![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মন্ত্রী, এমপিসহ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও স্পর্শকাতর স্থাপনাকে টার্গেট করেছে নাশকতাকারীরা। এমন আশঙ্কা গোয়েন্দাদের। তাদের কাছে খবর রয়েছে, চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও অস্থিতিশীল করতে রাস্তাঘাটে বোমাবাজি ও যানবাহনে অগ্নিসংযোগ ছাড়াও বড় ধরনের ধ্বংসাত্মক পরিকল্পনা রয়েছে নাশকতাকারীদের। এসব পরিকল্পনা সুচারুভাবে সম্পন্ন করতে দেশের পলাতক প্রশিক্ষিত দুর্ধর্ষ জঙ্গি ও পেশাদার অপরাধীদের কাজে লাগাচ্ছে। হামলাকারীদের টার্গেটের বাইরে নেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গোয়েন্দাদের এমন আশঙ্কাজনক তথ্যের পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী রয়েছে রেড অ্যালার্টে। তারাও নাশকতা প্রতিরোধে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিয়েছে। পুলিশের তালিকায় ভয়ঙ্কর ১১ নাশকতাকারীসহ তালিকাভুক্ত অপরাধীদের খোঁজে দেশব্যাপী অভিযান শুরু করেছে। গ্রেফতারের তালিকায় আরও রয়েছেন বিএনপি-জামায়াতের অন্তত এক ডজন শীর্ষ নেতা। তাদের গতিবিধির ওপর নজরদারি চলছে। এ ছাড়াও রয়েছে বিএনপি-জামায়াতের তিন হাজার নেতাকর্মীর নাম। আজ থেকে পুলিশের গ্রেফতার অভিযান জোরদার হচ্ছে। পদস্থ এক গোয়েন্দা কর্মকর্তা জানান, দেশের অর্ধ শতাধিক বিশিষ্ট ব্যক্তি নাশকতাকারীদের টার্গেটে রয়েছেন। তাদের বাসভবন, অফিস এবং দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাকে ঘিরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। স্পর্শকাতর কিছু এলাকায় কয়েক ধাপের নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে।পুলিশের একটি সূত্র জানায়, পুলিশ ও গোয়েন্দাদের কঠোর অবস্থানের পরও মন্ত্রী, বিচারপতি, কূটনীতিক, নির্বাচন কমিশনারের বাসভবন এবং দূতাবাসের মতো স্পর্শকাতর এলাকায় বোমা হামলার ঘটনায় প্রশাসনকে ভাবিয়ে তুলেছে। গতকাল দেশের সর্বোচ্চ আদালতে তিনটি বোমা ও গুলিভর্তি একটি পিস্তল উদ্ধার হওয়ার পর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে পুলিশের উচ্চপর্যায়ে দফায় দফায় বৈঠক হয়। বৈঠকগুলোতে নাশকতা প্রতিরোধে কঠোর অবস্থান নেওয়া, গ্রেফতার অভিযান তীব্রতর করার সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠকে গোয়েন্দা নজরদারির নানা কৌশল নিয়েও আলোচনা হয়। সরকারের ঘনিষ্ঠ এক সূত্র বলেছে, দেশব্যাপী সন্ত্রাস, নৈরাজ্য আর বরদাস্ত করা হবে না। এসব সৃষ্টির নেপথ্য মদদদাতাদেরও চিন্তিত করেছে সরকার। চলমান নৈরাজ্য সৃষ্টির মদদদাতা হিসেবে কমপক্ষে এক ডজন নেতার তালিকা চূড়ান্ত হয়েছে। যে কোনো মুহূর্তে এসব নেতা গ্রেফতার হতে পারেন। তালিকাভুক্ত নেতাদের মধ্যে বিএনপি সমর্থিত নেতার সংখ্যাই বেশি। বিএনপির অঙ্গ-সংগঠনের দুএকজন শীর্ষ নেতাও সন্দেহের তালিকায়। এ ছাড়াও গোয়েন্দা নজরদারিতে রয়েছেন বিএনপির থিংক ট্যাংক হিসেবে চিহ্নিত কয়েকজন সিনিয়র পরামর্শক। নির্ভরযোগ্য ওই সূত্রমতে, গ্রেফতারের তালিকায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির তিনজন প্রভাবশালী সদস্য রয়েছেন। বিএনপির শক্তিশালী একটি সংগঠনের সভাপতিসহ ছাত্রদলের বর্তমান ও সাবেক সভাপতিও রয়েছেন। এ ছাড়া রয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর কমপক্ষে পাঁচ নেতা। আজকালের মধ্যেই এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলে ওই সূত্র জানিয়েছে। বোমা হামলা, গুলিবর্ষণ, বাসে আগুন দেওয়ার সিরিজ ঘটনার প্রতিরোধে পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক জনগণের সহায়তা চাইলেন। গতকাল রাজধানীর আগারগাঁও জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে ককটেলে আহত ফেনীর নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আবদুল কাদের মিয়াকে দেখতে গিয়ে তিনি উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, জনগণের জানমাল ধ্বংসকারী এসব দুর্বৃত্তকে রুখতে পুলিশের পাশাপাশি দেশবাসীকেও সোচ্চার হতে হবে।টার্গেটে বিশিষ্ট ব্যক্তি ও স্থাপনা : সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, মন্ত্রী, এমপিসহ রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ অর্ধ শতাধিক ব্যক্তির ওপর হামলার আশঙ্কা রয়েছে। নাশকতাকারীরা তাদের ওপর হামলা চালাতে পারে বলে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছে। এর পর থেকে তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। অপেক্ষাকৃত দক্ষ কর্মকর্তাদের নিয়ে বিশেষ স্পেশাল টিম দিয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়। ধানমণ্ডি জোনের এসি রেজাউল করিম জানান, তারা ভিআইপিদের অতিরিক্ত নিরাপত্তা দিতে টহল বাড়িয়েছে। ইতিমধ্যে বেশ কিছু বাসার সামনে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এ ছাড়া রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ ৩৯১টি স্থাপনার নিরাপত্তাও জোরদার করা হয়। সূত্র জানায়, সরকারি ব্যবস্থাপনার রেডিও-টেলিভিশন সেন্টার, আণবিক শক্তি কমিশন, ডিএফপি নিয়ন্ত্রণাধীন দফতর, বিমানবন্দর, বিদ্যুৎ, ওয়াসা, গ্যাস সরবরাহের স্টেশন, সর্বোচ্চ আদালতসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাগুলোতে পুলিশি পাহারার পাশাপাশি গোয়েন্দা তৎপরতাও বাড়ানো হয়। এ ছাড়া কূটনীতিকপাড়ায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। ওইসব এলাকায় চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে।দুর্ধর্ষ ১১ নাশকতাকারী : অবরোধ-হরতালে নাশকতাকারী হিসেবে ১১ অপরাধী পুলিশের খাতায় সবচেয়ে ভয়ঙ্কর। ঢাকায় অতীতের নাশকতার ঘটনাগুলোতে ভয়ঙ্কর এই ১১ অপরাধীর জড়িত থাকার তথ্য-প্রমাণ রয়েছে গোয়েন্দাদের কাছে। এরা এতটাই দুর্ধর্ষ যে, পুলিশ তাদের গ্রেফতার করতে পারছে না। তাদের প্রত্যেককে ধরিয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে পুলিশের এক বিজ্ঞাপনে বলা হয়, এসব সন্ত্রাসী দেশ ও জাতির শত্রু। প্রত্যেক নাগরিকের নিরাপত্তার জন্য মারাত্মক হুমকি। নতুন করে ফের একই কায়দায় নাশকতা শুরু হওয়ায় পুলিশ তাদের নতুন করে খোঁজ শুরু করছে। তবে এ পর্যন্ত তাদের সন্ধান পায়নি পুলিশ। সূত্র জানায়, গত বছরের বোমা হামলা, পেট্রলবোমা ছুড়ে ও পেট্রল ঢেলে বাসে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনাগুলোর সঙ্গে এবারের ঘটনাগুলোর মিল খুঁজে পাওয়া গেছে। এ ছাড়া বিগত এক বছর আগে যেসব এলাকায় বাসে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছিল, এবারও অধিকাংশ ঘটনা আগের সেই স্থানগুলোতেই ঘটেছে। গোয়েন্দাদের কাছে তথ্য রয়েছে, বর্তমানে যেসব বোমাবাজি ও আগুনের ঘটনাগুলো ঘটছে, তার সঙ্গে আগের দুর্বৃত্তদেরই ব্যবহার করা হচ্ছে। যে কারণে পুলিশ ওই দুর্ধর্ষ ১১ অপরাধীকে খুঁজছে। গোয়েন্দা পুলিশের এক কর্মকর্তা জানান, এই ১১ অপরাধীর ছবি রয়েছে তাদের কাছে। তবে তাদের নাম-পরিচয় এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি। এই ১১ অপরাধী বাদেও বিএনপি-জামায়াতের ডজনখানেক শীর্ষ নেতাও রয়েছেন গ্রেফতারের তালিকায়। এ ছাড়া মাঠপর্যায়ের পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মীর নামের তালিকা নিয়ে পুলিশ ও গোয়েন্দারা এখন মাঠে নেমেছে। সারা দেশেই পুলিশ এই অভিযান শুরু করেছে।
©somewhere in net ltd.
১|
১২ ই জানুয়ারি, ২০১৫ সকাল ৯:৫৯
তামিম89 বলেছেন: তাদের নাশকতার জবাব জনগনই দিচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও দেবে!