নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

তানভীর আহমেদ

Good things come to those who wait. https://www.facebook.com/wikitanvir

তানভীর আহমেদ সিদ্দিকী

You may have noticed, I don’t put myself in to scary situation.

তানভীর আহমেদ সিদ্দিকী › বিস্তারিত পোস্টঃ

অ, আ

১৩ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ১০:৪৫

শাহ সাহেবের এক মেয়ে। নাম তার পুষ্প। প্রতিদিন অফিস শেষে মেয়ে কে নিয়ে পড়তে বসেন। মেয়ে মাত্রই স্কুলে যেতে শুরু করেছে। ১,২,৩ - অ, আ এই সব শিখছে। সব কিছুই পুষ্প গড়গড় করে বলতে পারে। সমস্যা বাধে "অ" আর "আ" নিয়ে। এই দুই জিনিস সে উচ্চারন করতে পারে না। লেখতে পারে কিন্তু বলতে গেলেই আটকে যায়। অ বলতে গেলে ওওও আর আ বলতে গেলে এএএ জাতীয় বিচিত্র ধরনের কোন আওয়াজ তার মুখ দিয়ে বের হতে থাকে। এ নিয়ে পুষ্পের বাবা মার চিন্তার অন্ত নেই। লেখা পড়ার বিসমিল্লাহতেই যদি এরকম ভটজট হয়ে যায়, তবে ভবিষ্যৎ অন্ধকার।
.
সারাদিন স্কুলের পড়ার পর দুপুরের দিকে শাহ সাহেবের স্ত্রীও পড়ান মেয়ে কে। স্ত্রী পড়ান বকা দিয়ে। পুষ্পের বাবা পড়ান আদর করে। সন্ধ্যা বেলা পড়া শেষে মেয়েকে নিয়ে রাতের খাবার খান। হাত মুখ ধুইয়ে মেয়ে কে ঘুম পাড়িয়ে তবেই নিজে ঘুমাতে যান। মেয়ে কে ঘুমানোর আগে জিজ্ঞাসা করেন পুষ্প মা বল তো অ। পুষ্প বলে ওওও। শাহ সাহেব দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে আবার বলেন, মা বল তো আ। মেয়ে তার জগত বিখ্যাত হাসি দিয়ে বলে এএএ। শাহ সাহেব মেয়ের মন ভুলানো হাসি দেখে খোদার কাছে দোয়া করেন তার মেয়েটির অ আ যেন তিনি ঠিক করে দেন।
.
পরদিন দুপুরে পুষ্পের মা পুস্পকে নিয়ে পড়তে বসেন। আজ পুষ্পের মা একটা লক্ষ নিয়ে মাঠে নেমেছেন। যে করেই যে করেই হোক অ আ এর উচ্চারন মেয়ে কে শিখিয়েই ছাড়বে। শুরু করলেন আস্তে আস্তে। কিন্তু পুষ্পের মুখ দিয়ে সঠিক উচ্চারন বের হয় না। মায়ের চাপাচাপিতে মেয়ে একসময় মুখে কুলুপ আটে। ক্রমাগত উত্তর না পাবার পর পুষ্পের মা মেজাজ হারিয়ে, পুষ্পের পিঠে দুম দুম করে দিল কয়েকটা কিল বসিয়ে। উনার হাতে ছিল কাচের চুড়ি। হুট করে কাচের চুড়ি ভেঙে পুষ্পের পিঠে ঢুকে যায়। পুষ্পের পরনের সাদা জামার পিঠের অংশ মুহূর্তেই লাল বর্ণ ধারন করে। কোন মতে স্যাভলন লাগিয়ে পিঠ থেকে কাচের ভাঙ্গা টুকরা বের করে মেয়েকে ঘুম পারানো হল।
.
সন্ধ্যায় শাহ সাহেব এসে দেখেন, মেয়ে তার ঘুমাচ্ছে। মেয়ের কানের কাছে গিয়ে বলেন। মা, পড়তে হবে না? উঠ। পুষ্প ঘুমের ভিতর উত্তর দেয়। অ আ। শাহ সাহেব চমকে যান। কারন মেয়ে তার শুদ্ধ ভাবে অ আ উচ্চারন করছে নিজের অজান্তেই। রাতে খাবারের সময় আবার ডাক দেন। পুষ্প তখন ঘুমের ভিতর আবার ঠিক মত বলে অ আ। শাহ সাহেবের চোখে পানি চলে আসে। আনন্দের পানি। গতকাল দোয়া করেছেন। আজ দেখেন সব ঠিক। খুশিতে মেয়েকে ঘুম থেকে ডেকে তোলেন। ঘুম থেকে উঠে পুষ্প প্রথমেই বলে ওঠে, আব্বু আম্মু আমাকে মেরে পিঠ থেকে রক্ত বের করে দিয়েছে। তার সেই রক্ত বর্ণ সাদা জামাটা বাবার সামনে ধরে। পুষ্পের মা ভয়ে স্থির হয়ে যান। না জানি এখন তার স্বামী কী করে। পুষ্পের বাবা এরপর কী করেছিল, তা জানি না। তবে এর পর থেকে পুষ্প আর কোন দিন পড়াশুনার জন্য মার খায় নাই। সব সে নিজে নিজে ঠিকঠাক মতন পড়ে ফেলে। এই বছর মানে ২০১৫ তে তার পড়াশুনা শেষ হবার কথা। দোয়া করি যেন তার সমাপ্তিটা মধুর হয়।

বি.দ্রঃ
১. মাইরের উপ্রে ওষুধ নাই। মাঝে মাঝে কিঞ্চিৎ মাইরধর করা জাতির ভবিষ্যৎ এর জন্য ভাল।
২. বাচ্চা কাচ্চা কে মাইর দেওনের কালে মা বাবা সতর্ক থাকতে না পারলে উনাদের ধরে মাইর লাগান হপে।
৩. বাচ্চারা অ আ ভাল করে পড়। তা না হলে পুষ্প হতে হবে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.