নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তানভীর আহমেদ

Good things come to those who wait. https://www.facebook.com/wikitanvir

তানভীর আহমেদ সিদ্দিকী

You may have noticed, I don’t put myself in to scary situation.

তানভীর আহমেদ সিদ্দিকী › বিস্তারিত পোস্টঃ

চাপা+কাজ= সফলতা? / কাজ= সফলতা? / চাপা= সফলতা?

২৯ শে আগস্ট, ২০১৪ সকাল ১০:০৭

১. মোবিন সাহেব ইউনিলিভার কোম্পানির বড় অফিসার। সারাদিন তার উপর কাজের বোঝা থাকে, এমন একটি ভাব নিয়ে চলাফেরা করেন। নিঃশ্বাস ফেলার সময় পান না। মোবিন সাহেবের কিছু বড় বড় গুন আছে। যেমন তিনি যদি কোন কাজ করেন, তা যতোই ছোট হোক না কেন, তিনি তা ফুলিয়ে ফাপিয়ে এমন ভাবে উপস্থাপন করেন, শুনে যে কারো মনে হতে পারে বেসম্ভব একটি কাজ তিনি জলিল সাহেবের মত মিশন আনপসিবল করে উদ্ধার করেছেন। এর সাথে সাথে অফিসের অন্য ব্যক্তির কাজের ক্রেডিট তিনি নিজ নামে চালিয়ে দিতেও বেশ পারদর্শী। এমন কাজ যেদিন তিনি করতে পারেন সেইদিন তার পেটে খাবার পড়ার আগেই তা হজম হয়ে যায়। অফিসের বাথরুম ধোয়া থেকে শুরু করে বিদেশী ক্লায়েন্ট এর সাথে মিটিং, সকল কাজ তিনি একা একা করেন, এমন বক্তব্য প্রায় তিনি সকলকে বুঝাতে থাকেন। যাই হোক, একদিন তার উপর দায়িত্ব দেওয়া হল পচা সাবান কোম্পানিতে কিছু কাগজাদি স্ক্যান করে মেইলে পাঠাতে হবে। তিনি আবার কম্পিঊটারের বিষয়ে তেমন দক্ষ না। অফিসের আরেক ছোট অফিসার তাপস ঘোষ কে দিয়ে স্ক্যান করে মেইল পাঠানো হল। এবার মোবিন সাহেব এই কাজের রিপোর্ট করলেন তার বড় অফিসারের কাছে এই ভাবে, “স্যার আপনি পচা সাবান কোম্পানিকে যা যা মেইল করতে বলেছিলেন, তার আমি বার বার পরীক্ষা করে দেখে, তারপর স্ক্যান করতে যাই। স্যার আমি মোবিন, স্ক্যান করতে গিয়ে দেখি স্ক্যানার কাজ করে না। তারপর স্যার আমি স্ক্যানার ধরে দিলাম এক ঝাকি। দেখি কেমন যেন কট কট শব্দ করে। বুঝে গেলাম কাজ হয়েছে। এরপর স্যার স্ক্যান করলাম। মেইল পাঠাতে গিয়ে স্যার দেখি মেইল যায় না, অনেক অনুসন্ধান করার পর আমি মোবিন বুঝতে পারি, স্ক্যান করা ইমেজের সাইজ বড় হয়ে গিয়েছে। স্যার তারপর আমি মোবিন অনেক বুদ্ধি খরচ করে, দিলাম এক ধমক। ও আল্লাহ দেখি তড়তড় করে সব আপ্লোডাইতেছে। এরপর স্যার আমি বুদ্ধি করে মেইল যে পাঠাচ্ছি তার একটা ছবি, মোবাইলের ক্যমেরা দিয়ে তুলে রাখলাম। তারপরে দিলাম সেন্ড বাটনে চাপ। মেইল তো আর সেন্ড হয় না। আমি স্যার তখন দুই হাতের বুড়া অঙ্গুল দিয়ে এমন এক চাপ দিলাম যে, মেইল একদম কম্পিঊটার ফুটা করে পচা সাবান কোম্পানিতে চলে গেল। মোবিন সাহেবের বিবরণ শুনে উপস্থিত লোকজনের মনে এই বিশ্বাস জন্ম নিল যে, মেইল পাঠাতে পারা অনেক বড় জটিল একটি কাজ। যা মোবিন সাহেব ছাড়া করা সম্ভব নয়।



২. তাপস ইউনিলিভার কোম্পানির ছোট অফিসার। কাজ সে ভালই পারে। তবে সমস্যা হল, তা ফুলিয়ে ফাপিয়ে বলা দূরে থাক, যতটুকু করেছে সেটাই বলতে পারে না। শুধু মাত্র রেজাল্টাই বলে। একদিন তার উপর দায়িত্ব দেওয়া হল, পচা সাবান কোম্পানির কাছে ১ কোটি টাকা পাওনা আছে। তিনি যেন ব্যপারটি দেখেন। অনেক ঝামেলার পর, ঘণ্টা খানেক ধরে আলোচনার করে তাপস সফল হল। সম্পূর্ণ টাকা উদ্ধার করে, ব্যাংকে জমা দিয়ে তাপস বড় অফিসার এর কাছে রিপোর্ট দিল এক বাক্যে। “স্যার, জব ডান”। বলে চলে আসে নিজ ডেস্কে। সেখানে আবার মোবিন সাহেব উপস্থিত, তিনি তাপসের অনুপস্থিতিতে বলা শুর করলো, স্যার আমি মোবিন ১ কোটি টাকার এই বিষয় নিয়ে অনেক চিন্তা করে তাপস কে বলে দিয়েছিলাম, কি ভাবে কাজ করতে হবে। স্যার, আমি মবিন .. .. .. .. .. .., স্যার আমি .. .. .. .. .. .., স্যার .. .. .. .., স্য .. .. .. .. .. ..। এই কারনেই স্যার তাপস কাজটা করতে পারলো। যদিও এ রকম কোন সাহায্য মোবিন সাহেব অন্য কলিগদের করেছেন বলে শুধু মাত্র রূপকথায় পাওয়া যেতে পারে।



৩. চাপার জোরের কারনে মোবিন সাহেব অল্প কিছুদিনের মধ্যেই ইউনিলিভার কোম্পানির আরো বড় পর্যায়ে চলে যান। আর তাপস ধীরে ধীরেই উপরে ওঠে। তাই বলি, শুধু কাজ করলেই হপে না, চাপাও মারতে হপে। এটম খাও চাপার জোর বাড়াও।



সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণঃ গল্পটির ঘটনা ও চরিত্র কাল্পনিক। জীবিত বা মৃত কারো সাথে মিলে গেলে তা অনিচ্ছাকৃত এবং বাস্তব কোন ঘটনার সাথে ও কোন ব্যক্তির সাথে মিলে গেলে তা কাকতালীয় মাত্র।



পুনশ্চঃ ১০ বছর পর তাপস ইউনিলিভার কোম্পানির ওই পদেই বহাল হল, যেখানে মোবিন সাহেব ছিলেন। আর খালি চাপার উপর থাকার কারনে মোবিন সাহেব বহুকাল আগে পচা সাবান কোম্পানিতে তাপসের পদে চাকুরী নেন।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.