![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সিলেট ১
এইচএসসির পর যেসব ভার্সিটিতে এডমিশন পরীক্ষা দিতে যাই তার মধ্যে শাহ্ জালাল ভার্সিটি অন্যতম। এই শহরে আমার জন্ম।আবছ কিছু যাও মনে পরে তা বুঝে ওঠার পূর্বেই হারিয়ে যায়। একা যেতে হবে সেই শহরে। সকাল বেলা যে বাসে টিকিট করলাম হানিফ এন্টাপ্রাইজ, সেটিও তাদের প্রথম সিলেট এর উদ্দেশ্যে যাত্রা করবে এবং আমিই প্রথম যাত্রী-- টিকিটও কাটলাম এ১।
রাত্রি ১০.০০ টার সময় উপস্থিত হই, বাসে আরোহন করার পর তারা যাত্রীদের মিস্টি আর একটি রজনীগন্ধার স্টিক দিয়ে অভিন্দন জানায়। বাসের অন্যান্যরাও পরীক্ষার্থী। ভার্সিটিতে এডমিশন পরীক্ষার এই এক মজা, দল বেধে পরীক্ষা দিতে যাওয়া। রাত তিন কি সাড়ে তিনটায় সিলেট পৌছে যাই। আমরা কিছু বলার পূর্বেই সুপারভাইজার সাহেব আমাদের শাহ্ জালাল ভার্সিটি পর্যন্ত পৌছে দিবেন বলে অবহিত করলেন। আমরা তাদের ধন্যবাদ দিলাম। সেই রাতে সিলেটে নামলে অনেক সমস্যা দেখা দিত।
আমাদের ভার্সিটি গেইটে নামিয়ে দেওয়া হল। তখনও অন্ধকার। এর মধ্যে ভার্সিটির প্রধান রাস্তার ল্যাম্পপোস্টের আলোয় আমরা হলের উদ্দেশ্যে যাত্রা করলাম। মাঝা মাঝি এসে দেখি প্রধান সড়কটি দুই ভাগ হয়ে দুই দিকে গেছে একটা সোজা আর একটি বাম দিকে। আমরা বাম দিকে যাত্রা করলাম যেহেতু কিছু দূরেই একটা ভবন দেখা যাচ্ছে। হল হবে হ্য়তো। সেখানে পৌছে হতাশ, হলই তবে ছাত্রীদের হল।আবার সেই মোরে পৌছে সোজা রাস্তা ধরে হাটলাম এবার। এবার অনেকক্ষুন হাটার পর ছাত্রদের হলের দেখা পেলাম। আমরা টিভি রুমে উঠলাম। যে যার মত সেখানের বেঞ্চ, চেয়ার এ বসে বিশ্রাম নিতে থাকলাম।এর মাঝে কিছু ভার্সিটির স্টুডেন্ট আসলেন। তাদের একজন মাহি ভাই আমার খোঁজ খবর নিয়ে বললেন ''তুমি আমার সাথে আমার রুমে আসো, তুমি আমার গেস্ট"।গেলাম তার সাথে তার রুমে।গিয়ে দেখি আরো দুইজন শিক্ষার্থী রয়েছে। মাহি ভাই বললেন "তোমরা পরিচয় হয়ে নাও, একবিছানা দুই জন শেয়ার করবা আর আমি পাশের রুমে আছি, কোন প্রয়োজন হলে বলবা"।
সকাল হলে তিনি আসলেন আমাকে নাস্তা করানোর জন্য। গেলাম তার পিছু পিছু ।পরোটা, ডাল, সবজি ভাজি আর ডিম ভাজি। তিনিই দাম দিলেন। যতই বলি আমি দেই ভাই, তার এক কথা "তুমি আমার গেস্ট, তুমি দিবা ক্যান।"
পরীক্ষা ছিল সকালে আর দুপুরে। সেই দিনের পরীক্ষার সিট পরে ছিল ক্যাম্পাসেই তাই ক্যাম্পাসের বাইরে যেতে হয় নাই। দুপুরবেলা খেতে গিয়ে একভাই এর সাথে পরিচয় হল, বাড়ি তার সুনামগঞ্জ, সমাজকল্যাণ এ পড়েন। কোন রুমে উঠেছি জানতে চাইলেন। শুনে আমার ইচ্ছা হচ্ছিল তখনই কেটে পরি। রুমটা ছাত্রদলের এক বড় ভাইর। আমি জানলে সেই রুমে উঠতামই না। দুপুরের খাবার পর রুমে গিয়ে দেখি সেই বড় ভাই আর তার সংগিসহ সিগারেট খাচ্ছেন এর মধ্যে মাহি ভাইও আসলেন। আমরা কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর তারা দরজা খুলে ভিতরে ঢুকতে দিলেন। আমার বিস্তারিত যেনে তিনি বিদায় নিলেন।
সেই বড় ভাই রাত্রে আসেন, কিছুক্ষণ থেকে তার প্রয়োজনী জিনিস নিয়ে বেড়িয়ে যাওয়ার আগে আমাদের সাথে কথা বলেন। এর পূর্বেই মাহি ভাইকে বলেছিলাম আমি যদি আগে এই রূম সম্পর্কে জানতাম তাহলে তার গেস্ট হতাম না। বিষয়টি তার সাথে আমারই সামনে বড় ভাইকে অবহিত করলে তিনি বলেন "এখনে ভয়ের কিছু নাই, তুমি টিকলে তোমার ট্র্যাকে তুমি যাবা। পছন্দ হলে তুমি আমাদের সাথে যোগ দিবা না হল নাই, এখানে জোড়াজুুুড়ির কিছুই নাই।" আমি নিরবে তার কথাগুলি শুনি। তিনি আমাদের উইস করলেন, যেন ভাল ভাবে পরীক্ষা দেই, ভয় যেন না পাই। রুমে তিনি আমার সাথে সবার শেষে হ্যান্ডশেক করে চলে যান।
রাতের খাবারের জন্য মাহি ভাই আমাকে নিয়ে ডাইনিং হলে নিয়ে যান। আমাকে টেবিলে বসিয়ে তিনি মেস ম্যানেজারের কাছে যান অর্ডার করতে। মাহি ভাই আর ম্যানেজারের মাঝে কথোপোকথন কিছু না শুনলেও এটা বুঝতে পারি খাবারের টাকার জন্য ম্যানেজার জোড়াজুড়ি করছেন, (সম্ভবত মেসে কিছু বাকি পরে ছিল)। কিছুক্ষণ পর তিনি এসে বলেন "ভাইয়া তোমাকে খাবার দিবে, যা লাগে খেয়ে নিবা, কোন সমস্যা হলে ম্যানেজারকে বলবা।" আমি তার খাওয়ার কথা বললে তিনি এত তাড়াতাড়ি খান না বলে জানান। আমি একটু ইনস্সিট করি বিল দেওয়ার জন্য, তার ঐ এক কথা "তুমি আমার গেস্ট, তুমি বিল দিবা ক্যান?"।
রাত্রের খাবার খেয়ে রুমে এসে বিছানা শুয়ে পরি, একটু তন্দ্র লাগতেই, একজনকে দেখলাম তাড়াহুড়া করে রুমে এসে গামছায় পেচিয়ে দোনালা বন্দুক নিয়ে গেল। ঘুম সব শেষ।চোখ ডলি আর একজন আরেক জনকে দেখি। আধা ঘন্টা পর তিনি বেশ ধীরে সুস্থে বন্দুক সহ প্রবেশ করলেন। আমরা তাকিয়ে আছি দেখে তিনি হেসে বললেন "একটু মহরা দিয়ে আসলাম"।
এরপর কোন রকম রাত পার করেই আবার পরীক্ষার উদ্দেশ্যে যাত্রা। সকালের পরীক্ষার সিট আজকে ক্যাম্পাসের বাইরে পরেছে। কোন মতে পরীক্ষা দিয়ে ক্যাম্পাসে আসি দুপুরের পরীক্ষ দিতে। মাঝে রুমে আসি ফ্রেশ হতে। তখন রুমে মাহি ভাই পরিচয় করিয়ে দেন সিইসির সোহাগ ভাইয়ের সাথে। তিনি পরীক্ষার প্রশ্নটা নিয়ে কিছু জিজ্ঞাস করতে গিয়েও পরে বাদ দিলেন, বললেন রাতে দেখবেন।
আমার শাহ্ জালাল ভার্সিটির সর্বশেষ পরীক্ষার সিট ছিল ফিজিক্স ডিপার্টমেন্টে। পরীক্ষা দিয়ে বের হতেই দেখি সেই বড় ভাই মিছিলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। পিছনে শখানেকের মত ছাত্র।
পরীক্ষা দিয়ে রুমে আসি দ্রুত। দেখি মাহি ভাই ঘুমাচ্ছেন। তাকে ডেকে তুলে বলি "ভাইয়া আমাকে যেতে হবে তাড়াতাড়ি। আম্মা কল দিয়েছেন"
"কি বল, পরীক্ষা শেষ, তুমি একটু শহর ঘুরে দেখবা না।শহর যদি না ঘুরো, ক্যাম্পাসটা একটু দেখার জন্য থাকো।কালকে যাও।"
"না ভাইয়া, আম্মা যেতে বলেছেন, আমাকে যেতেই হবে"।
"আচ্ছা ঠিক আছে যাও, ভাড়া লাগলে বলো। আর একটা দিন থাকলে ভালো হইতো, আচ্ছা যাও, পৌছে ফোন দিও"
আমি কোন মতে একটা রিক্সা ধরে বাস স্ট্যান্ডে আসি। সবকটা বাস ভর্তি। শেষে শ্যামলীতে ইন্জিন কভারে যায়গা পাই।
সারাটা পথ আমি ঢুলতে ঢুলতে আসি। আমার এই অবস্থা দেখে স্টাফরা হাসাহাসি করে। কিছুক্ষণ পর পর বলে ভাই সাবধানে বসেন।
রাত সাড়ে এগারোটায় বাসায় পৌছে এক আরামের ঘুম দেই।
ঠিক দুই মাসের মাথায় পত্রিকায় দেখি সেই বড় ভাই প্রতিপক্ষের গুলিতে ক্যাম্পাসেই নিহত হন। তিনি ছিলেন নটরডেম কলেজের ছাত্র।
ঢাকা ১
তখন জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিতে যাই। সকালের পরীক্ষা দিয়ে ক্যাম্পাসে হাটছি। পথে কজন শিক্ষার্থীদের দেখলাম অসুস্থ সহপাঠির জন্য টাকা তুলছে। আমাকে দেখে একজন টাকা দেওয়ার জন্য বেশ জোড়াজুড়ি করলেন। আমি তাকে বলি এতো জোড়াজুড়ি করারতো প্রয়োজন নাই। তিনি আমার উপর ক্ষেপে গেলেন।
"এই ওরে বান, রড দিয়া পিডামু ওরে, ও আমারে ক্ইছে আমি জোড়াজুড়ি করছি, এই তুই এখানে খারা, আজকে সারা দিন এইখানে খারাইয়া থাকবি"
আমি চুপচাপ দাড়িয়ে থাকলাম।
তার সাথের একজন আমার বাড়ি কোথায় জিজ্ঞাসা করে।
"ভাই ওর বাড়ি বরিশাল"
"তো কি হইছে, ওরে রড দিয়া পিডামু"
এরই মাঝে তাদের মধ্যে চোখেচোখে কি কথা হয় কে যানে।
ছোটজন কিছু টাকা দিয়ে যেতে বলেন। আমিও কিছু টাকা দিয়ে চলে আসি।
কুইজ: আমি কেন তারাহুরো করে ভার্সিটি ত্যাগ করি?
ছবি: ফেইসবুক থেকে নেয়া।
১০ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১০:৪৫
আকন বিডি বলেছেন: ঐটা সিলেট বিষয়ক প্রশ্ন। উত্তর দেন দেখি পারেন কি না।
নেন গরম গরম চা নি।
২| ১০ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১০:৫৩
মিরোরডডল বলেছেন:
চা টা সেইরকম হয়েছে !
আমারতো এখন এটা চাই কিন্তু রাত তিনটায় বানাতে আলসেমি
সিলেটে সেই রুমে ঘুম ক্রাইসিস ছিল, বড় ভাইদের আনাগোনা ।
ঐযে শেষে বলা হলো বাসায় ফিরে শান্তিতে ঘুম ।
পাশাপাশি আরও ঝামেলা ছিলই খাবার ।
১০ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১০:৫৭
আকন বিডি বলেছেন: নাহ ম্যাম। সিইসির সোহাগ ভাইর ভয়ে। আমার কোন প্রিপারেশন ছিল না। আমি শুধু বেড়াতে গিয়েছিলাম। সেই প্রশ্ন ধরলে আমার সব জাড়িজুড়ি ফাঁস হয়ে যেতো।প্রেসটিজ পাংচার হত। এর জন্য তাড়াতাড়ি পালাইছি।
৩| ১০ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১০:৫৫
মিরোরডডল বলেছেন:
আজ আকনের পোষ্টের এই অবস্থা কেনো, বিরানভূমি !!!!
১০ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১০:৫৭
আকন বিডি বলেছেন: কি রকম?
৪| ১০ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১১:০৭
মিরোরডডল বলেছেন:
সেই প্রশ্ন ধরলে আমার সব জাড়িজুড়ি ফাঁস হয়ে যেতো।প্রেসটিজ পাংচার হত। এর জন্য তাড়াতাড়ি পালাইছি।
ভেরি ফানি
লেখক বলেছেন: কি রকম?
ঐযে বললাম বিরানভুমি !! লোকজন কোথায়, কোনও আড্ডা নেই !
১০ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১১:১২
আকন বিডি বলেছেন: আজকে রোস্টরিং এর বন্ধ ছিল তাই লেখা শুরু করি সকাল বেলা। মাঝে অফিস থেকে ফোন আসলে যেতে হয়। লেখাটা তাই ড্রাফট করি। অফিস থেকে ফিরে লেখা শেষ করে পোস্ট করি রাত ৯.৩০ এ। কিন্তু সময়টা দেখায় সকাল ৯.৪০। তাই প্রথম পৃষ্ঠায় আসে নাই আর তাই বিরান ভূমি দেখায়।
৫| ১১ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১:০৪
মা.হাসান বলেছেন: আগের টাইম লাইনে পোস্ট হওয়া একটা বড় সমস্যা, সামু এরকম অনেক সমস্যাই ঠিক করতে আগ্রহী না।
পোস্ট যত সিটিঙেই লেখেন না কেনো, ফাইনাল ড্রাফট নতুন এডিটরে কপি-পেস্ট করে পোস্ট দেবেন, তাহলে বর্তমান সময়ে আসবে।
নব্বইয়ের দশকের শুরুতে ভর্তি পরীক্ষার্থীদের এতটা সমস্যা ছিলো না। আমরা ভর্তি পরীক্ষা দেবার সময়ে কোনো সমস্যা দেখি নি। ছাত্র সংগঠন গুলো শোডাউন করতো, কিন্তু সম্ভাব্য কাস্টোমারদের সাথে খারাপ ব্যবহার করতো না। পরে দেখেছি, ভর্তি প্রত্যাশি দের সংখ্যা অস্বাভাবিক ভাবে বেড়ে গিয়েছিলো। ভর্তি পরীক্ষার সময়ে হলের ডাইনিঙ-ক্যান্টিনে খাবার পাওয়া মুস্কিল হতো। সাধারণ ছাত্রদের অনেকেই ভর্তি পরীক্ষার সময়ে হল ছেড়ে পালাতো, ভর্তি পরীক্ষার্থী ছাত্র যে রুমে ছিলো সেখান থেকে কিছু জিনিস-পত্র চুরি করে পালানোর ঘটনাও ঘটেছে। সময়ের সাথে সাথে উন্নতি ঘটে নি, অবনতিই মনে হয় হয়েছে।
১১ ই আগস্ট, ২০২০ ভোর ৫:৪২
আকন বিডি বলেছেন: সামুতে অনেক মেজর ডেভেল্পমেন্ট দরকার। শুনে ছিলাম টাকা পয়সার সমস্যা। তাই অনেক সমস্যা সলভ করা যায়না।
আমি ভালো ব্যবহার পেয়েছি সবখানে। ওইটা ছিল ব্যতিক্রম। আমার এই ঘটনা ২০০৫ সালের। তখনও কিছুটা ভালো ছিল। সব দল ছিল। তাই কাস্টোমারদের টানতে তাদের আন্তরিকতা ছিল। এর এখনতো এক দল এক নীতি। এখন এই এক দলের মধ্যে কোন উপদল সেইটা নিয়া টানা হেচড়া।
ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।
©somewhere in net ltd.
১|
১০ ই আগস্ট, ২০২০ রাত ১০:৩৭
মিরোরডডল বলেছেন:
সিলেটের লেখাটা পড়ছিলাম , ভালোই লাগছিলো কিন্তু শেষে এরকম একটা শকিং নিউজ থাকবে বুঝিনি
জাহাঙ্গীরনগরের অভিজ্ঞতাটা খুবই খারাপ
কেনো আর ? মাইর খাবার ভয়ে
গণ্ডগোলের পূর্বাভাষ !