![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দার্শনিকেররা এযাবৎ জগৎটাকে শুধু ব্যখ্যা করেছেন , আসল কাজ হলো পরিবর্তন করা - কার্ল মার্কসের এ উক্তিটি আমার খুব প্রিয় ।
বাংলাদেশের অর্থনীতি লুটেরা পুজি বা কালোটাকা নির্ভর । রাজনীতি সেই লুটেরা পুজিকে প্রতিনিধিত্ব করে বিধায় রাজনীতিতে সাধারন মানুষের কোন স্বার্থ জড়িত নেই । আমি এখানে রাজনীতি বলতে বিবদমান দলগুলো যাদের সংসদে প্রতিনিধিত্ব করার ক্ষমতা আছে । যেহেতু রাজনীতি অর্থনীতির প্রতিফলিত রুপ কাজেই সমাজের সকল কর্মকাণ্ডেই এখন তা দেখা যাচ্ছে । লুটেরা পুজি হচ্ছে রাতারাতি প্রচুর টাকার মালিক বনে যাওয়া । এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় । সমাজে তার একটা সাংস্কৃতিক প্রভাব পড়ে আর এই প্রভাবেই রাতারাতি ও অতিরিক্ত মুনাফার লোভে মানুষ শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করে, খাদ্যে ভেজাল দেয়, প্রশাসন দুর্নীতি করতে বাধ্য হয় । কিন্তু রাজনীতি লুটেরা পুঁজির প্রতিনিধিত্ব করলে শেষ পর্যন্ত লুটেরা পুঁজির বা কালো টাকার শক্তির কাছে পরাজিত হতে বাধ্য । বর্তমানে রাষ্ট্রীয় পুজি থেকে লুটেরা পুঁজির পরিমান বেশি এবং দেশের অর্থনীতিতে সেই লুটেরা পুঁজি বিনিয়োগ হচ্ছে । লুটেরা পুঁজি দ্বারা রাজনীতি নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে বলে রাষ্ট্রীয় বা জাতীয় পুজি লুটেরা পুজিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না । যদি রাজনীতি জাতীয় পুজিকে প্রতিনিধিত্ব করতো তবে জাতীয় পুজি লুটেরা পুজিকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারতো এবং রাজনীতিতে জাতিয়তাবোধ থাকতো । এখন লুটেরা পুজি বা কালোটাকা তার বিনিয়োগ ও মুনাফার স্বার্থে রাষ্ট্রের সকল যন্ত্রকে দখলে নিয়ে যাচ্ছে । লুটেরা পুঁজির মালিকরা বেশিরভাগ রাজনীতির সাথে সম্পর্কিত । অন্যদিকে জাতীয় পুজি বা রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রিত পুজির সাথে সম্পর্কিত হচ্ছে কিছু শিল্প উদ্যক্তা , মধ্যবিত্ত ও সাধারন মানুষ । এই দুই রকম পুজি আস্তে আস্তে দ্বন্দ্বে লিপ্ত হচ্ছে । এই দ্বন্দ্ব এর কারন জাতীয় পুজি রাষ্ট্রকে কর দেয় এবং লুটেরাপুজি কোন কর দেয় না । যারা কর দেয় তারা চায় রাষ্ট্র তাদের স্বার্থে কাজ করুক কিন্তু রাষ্ট্র কাজ করছে যারা কর দেয়া না তাদের স্বার্থে ।
জাতীয় পুঁজি ও কালোপুঁজির চরিত্র দুই রকম । জাতীয় পুঁজি নিজের বিকাশের স্বার্থে রাজনীতিতে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা চায় । গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক ব্যবস্থা ও জাতীয়পুঁজির বিকাশ একে অপরের সাথে সম্পর্কিত । অপরদিকে কালোপুঁজি রাষ্ট্রকে নিজের কব্জায় রেখে অবৈধ ব্যবসা বানিজ্যে করার কাজে ব্যবহার করে । রাজনীতিতে গণতন্ত্র কালোপুঁজি তৈরি ও বিনিয়গের সবচেয়ে বড় বাধা । রাষ্ট্রে স্বৈরতান্ত্রিক ব্যবস্থা হচ্ছে কালো পুঁজির বিনিয়োগের একমাত্র উপায় ।
বর্তমান রাজনীতিতে জাতীয় পুঁজি থেকে শুরু করে আপামর সাধারন জনগণ এর কোন প্রতিনিধিত্ব নাই । প্রতিনিধিত্ব আছে কালোটাকার । এই ভাবে রাষ্ট্র চলতে থাকলে রাষ্ট্র জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হতে বাধ্য । আর রাষ্ট্র ও জনগণের মধ্যে যদি দ্বন্দ্ব তীব্র হয় তবে রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়বে । রাজনীতি সেই দিকে এগিয়ে যাচ্ছে ।
নারায়ণগঞ্জ এর ঘটনা রাষ্ট্রের এই চরিত্রের বহিঃপ্রকাশ । এখানে রাষ্ট্রের শক্তি কালো টাকার পক্ষে ব্যবহৃত হয়েছে । এর বাইরে কিছু নাই ।
©somewhere in net ltd.