.
১|
২৩ শে ডিসেম্বর, ২০১৪ সকাল ১০:৪৬
নীল আকাশ ২০১৪ বলেছেন: সরকার শিক্ষা, পররাষ্ট্রনীতি, অর্থনীতি ও পরিবেশ সেক্টরে একের পর এক যে ধরণের নাশকতা চালিয়ে আসছে, ২০ দল তার বেশি আর এমন কি করার ক্ষমতা রাখে?