নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

লেখালেখি

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পঃ ঠিকানা

২৪ শে জুলাই, ২০১৪ সকাল ১১:৩৭

আমাদের শহরে গনকপাড়া নামে একটা বাণিজ্যিক এলাকা আছে। পুরাতন ও নতুন অবকাঠামো মিলিয়ে জায়গাটা ব্যাবসা বাণিজ্যের জন্য বেশ জমজমাট স্থান। ব্যাংক, বীমা, গার্মেন্টস, ইলেকট্রনিক্স, ফার্মেসী, হোটেল, রেস্তোরাঁ ইত্যাদি প্রায় সব ধরনের বাণিজ্যিক কর্মকাণ্ডের হাঁক ডাকে এলাকাটি সারাদিন গম গম করে। স্বাধীনতার আগে গনকপাড়ার কয়েকটি ছোট ছোট চায়ের দোকান খুব বিখ্যাত ছিল। সে সময় এই চায়ের দোকানগুলো শুধু চা আর বিস্কুট বিক্রি করতো। মোষের ঘন দুধ মিশিয়ে উন্নতমানের চা-পাতা দিয়ে তৈরি করা এসব দোকানের চা ছিল খুবই সুস্বাদু। এই চা খাওয়ার জন্য শহরের প্রায় সব এলাকার মানুষ সকাল থেকে রাত নটা দশটা পর্যন্ত দোকানগুলোর সামনে ভিড় জমাতো। দোকানদাররাও ভিড় সামলাতে হিমশিম খেত। স্বাধীনতার পরেও কয়েক বছর এই অবস্থা বজায় ছিল। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে আমাদের মহল্লার সমবয়সী বন্ধুদের সাথে আমিও নিয়মিত বিকেলবেলা সেখানে চা খেতে যেতাম। তখন আমি কলেজের ছাত্র। সেই ১৯৭২ সাল থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত আমি গনকপাড়ার চা (এই নামেই বিখ্যাত) খেতে যাই। তবে এখন আমার এই যাওয়াটা অনিয়মিত হয়ে গেছে। আগের মত আর রোজ রোজ যাওয়া হয়না। হয়তো সপ্তাহে একদিন বা মাসে দু’মাসে একদিন যাওয়া হয়।

চল্লিশ বছরে অনেক কিছু বদলে গেছে। দোকানগুলোর মালিক ছিল প্রধানতঃ ভারতের বিহার ও উত্তর প্রদেশ থেকে আসা উর্দুভাষী মোহাজিররা। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তারা অনেকেই পাকিস্তান চলে যায়। রাস্তা চওড়া করার জন্য ভাংচুর হওয়ায় অনেকেই তাদের দোকান হারিয়ে অন্য পেশায় চলে যায়। অনেকে এই চল্লিশ বছরে মারাও গেছে। সর্বশেষ যে দু’তিনটি দোকান ছিল, সেগুলোর এখন বেহাল অবস্থা। চায়ের স্বাদ আর আগের মত নেই। ফলে সেই রমরমা ব্যবসাও আর নেই। আমরা যে দোকানে চা খেতে যেতাম, সৌভাগ্যক্রমে সেটি এখনও টিকে আছে। এই দোকানের মালিক রহমতুল্লাহ মারা যাওয়ার পর তার ছেলে বরকতুল্লাহ দোকানের হাল ধরেছে। সেও প্রায় তিরিশ বছর আগের কথা। বাহাত্তর সালে আমরা যখন গনকপাড়ায় চা খেতে যেতাম, তখন বরকতুল্লাহর বয়স ছিল বার তের বছর। সে তার বাবাকে দোকানের কাজে সাহায্য করতো। তিনটি বড় বড় লাকড়ির চুলার একটিতে বিশাল হাঁড়িতে সারাদিন পানি ফুটতো, একটিতে বড় সসপ্যান ভর্তি ঘন দুধ জ্বাল হতে হতে লাল হয়ে যেতো আর একটিতে ফোটানো পানি ভর্তি বড় বড় তিনটি কেটলি বিরামহীনভাবে রহমতুল্লাহর হাতে ওঠা নামা করতো। টিনের তৈরি বিশাল ট্রেতে করে চা নিয়ে বরকতুল্লাহ দোকানের সামনে ভিড় জমানো খদ্দেরদের কাছে পৌঁছে দিতো। কেউ চাইলে সাথে একটা বা দু’টা নোনতা বিস্কুট। পর্যাপ্ত বসার জায়গা না থাকায় অধিকাংশ খদ্দেরই দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে চা খেয়ে চলে যেতো। বরকতুল্লাহর বয়সী একজন কর্মচারী ছোকরাও কাজ করতো দোকানে। রমরমা বেচাকেনা। রহমতুল্লাহর সাহায্যকারী না হলে চলবে কেন? দোকানের কোন সাইনবোর্ড ছিলনা। রহমতুল্লাহর চা বললেই সবাই চিনে ফেলতো।

সেই দোকান এখন চালায় তার ছেলে বরকতুল্লাহ। কিন্তু দোকানের সেই রমরমা দিন আর নেই। লাকড়ির চুলা উঠে গিয়ে একটা মাত্র পাম্প করা কেরোসিনের চুলা জ্বলে। সেই চুলার এক পাশে গরম পানির জন্য একটা আর এক পাশে গরুর দুধের জন্য একটা কেটলি। কনডেনসড্ মিল্কের কৌটাও রয়েছে। তবে অনেকে কনডেনসড্ মিল্কের চা খেতে চায়না বলে কেটলিতে সামান্য কিছু দুধ রাখা হয়।

বরকতুল্লাহ ইতিমধ্যে বুড়ো হয়ে গেছে। তার চুল দাড়িতে পাক ধরেছে। বরকতুল্লাহর বউ ছেলে নাই। বাবা মা তো অনেক আগেই দুনিয়াছাড়া। একজন বাঙালী ছেলেকে পেটে ভাতে কর্মচারী নিয়ে সে দোকান চালায়। চায়ের মান একেবারে জাহান্নামে গেছে। অন্ততঃ তার বাবার আমলের তুলনায়। তবু নস্টালজিয়ার টানে আমি এখনও মাঝে মধ্যে সেই দোকানে চা খেতে যাই আর চা খাওয়ার সময়টুকু বরকতুল্লাহর সাথে গল্প করি। বিস্বাদ চা খাওয়ার পরেও আগের সেই চা খাওয়ার অনুভূতি হয়। গনকপাড়ার চা।

আমি নিজেও বুড়ো হয়ে গেছি। তবু বরকতুল্লাহ আমাকে চিনতে পেরে এখনও সমাদর করে বসায়। গরম পানি দিয়ে ভালো করে কাপ ধুয়ে চা দেয়। ওর চোখের সামনেই দিনে দিনে বুড়িয়ে গেলাম বলে আমাকে চিনতে ওর কখনো ভুল হয়না। আমি জিজ্ঞেস করলে বলে, না স্যার, আপনার বন্ধুদের কেউ আর এখন আসেনা। শুধু আপনিই আসেন।

আচ্ছা বরকত মিয়া, তোমার কি মনে আছে আমরা আট দশ জন বন্ধু মিলে দল বেঁধে আসতাম আর হৈ চৈ করতে করতে তোমার বাবার হাতের চা খেতাম?

বরকতুল্লাহ ম্লান হেসে বলে, মনে থাকবেনা স্যার? খুব মনে আছে। আপনারা চা খেয়ে মাঝে মাঝে আমাকে দু’এক আনা বখশিশ দিয়ে যেতেন। সেসব দিনের কথা কি ভোলা যায়, স্যার?

বরকত মিয়া, তুমি কি এখনও উর্দুতে কথা বলতে পারো?

বোলনা ঠিক সে আতা নেহি স্যার। বিহারী লোগ সব চলে গ্যায়ে। মেরা আপনা তো কোই নেহি। বোলনে কা মওকা কাহাঁ?

তা তুমিও তো ওদের মতো পাকিস্তান চলে যেতে পারতে!

বরকতুল্লাহ এ কথার কোন জবাব দেয়না।

একই প্রশ্ন আর একদিন করায় সে মৃদু হেসে বলে, স্যার আমরা হলাম না ঘরকা, না ঘাটকা। আমার জন্ম তো এ দেশেই। জন্মভূমি ছেড়ে কোথায় যাবো, স্যার? জিনা ইঁহা, মরনা ভি ইঁহা। আমি বাংলাদেশের মাটিতেই মরতে চাই, স্যার। কাঁহি নেহি যানা।

এ বছর একুশের বইমেলা উপলক্ষে আমার একটি উপন্যাসের বিক্রয় কার্যক্রম তদারকির জন্য আমি পুরো ফেব্রুয়ারি মাস ঢাকায় ছিলাম। সেখান থেকে ফিরে মার্চের মাঝামাঝি একবার গনকপাড়ায় চা খেতে যাওয়ার সুযোগ হলো। কিন্তু সেখানে গিয়ে দেখি, বরকতুল্লাহর দোকান বন্ধ। আশেপাশের দোকান গুলোতে জিজ্ঞেস করে জানা গেল, বরকত মিয়া মারা গেছে। শেষের দিকে তার আর্থিক অবস্থা খুব খারাপ ছিল। ধার দেনা করে চিনি, চা-পাতা আর দুধ কিনে সে দোকান চালাতো। মারা যাওয়ার সময় তার ক্যাশ বাক্সে টাকা পয়সা তেমন ছিলনা। এই গনকপাড়ার দোকানদাররাই চাঁদা তুলে তার দাফন কাফনের ব্যবস্থা করেছে। টিকাপাড়া গোরস্থানে তার মাটি হয়েছে।

চা না খেয়ে ফিরে আসার সময় রিক্সায় বসে আমার কেন যেন মনে হলো, বরকতুল্লাহ তার স্বজাতির লোকদের মতো হেরে যায়নি। এদেশে জন্মে এদেশের মাটিতেই সে তার চিরস্থায়ী ঠিকানা করে নিয়েছে। হ্যাটস্ অফ টু ইউ, বরকত মিয়া।

*******************

[ এই গল্পটি সাপ্তাহিক রাজশাহী বার্তার আগস্ট/ ২০১২ সংখ্যায় প্রকাশিত। ব্লগার বন্ধুরা যারা পড়েননি, তাদের জন্য ব্লগে প্রকাশ করলাম। ]

মন্তব্য ৩৩ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (৩৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে জুলাই, ২০১৪ সকাল ১১:৪৯

সুমন কর বলেছেন: আমার জন্ম তো এ দেশেই। জন্মভূমি ছেড়ে কোথায় যাবো, স্যার? জিনা ইঁহা, মরনা ভি ইঁহা। আমি বাংলাদেশের মাটিতেই মরতে চাই, স্যার। কাঁহি নেহি যানা।

ভাল লাগল।

২৪ শে জুলাই, ২০১৪ সকাল ১১:৫২

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ, সুমন কর।

২| ২৪ শে জুলাই, ২০১৪ দুপুর ১২:০৭

হামিদ আহসান বলেছেন: চমৎকার হয়েছে.........................

২৪ শে জুলাই, ২০১৪ দুপুর ১২:১১

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ, হামিদ ভাই।

৩| ২৪ শে জুলাই, ২০১৪ দুপুর ১২:৫৬

মদন বলেছেন: ++++++++++

২৪ শে জুলাই, ২০১৪ দুপুর ২:১১

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ, ভাই মদন।

৪| ২৪ শে জুলাই, ২০১৪ দুপুর ১:০২

পথিক মুরাদ বলেছেন: গণক পাড়াকে মিস করছি, আর সেই বিখ্যাত চায়ের স্বাদ এখনও জিহ্বায় অনুভব করছি। পড়াশুনার দৌলতে গণক পাড়ায় আড্ডার সুযোগ হয়েছিল অনেক বছর আগে। আজ আবার মনে করালেন।
লেখাটি মন ছুঁয়েছে। ধন্যবাদ।

২৪ শে জুলাই, ২০১৪ দুপুর ২:২০

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: গনকপাড়ার চায়ের স্বাদ আপনিও পেয়েছেন জেনে খুব ভালো লাগলো। রাজশাহীতে কবে কোথায় পড়াশুনা করতেন জানালে আরও খুশি হবো।
ধন্যবাদ, ভাই পথিক মুরাদ।

৫| ২৪ শে জুলাই, ২০১৪ দুপুর ১:১১

হাসান মাহবুব বলেছেন: ঠিক গল্পের ফরম্যাটে ফেলা যায় কী না এটাকে বুঝতে পারছি না। আত্মকথন বা স্মৃতিচারণ হতে পারে।

২৪ শে জুলাই, ২০১৪ দুপুর ২:৫৩

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: হাঁ ভাই, এটিকে আত্মকথন বা স্মৃতিচারণাও বলা যায়। তবে আমি নিজে গল্পের বৈশিষ্ট্য সম্পন্ন বাস্তব ঘটনা ভিত্তিক লেখাকে গল্পই বলি। কাল্পনিক ঘটনা ও চরিত্র ভিত্তিক কাহিনীই শুধুমাত্র গল্পের অভিধা পাবে, বাস্তব ঘটনা ও চরিত্র ভিত্তিক কাহিনী তা' পাবে না-আমি এমনটা মনে করিনা। আমার লেখা গল্পগুলোর এক বড় অংশ বাস্তব বা সত্য ঘটনা ভিত্তিক। আমি জানি, অনেকেই আমার সাথে একমত হবেন না। কিন্তু কাল্পনিক ঘটনার চাইতে বাস্তব ও সত্য ঘটনা ভিত্তিক কাহিনীই উত্তম গল্প বলে আমি মনে করি। এটা নিতান্তই আমার ব্যক্তিগত মতামত। গল্পের প্রচলিত সংজ্ঞা এবং অন্যদের মতামতের প্রতি কোন অবস্থাতেই আমি অশ্রদ্ধা পোষণ করছি না।
ধন্যবাদ, ভাই হাসান মাহবুব।

৬| ২৪ শে জুলাই, ২০১৪ দুপুর ১:৪৭

কলমের কালি শেষ বলেছেন: ভালো লাগলো স্মৃতির পাতা।

২৪ শে জুলাই, ২০১৪ দুপুর ২:৫৮

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ, কলমের কালি শেষ।

৭| ২৪ শে জুলাই, ২০১৪ দুপুর ১:৫৮

নাভিদ কায়সার রায়ান বলেছেন: বাহ! চমৎকার স্মৃতিচারণ। মন খারাপ হয়ে গেল কিছুটা।
আমরা বন্ধুরা মিলে মোহাম্মদপুরে একটা চায়ের দোকানে আড্ডা দেই প্রায়ই। ইদানিং অফিসের ব্যস্ততার চাপে সময় পাই না আগের মতো। আপনার লেখাটা পড়ে যেন আমাদের ভবিষ্যৎ দেখতে পেলাম। ভালো সময়গুলো কেন যে ধরে রাখা যায় না!

২৪ শে জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৩:০৩

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ভালো সময়গুলো সত্যিই ধরে রাখা যায় না। হারিয়ে যায় কালের গর্ভে। তবে আমার মতো কিছু নস্টালজিক মানুষ সেগুলো কালের গর্ভ থেকে দুর্বল লেখনী দিয়ে তুলে আনার চেষ্টা করে। হা; হাঃ হাঃ।
ধন্যবাদ, ভাই নাভিদ কায়সার রায়ান।

৮| ২৪ শে জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৩:২৬

হানিফ রাশেদীন বলেছেন: ভালো লাগা রইলো।

২৪ শে জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৩:৪৮

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ, ভাই হানিফ রাশেদীন।

৯| ২৪ শে জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৩:৩২

িনর্বাক দীপু বলেছেন: valo laglo, r mone porlo sei cha er dokan & adda with bosom friend..... I am missing the place a lot....

২৪ শে জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৩:৫৩

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ, ভাই নির্বাক দীপু। গনকপাড়ায় চা খাওয়ার অভিজ্ঞতা আপনারও আছে দেখছি।

১০| ২৪ শে জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৪:৪৮

মিনুল বলেছেন: আপনার গল্পের সংজ্ঞার সাথে আমি পুরোপুরি একমত। গল্প ভাল লেগেছে।

২৪ শে জুলাই, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৩৮

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: গল্প সম্পর্কিত আমার ব্যাখ্যার সাথে একমত পোষণ করার জন্য এবং এই গল্পটি ভালো লাগার জন্য আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ, মিনুল।
ভালো থাকবেন। শুভেচ্ছা রইল।

১১| ২৪ শে জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৫:৩৪

প্রোফেসর শঙ্কু বলেছেন: স্মৃতিচারণ বা গল্প যাই হোক, দারুণ লাগল পড়তে।

২৪ শে জুলাই, ২০১৪ সন্ধ্যা ৭:৪১

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ, প্রোফেসর শঙ্কু।
ভালো থাকুন। শুভকামনা রইল।

১২| ২৪ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ৮:৩২

সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই বলেছেন: বরকুতুল্লাহর মৃত্যুসংবাদে বুকে একটা ব্যথা জাগে। জন্মভূমির প্রতি বরকতুল্লাহর যে টান, সেই টানই প্রিয় জন্মভূমি নিজের বুকে তাঁর ঠিকানা করে দিল।

ভালো লাগলো।

২৪ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ৮:৩৮

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ, সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই।
আমার ব্লগ বাড়িতে আপনাকে স্বাগতম। আমার আগের ও পরের লেখাগুলিও পড়ার আমন্ত্রণ রইল।

১৩| ২৪ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ৮:৪৬

অপূর্ণ রায়হান বলেছেন: ভালো লাগলো , একই সাথে বেদনা :/ ++++++++

২৫ শে জুলাই, ২০১৪ সকাল ৮:৫৪

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ, অপূর্ণ।

১৪| ২৪ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ৯:২২

মোঃ ইসহাক খান বলেছেন: ছোট ছোট স্মৃতি রয়ে যায়। কালক্রমে বড় স্মৃতি হয়ে দাঁড়ায়। থমকে দাঁড়াতে বাধ্য করে।


শুভেচ্ছা রেখে গেলাম।

২৫ শে জুলাই, ২০১৪ সকাল ৮:৫৫

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ, ভাই ইসহাক খান।

শুভেচ্ছা রইল।

১৫| ২৫ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১২:০৫

কান্ডারি অথর্ব বলেছেন:


কিছুটা বিষণ্ণতায় পেয়ে বসলো নাকি !!!

২৫ শে জুলাই, ২০১৪ সকাল ৮:৫৬

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ, ভাই কাণ্ডারি অথর্ব।

১৬| ২৫ শে জুলাই, ২০১৪ বিকাল ৩:১১

শান্তির দেবদূত বলেছেন:
কাহিনীটা হৃদয় ছোঁয়া নিঃসন্দেহ। আপনার কিছু গল্প আগে পড়া ছিল বলে আপনার স্টাইল কিছুটা ধরতে পেরেছি সেই কারণে বারবার মনে হচ্ছিল শেষে এসে নিশ্চয় ট্র্যাজিক পরিসমাপ্তি হবে। আশা করছিলাম যেন সুখ সমাপ্তি হয়; কিন্তু হায়! কষ্ট পেলাম। পাঠকের মনে যে লেখক যত নির্মম আঘাত করতে সক্ষম তিনি ততো সফল, সেই হিসাবে লেখক মাত্রই মনে হয় নিষ্ঠুর হতে হয়। অনেক কষ্ট মিশ্রিত ভালো লাগার অনুভূতি হল আপনার এই গল্পটা পড়ে।

এবার কিছুটা সমালোচনা করি, একজন শুভাকাঙ্ক্ষী ও আপনার লেখার ভক্ত হিসাবে আশা করি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

গল্পের বাক্যগুলো খুব ছোট ছোট ছিল আর এক বাক্য থেকে পরের বাক্যে যাওয়ার ব্যাপারটা কেন যেন ঠিক মধুভাষী লাগছিল না, কেমন যেন রবোটিক লাগছিল। ঠিক বুঝাতে পারব কি না জানি, এটা আসলে অনুভূতির ব্যাপার। আমার মতে, সাহিত্যের পর্যায়ে উত্তীর্ণ হওয়ার জন্য একটা গল্প হতে হবে মুক্তার মালার মত, যার প্রতিটা বাক্য হবে একেকটা পুতি, যেখানে সবগুলো পুতি এক সূত্রে বাধা থাকবে, এক বাক্যের সাথে আরেক বাক্য এভাবে গেঁথে থাকবে। এই জিনিসটার অভাব বোধ করেছি এই গল্পে।

আরেকটা পয়েন্ট, গল্পে পরিবেশের বা চরিত্রে বিস্তারিত বর্ণনা খুবই কম ছিল, যার কারণে গল্পের মধ্যে ঠিক ডুবে যেতে পারছিলাম না, হয় না, অনেক বিস্তারিত বর্ণনা থাকলে চোখের সামনে চরিত্রটা ঠিকঠিক ফুটে উঠে, পরিবেশের বর্ণনা থাকলে মানস পটে সেটার একটা কাল্পনিক চিত্র আঁকা যায়। এ গল্পে সেটার অল্প একটু পেয়েছি , এখানে, "সেই চুলার এক পাশে গরম পানির জন্য একটা আর এক পাশে গরুর দুধের জন্য একটা কেটলি। কনডেনসড্ মিল্কের কৌটাও রয়েছে। তবে অনেকে কনডেনসড্ মিল্কের চা খেতে চায়না বলে কেটলিতে সামান্য কিছু দুধ রাখা হয়।"

আমার ধারনা সাপ্তাহিক রাজশাহী বার্তার জন্য লেখা এই গল্পটার জন্য শব্দ সংখ্যা সীমিত ছিল যার কারণে এত ডিটেল লেখা সম্ভব হয়নি।

আপনার লেখাগুলো পড়ে বেশ আনন্দ পাচ্ছি, আগে কোন এক কমেন্টে আপনার প্রকাশিত বই এর নাম দিয়েছিলেন, দেশে আসলে অবশ্যই কিনে ফেলব। (ইচ্ছা আছে কোরবানির ঈদের দেশে আসার) নামগুলো কি আবার দেওয়া যাবে এখান? ঐ কমেন্টটা খুঁজে পাচ্ছি না।

অনেক শুভকামনা রইল আপনার জন্য, এমনি করে আরও জীবন ঘনিষ্ঠ লেখা লিখতে থাকুন একজন মুগ্ধ পাঠক হিসাবে সবসময় আমাকে পাবেন।

২৫ শে জুলাই, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:১৫

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ভাই শান্তির দেবদূত, আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। যে কোন পাঠকের যে কোন লেখার সমালোচনা করার অধিকার আছে। কাজেই এই লেখাটির যে ত্রুটি বিচ্যুতিগুলো আপনি তুলে ধরেছেন, তা' আমি খণ্ডন না করে সংক্ষেপে আমার বক্তব্যটি শুধু বলি। প্রথমতঃ আমার সব লেখার বাক্য গঠন নিয়ে আমি নিজেই পুরোপুরি সন্তুষ্ট নই। একটি বাক্য আর একটি বাক্যের সাথে পুঁতির মালার মতো সাবলীলভাবে আটকে থেকে পাঠকের কাছে সুখপাঠ্য হওয়া উচিৎ বলে আপনি যে মত প্রকাশ করেছেন, আমি তার সাথে একমত। দুর্ভাগ্যজনক ভাবে এই গল্পে আমি তা' করতে ব্যর্থ হওয়ায় ক্ষমাপ্রার্থী। দ্বিতীয়তঃ আপনি ঠিকই অনুমান করেছেন। রাজশাহী বার্তা মাত্র আট পৃষ্ঠার একটি স্থানীয় সাপ্তাহিক পত্রিকা। এই পত্রিকায় স্থান সংকুলানের সমস্যা থাকায় অনিচ্ছাকৃতভাবে লেখাটি সংক্ষিপ্ত করতে হয়েছে।
আমার লেখা একটি উপন্যাস (স্বপ্ন বাসর) ২০১১ সালের অক্টোবরে প্রকাশিত হয়েছে। আপনাদের দোয়ায় ও আল্লাহর অশেষ রহমতে প্রথম মুদ্রণের ১০০০ কপি মাত্র দেড় বছরেই শেষ হয়ে গেছে। বর্তমানে ২য় মুদ্রণের প্রস্তুতি চলছে। আশা করি, আপনি দেশে এলে উপন্যাসটি পাবেন। একই সাথে আমার দ্বিতীয় উপন্যাস (এখনো লেখা শেষ হয়নি) এবং একটি গল্প সংকলনও প্রকাশিত হতে পারে।
উৎসাহব্যঞ্জক মন্তব্যের জন্য আবারো ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন। শুভকামনা রইল।

১৭| ২৫ শে জুলাই, ২০১৪ রাত ১১:৫১

এহসান সাবির বলেছেন: খুব সুন্দর।

২৬ শে জুলাই, ২০১৪ সকাল ৮:৪৪

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ধন্যবাদ, ভাই এহসান সাবির।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.