নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আকন বিডি

আকন বিডি › বিস্তারিত পোস্টঃ

চলার পথের কিছু কথা ১

২৪ শে জুলাই, ২০২০ বিকাল ৪:২৬

দিন তারিখ হুবহু মনে নাই। ৯৮ এর ডিসেম্বর মাসের শেষ দিকের কথা। গ্রামের বাড়ি বেড়ানোর পর চট্টগ্রাম ফিরতে হবে। নতুন বছরে নতুন শ্রেনীতে ভর্তি হবো। এছাড়া অনেক দিন বেড়ানো হয়েছে। তারাও ছিল। তাই ঢাকা না ছুয়ে ঝালকাঠির রাজাপুর থানা থেকে চট্টগ্রাম যাওয়া। প্রথমে বাসে করে ফেরি ঘাট, তার পর লঞ্চ, শেষে ট্রেন। সাথে কাজিন আর চট্টগ্রামে চাকুরীরত দুই তিন জন। সবাই বাসে করে যাত্রা করলাম ফেরি ঘাটের উদ্দেশ্যে। গাবখান চ্যানেলের ফেরি ঘাটের দুই-তিন শত মিটার উজানে লঞ্চ ভিড়ে (বর্তমানে সেখানে ব্রীজ রয়েছে যা দেশের সর্বোচ্চ উচ্চতার, এই চ্যানেলটি এক মাত্র কৃ্ত্রিম নৌপথ দেশের)।

লঞ্চ আসলো প্রচুর যাত্রী বোঝাই করে। কোন মতে উঠে লঞ্চ এ ধাতস্ত হতেই নিজেদের আবিস্কার করি ইঞ্জিন রুমে। দুই ইঞ্জিন এর বিকট শব্দে কানে তালা লাগার অবস্থা। অনেক খুজে কোন জায়গা না পেয়ে ইঞ্জিন রুমে ঠাই হয়। ঘটনা হচ্ছে সম্ভবতো ইজতেমা। আরো একটা কারণ অল্প কয়েকটি লঞ্চ চাঁদপুর যাত্রী নামায়। বেশির ভাগ লঞ্চ সরাসরি ঢাকা যায় চাঁদপুর না ভিড়িয়ে। যার কারণে দক্ষিন পশ্চিমের মানুষ যারা চট্টগ্রাম বিভাগে কাজ করে তাদের এই পথ ব্যবহার করতে হয়। তখনো বাস সার্ভিস চালু হয় নাই।

খুব কষ্টে আমরা কজন ইঞ্জিনরুমের পাটাতনে শুয়ে পরি। মাঝে মাঝে বিকট শব্দে ক্রিং ক্রিং (সারেং যা দিয়ে ইঞ্জিন এর গতি কমানো বা বারানো নির্দেশ দেয়) বেজে ওঠে। আমি যে পাশে শুয়ে ছিলাম সেই পাশের দেয়ালটা বেশ ঠান্ডা। কারণ দেয়ালের অপর পাশে নদীর জল। আক্ষরিক অর্থে আমরা পানির সার্ফেস থেকে নিচে আছি। বুঝার পর গায়ে কাটা দেয়।

ইঞ্জিন রুমে যে কাজে করছিল সে আকার ইংগিতে আমাদের সাথে যোগাযোগ করত। তিনি নির্লিপ্ত ভাবে কাজ করে গেলেন। নির্দেশ আসলে ইঞ্জিন এর গতি কমানো বা বারানো, মিটার চেক, মাঝে ইঞ্জিন রুমের উপরে উঠে পান খেয়ে আসা। কোন বিকার নাই। এখনো মাথায় আসে না কি ভাবে এই লোক গুলো দিনের পর দিন এই শব্দের মাঝে কাজ করে।

কিছুদিন আগে যে লঞ্চটি ডুবে যায়, সেটি দেখার পর আমার প্রথম মাথায় আসে ইঞ্জিন রুমের লোকটির কথা। কারণ ইঞ্জিন রুমে বসে বোঝা যায় না উপরে কি হচ্ছে। ডুবে যাওয়া লঞ্চর ইঞ্জিন মাস্টার উঠতে পারছিল কিনা? কে জানে?

ঝিমুতে ঝিমুতে সেই সময় পার করি। বিকাল ৫ টার সময় উঠেছিলাম আর রাত ২-২.৩০টায় চাঁদপুর নামলাম ।

নামার পার কি যে শান্তি তার বিবরণ দেয়া আমার সাধ্যের বাইরে।

গাবখান সেতুর ছবি




গাবখান চ্যানেল



ইঞ্জিনরুম এর ভিডিও


ছবি ও ভিডিও গুগল থেকে নেওয়া

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে জুলাই, ২০২০ রাত ৮:৫৬

চাঁদগাজী বলেছেন:



আপনার পরিবারের কেহ কি চট্টগ্রামে চাকুরী করতেন? এখন কোথায় আছেন?

২৪ শে জুলাই, ২০২০ রাত ৯:০২

আকন বিডি বলেছেন: বাবার চাকুরী সূত্রে থাকা হতো।১৯৯৮ থেকে ২০০১ পর্যন্ত। এখন ঢাকায়।

২| ২৪ শে জুলাই, ২০২০ রাত ১০:১০

রাজীব নুর বলেছেন: গাবখান সেতুটা সুন্দর।

ইঞ্জিন ঘরে থাকা বিরাট দিকদারি। এত শব্দ মাথা ধরে যায়।

২৪ শে জুলাই, ২০২০ রাত ১০:১৭

আকন বিডি বলেছেন: গাবখান সেতু আসলেই সুন্দর।
আপনিও ছিলেন নাকি? মাঝে মাঝে মনে হয় কানে কম শুনি।ঐ একরাত বারবার মনে পড়ে তখন।

৩| ২৫ শে জুলাই, ২০২০ দুপুর ২:০০

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: শীতকালে লঞ্চের ইঞ্জিনের কাছে বসলে ঠাণ্ডা কম লাগে।

২৫ শে জুলাই, ২০২০ বিকাল ৩:৫৫

আকন বিডি বলেছেন: তা ঠিক কিন্তু শব্দ প্রচন্ড

৪| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০২০ রাত ২:১৬

নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
একসময় বরিশাল থেকে ঢাকা কিংবা
ঢাকা থেকে বরিশাল একমাত্র লঞ্চই ভরসাল
ভয় ও শিহরণের অনেক স্মৃতি জমে আছে।
ইঞ্জিনের শব্দ এখনো কানে বাজে!!

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.