![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
যদি কবিতা লেখা শিখানোর কোন পাঠশালা থাকত তাহলে সে পাঠশালার আজীবন অবৈতনিক ঝাড়ুদার হইতাম।
আমার একটা মুক্তিযোদ্ধা কোঠা নাই দেখে আব্বার উপর ভীষণ রাগ আমার। টাকা চাইলে কামাই করতে বলে; তাতেও আমার খুব রাগ তার উপর। আমি কেন এখনো ২ মেগাপিক্সেলেই পড়ে আছি; সে রাগটাও গিয়ে পড়ে আব্বার উপর। পাঞ্জাবীটার দাম কেন ৩০০০ টাকা হল; সে দোষটাও আব্বার। আমি কেন বন্ধুর বাইক চালাই; দোষটা আমি আব্বাকেই দেই। আমার রুমে কেন ব্যালকনি নাই তাতো অবশ্যই আব্বার দোষেই।
এরকম কতো হাজার হাজার অভিযোগ আব্বার প্রতি। কতো মান অভিমান এই লোকটার সাথে আমার। আমার মনে আছে গত বছর ঠিক এই সময়টাতেই আমি রাগ করে বাসা থেকে বের হয়ে বাইরে ছিলাম বেশ কয়েকটা দিন। পরে আব্বাই যখন বলল, 'অনেক হইছে বাসায় আয়' তখন সত্যিই লজ্জায় আমার মরে যেতে ইচ্ছে করছিল। কেন আব্বা বলার আগে আমিই ফিরে আসলাম না। আমার স্পষ্ট মনে আছে সেই সময় আমার দুই একজন বন্ধু ছাড়া কেউই আমার খোঁজ নেয়নি। এই দুই একজন আমার বিশাল বিশাল সার্কেলের তুলনায় খুবই নগণ্য। খুবই। কত শত বন্ধুদের জন্য আব্বার সাথে ঝগড়া হতো কিন্তু তারাই সে সময় আমার কোন খোঁজ নেয়নি। যদিও এসব নিয়ে মাথা ঘামাই না এখন, গায়ে লাগে না। কিন্তু আমার আব্বা ঠিকই সে সময় আমার খোঁজ নিয়েছিলেন।
ওই সময় অনেকে যুদ্ধ না করেও মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট আব্বার চোখের সামনে দিয়ে নিয়ে গেছে। আব্বা চাইলেই নিতে পারতো কিন্তু আমার যুবক আব্বা তখন নেননি। কারণ সে যুদ্ধ করেননি। সে সৎ ছিলেন। আমি তাকে সবসময়ই বৃথা খোটা দেই। আজ এরকম মুক্তিযোদ্ধার সার্টিফিকেট ফ্রিতে পাওয়া গেলে আমি হয়তো ঠিকই নিয়ে নিতাম। কারণ আমি আমার আব্বার মতো এখনো সৎ হয়ে উঠতে পারিনি। যোগ্য হয়ে উঠতে পারিনি।
আব্বা এখনো সেই নোকিয়া ১৬০০ই চালায়। আমারটাতে তো তাও ক্যামেরা আছে, ২ মেগাপিক্সেল আছে। আব্বারটাতে তো একটা বাটনই নেই। মোবাইল তো একটা আব্বার দরকার।
আব্বা ঈদে পাঞ্জাবি নেন না। আমি গতবার ফ্রিল্যান্ড থেকে পাঞ্জাবি নিয়েছি। এবার তো আব্বার একটা পাঞ্জাবি দরকার।
আমার ভার্সিটি যেতে বিশ মিনিট লাগে। আরামে বসে বসে যাই। কিন্তু আব্বা এই গরমে ঘণ্টার পর ঘণ্টা বাসে দাঁড়িয়ে থাকে জ্যামে। কাঁধে বিশাল এক ব্যাগ নিয়ে। বাইকটা তো আমার চেয়ে আব্বার বেশী জরুরী।
কোনটা জরুরী আর কোনটা জরুরী না সেটা এখনো বুঝি না আমি। আব্বার সাথে তেমন কথাবার্তা হয়না আমার। কখনো হয়ওনি। কিন্তু ওই দু চার লাইন কথাবার্তার মাঝেই আব্বা যা বোঝার বুঝে নেয়। আমিও যা বোঝার বুঝে নেই। এইতো সেদিন ইফতারে হালিম কিনলাম। বাসায় আসার পরে আব্বা বলে, এগুলা আনছিস ক্যান ? আমিও বললাম, তোমার জন্য আনছি নাকি?
একটু পরে দুজনে মিলেই হালিমের বাটি সাবার।
দুই চার লাইন লিখতে গিয়ে কতো কি আবোল তাবোল লিখে ফেললাম। আজকে বাবা দিবস। আমি বাবাকে বাবা ডাকতে পারি না। আসে না। আব্বাই ডাকি। তৃপ্তি পাই। সেক্ষেত্রে আমার ক্ষেত্রে 'আব্বা দিবস'। এই দিবসটা জরুরী। এরকম দিবস জরুরী। একদিন হলেও তো কিছু লিখি। কিছু ভাবি। সবসময় তো আর ভাবা হয় না। বাবাকে তো ভালোবাসিই। প্রতিদিনই বাসি। বাবাকে তো আর একদিন ভালোবাসা যায় না তবুও একটা বিশেষ দিনে বাবাকে অন্য চোখে দেখা অনেক বিশাল কিছু। এটা তো হয় না সকল দিনে।
''কিরে তোর রুমের লাইট জ্বলে ক্যান এখনো? পৌনে চারটা বাজে''
''এইতো আব্বা নিভাইতেছি''
১৯ শে জুন, ২০১৬ দুপুর ২:১৯
অতঃপর নীরবতা বলেছেন: বলেছেন: আমার লেখাতে কোথাও ''মুক্তিযুদ্ধ'' কথাটা আমি উল্লেখ করিনি। লিখেছি ''ওই সময়ে''। যা বোঝাতে চেয়েছি তা আপনি বোঝেননি। অনেকেই যুদ্ধ না করে মুক্তিযোদ্ধার সনদ নিয়ে গেছে। তাদের ছেলেপেলে বিভিন্ন জায়গায় আমাদের চেয়ে অগ্রাধিকার পাচ্ছে। তার কারণ ওই সনদ। আমাদের সনদ নেই। আমরা অগ্রাধিকার পাচ্ছিও না। কিন্তু যারা অগ্রাধিকার পাচ্ছে তারা কি লিগালি পাচ্ছে? ভুল বুঝবেন না। মন্তব্য করার জন্য ধন্যবাদ।
২| ১৯ শে জুন, ২০১৬ সকাল ১১:৫২
মোস্তফা সোহেল বলেছেন: পৃথিবীর সকল আব্বা ভাল থাকুন
১৯ শে জুন, ২০১৬ দুপুর ২:৩১
অতঃপর নীরবতা বলেছেন: জ্বি।
৩| ১৯ শে জুন, ২০১৬ দুপুর ১:৫৫
সুমন কর বলেছেন: ছোট হলেও লেখা ভালো লেগেছে।
+।
১৯ শে জুন, ২০১৬ রাত ৮:০৩
অতঃপর নীরবতা বলেছেন: ধন্যবাদ।
৪| ১৯ শে জুন, ২০১৬ দুপুর ২:৩১
Jahirul Sarker বলেছেন: লেখাটি খুবই ভালো লাগলো। ++++++
১৯ শে জুন, ২০১৬ রাত ৮:০৩
অতঃপর নীরবতা বলেছেন: ধন্যবাদ।
৫| ১৯ শে জুন, ২০১৬ রাত ৯:২৮
শায়মা বলেছেন: অনেক অনেক ভালো থাকুক বাবা আর তুমিও অনেক অনেক ভালো থাকো ভাইয়া!
২০ শে জুন, ২০১৬ রাত ১১:৫৬
অতঃপর নীরবতা বলেছেন: আপনিও ভালো থাকুন আপু। দোয়া রাখবেন।
৬| ২০ শে জুন, ২০১৬ সকাল ৮:৩৩
বিপ্লব06 বলেছেন: "বাসায় আসার পরে আব্বা বলে, এগুলা আনছিস ক্যান ? আমিও বললাম, তোমার জন্য আনছি নাকি?" [/sb
এপিক হইছে!
আব্বার সামনে এই লেভেলের খুনসুটি মার্কা কথা বলার সাহস আজকে পর্যন্ত হয়য়ে উঠে নাই। যদি বলে, "কি বললি? কান ধরে দাড়ায় থাক!!!"
২১ শে জুন, ২০১৬ রাত ১২:০১
অতঃপর নীরবতা বলেছেন: তাহলে আপনার বাবাও খুনসুটি করতে জানে বোঝাই যায়। একবার করেই দেখুন না সাহস করে।
৭| ২০ শে জুন, ২০১৬ বিকাল ৩:৪৩
প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: চমৎকার সব লেখা পড়ছি বাবাদের নিয়ে। মন ভাল আজকে।
২১ শে জুন, ২০১৬ রাত ১২:০৫
অতঃপর নীরবতা বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভাই।
৮| ২১ শে জুন, ২০১৬ বিকাল ৩:২২
শায়মা বলেছেন: ৭. ২০ শে জুন, ২০১৬ সকাল ৮:৩৩ ০
বিপ্লব06 বলেছেন: "বাসায় আসার পরে আব্বা বলে, এগুলা আনছিস ক্যান ? আমিও বললাম, তোমার জন্য আনছি নাকি?" [/sb
এপিক হইছে!
আব্বার সামনে এই লেভেলের খুনসুটি মার্কা কথা বলার সাহস আজকে পর্যন্ত হয়য়ে উঠে নাই। যদি বলে, "কি বললি? কান ধরে দাড়ায় থাক!!!"
হা হা হা
৯| ২১ শে জুন, ২০১৬ বিকাল ৫:৩৪
অতঃপর নীরবতা বলেছেন:
©somewhere in net ltd.
১|
১৯ শে জুন, ২০১৬ সকাল ১০:৫৮
চাঁদগাজী বলেছেন:
" আমার একটা মুক্তিযোদ্ধা কোঠা নাই দেখে আব্বার উপর ভীষণ রাগ আমার। "
-মুক্তিযোদ্ধার সন্তানেরা কোটার পাবার যোগ্য; কোন শিক্ষিত, চাকুরীওয়ালা, ব্যবসায়ী ইত্যাদিরা যুদ্ধ করতে যায়নি; সবকিছুতে না বুঝেমুক্তিযুদ্ধ নিয়ে আসবেন না; লেখা ভালো লাগেনি।