![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নানা জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে জামিন নিয়ে ঘরে ফিরলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। দুর্নীতির দুই মামলায় গতকাল বকশীবাজারে আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজের অস্থায়ী এজলাসে হাজির হয়ে জামিন নেন সাবেক এ প্রধানমন্ত্রী। ঢাকার তৃতীয় বিশেষ জজ আবু আহমেদ জমাদার ‘জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট’ ও ‘জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট’ দুর্নীতি মামলায় তার জামিন মঞ্জুর করেন। পরবর্তী শুনানির জন্য ৫ মে তারিখ ধার্য করা হয়। দুই মামলায় বিএনপি প্রধানের বিরুদ্ধে গত ২৫ ফেব্রুয়ারি গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন আদালত। এদিকে খালেদা জিয়ার জামিন পাওয়ার খবরে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় থাকা বিএনপি নেতা-কর্মীদের মধ্যে স্বস্তি লক্ষ্য করা যায়।
দীর্ঘ ৯৩ দিন অবস্থানের পর গতকাল সকাল ৯টা ৫৭ মিনিটের দিকে গুলশানের কার্যালয় থেকে আদালতের উদ্দেশে রওনা দেন বেগম জিয়া। সকাল থেকেই কার্যালয় ও এর আশপাশে বিপুলসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতি ছিল। সেখানে নেতাদের কাউকে দেখা যায়নি। তবে কিছু সংখ্যক কর্মী ও উৎসাহী সাধারণ মানুষের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। অবশ্য গণমাধ্যমের কর্মীদেরও সরব উপস্থিতি ছিল। কার্যালয় থেকে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতায় ১০টা ৩৫ মিনিটে আদালত চত্বরে পৌঁছেন বিএনপি প্রধান। তাকে বহনকারী সাদা রঙের গাড়িটি (নম্বর ঢাকা মেট্রো ঘ ১৩-২৬১২) আদালত প্রাঙ্গণে পৌঁছলে মহিলা দল সাধারণ সম্পাদক শিরিন সুলতানার হাত ধরে তিনি গাড়ি থেকে নামেন। এ সময় প্রচণ্ড রোদ থেকে রক্ষার জন্য তার মাথার ওপর ছাতা ধরা হয়। আদালতের পথে খালেদা জিয়ার গাড়িতে ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান, শিরিন সুলতানা ও চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস। এর আগে কোনো দিনই খালেদা জিয়ার সঙ্গে একই আসনে তিনজনকে বসতে দেখা যায়নি। গাড়িবহরে অন্য তিনটি পিকআপ ও চারটি মাইক্রোবাস ছিল। সঙ্গে ছিল পুলিশের দুটি গাড়ি। এ ছাড়া খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য বেশ কয়েকটি মাইক্রোবাসসহ স্টাফদের আরও কয়েকটি গাড়ি লক্ষ্য করা যায়। প্রায় দেড় ঘণ্টা আদালতে অবস্থান করেন বেগম জিয়া। পরে জামিন নিয়ে দুপুর ১২টা ১৮ মিনিটে গুলশান ৭৯ সড়কের ১ নম্বর ‘ফিরোজা’ ভবনের সামনে এসে পৌঁছায় বিএনপি চেয়ারপারসনের গাড়িবহর। এ সময় বহরে অন্তত ৫০টি গাড়ি যুক্ত হয়। এর মধ্যে পুলিশেরও বেশ কয়েকটি গাড়ি ছিল। ছোট ভাই শামীম এস্কান্দার ও তার স্ত্রী কানিজ ফাতেমাসহ কয়েকজন আগে থেকেই গুলশানের বাসার সামনে খালেদা জিয়ার জন্য অপেক্ষায় ছিলেন। গত ৩ জানুয়ারি রাত থেকে খালেদা জিয়া গুলশানে নিজ রাজনৈতিক কার্যালয়ে অবস্থান করছিলেন। ৫ জানুয়ারির ‘একতরফা’ নির্বাচনের বর্ষপূর্তির দিনে রাজধানী ঢাকায় সমাবেশ কর্মসূচিকে ঘিরে ওই রাত থেকে তাকে কার্যালয়ে ‘অবরুদ্ধ’ করে বাইরে থেকে তালা মেরে দেয় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এরপর ১৯ জানুয়ারি ‘অবরোধমুক্ত’ করা হলেও তিনি আর কার্যালয় ছাড়েননি। এরই মধ্যে মালয়েশিয়া থেকে ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর লাশ এলে কার্যালয়ে থেকেই ছেলেকে শেষ বিদায় জানান খালেদা জিয়া। মহান একুশে ফেব্রুয়ারি ও স্বাধীনতা দিবসে শহীদদের শ্রদ্ধা জানাতে শহীদ মিনার ও জাতীয় স্মৃতিসৌধে যাননি সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। এ নিয়েও সমালোচনার তীরে বিদ্ধ হন বেগম জিয়া। এদিকে সকালে খালেদা জিয়া আদালতের উদ্দেশে যাত্রা করার পরপরই গুলশানের কার্যালয় থেকে তার কাপড়-চোপড়সহ অন্যান্য জিনিসপত্র বোঝাই স্যুটকেস ও ব্যাগ নিয়ে বিএনপি প্রধানের বাসায় আসেন কানিজ ফাতেমা। সকাল ৯টার দিকে গুলশানে খালেদার ওই কার্যালয়ে যান তিনি। খালেদা জিয়ার আগমন উপলক্ষে তার বাসা ‘ফিরোজা’ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়। চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা কর্মীরাও সকাল থেকেই ফিরোজায় দায়িত্ব পালন করেন। সকালেই সেখানে উত্তোলন করা হয় বিএনপির দলীয় পতাকা। বেলা ১১টার দিকে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, ‘ফিরোজা’ ভবনের ভিতরে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ চলছে। সিএসএফের কয়েকজন সদস্য বাসভবনের সামনের ডালপালা ও সিসিটিভি ক্যামেরা পরিষ্কার করছিলেন। দীর্ঘদিন পর ওই সিসিটিভি ক্যামেরা সচল করা হয়। এ ছাড়া ভিতরে থাকা কয়েকজন স্টাফ খালেদা জিয়ার শোবার ঘরসহ আশপাশের বেশ কয়েকটি রুম সাজাচ্ছেন। ভবনের এক স্টাফ বলেন, জামিন নিয়ে ম্যাডাম আসার আগেই সবকিছু আগের মতোই প্রস্তুত রাখতে দ্রুততার সঙ্গে কাজ করছেন তারা। খালেদা জিয়ার সঙ্গে সেলিমা রহমান, শিরিন সুলতানা এবং শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসও বাসায় যান। তবে সকালে খালেদা জিয়া আদালতের উদ্দেশে রওনা করার পর বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুল কাউয়ুম, প্রেসসচিব মারুফ কামাল খানসহ অন্য নেতারা কার্যালয় ছাড়েন। গুটিকয়েক কর্মচারী ছাড়া গুলশান কার্যালয় ত্যাগ করেন সবাই। অবশ্য পরেও এসবি, ডিবিসহ পুলিশের বেশকিছু সদস্যকে কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিতে দেখা যায়।শুনানিতে যা হলো : খালেদার পক্ষে জামিন আবেদনের শুনানি করেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী। তার সঙ্গে ছিলেন ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন ও সানাউল্লাহ মিয়াসহ সিনিয়র আইনজীবীরা। খালেদা কেন আদালতে আসতে পারেননি তার ব্যাখ্যায় এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘তিনি এর আগে আসতে পারেননি নিরাপত্তার অভাবে।’ ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেন, আইনের প্রতি খালেদা জিয়া সবচেয়ে বেশি শ্রদ্ধাশীল। আদালতের প্রতি অবজ্ঞা করে তিনি অনুপস্থিত থেকেছেন- এ কথা ঠিক নয়। আমরাই বলেছি যে আপনি আদালতে যাবেন না। কারণ রাস্তায় কোনো নিরাপত্তা নেই। গত ২৪ ডিসেম্বর খালেদা জিয়া আদালতে যাওয়ার পথে সংঘর্ষ এবং তার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর মৃত্যুর বিষয়টিও আদালতের সামনে তুলে ধরেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। এ পর্যায়ে রাষ্ট্রপক্ষে দুদকের আইনজীবী কাজল বলেন, ‘তার মানে হলো, আইনজীবীদের পরামর্শে খালেদা জিয়া আদালতে আসেননি। উনার ইচ্ছা ছিল আসার।’ তিনি বলেন, ‘মামলার বিচারের সুষ্ঠু গতির জন্য পরোয়ানা জারি ছাড়া উপায় ছিল না। গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির কারণেই তিনি আদালতে আজ হাজির হয়েছেন।’ এ মামলায় ৬০টির বেশি ধার্য তারিখের মধ্যে মাত্র ৬টিতে খালেদা জিয়া আদালতে এসেছেন বলে এ সময় তিনি আদালতকে জানান। তবে আদালত পরিবর্তনের জন্য হাইকোর্টে খালেদা জিয়ার আবেদনের কথা তুলে ধরে জামিন আবেদনে ‘তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি ঠিক হয়নি’- লেখার বিরোধিতা করেন কাজল। তিনি বলেন, ‘ওই বক্তব্য অত্যন্ত আপত্তিকর। আবেদন থেকে এ অংশটি কেটে দেওয়া হোক। উনারা মুখে বলবেন যে, তারা আদালতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল, আবার একই মুখে অন্য কথা বলবেন- এটা ঠিক না।’ খালেদা জিয়ার ‘বয়স, মর্যাদা, তার ছেলের মৃত্যু ও অন্যান্য বিষয়’ আমলে নিয়ে এবং তিনি যদি ‘নিয়মিত আদালতে আসেন, বিচারে বাধা সৃষ্টি না করার প্রতিশ্রুতি দেন’, তাহলে আদালত জামিনের বিষয়টি বিবেচনা করতে পারেন বলে মত দেন দুদকের আইনজীবী। এরপর আবেদন থেকে ওই অংশটি বাদ দিতে রাজি হন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। দুই পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক আসামিপক্ষের আবেদন মঞ্জুর করে সাক্ষ্য মুলতবি করেন এবং রাষ্ট্রপক্ষকে নথিপত্র সরবরাহের নির্দেশ দেন। তিনি প্রথমে ২৬ এপ্রিল শুনানির পরবর্তী তারিখ রাখলেও খালেদার আইনজীবীরা সিটি নির্বাচনের কথা বলে আরও সময় চাইলে সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ৫ মে দিন ঠিক করে দেওয়া হয়। এ মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের বাকি ছয় সাক্ষী সোনালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপক হারুনুর রশিদ, অফিসার (ক্যাশ) শফিউদ্দিন মিয়া, আবুল খায়ের, প্রাইম ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার সিরাজুল ইসলাম, সিনিয়র অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট সৈয়দা নাজমা পারভীন ও ভাইস প্রেসিডেন্ট আফজাল হোসেন আদালতে হাজির ছিলেন। কোকোর জন্য সমবেদনা : গত ২৪ জানুয়ারি খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো মালয়েশিয়ায় হৃদরোগে মারা যান। শুনানিতে কোকো প্রসঙ্গ এলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী কাজল ও বিচারক নিজেও খালেদা জিয়ার প্রতি সমবেদনা জানান। বিচারক আবু আহমেদ জমাদার বলেন, ‘আমি উনার (খালেদা জিয়া) পুত্র বিয়োগের পরে আদালতে বসে সমবেদনা জানিয়েছি। আমি আজও আদালতে বসে তাকে আবারও সমবেদনার বার্তা দিতে চাই।’দুই মামলা : ২০১১ সালের ৮ আগস্ট সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা দায়ের করেন দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক হারুন-অর-রশিদ। তেজগাঁও থানার এ মামলায় ক্ষমতার অপব্যবহার করে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ আনা হয় আসামিদের বিরুদ্ধে। ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি খালেদা জিয়াসহ চারজনকে আসামি করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। এ মামলার অপর আসামিরা হলেন- খালেদার সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছের তখনকার সহকারী একান্ত সচিব ও বিআইডব্লিউটিএর নৌ নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান। এদের মধ্যে হারিছ চৌধুরী মামলার শুরু থেকেই পলাতক। তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানাও রয়েছে। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টে অনিয়মের অভিযোগে দুদক ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় অন্য মামলাটি দায়ের করে। পরে ২০১০ সালের ৫ আগস্ট খালেদা জিয়া, তারেক রহমানসহ ৬ জনের বিরুদ্ধে এ মামলায় অভিযোগপত্র দেওয়া হয়। মামলার অপর আসামিরা হলেন- মাগুরার সাবেক সংসদ সদস্য কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী এবং প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগ্নে মমিনুর রহমান। গত বছর ১৯ মার্চ অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে আদালত এ দুই মামলায় আসামিদের বিচার শুরু করেন।আদালত পাড়ায় নিরাপত্তা : খালেদা জিয়ার হাজিরাকে কেন্দ্র করে বিশেষ আদালতের আশপাশের এলাকায় ব্যাপক নিরাপত্তাব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) পাশাপাশি র্যাব, বিজিবি ও সাদা পোশাকের গোয়েন্দাদের ব্যাপক সংখ্যক সদস্য এ নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করেন। আদালতে অবস্থানকালে খালেদা জিয়ার সমর্থনে সমবেত নেতা-কর্মীরা প্রথমে বিভিন্ন স্লোগান দিলেও পরে শুনানি চলাকালে তারা মোনাজাত করেন। গতকাল বেলা ১১টার একটু আগে বিএনপির অর্ধশতাধিক নেতা-কর্মী ঢাকা মেডিকেল কলেজের পশ্চিম গেট সংলগ্ন রাস্তায় ‘জিয়ার সৈনিক এক হও’ স্লোগান দেয়। নেতা-কর্মীরা মিছিল বের করার চেষ্টা করলে পুলিশ তাদের সরাতে যায়। আর তখনই তারা স্লোগান শেষ করে মোনাজাত শুরু করেন। পুলিশ সদস্যরা তখন আর বাড়াবাড়ি না করে পাশেই অবস্থান নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকেন।দুর্নীতির তিন মামলায় খালেদার চার আবেদন : বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা তিনটি দুর্নীতি মামলার বিষয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠিয়েছেন হাইকোর্ট। বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি মামলায় হাইকোর্টের রুলের ওপর গতকাল রায় দেওয়ার কথা থাকলেও তা হয়নি। আদালত এ বিষয়ে সিদ্ধান্তের জন্য প্রধান বিচারপতির কাছে নথি পাঠিয়েছেন। এ ছাড়া গ্যাটকো ও নাইকো দুর্নীতি মামলায় একই আদালতে বিচারাধীন তিনটি রুলবিষয়ক নথিও প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠানো হয়েছে। বিচারপতি মো. মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি জে বি এম হাসানের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ গতকাল তিনটি দুর্নীতি মামলায় রুলের নথি প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠানোর আদেশ দেন। দুদকের পক্ষে আইনজীবী খুরশীদ আলম খান ও খালেদার পক্ষে বদরুদ্দোজা বাদল আদালতে উপস্থিত ছিলেন। হাইকোর্টের এই বেঞ্চ পরিবর্তনের জন্য ২ এপ্রিল প্রধান বিচারপতির কাছে আবেদন করেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। তার পক্ষে আইনজীবীরা এ আবেদন করেন। ২০০৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াসহ ১৬ জনের বিরুদ্ধে রাজধানীর শাহবাগ থানায় বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলা করে দুদক। ৫ অক্টোবর ১৬ জনের বিরুদ্ধেই দুদক আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। এ মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে খালেদা জিয়ার করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে একই বছরের ১৬ অক্টোবর হাইকোর্ট এ মামলার কার্যক্রমের ওপর তিন মাসের স্থগিতাদেশ দেন। একই সঙ্গে মামলা দায়ের এবং কার্যক্রম কেন অবৈধ ও বেআইনি হবে না জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত। বিভিন্ন সময় মামলার স্থগিতাদেশের মেয়াদ বাড়ানো হয়। এ মামলায় স্থায়ী জামিনে রয়েছেন খালেদা জিয়া। মামলার অভিযোগে বলা হয়, কয়লা উত্তোলনে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দরদাতা সিএমসির সঙ্গে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির উৎপাদন, ব্যবস্থাপনা ও রক্ষণাবেক্ষণ চুক্তি করায় সরকারের প্রায় ১৫৮ কোটি ৭১ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
©somewhere in net ltd.