![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ঊনিশ দিন পর লিবিয়ায় মিলিশিয়া বাহিনীর হাতে জিম্মি দুই বাংলাদেশী জামালপুরের হেলাল উদ্দিন ও নোয়াখালীর আনোয়ার হোসেন মুক্তি পেয়েছেন। রাত আনুমানিক ১টা বিশ মিনিটে ত্রিপোলি দূতাবাসের পক্ষ থেকে হেলালুদ্দিনের বড় ছেলে রুবেলকে তার পিতা ও আনোয়ারের মুক্তির খবর নিশ্চিত করা হয়। জিম্মি অবস্থা থেকে মুক্তির পর তাদের স্থানীয় একটি হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে বলেও জানানো হয়। রাত দেড়টায় লিবিয়ায় কর্মরত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মেজর জেনারেল শহীদুল হক মানবজমিনকে জানান, জিম্মিদশা থেকে মুক্তি পাওয়ার পর ত্রিপোলি থেকে ৭০০ কিলোমিটার পূর্ব দিকে শিরিট শহরের একটি হাসপাতালে তাদের নেয়া হয়েছে।
গত ৬ই মার্চ জামালপুরের মাদারগঞ্জ উপজেলার আদারভিটা ইউনিয়নের দক্ষিণ গজারিয়া গ্রামের হেলাল উদ্দিন ও একই তেলক্ষেত্রে কর্মরত নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ থানার আনোয়ার হোসেনকে অপহরণ করে একটি অস্ত্রধারী গ্রুপ। তাদের সঙ্গে আটক হন আরও ৭ বিদেশী। প্রথমে আইএস জঙ্গিরা তাদের অপহরণ করেছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এমন কথা বললেও সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। পরে গত ১১ই মার্চ ত্রিপোলিস্থ বাংলাদেশী দূতাবাস এবং প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, আইএস জঙ্গি নয়, তারা অপহরণ হয়েছে মিলিশিয়া গ্রুপের হাতে।
‘এক কক্ষে আটকা ৩, একবেলা আধপেট খাবার দেয়’
এর আগে গতকাল সকালে লিবিয়ার আল ঘানি তেলক্ষেত্র থেকে অপহরণের শিকার বাংলাদেশী হেলাল উদ্দিন তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। সকাল সাড়ে ১০টায় বন্দিদশা থেকে ফোন করে তিনি বলেছেন, আটককারীরা ‘জঙ্গি’। তাদের দিনে একবার করে খাবার দিচ্ছে। তবে কি কারণে তাদের আটক করেছে এবং কবে এ বন্দিদশা থেকে মুক্তি দেবে হেলাল উদ্দিন তা বলতে পারেননি। হেলাল উদ্দিনের বড় মেয়ে নবম শ্রেণীর ছাত্রী হেলেন জানায়, বাড়ির মোবাইলে ফোন করলে প্রথমে তার মা ফোনটি রিসিভ করেন। এ সময় নিজের পরিচয় দিয়ে হেলাল উদ্দিন স্ত্রীর সঙ্গে কুশলবিনিময় করে তার বড় ছেলে রুবেলকে দিতে বলেন। ওই সময় সে বাড়িতে না থাকায় বড় মেয়ে হেলেনের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। হেলেন আরও জানায়, আমি ফোন ধরেই জিজ্ঞেস করি, আব্বা আপনি কেমন আছেন। উত্তরে তার বাবা বলেন, আমি তো বেশি ভাল নেই। জঙ্গিদের হাতে ধরা পড়ছি। এ সময় খাবার দেয় কিনা হেলেনা জিজ্ঞেস করলে হেলাল বলেন, দিনে একবার খাবার দেয়। হেলাল তার মেয়েকে বলেন, আমার জন্য তোমরা সবাই দোয়া কইরো, নামাজ পইড়ো, কোরআন শরিফ পইড়ো। এ সময় হেলেনা জিজ্ঞেস করে, হেলালকে ছেড়ে দেবে কিনা? উত্তরে তার বাবা বলেন, ছেড়ে দেবে কিনা বলতে পারছি না। হেলাল উদ্দিন তার মেয়েকে আরও বলেছেন, তাদের তিনজনকে একটি ঘরে রাখা হয়েছে। এ সময় হেলেনা জায়গার নাম জিজ্ঞেস করলে, তার বাবা বলেন জায়গার নাম দিয়ে কি করবা, আমার জন্য দোয়া করো। ৯০০ কিলোমিটার দূরে তাদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে বলেও তিনি মেয়েকে জানিয়েছেন। হেলেন আরও জানায়, তার বাবা ৪ মিনিট কথা বলেছেন। হেলালের পরিবারের সদস্যরা ফোনে কথা বলার পর আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন। টেলিফোনে কথা বলার পর হেলালের বাড়িতে এলাকার লোকজনও ভিড় করেন।
©somewhere in net ltd.