নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আকন বিডি

আকন বিডি › বিস্তারিত পোস্টঃ

চলার পথের কিছু কথা ৩

০৪ ঠা আগস্ট, ২০২০ রাত ৮:৩০

চট্টগ্রাম ১
বন্ধুর গ্রামের বাড়ি সন্দ্বিপ। তার বাবা ফুসফুসের ক্যান্সারে মারা যায় যখন, সংসারে তখন চার বোন, দুই ভাই আর মা ছিলেন। অনেক দু:খ কষ্ট সয়ে সে বড় হয়। আত্মীয় স্বজন কাছে বিভিন্ন কথা শুনতে হয়। নানাবিধ সমস্যার মাঝেও তার আমেরিকা প্রবাসী মামা সব সময় বটগাছের ছায়া হয়ে ছিলেন। কারো অসুখ হলে, কারো বিয়ে হলে সেই মামা সব সময় পাশে ছিলেন। যার ফলস্রুতিতে বন্ধুটিকে অন্য সব আত্মীয়ের কাছ থেকে কথা শুনে বড় হয়েছে। এ কারণেই তার স্বপ্ন সে আমেরিকা যাবে। যেভাবে পারা যায়, বৈধ্য, অবৈধ্য যত উপায় আছে সে যাবেই। এই লক্ষ্যে তার ঢাকা আগমন। আমাকে ফোনে জানায় সে চট্টগ্রাম থেকে বিমানে করে ঢাকা আসবে, আমি যেন তাকে রিসেভ করি। তখন আমি গার্মেন্টস এ জব করি (২০১২ সাল)। অফিস থেকে তাড়াতাড়ি ছুটি নিয়ে এয়ারপোর্টে তাকে রিসিভ করি সন্ধ্যা ৭-৭.৩০ টার দিকে। বাসায় নিয়ে আসলাম। খাওয়া দাওয়া করে বিশ্রাম নেওয়ার সময় আমাকে তার পাসপোর্ট দেখালো। আমিতো অবাক সার্ক ভুক্ত সব দেশ, সিংগাপুর, মালয়শিয়া, ইন্দোনেশিয়া, ব্রুনাই, চিন, কম্বোডিয়া, থাইল্যান্ড,আমিরাত আরো অনেক দেশের ভিসা লাগানো। সর্বশেষ ভিসা লাগানো গায়ানা। সব বিজনেস ভিসা।যত ভিসা তত তার ওয়েট। এবার পালা আমেরিকার।
"তুই আমেরিকার ভিসা কেমনে লাগাবি?"
"আমি চট্টগ্রামের ফ্ল্যাট ডেভলপার কোম্পানির জিএম হিসাবে সেখানের একটা মেলায় পার্টিসিপেট করবো।"
'তোরে জিএম বানাইছে কে?"
"ওগুলা সব ঠিক করা আছে"
"কাহিনী খুইলা ক"
'কাহিনী হচ্ছে গিয়ে এখানে কিছু লোক আছে যারা সব কাগজ ঠিক করে দেয়। ভিসা যদি পাওয়া যায় তখন ১০ লক্ষ টাকা দিতে হবে তাদের, না পাইলে খরচ নাই।"
"দাড়াবি কবে"
"ডেট পরে জানাবে"
"ভালো।"
পরদিন সে ঐ লোকের কাছে চলে যায়। দুইদিন পর ফোন দিয়ে বলে সে চট্টগ্রাম চলে যাচ্ছে। ভিসার কথা জানতে চাইলে বলে সে দাড়ায় নাই কারণ তার পূর্বে যারা ছিল সকলে রিজেক্ট হইছে। তাই সে না দাড়িয়ে চট্টগ্রাম ফেরত যাচ্ছে।
২০১৩ সালে শুনলাম তার সেই ওজনদার মহামূল্যবান পাসপোর্ট সে হারিয়েছে কিভাবে যেন।
দীর্ঘদিন পর ২০১৪ সালে তার ফোন।
"দোস্ত আমি ব্রাজিলে"
'কেমনে?"
"সে অনেক কাহিনী পরে তোকে বলবো"
ব্রাজিলে তখন ফুটবল বিশ্বকাপ চলছিলো।

ঢাকা: ১
সাম্প্রতিক বিষয়। অফিসে একজন সরকারী চাকুরী থেকে সদ্য অবসরে যাওয়া ব্যক্তির সাথে পরিচয় হয়। হাসি খুশি। অল্পে সন্তুস্ট। আলাপে জানালো তার দুই মেয়ে আর স্ত্রী নিয়ে সুখের সংসার।বড় মেয়ে সিএসই আর ছোট মেয়ে প্রাইভেট মেডিকালে পরে। অফিসে নিয়মিত আসা যাওয়া আরো একটু ঘনিষ্ট হই। নতুন পার্টটাইম জবে জয়েন করেছেন। ব্যক্তিগত আলাপ এর পর্যায় নতুন একটি বিষয় জানার পর খুব কষ্ট লাগলো।
"তার একটি ছেলে আছে, ছোট থাকতে তার বড় ভাই, তার ছেলেকে ইউকেতে নিয়ে যান। সেখানে বড় হয় ছেলেটি। অক্সফোর্ড অথবা কেম্ব্রিইজ (আমার মনে নাই দু:খিত) এ ট্রিপল ইতে পড়ে নাসায় বর্তমানে কাজ করছে। ১-২বছর পর পর মাঝে মাঝে আধ একটু হায়, হ্যালো হয়। এর বেশি কিছু না।"
এই বয়সে কোথায় একটু অবসর জীবন উপভোগ করবেন তা না এখনো তিনি জব করে যাচ্ছেন। সংসার নামক নৌকার গুন টেনে যাচ্ছেন। মনের দু:খটা তার মুখমন্ডলে ভেসে উঠে।

মন্তব্য ১৭ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১৭) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০২০ রাত ৮:৩৮

ঢাবিয়ান বলেছেন: জীবনের গল্প । ভাল লাগল পড়তে।

০৪ ঠা আগস্ট, ২০২০ রাত ৮:৪৩

আকন বিডি বলেছেন: ধন্যবাদ

২| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০২০ রাত ৯:১৬

চাঁদগাজী বলেছেন:



বাংগালীদের জীবন এমন হলো কেন?

০৪ ঠা আগস্ট, ২০২০ রাত ৯:২০

আকন বিডি বলেছেন: এবিষয়ে আপনি ভালো বলতে পারবেন। আমি এখনও নভিস।

০৪ ঠা আগস্ট, ২০২০ রাত ১০:০৫

আকন বিডি বলেছেন: অল্প জীবনের অভিজ্ঞতায় বলি। ভুল হলে বলবেন।
আমরা জানি না আমরা কি চাই, কিভাবে চাই, কেন চাই, পেলে আমাদের সুবিধা অসুবিধা কি, পেলে মেনে নেই না, আরো চাই,
কি করলে কি হবে এটা না বোঝা।
আর সব সময় নদীর ঐ পাশ উত্তম।সেই মরিচিকার পিছনে চক্ষু বুঝে ছুটে চলা।
কখন থামতে হবে না জানা। ইত্যাদি ইত্যাদি।
আপনার মতামত কি?

৩| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০২০ রাত ৯:৩৭

সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: ১। একবার না পারিলে দেখ শতবার। এদেশের মানুষের কর্মসংস্থানে আদম ব্যাপারীদের অবদান আছে। তাদের উদ্দেশ্য যাই থাক না কেন। যারা বিদেশে যায় তাদের মধ্যে বাইরে যাওয়ার অদম্য ইচ্ছা থাকে যা সহজে দমে না।
২। ছেলের পরিচয় কি উনি দিতে চান না? যে জমানা চলছে আমাদের অনেককেই বৃদ্ধ বয়স পর্যন্ত কাজ করতে হতে পারে। তবে অনেক ক্ষেত্রে এই কাজ করা শান্তিদায়কও হতে পারে। বৃদ্ধ বয়সে কর্মহীনতাও অনেকের কষ্টের কারণ। তবে ছেলে অথবা মেয়ে যেটাই হোক সন্তানের আয়ের দিকে তাকিয়ে থাকতে কেউ চায় না এই জমানায়। যুগ পাল্টে গেছে। নিজের বৃদ্ধ বয়সের ব্যবস্থা নিজেরই আগে থাকতে করার চেষ্টা করা উচিত। পরনির্ভরশীলতা অশান্তির কারণ তৈরি করে।

০৪ ঠা আগস্ট, ২০২০ রাত ৯:৫৩

আকন বিডি বলেছেন: ১.এটা ঠিক, তারা বৈধ্য, অবৈধ্য উপায় বিদেশে মানুষ পাঠিয়েছে। যার অবদান স্বীকার করতে হবে। তবে রাষ্ট্রীয় ভাবে কিছু সহজ পলিসি যা বৈদেশিক কর্মসংস্থানে অগ্রহ হয় সে ব্যবস্থা করা উচিত।
২. ঠিক পয়সা নয় বরং একটি সন্তান থেকেও নেই এই ব্যাথা বেশি বিধে।

৪| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০২০ রাত ৯:৪৭

শেরজা তপন বলেছেন: গতকালকের টাও পড়েছিলাম কিন্তু মন্তব্য করা হয়নি। ভাল লাগছে- আরো পর্ব আছে মনে হয়, নাকি?

০৪ ঠা আগস্ট, ২০২০ রাত ৯:৫৬

আকন বিডি বলেছেন: বস এসব হাবিজাবি।
আপনার লেখার অপেক্ষায় আছি।

৫| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০২০ রাত ১০:২০

চাঁদগাজী বলেছেন:



আমরা তো ১৯৭১ সালে, যুদ্ধে যাবার আগেই জানতাম, আমাদের নাগরিক জীবন গড়া হবে ৬ দফার মননে; ১৯৭৪ সালের শেষে দিকে আমরা জানতাম "বাকশাল" ভাবনানুসারে আমাদের অর্থনীতি গড়ে উঠবে; সেগুলো কেন হারিয়ে গেলো?

০৪ ঠা আগস্ট, ২০২০ রাত ১০:৪০

আকন বিডি বলেছেন: ৬দফা ছিল স্বাধিকার কিন্তু ১৯৭১ সালে সেটি হয় স্বাধীনতা তাই নয় কি?
যা প্রয়োজন ছিল ১৯৭১ সালের পর পর তা ৭৪ করে ব্যাক ফায়ার করে?
আপনি আমেরিকায় কবে যান, কেন যান?

৬| ০৪ ঠা আগস্ট, ২০২০ রাত ১১:১১

চাঁদগাজী বলেছেন:



আমি আমেরিকা প্রথমে এসেছিলাম পড়তে পড়ে বাংলাদেশে চাকুরী করেছি, পরে আমেরিকায় চাকুরী করেছি। সাল দিলাম না একটা বিশেষ কারণে, স্যরি।

৭| ০৫ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১২:০৭

রাজীব নুর বলেছেন: জীবনের রঙ ঢং সব বদলে গেছে।

৮| ০৬ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১০:০২

ওমেরা বলেছেন: আপনার বন্ধু এখন কেমন আছে ?
ছোট বেলায় ছেলেকে চাচা নিয়েছে এখন তো সে চাচার ছেলে বাবাব খোঁজ নিবে কেন!!

০৬ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১০:৩৯

আকন বিডি বলেছেন: ২০১৯ সালে তার সাথে কথা হয়। আলহামদুল্লিলাহ ভালো আছে। নিজে একটি ছোট রেস্টুরেন্ট এর মালিক। গাড়ি হাকা। সুখেই আছে।

আসলে এ ঘটনা শুনে খুব খারাপ লেগেছে। এগুলো সেই দেশে নিয়মিত ঘটনা। আমাদের এখনও শুরু হয়েছে। তাই হয়তো খারাপটা বেশি লেগেছে।

৯| ০৬ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১০:৫৫

মিরোরডডল বলেছেন:



প্রতিটা মানুষের জীবনের একটা গল্প থাকে । কারোটা অনেক বেশী বৈচিত্র্যময় কারো বা কম ।
সন্তানের জন্য করে জীবন পার করে দেয় মানুষ, অথচ সেই সন্তান যখন একবার দূরে যায় আর ফেরেনা । তৈরি হয় দূরত্ব । সবাই এক না হয়তোবা কিন্তু অনেকেই যারা এই কাজটা করে, বাবা মাকে একা ফেলে কষ্ট দেয়, তারা একবারও ভাবেনা তাদেরও এমন দিন আসবে ।

যতদিন কর্মঠ থাকা যায় কাজের মধ্যে এটা অবশ্যই ভালো শরীর ও মনের জন্য কিন্তু যখন মানুষ উপায় নেই বুড়ো হয়েও বাধ্য হয়ে কাজ করে সেটা কষ্টদায়ক ।

০৭ ই আগস্ট, ২০২০ সকাল ৮:০৬

আকন বিডি বলেছেন: ঠিক। পারস্পারিক বোঝা পরার অভাব অনেক ক্ষতি ডেকে আনে। সে মনে করে ছিল তার ছেলে বড় কিছু হবে, বড় হয়েছে ঠিকই কিন্তু ছেলে আর তার থেকে নাই।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.