![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাজারে খাদ্যপণ্যের দাম উর্ধ্বমুখী। এই মূল্য পরিস্থিতি নিয়ে ক্রেতা সাধারণের মধ্যে একটা উদ্বেগ বিরাজ করছে। এই উদ্বেগ নিরসনের পথ কী? কতটা সস্তায় মানুষকে খাবার দেয়া সম্ভব তা নিয়ে বিশ্বব্যাপী এখন পর্যালোচনা ও গবেষণা হচ্ছে। বিশ্বজুড়ে এখন খাদ্যপণ্যের চড়া মূল্য। এজন্য শুধু বাংলাদেশের মতো গরীব দেশ নয়, ধনী দেশগুলোও চিন্তিত। কারন সস্তায় খাবার দেয়ার যুগ মনে হয় শেষ হয়ে আসছে।
বাংলাদেশের পরিস্থিতি আরো ভয়ানক, কারণ বাংলাদেশের খাদ্যের বড় একটি অংশ বিদেশ থেকে আমদানি করতে হয়। বিশেষ করে গম, তেল ও পিঁয়াজের মতো নিত্যপণ্য। আন্তর্জাতিক বাজারে খাদ্যপণ্যের দাম বিশেষ করে চাল গম ও ভোজ্য তেলের দাম বাড়ছে। গত মওসুমে বোরোর বাম্পার ফলন হয়েছে। বলা চলে রেকর্ড পরিমান উৎপাদন হয়েছে কিতু এরপরও আমরা বড় ধরণের খাদ্য মজুদ গড়ে তুলতে পারিনি। ফলে এই উদ্বেগ কিছুটা থেকেই যাচ্ছে।
সরকারের বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ বা টিসিবির হিসেব মতে গরীব মানুষের মোটা চালের দাম এক বছরের ব্যবধানে বেড়েছে ৫০ শতাংশ। চালের দাম বাড়ার কারণে কৃষকরা লাভবান হলেও এখন কৃষককে আবার বেশি দামে চাল কিনতে হচ্ছে। কারণ বাংলাদেশের বাস্তবতা হলো কৃষকরা ধানের উৎপাদনের পর তা বাজারে বিক্রি করে। সে সময় তারা নায্যমূল্যে পেলেও এখন সঙ্কটে পড়েছে। খাবার কিনতে তাদের আয়ের সবটা চলে যাচ্ছে। আর হতদরিদ্র মানুষকে আরো বেশি কঠিন সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে।
যেকোনো নির্বাচিত সরকারের জন্য খাদ্যপণ্যের দাম বাড়া অশনি সঙ্কেত। কারণ তাদেরকে জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হয়। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে বলা হয়েছিলো ‘‘দ্রব্যমূল্যের দুঃসহ চাপ প্রশমনের লক্ষ্যে চাল, ডাল, তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম কমিয়ে জনগণের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে স্থিতিশীল রাখার ব্যবস্থা করা হবে। দেশজ উৎপাদন বৃদ্ধিকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে সময় মতো আমদানির সুবন্দোবস্ত, বাজার পর্যবেক্ষণসহ বহুমুখী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। মজুদদারি ও মুনাফাখোরি সিন্ডিকেট ভেঙে দেয়া হবে, চাঁদাবাজি বন্ধ করা হবে। ’ভোক্তাদের স্বার্থে ভোগ্যপণ্য মূল্য নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ’ গড়ে তোলা হবে। সর্বোপরি সরবরাহ ও চাহিদার ভারসাম্য সৃষ্টি করে দ্রব্যমূল্য কমানো হবে ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা করা হবে।’
স্বাভাবিক ভাবে প্রতিশ্র“তি বাস্তবায়নে সরকারকে দ্রব্যমুল্য নিয়ন্ত্রণে অধিক মনোযোগী হতে হবে। এজন্য সরকারকে হতদরিদ্র ও নিুআয়ের মানুষের জন্য কিছু কর্মসূচী নিতে হবে। ইতোমধ্যে সরকার কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে, ওএমএসে’র মাধ্যমে চাল বিক্রি করা হচ্ছে। ওএমএসে’র লাইন দিন দিন দীর্ঘ হচ্ছে। এ থেকে প্রমাণ হয় মানুষ ওএমএস থেকে উপকৃত হচ্ছে। এখন রেশন ব্যবস্থা চালুর ব্যাপারে ভাবতে হবে। শুধু চাল নয় অন্য খাদ্যপণ্য বিশেষ করে তেল ও পিঁয়াজের মতো পণ্য বিক্রির ক্ষেত্রে কোনো মজুদদারি হচ্ছে কিনা সে ব্যাপারে নজর দিতে হবে। এ ক্ষেত্রে সিন্ডিকেট হচ্ছে বড় সমস্যা।
আন্তজার্তিক বাজারে খাদ্যপণ্যের দাম যেভাবে বাড়ছে তাতে সহসাই দাম কমার কোনো সম্ভাবনা নেই। দাম যে বাড়বে তার আভাস বেশ আগেই পাওয়া গিয়েছিলো। রাশিয়া ও কানাডায় গমের উৎপাদন হ্রাস,পাকিস্তানে বন্যা, ভারতের চাল রফতানির নিষেধাজ্ঞা থেকে অনুমান করা হয়েছিলো যে আন্তর্জাতিক খাদ্যপণ্যের বাজারে বড় ধরণের অস্থিরতা দেখা দেবে। এছাড়া মুদ্রা লড়াইয়ের কারণে আগামিতে আমদানি ব্যয় আরো বেড়ে যাবে। ফলে জিনিস পত্রের দাম আরো বাড়বে। এই অস্থিরতা যাতে দেশের অভ্যন্তরে প্রভাব ফেলতে না পারে সে জন্য বাজার ব্যবস্থাপনা ও মজুদদারি বন্ধের কোনো বিকল্প নেই।
©somewhere in net ltd.