নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

৯০\'র সাবেক ছাত্র নেতা মুখলেছউদ্দিন শাহীন নামে পরিচিত, বর্তমানে ব্যবসায়ী

আহমেদ_শাহীন

দার্শনিকেররা এযাবৎ জগৎটাকে শুধু ব্যখ্যা করেছেন , আসল কাজ হলো পরিবর্তন করা - কার্ল মার্কসের এ উক্তিটি আমার খুব প্রিয় ।

আহমেদ_শাহীন › বিস্তারিত পোস্টঃ

কথা নিয়ে কিছু কথা

০২ রা জানুয়ারি, ২০১৪ রাত ১১:৪৬

কথা বলা মানে শব্দ ব্যবহার , ভাষার প্রয়োগ । কথা বলা নিয়ে বিশ্বে অনেক কথা প্রচলিত আছে । কেউ বলে বেশি কথা বললে হার্ট ভাল থাকে আবার কেউ বলে বেশি কথা বলে যে সে নাকি বাচাল । আবার অনেক জ্ঞানী ব্যক্তিরা বলেন বেশি কথা বললে ভুল বেশি হয় । আবার কম কথা বলা নিয়েও অনেক কথা আছে । কম কথা বলা নাকি ভাল ,কারও কম কথা বলা অভ্যাস আবার চালাক লোকেরা কিন্তু কম কথা বলে । গম্ভীর প্রকৃতির মানুষরাও কম কথা বলে । অফিসের বস পদবীর ব্যক্তিরা কম কথা বলে আবার পিয়ন চাপরাসিরা নাকি বেশি কথা বলে । কেউ বলেন খোলা দিল ওয়ালা মানুষরা বেশি কথা বলেন আর প্যাচ ওয়ালা মনের মানুষরা কম কথা বলেন। পুরুষরা নাকি কম কথা বলেন আর নারীরা নাকি বেশি কথা বলেন । বিজ্ঞানীরা বলেন, কথা কম বলা বেশি বলা মানুষের অভ্যাসগত ব্যাপার । সেই সমাধান না হয় হোল কিন্তু কথার নাকি আবার রকম ফের আছে । কথা বলার মধ্যে নাকি আর্ট আছে , বাংলায় যাকে বলি নান্দনিকতা । স্থান – কাল – পাত্র বিশেষেও কথা বলার ধরন ভিন্ন । বাসায় যেভাবে কথা বলা হয় অফিসে বা বাইরে সেভাবে বলা হয় না । মা - বাবার সাথে বউ - জামাইয়ের সাথে কথা বলার ভিন্নতা আছে । অফিসের বসের সাথে , কলিগের সাথে , পিয়নের সাথে কথা বলার ভিন্নতা আছে । পরিচিত – অপরিচিতর সাথে কথা বলার ভিন্নতা আছে । আবার অফিসের ভিতরে ও বাইরে কথা বলার ভিন্নতা আছে । কথা বলার মধ্যে ফরমাল – ইনফরমালের ব্যাপারও আছে । প্রতিনিধিত্ব মুলক বক্তব্যকে ফরমাল বলা হয় । টিভি টকশোতে প্রায়ই বলতে শোনা যায় “আমি ইনফরমালি বা অফ দা রেকর্ড বলছি” মানে যেই মুহূর্তে ব্যক্তিটি অফ দা রেকর্ড এ কথা বলবেন সেই মুহূর্তে উনি কোন ব্যাক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে প্রতিনিধিত্ব করছেন না । আড্ডাবাজির কথার মধ্যেও পার্থক্য আছে । বন্ধুদের আড্ডা , সাহিত্য সভার আড্ডা , রাজনৈতিক আড্ডা এক নয় , কথাও এক নয় । একজন সাধারন মানুষের কথা , একজন কবি-সাহিত্যকের কথা , একজন রাজনীতিবিদের কথাও এক নয় । শিক্ষকের ক্লাসে ও সেমিনারে ব্যবহারযোগ্য কথাও এক নয় । কথার রকম ফেরে হয় এক দেশের বুলি আর এক দেশের গালি । প্রেমে আপ্লুত হয়ে কথা আর রাগে দিশেহারা হয়ে কথাও এক নয় । সাবলীল ভাষায় কথা ও অনুবাদের ভাষায় কথাও দুই রকম । আদালতে দাড়িয়ে যে কথা বলা হয় রাজনৈতিক বক্তৃতার মঞ্চে সেই কথা বলা যায় না । মোট কথা , কথা বলতে হয় যে কথা যেখানে প্রযোজ্য । যে কথা যেখানে প্রযোজ্য নয় সেই কথা সেখানে বললে হয় মূর্খতা , অসভ্যতা , বেয়াদপি, অবমাননাকর । কোন জায়গায় নির্দিষ্ট দায়িত্ব নিয়ে গেলে দায়িত্বের বাইরে কথা বলা যায় না । কোন গোষ্ঠী বা শ্রেণীকে প্রতিনিধিত্ব করলে সেই গোষ্ঠী স্বার্থ বা শ্রেণী স্বার্থের বাইরে কথা বলা যায় না । রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের মধ্যে ও কর্মীদের মধ্যে কথারও পার্থক্য আছে । প্রাণী জগতের মধ্যে কথা শুধু মানুষই বলতে পারে । ভিন্ন ভাষা ভাষী মানুষের মধ্যে কথার পার্থক্য আছে , কথা বলার ঢং আছে , কিছু নিয়ম কানুনও আছে । কথার সুর আছে তাল আছে । কথার ভদ্রতাও আছে । সমাজের শ্রেণী ভেদে কথারও পার্থক্য আছে ।

কথা শুধু বললেই হয় না শিখতেও হয় । কথা শেখারও জায়গা আছে । স্কুল - কলেজ – বিশ্ববিদ্যালয়ে জ্ঞানের কথা , জ্ঞানী কথা শেখানো হয় । বাসা বাড়ীতে বাবা মায়ের কাছে , মুরুব্বীদের কাছে কথার আদব কায়দা শেখা হায় । বন্ধু বান্ধবের মাঝে কথার রকম ফের , কথার বিনোদন , কথার উৎকর্ষতা শেখা হয় । রাজনীতির মাধ্যমে শ্রেণী ভেদে কথার ব্যবহার শেখা হয় । জীবন সংগ্রামের প্রতিটি ধাপে , প্রতিটি পদে কথার নান্দনিকতা কথার ব্যবহারিক রুপ ইত্যাদি শেখা হয় । কথা বলার ও শেখার সর্বচ্চ স্থান জাতীয় সংসদ , শ্রেণী – দেশ – জাতি সকলের প্রতিনিধিত্বমূলক কথা হয় জাতীয় সংসদে , কথার যত নান্দনিক প্রয়োগ সব হয় জাতীয় সংসদে । জাতীয় সংসদের সমস্ত সৌন্দর্য কথার ভিতর । গোটা দেশের প্রজ্ঞা , মেধা , জ্ঞান এর প্রতিফলন হয় জাতীয় সংসদে যারা কথা বলেন তাদের মাধ্যমে । ইদানীং জাতীয় সংসদে যারা কথা বলছেন মনে হয় তারা কোন নির্বাচিত প্রতিনিধি নয় । তাদেরকে জোর করে কেউ সংসদে ঢুকিয়ে দিয়েছে । নির্বাচিত প্রতিনিধিরা জনগনের কাছ থেকে কথা শিখে আসে । কাজেই তারা যা খুশি তা বলতে পারে না । জনগণ তাদেরকে পাঠায় জনগণের কথা বলতে । সেই কথা তারা বলে না । তারা যা বলে তা শেখা যায় না ।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.