![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দার্শনিকেররা এযাবৎ জগৎটাকে শুধু ব্যখ্যা করেছেন , আসল কাজ হলো পরিবর্তন করা - কার্ল মার্কসের এ উক্তিটি আমার খুব প্রিয় ।
এইবারের বৈশাখী উৎসব আগের সব বৈশাখী উৎসবকে ছারিয়ে গিয়েছিল বলেই আমার মনে হয় । গতকাল পুরো ঢাকা শহর এ হেটে চলা ছাড়া কোন উপায় ছিল না । এই ধরনের উৎসব দেশের অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে । বিশেষ করে অভ্যন্তরীণ ক্রয় বা ভোগ এর মাত্রা অনেক বেড়ে যায় । ঈদ উৎসব ছিল একসময় আভ্যন্তরীণ ভোগ এর সবচেয়ে বড় উপলক্ষ্য । এখন পহেলা বৈশাখেও উচ্চবিত্ত , মধ্যবিত্ত ও নিম্নমধ্যবিত্তরা ব্যপক ভাবে অংশ নেয় । পহেলা বৈশাখের জন্য বিশেষ জামা কাপড় এর চাহিদার কারনে তাকে কেন্দ্র করে একটি বিশেষ ধরনের শিল্প গড়ে উঠেছে । এই শিল্প অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য একটি নতুন মাত্রা যোগ করতে পারে । এই শিল্প থেকেই জোগান হয় ২৬সে মার্চ ও ১৬ই ডিসেম্বর এর জন্য তৈরি বিশেষ পোশাক । ২৬সে মার্চ ও ১৬ই ডিসেম্বর এর পোশাক ও বেশ জনপ্রিয় হচ্ছে । এই ধরনের পোশাক বিক্রয় ও সরবরাহ ব্যবস্থা ও উতপাদন ব্যবস্থা যত বেশি শক্তিশালী হবে আভ্যন্তরীণ ক্রেতার সংখ্যা তত বাড়বে । আর এই ক্রেতা বাড়াতে গিয়ে যে ধরনের বিজ্ঞাপন ও প্রচার বাজারে আসে বা আসবে তা মানুষের মনন ও সংস্কৃতিকেও পরিবর্তিত করবে । এই শিল্প টিকিয়ে রাখতে গিয়ে মানুষের মধ্যে দেশ প্রেমেরও প্রভাব বাড়বে ।
খাদ্য দ্রব্যের মধ্যেও একটি ভিন্নতা আছে । ইলিশ মাছ একটি প্রধান উপাদান হলেও বিভিন্ন ধরনের ভর্তা তৈরি এখন একটি ফ্যাশন । এই ভর্তা তৈরি করতে বিশেষ ধরনের তারকারি বা সবজির উপর চাপ পরে ও তার চাহিদা বারে । মুলত এই ভর্তা সংস্কৃতি এসেছে গ্রামীণ দরিদ্র কৃষি ভিত্তিক অর্থনীতি থেকে । চৈত্র মাস হচ্ছে খরার মাস । বৃষ্টি না থাকার কারনে বৈশাখী ধানের জন্য মানুষ অপেক্ষা করত । সেই সময় সংসারে আহার জোগানোর মত সামরথ কৃষকের ছিল না । বাড়ির পাশের সবজি থেকে আহরিত উৎস দিয়ে ভর্তা ছিল খাদ্যের প্রধান উপাদান । নদী নালায় তখন পানি থাকতো না । ঘরের সংরক্ষিত শুটকি মাছ ছিল প্রোটিনের উৎস । সেই সাথে ঘরে পালিত মুরগি বা মোরগ তো ছিলই । মোট কথা বৈশাখ ছিল কৃষকের জন্য একটি অভাব অনটনের মাস । এই অভাব অনটনের সময় একজন গ্রামীণ কৃষকের যে সংস্কৃতি তাই হচ্ছে আমাদের বৈশাখের সংস্কৃতি । রঙিন জামা কাপরের সংস্কৃতি এসেছেও এই অভাবের মাস থেকে । সস্তা এক রঙা জামা কাপড় পরে এই আভাবের মাসটা পার করে দেয়াই ছিল কৃষক পরিবারের উদ্যেস্য । ইলিশ মাছ তখন ছিল আসলে খুব সস্তা । ধনি কৃষকরা রুই কাতল মাছ খেত আর গরিব কৃষকরা ইলিশ মাছ খেত । চৈত্রের অভাবের সময় অবস্থা সম্পন্ন কৃষকরাও বাধ্য হয়ে ইলিশ মাছ খেত । পান্তা ভাত হচ্ছে সংরক্কিত খাদ্য । রাতে খাবার পর বাড়তি ভাত পরের দিনের জন্য সংরক্ষণ করতে তাতে পানি দিয়ে রাখা হতো । যা পরের দিন সকালে সবজি ভর্তা বা শুটকি ভর্তা দিয়ে নাস্তা হিসেবে ব্যবহার করা হতো ।
আমরা সেই সংস্কৃতিকে লালন করে বৈশাখী উৎসব পালন করে থাকি । এবং সেই সংস্কৃতি এখন আমাদের উৎসব । আমরা সেই অভাবী কৃষক পরিবার এর সংস্কৃতিকে নিজের অজান্তেই লালন করি ।
২| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১২:৪৯
শরৎ চৌধুরী বলেছেন: পোষ্টের অর্ন্তদৃষ্টিটা চমৎকার লাগলো।+।
৩| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১:১৪
লাইলী আরজুমান খানম লায়লা বলেছেন: রঙিন জামা কাপড় আর ইলিশের যে বর্ণনা দিয়েছেন ----আমি তীব্রভাবে এর বিরোধিতা করছি।
আমি গ্রামের মেয়ে-------আমি দেখেছি হালখাতা----দেখেছি পহেলা বৈশাল উদযাপন--------দেখেছি গ্রামের খেটে খাওয়া মানুষের জীবন।
আপনি বলেছেন যে ইলিশ মাছের দাম ছিল সস্তা। হ্যা সস্তা ছিল ঐ সময়ের জন্য কিন্তু তখন মুদ্রার দামও খুবই বেশি ছিল। তখন দরিদ্র কৃষকেরা ইলিশ মাছ কিনে খেতে পারতো না----আর যদিও বা কিনতো তারা সে হয়তোবা কালে ভাদ্রে। ইলিশ মাছ দিয়ে পান্তা খেত এমনটি আমি আমাদের গ্রাম, আশেপাশের গ্রাম কিংবা চাকুরী সূত্রে প্রায় জেলাতেই ঘোরা হয়েছে------কোথাও দেখি নাই-----------হায়রে --- কিছু কিছু শহুরে মানুষ এটাকেই চালিয়ে দিলক সংস্কৃতির অংশ হিসেবে----------
৪| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১:২৩
লাইলী আরজুমান খানম লায়লা বলেছেন: গ্রামের মানুষ বাসি তরকারী, ভর্তা বা শাক দিয়ে পান্তা খেতে দেখেছি এবং আমাদের বাড়িতেও এর প্রচলন ছিল
পহেলা বৈশাখে দেখেছি ১৩ রকমের শাকের সমন্বয়ে একটি শাক রান্না করতো--যার নাম তেরাবেরা। হরেক রকমের ভর্তা হতো, স্বজনার ডাল, পুটি মাছ ভাজা, ছোট মাছের চচ্চরী কিংবা মুরগীর ঝোল-----নাস্তা হিসেবে থাকতো চিরা, মুড়ি, গুড়ে পাক দেয়া খই, দই, মিষ্টি। এই খাবার এটাও তাও হালখাতার জন্য করা হতো। যাদেরকে দাওয়াত দেয়া হতো--তারা ভাল কাপড় পরে আসতো,আর যাওয়ার সময় পাওনা পরিশোধ করে যেত---------।
তবে আপনার সাথে আমি এক জায়গায় একমত যে এখন বৈশাখী বানিজ্যের প্রসার হয়েছে ----সেটা কাপড় এবং খাবারের দিক থেকে-----
৫| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১:২৫
শাহ আজিজ বলেছেন: আপনি বিষয়ের একটি দিক তুলে ধরেছেন । মুলত পয়লা বৈশাখ হাল খাতার হাল নাগাদ করন উৎসব। বাকিতে যেসব কারবার হতো এদিন মুলত হিন্দু ব্যাবসায়িরা তাদের দোকান পাঠ পয় পরিষ্কার করে তাদের গাহাকদের জন্য মিষ্টান্নর আয়োজন করত । হিন্দু ধরমালম্বিরা চৈত্র সংক্রান্তি আর বৈশাখের মেলা পালন ও সাধ্য মতো মিষ্টি , ভাজা পোড়ার আয়োজন করত । কিছু মুসলিম এদিনে হিন্দু বন্ধুদের গাঁট খসিয়ে রুই কাতলা দিয়ে ভুঁড়ি ভোজন করত । সামান্য কিছু মুসলিম ব্যাবসায়ি হালখাতা উদযাপন করত । ঠিক কখন পান্তা এসে ঢুকে গেল এও আমার নজরে আসেনি । তবুও পঞ্জিকা মানত হিন্দু মুসলিম নির্বিশেষে সবাই । ইলিশ নয় রোহিত মৎস্য ছিল নতুন বছরের ধনাঢ্য হিন্দু ও মুসলিমদের খাবার । এদিনে কচ্ছপ খেত দক্ষিনের তরুন / যুবক মুসলিমরা তাদের হিন্দু বন্ধুদের বাড়িতে । আর তালের রসের কথা নাই বা বললাম । ওটা দারুন!!
নববর্ষের শুভেচ্ছা জানবেন ।
৬| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১:২৮
লাইলী আরজুমান খানম লায়লা বলেছেন: বৈশাখ মাসেই যে অভাবে মাস ছিল তা নয়----প্রায় সারাটি বছরই তো ছিল অভাবের আনাগোনা। কৃষক যে শুধুই বৈশাখ মাসেই পান্তা খেত এমনটি নয়--------তারা সারাটি বছরই পান্তা খেত-------এখনও খায়-------
আমাদের প্রজন্মকে শেখানো হচ্ছে কৃষক পান্তার সাথে ইলিশ খেত-------হায়রে মানুষ---পারেও বটে
সরি অন্যভাবে নিবেন না-----আমি আপনার লেখার কিছুটা পর্যালোচনা করলাম মাত্র--------
৭| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১:৩২
আহমেদ_শাহীন বলেছেন: ইলিশ মাছের সংস্কৃতি মূলত দক্ষিন বঙ্গের সংস্কৃতি, উত্তর বঙ্গ বা পূর্ববঙ্গ খুব একটা ইলিশ মাছের প্রচলন ছিল না, তবে দক্ষিন বঙ্গে অবশ্যই গরিব কৃষকরা ইলিশ মাছ নির্ভর ছিল, এতে তীব্র বিরোধিতা না করে বরং আমাকে কিঞ্চিত জ্ঞান দিলে উপকৃত হবো
৮| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ২:৩৯
শাহ আজিজ বলেছেন: @আহমেদ_শাহীন
ইলিশ মাছ খেপলা জালে ধরে না । এটার জন্য দীর্ঘ জাল ফেলতে হয় এবং উঠাতে হয় । গোটা বিষয়টি মাঝ নদীতে সম্পন্ন হয় । মাছ বরফ দিয়ে শহরে চালান হয় । ইলিশ ৫০ বছর আগেও যেমন ছিল এখন তেমনি আছে । বেড়েছে জেলের সংখ্যা আর মধ্যসত্তভোগী কুলাঙ্গার । পিরোজপুরের কোল ঘেসে মেঘনা পর্যন্ত বিস্ত্রিত জায়গা ইলিশের চলাচল । চরদুয়ানি খুব বিখ্যাত স্বাদযুক্ত ইলিশের জন্য । এখন সিন্ডিকেট আমলে একটি মাছও যেতে পারেনা জেলেদের ঘরে।তবে ওরা জাটকা খেয়েই খুশী । হ্যা নদীতে ইলিশ যারা ধরত ৪০/৫০ বছর আগে , দেখতাম একটি মাছ নিয়ে যাচ্ছে বাড়ির জন্য । তখন মানুষ বেলে,গুলো , ট্যাংরা , থুড়কিনা,দাঁতনে , চিন্রি,ভেদা , কেচকি ইত্যাদি অনেক ছোট মাছ কৃষক নদীর কুলে খ্যাপলা জাল দিয়ে ধরে দিনের খাবারের জন্য । সবাই এখন পুকুরের মাছে আগ্রহী হয়ে উঠেছে । এখানেই আপনি বুঝে নিন কেন ইলিশ কৃষকের নয় এবং কেন তা ইন্ডিয়া চলে যায় আর বাজারে পাল্লা দিয়ে বিক্রি হয় । এবার সিন্ডিকেট ধরা খেয়েছে । মধ্যবিত্ত অনেকেই ইলিশকে প্রতাক্ষ্যান করেছেন । আমিও খাইনি ।
৯| ১৫ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১০:১৩
সোজা কথা বলেছেন: এ বছরে সাম্প্রদায়িক সম্প্রতিও আমার কাছে লক্ষণীয় ছিল। ধর্ম - বর্ণ নির্বিশেষে উদযাপনটা সত্যিই অনেক চমৎকার ছিল।
১৫ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১১:২৬
আহমেদ_শাহীন বলেছেন: @ শাহ আজিজ ,
একসময় বাম রাজনীতি ও কৃষক সংগঠন করার কারনে বাংলাদেশের প্রায় সকল জায়গায় যাওয়ার একটা সুযোগ হয়েছিল এবং তখন কিছু অভজ্ঞতা অর্জন করেছি বিশেষ করে গ্রামীণ জীবন যাপনের উপর । তাও আজ থেকে ৩০ বছর আগের কথা যখন কৃষি নির্ভর গ্রামীণ অর্থনীতি পুরোপুরি হারিয়ে যায় নাই । তখন দক্ষিন বঙ্গে দেখেছি গ্রামের হাটে সস্তায় ইলিশের ছড়াছড়ি । একবার পূর্ববঙ্গের হাওর অঞ্চলে এক দরিদ্র কৃষকের বাড়িতে রাত্রি যাপনের পর সকাল বেলা দেখলাম গরম ভাতের সাথে ইলিশ মাছ যা কিনা ভোর বেলা নদীর পারের জেলেদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা । অবাক বিস্ময়ে জিজ্ঞেস করেছিলাম হাওর অঞ্চলের নদীতে ইলিশ আসলো কেমন করে । আমার অবাক হওয়া দেখে কিষাণি জবাব দিল বাপ দাদার আমল থেকে পাশের নদীতে জেলেরা ইলিশ ধরে । কিভাবে আসলো এটা আবার কেমন প্রশ্ন । কোনা জালে ইলিশ ধরা যায় না কিন্তু যে জালে ইলিশ ধরা পরে তা প্রায় সব জায়গায় ব্যবহার হতে দেখেছি । পদ্মা, মেঘনা তো ইলিশের আরত , দক্ষিন বঙ্গের প্রায় সকল নদীতেই ইলিশ ধরতে দেখেছি । বরং রুই কাতলা খুব কম পাওয়া যেতে দেখেছি , পেলেও অনেক দাম যা শুধু অবস্থাসম্পন্নরাই কিনতে পারতো । ইলিশ মাছ গভীর পানির মাছ - ছোট বেলায় পুস্তকে পরেছি । বড়বেলায় যখন অগভীর পানিতে নিজ চোখে ইলিশ ধরতে দেখেছি তখন প্রশ্ন করেছিলাম ইলিশ মাছ গভীর পানির মাছ হল কিভাবে , তখন জেলেরা বলেছিল ডিম পারার সময় ইলিশ মাছ অগভীর পানিতে আসে আর নদীর পানি যতটা গভীর তা ইলিশ মাছ বিচরনের জন্য যথেষ্ট ।
১০| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৪ রাত ১২:১৯
মুচকি হাসি! বলেছেন: কৃষকের যে বর্ণনা দিলেন তার সাথে বাস্তবতার মিল মোটেই নাই। শাহ আজীজ কিছু উদাহরণ দিয়েছেন বৈশাখের যা বাস্তবে দেখিছি।
বৈশাখ বছরের শুরু - হিন্দু মহাজনেরা হিসাব নিকাশ করে আর মিস্টি খাওয়ায়। তবে এটা সংস্কৃতি না 'দোকান-রীতি' তা জানা নাই!
১১| ১৬ ই এপ্রিল, ২০১৪ সকাল ১০:২০
আহমেদ_শাহীন বলেছেন: মুচকি হাসি,
শুধুমাত্র হিন্দু মহাজন বা কারবারীদের সংস্কৃতি বৈশাখী সংস্কৃতি নয়, সাধারণ কৃষক যারা ফসল উত্পাদনের সাথে সম্পর্কিত তাদের সংস্কৃতি এই বাংলার মূল সংস্কৃতি , কলকাতার বাবুদের চোখ দিয়ে গোটা বৈশাখের সংস্কৃতি দেখলে হবে না
©somewhere in net ltd.
১|
১৫ ই এপ্রিল, ২০১৪ দুপুর ১২:৩১
জমরাজ বলেছেন: আমরা সেই অভাবী কৃষক পরিবার এর সংস্কৃতিকে নিজের অজান্তেই লালন করি ।