নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
১৯৮৭ সালে আইনজীবী হিসাবে ময়মনসিংহ বারে এবং পরে ঢাকা বারে যোগদান করি। ১৯৯২ সালে সুপ্রিম কোর্ট বারে যোগ দেই।
১ম সংশোধনী
কংগ্রেস এমন কোন আইন প্রণয়ন করতে পারবে না যা কোন একটি ধর্মকে সমর্থন করে, বা ধর্ম পালনে বাঁধা দেয়; অথবা বাক স্বাধীনতাকে, বা সংবাদপত্রের স্বাধীনতাকে; অথবা জনগণের শান্তিপূর্ণ সমাবেশের, এবং অভিযোগসমূহের প্রতিকারের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানানোর অধিকারকে সীমিত করে।
ভাষ্য
সংবিধানের ১ম সংশোধনী ১৭৮৯ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর কংগ্রেসে পাস হয়, আর ১৭৯১ সালের ১৫ ডিসেম্বর তা অনুমোদিত হয়। এই সংশোধনীর মাধ্যমে জনগণের পাঁচটি গুরুত্বপূর্ণ অধিকারকে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দেয়া হয়। অধিকারগুলি হল --
(১) ধর্মীয় স্বাধীনতা,
(২) বাক স্বাধীনতা,
(৩) সংবাদ প্রকাশের স্বাধীনতা,
(৪) সমাবেশের স্বাধীনতা এবং
(৫) সরকারের আছে ক্ষতিকর আইনসমূহের পরিবর্তনের জন্য দাবি জানানোর অধিকার।
২য় সংশোধনী
প্রতিটি মুক্ত রাজ্যের নিরাপত্তার জন্য যথাযথভাবে বিধিবদ্ধ মিলিশিয়া বাহিনীর প্রয়োজন, জনগণের অস্ত্র রাখার অধিকারকে লঙ্ঘন করা যাবে না।
ভাষ্য
সংবিধানের ২য় সংশোধনী ১৭৮৯ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর কংগ্রেসে পাস হয়, আর ১৭৯১ সালের ১৫ ডিসেম্বর তা অনুমোদিত হয়। বাক্যটির ব্যাকরণগত গঠনের কারণে ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। প্রথম দিকে এটা স্পষ্ট ছিলোনা যে কার অধিকার আছে অস্ত্র রাখার। মিলিশিয়াদের না জনগণের। পরে অবশ্য সুপ্রিম কোর্ট ব্যাখ্যা করে বলেছে জনগণের অধিকার হল অস্ত্র রাখার। এই সংশোধনীর ফলে অস্ত্র রাখার অধিকার যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের মৌলিক অধিকারে পরিণীত হয়েছে।
৩য় সংশোধনী
শান্তিকালীন সময়ে কোন সৈনিক মালিকের সম্মতি ছাড়া কোন বাড়িতে বসবাস করতে পারবে না, তবে যুদ্ধকালীন সময়ে আইন দ্বারা নির্ধারিত নিয়মে বাস করতে পারবে।
ভাষ্য
সংবিধানের ৩য় সংশোধনী ১৭৮৯ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর কংগ্রেসে পাস হয়, আর ১৭৯১ সালের ১৫ ডিসেম্বর তা অনুমোদিত হয়। বর্তমান সময়ে এই সংশোধনীর কোন কার্যকারিতা নাই। এই সংশোধনীর পিছনের কারণ হল, আমেরিকান বিপ্লবের সময় ব্রিটিশ সৈন্যরা মানুষের বাসায় জোর করে ঢুকে বসবাস করতো এবং বাড়ির মালিকের সাথে খারাপ ব্যবহার করতো। মার্কিন সৈন্যরা এইরকম আচরণ করবে না, জনগণকে এই নিশ্চয়তা দেয়ার জন্যই সংবিধানের এই সংশোধনী আনা হয়েছে।
৪র্থ সংশোধনী
শরীর, বাড়ী, দলিলপত্র, এবং সম্পত্তি অযৌক্তিক তল্লাশি এবং জব্দ করার বিরুদ্ধে জনগণের অধিকার লঙ্ঘন করা যাবে না, এবং শপথ বা দৃঢ়ভাবে ঘোষণা করা হয়েছে এমন কোন মামলার ক্ষেত্রে ওয়ারেন্ট ইস্যু করা যাবে, এবং কোন জায়গা তল্লাশি করা হবে সেই স্থানের নাম, এবং কোন ব্যক্তি বা জিনিস জব্দ করা হবে তা উল্লেখ করতে হবে।
ভাষ্য
সংবিধানের ৪র্থ সংশোধনী ১৭৮৯ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর কংগ্রেসে পাস হয়, আর ১৭৯১ সালের ১৫ ডিসেম্বর তা অনুমোদিত হয়। সংবিধানের এই বিধানের দ্বারা জনগণকে পুলিশের হয়রানির হাত থেকে রক্ষা করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পুলিশ বিনা ওয়ারেন্টে কোন ব্যক্তির দেহ বা বাড়ি-ঘর তল্লাশ করতে পারবে না বা কোনকিছু জব্দ করতে পারবে না। সুনির্দিষ্ট মামলার প্রেক্ষিতে আদালত নিশ্চিত হয়ে ওয়ারেন্ট ইস্যু করলে, কেবল মাত্র সেই ওয়ারেন্টের ভিত্তেতেই পুলিশ তল্লাশি করতে পারবে। উপরোক্ত সে ওয়ারেন্ট এমনি সুনির্দিষ্ট হতে হবে যে, তাতে কোন জায়গা বা কোন ব্যক্তিকে তল্লাশি করা হবে তা ওয়ারেন্টটি স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকতে হবে। এককথায় কাকে তল্লাশি করবে, কোথায় তল্লাশি করবে, কি জব্দ করবে তা ওয়ারেন্ট উল্লেখ থাকতে হবে। আইন শৃঙ্খলা রক্ষার নামে বা নিরাপত্তার নামে পুলিশ যাতে কোন নাগরিককে হয়রানি করতে না পারে তার জন্য এই বিধান।
৫ম সংশোধনী
জুরির অভিমত বা অভিযোগ ছাড়া মারাত্মক, বা জঘন্য অপরাধের জন্য কোন ব্যক্তিকে বিচারের সম্মুখীন করা যাবে না, তবে যুদ্ধের সময় বা জনগণের বিপদের সময় প্রকৃত ভাবে কর্মে নিয়োজিত স্থল বা নৌবাহিনীর সদস্য বা মিলিশিয়া ব্যতীত; অথবা একই অপরাধের জন্য কোন ব্যক্তিকে দুইবার তার জীবন বা অঙ্গ বিপদের সম্মুখীন করা যাবে না; অথবা কোন ফৌজদারি বিচারের ক্ষেত্রে কাউকে নিজের বিরুদ্ধে সাক্ষী দিতে বাধ্য করা যাবে না, অথবা আইনের যথাযথ প্রয়োগ ছাড়া কাউকে জীবন, স্বাধীনতা, বা সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করা যাবে না, বা যথাযথ ক্ষতিপূরণ না দিয়ে কারো ব্যক্তিগত সম্পত্তি রাষ্ট্রীয় কাজে ব্যবহারের জন্য নেয়া যাবে না।
ভাষ্য
সংবিধানের ৫ম সংশোধনী ১৭৮৯ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর কংগ্রেসে পাস হয়, আর ১৭৯১ সালের ১৫ ডিসেম্বর তা অনুমোদিত হয়। ফৌজদারি মামলার বিচারের ক্ষেত্রে আসামিকে কতগুলি নিরাপত্তা দেয়া হয়েছে। যুদ্ধের সময় সামরিক বাহিনীতে প্রকৃত পক্ষে কর্মরত সদস্যদের ক্ষেত্রে এই নিয়মের ব্যতিক্রম করা যাবে। ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত আসামিরা নিম্ন লিখিত আইনি নিরাপত্তা পাবে --
(১) সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তে বিচার করতে হবে,
(২) একই অভিযোগে দুইবার বিচার করা যাবে না,
(৩) কোন অভিযুক্ত আসামিকে নিজের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিতে বাধ্য করা যাবে না,
(৪) আদালতের রায় ছাড়া কোন অভিযুক্ত আসামিকে মৃত্যুদণ্ড, কারাদণ্ড বা অর্থদণ্ড দেয়া যাবে না।
এই সংশোধনীর সব শেষ বিষয় হচ্ছে, রাষ্ট্রের প্রয়োজনে কারো ব্যক্তিগত সম্পত্তি অধিগ্রহণ করলে সেই ব্যক্তিকে ওই সম্পত্তির জন্য উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
৬ষ্ঠ সংশোধনী
যে স্থানে অপরাধ সংগঠিত হয়েছে, সেই রাজ্যের এবং জেলার, যে জেলাগুলি আগেই আইনের দ্বারা নির্ধারিত হয়েছে, নিরপেক্ষ জুরিদের দ্বারা সব ফৌজদারি মামলার ক্ষেত্রে অভিযুক্ত ব্যক্তি দ্রুত এবং প্রকাশ্য বিচার লাভ করার অধিকারী হবে, এবং অপরাধের প্রকৃতি এবং অভিযোগের কারণ অভিহিত করতে হবে; তার বিরুদ্ধে প্রদত্ত সাক্ষীকে জেরা করার সুযোগ দিতে হবে, তার পক্ষের সাক্ষীকে হাজির করতে বাধ্যতামূলক সমন দিতে হবে, এবং তার পক্ষে আইনজীবী নিয়োগ দিতে হবে।
ভাষ্য
সংবিধানের ৬ষ্ঠ সংশোধনী ১৭৮৯ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর কংগ্রেসে পাস হয়, আর ১৭৯১ সালের ১৫ ডিসেম্বর তা অনুমোদিত হয়। এই সংশোধনীতে ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত আসামির কতগুলি অধিকারের কথা বলা হয়েছে।
(১) নিরপেক্ষ জুরিদের দ্বারা বিচার করতে হবে;
(২) অপরাধ যে রাজ্যের যে জেলায় সংগঠিত হয়েছে, সেই এলাকার জুরিদের দ্বারা বিচার করতে হবে;
(৩) বিচার কাজ দ্রুত শেষ করতে হবে;
(৪) বিচার কাজ প্রকাশ্য আদালতে করতে হবে;
(৫) আসামিকে জানতে দিতে হবে সে কি অপরাধ করেছে;
(৬) আসামিকে জানতে দিতে হবে কি কারণে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হচ্ছে;
(৭) আসামির বিরুদ্ধে যারা সাক্ষ্য দিবে তাদেরকে জেরা করার অধিকার আসামিকে দিতে হবে;
(৮) আসামি যদি কাউকে সাফাই সাক্ষী মানে, সেই সাক্ষী যাতে আদালতে এসে সাক্ষী দেয়, আদালত বাধ্যতামূলক ভাবে সেই সাক্ষীকে হাজির হওয়ার সমন দিতে হবে;
(৯) আসামি যদি নিজে তার পক্ষে আইনজীবী নিয়োগে করতে না পারে, তা হলে রাষ্ট্র তার পক্ষে আইনজীবী নিয়োগে করবে।
৭ম সংশোধনী
কমন ল'র মামলার ক্ষেত্রে, যেখানে বিরোধীও মূল্যমান বিশ ডলারের বেশি, জুড়ি কর্তৃক বিচারের অধিকার একজন মানুষের থাকবে, এবং জুড়ি কর্তৃক যে ঘটনার বিচার হবে, কমন ল' তে বিপরীত কোন বিধি না থাকলে সেই ঘটনার পুনর্বিচার যুক্তরাষ্ট্রের কোন আদালত করতে পারবে না।
ভাষ্য
সংবিধানের ৭ম সংশোধনী ১৭৮৯ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর কংগ্রেসে পাস হয়, আর ১৭৯১ সালের ১৫ ডিসেম্বর তা অনুমোদিত হয়। দেওয়ানী মামলার বিচার্য বিষয় বস্তুর মূল্য ২০ ডলারের বেশি হলেই জুরিদের দ্বারা বিচার করতে হবে। একটা মামলার দুইটা অংশ থাকে -- ঘটনা বা ফ্যাক্ট, এবং আইনগত দিক। জুরিরা মামলার ঘটনার দিকটা বিচার করেন। অর্থাৎ ঘটনার সত্য মিথ্যা যাচাই করেন। ঘটনার বিষয়ে জুরিরা যে সিদ্ধান্ত নিবেন তা চূড়ান্ত। এই ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রে কোন আদালত পুনর্বিচার করতে পারবে না। অর্থাৎ ঘটান বা ফ্যাক্ট এর ব্যাপারে আপীল করা যাবে না।
৮ম সংশোধনী
অতিরিক্ত জমানত (bail) ধার্য করা যাবে না, অতিরিক্ত জরিমানা আরোপ করা যাবে না, নিষ্ঠুর এবং অস্বাভাবিক শাস্তি প্রদান করা যাবে না।
ভাষ্য
সংবিধানের ৮ম সংশোধনী ১৭৮৯ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর কংগ্রেসে পাস হয়, আর ১৭৯১ সালের ১৫ ডিসেম্বর তা অনুমোদিত হয়। সংবিধানের এই সংশোধনীর মূল লক্ষ্য হল অভিযুক্ত এবং দণ্ডিত ব্যক্তির প্রতি কোন নিষ্ঠুর আচরণ করা যাবে না। বিচারের উদ্দেশ্য এই না যে বিচারের নামে কারো প্রতি প্রতিশোধ গ্রহণ করা। বিচারের উদ্দেশ্য হবে আইনের প্রয়োগ, এবং সমাজে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখা।
৯ম সংশোধনী
এই সংবিধানে কতিপয় অধিকার উল্লেখ করে, জনগণের অনন্যা অধিকারগুলিকে অস্বীকার বা অবজ্ঞা করা হচ্ছে না।
ভাষ্য
সংবিধানের ৯ম সংশোধনী ১৭৮৯ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর কংগ্রেসে পাস হয়, আর ১৭৯১ সালের ১৫ ডিসেম্বর তা অনুমোদিত হয়। সংবিধান প্রণেতারা আশঙ্কা করছিলেন যে, সংবিধানে কতগুলি অধিকারের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু এই বাইরেও আরো অনেক অধিকার আছে। সংবিধানে যে অধিকারগুলির কথা উল্লেখ করা হয়নি, তা যদি পরে আইনের ব্যাখ্যায় অস্বীকার করা হয়। তাই এই আশঙ্কা দূর করার জন্য এবং অন্যান্য অধিকারগুলিকে রক্ষা করার জন্য এই বিধান প্রণয়ন করা হয়েছে।
১০ম সংশোধনী
যেসমস্ত ক্ষমতা এই সংবিধান দ্বারা যুক্তরাষ্ট্রকে দেয় হয় নাই এবং এর দ্বারা রাজ্যগুলিকে বিরত কারও হয়নি, তা রাজ্যগুলি বা জনগণ সংরক্ষণ করবে।
ভাষ্য
সংবিধানের ১০ম সংশোধনী ১৭৮৯ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর কংগ্রেসে পাস হয়, আর ১৭৯১ সালের ১৫ ডিসেম্বর তা অনুমোদিত হয়। এই সংবিধানের দ্বারা যে সমস্ত ক্ষমতা ফেডারেল সরকারকে দেয়া হয়েছে, শুধু সেইসমস্ত ক্ষমতাই কেন্দ্রীয় সরকার বা ফেডারেল গভর্নমেন্ট প্রয়োগ করতে পারবে। বাকি ক্ষমতা রাজ্য সরকারের কাছে থাকবে। এই সংবিধানে কেন্দ্রীয় সরকার বা ফেডারেল গভর্নমেন্টের ক্ষমতা ও কার্যাবলী বর্ণনা করা হয়েছে। রাজ্য সরকারগুলি ক্ষমতা ও কার্যাবলী এই সংবিধানে বর্ণিত হয়নি। কিন্তু এই বিধানের দ্বারা পরোক্ষভাবে রাজ্য সরকারের ক্ষমতাকে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে।
১ম থেকে ১০ম এই দশটি সংশোধনীকে একত্রে বিল অফ রাইট বলে। এই দশটা সংশোধনী একই তারিখে অর্থাৎ ১৭৮৯ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর কংগ্রেসে পাস হয়, আর ১৭৯১ সালের ১৫ ডিসেম্বর অনুমোদিত হয়।
©somewhere in net ltd.