নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি ময়মনসিংহ জেলা স্কুল থেকে ১৯৭৭ সালে এস.এস.সি এবং আনন্দ মোহন কলেজ থেকে ১৯৭৯ সালে এইচ.এস.সি পাশ করেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৪ সালে এলএল.বি (সম্মান) এবং ১৯৮৫ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএল.এম পাশ করি।

মোহাম্মদ আলী আকন্দ

১৯৮৭ সালে আইনজীবী হিসাবে ময়মনসিংহ বারে এবং পরে ঢাকা বারে যোগদান করি। ১৯৯২ সালে সুপ্রিম কোর্ট বারে যোগ দেই।

মোহাম্মদ আলী আকন্দ › বিস্তারিত পোস্টঃ

করোনাভাইরাস কি লেব্রটারীতে সৃষ্টি হয়েছে?

১০ ই এপ্রিল, ২০২০ সকাল ৭:৩৩

করোনাভাইরাস কি লেব্রটারীতে সৃষ্টি হয়েছে



করোনাভাইরাস লেব্রটারীতে সৃষ্ট কোন ভাইরাস না।

একটা বহুল প্রচারিত গল্প হচ্ছে করোনাভাইরাস লেব্রটারীতে সৃষ্টি হয়ে চীনের উহান নগরীতে ছড়িয়ে পড়েছে।
তারপর চীন থেকে সারা বিশ্বে ছড়িয়েছে।

করোনাভাইরাস একটা বৃহৎ ভাইরাস পরিবারের নাম।
এই পরিবারের সদস্যরা হচ্ছে:
১. HKU1,
২. NL63,
৩. OC43,
৪. 229E
৫. SARS,
৬. MERS এবং
৭. নবীন সদস্য SARS-CoV-2

স্ক্রিপস রিসার্চের ইমিউনলজি এবং মাইক্রোবায়োলজির সহযোগী অধ্যাপক ক্রিস্টিয়ান অ্যান্ডারসন এবং তার সহকর্মীরা ভাইরাসটির পিঠে থাকা লম্বা লম্বা কাঁটার মত স্পাইকগুলির প্রোটিনের জেনেটিক টেম্পলেটটি পরীক্ষা করে দেখেছেন।

SARS ভাইরাসটির সাথে এই নতুন SARS-CoV-2 ভাইরাসটির অনেক মিল আছে। SARS ভাইরাসটি এই ভাইরাসটির মতো একই ধরণের শ্বাসযন্ত্রে তীব্র সমস্যার সৃষ্টি করে। বৈজ্ঞানিকরা দেখেছেন এই দুই ভাইরাসের মধ্যে জেনেটিক কোডে সামান্য পার্থক্য আছে।

কম্পিউটারে মডেল (computer simulation) তৈরি করে দেখা গেছে ভাইরাসটি মানব কোষের সাথে খুব ভাল ভাবে সংযুক্ত হতে পারে না। বিজ্ঞানীরা যদি ইচ্ছাকৃত ভাবে এই ভাইরাসটি সৃষ্টি করতেন তাহলে তারা এই ধরণের ভাইরাস বেছে নিতেন না যেটির কম্পিউটার মডেল (computer simulation) ঠিক মত কাজ করে না। তবে বিজ্ঞানীরা স্বীকার করেছেন সৃষ্টিকর্তা বিজ্ঞানীদের চেয়ে অনেক জ্ঞানী, কারণ দেখা গেছে বিজ্ঞানীরা যে ভাবে কম্পিউটার মডেল করেছেন ভাইরাসটি তারচেয়ে ভিন্ন ভাবে মানব কোষের সাথে নিজেকে যুক্ত করতে পারে।

করোনাভাইরাস যে লেব্রটারীতে সৃষ্টি হয় নাই তার আরেকটা সূত্র হচ্ছে। এই ভাইরাসের সামগ্রিক আণবিক কাঠামো (molecular structure) আগের করোনাভাইরাস থেকে পৃথক ধরণের। বরং বাদুড় এবং পাঙ্গোলিনে পাওয়া করোনা ভাইরাসগুলির সাথে অনেক মিল আছে। তবে বাদুড় এবং পাঙ্গোলিনে পাওয়া করোনা ভাইরাসগুলি মানুষের কোন ক্ষতি করতে পারে এখন প্রমাণ পাওয়া যায় নাই।

গবেষকরা বলেছেন কেউ যদি মানুষের ক্ষতি করার জন্য কোন কিছু অর্থাৎ প্যাথোজেন (pathogen) সৃষ্টির কথা ভাবতো, তাহলে তারা এখন একটা ভাইরাসকে বেছে নিতো যে ভাইরাসটা মানুষকে অসুস্থ করে এই ব্যাপারে তারা নিশ্চিত ভাবে যান।

তাহলে ভাইরাস কোথা থেকে এল? গবেষক দল দুইটা সম্ভাবনার কথা বলেছেন।

একটা সম্ভাবনা হচ্ছে আগের করোনা ভাইরাসগুলো যে ভাবে এসেছে এটাও সে ভাবেই এসেছে। অর্থাৎ SARS ভাইরাস প্রথমে খাটাস বা সিভেট এবং MERS ভাইরাস প্রথমে উটে জন্ম নিয়ে তারপর মানুষের শরীরে এসেছে। এই ভাইরাসটিও প্রথমে বাদুড় তারপর পাঙ্গোলিনে বিকাশ লাভ করে তারপর মানুষের শরীরে এসেছে। প্রাণীর দেহ থেকে মানুষের দেহে আসার আগেই এর জিনগত বৈশিষ্ট্য এমন ছিল যে এটা মানুষের ব্যাপক ক্ষতি করতে পারে।

দ্বিতীয় সম্ভাবনাটা হচেছ, এই ভাইরাসটার বৈশিষ্ট্যগুলি তখনই বিকাশ লাভ করে যখন ভাইরাসটি প্রাণী দেহ থেকে মানুষের শরীরে সংক্রমিত হয়। অর্থাৎ প্রাণীর দেহে থাকার সময় এটা নিরীহ ধরণের থাকে। প্যাঙ্গোলিনের শরীরে যে করোনাভাইরাস থাকে সেটার গঠন একটা হুকের মত যা দিয়ে সে অন্য কোষের রিসেপ্টরকে ধরে। SARS-CoV-2 ভাইরাসের স্পাইক ঠিক একই রকম। এতে বুঝা যায় প্যাঙ্গোলিন থেকে সরাসরি অথবা অন্য কোন ভাবে ভাইরাসটি মানুষের শরীরে এসেছে। মানব দেহে প্রবেশ করার পর ভাইরাসটি অন্য আরেকটি বৈশিষ্ট্য ধারণ করতে পারে। মানুষের কোষে প্রবেশ করার পর এটা এমন একটা নতুন রূপ ধারণ করে যে সহজেই মানুষের দেহে ছড়াতে পারে।

সূত্র:
১. লাইভ সায়েন্স
২. নিউ সায়েন্টিস্ট
৩. ইউএস টুডে
৪. দ্যা সায়েন্টিস্ট
৫. ভক্স
৬. সিডিসি
৭. মেডিসিন নেট

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই এপ্রিল, ২০২০ সকাল ১০:০৪

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: মানুষ যখন বেশি মাত্রা ক্ষতিগ্রস্থ হয় এবং তথ্য ঘাটতি থাকে তখন অনেক ভাবনাই মাথা চাড়া দেয়!

তাত্বিক বিশ্লেষনে ভাল লাগা রইল।

১০ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ৯:৩৪

মোহাম্মদ আলী আকন্দ বলেছেন:



"মানুষ যখন বেশি মাত্রা ক্ষতিগ্রস্থ (sic) হয় এবং তথ্য ঘাটতি থাকে তখন অনেক ভাবনাই মাথা চাড়া দেয়!"

আমার মতে --

প্রথমত: মানুষের সাবকন্সাস মন এগুলি ভাবায়। মানুষ ছোটবেলায় রূপকথার গল্প শুনে মনের মধ্যে এই ভাবনাগুলি পোষণ করতে থাকে।

দ্বিতীয়ত: নানান উদ্দেশ্য প্রোপাগান্ডা মেশিন কন্সপিরেসি থিউরি প্রচার করতে থাকে। এই ব্যাপারে সবচেয়ে বেশি প্রোপাগান্ডা ছড়িয়েছে The Epoch Times নামের একটা পত্রিকা তাদের ইউটিউব চ্যানেলে। তারা ৪৫ মিনিটের একটা চমৎকার ভিডিও বানিয়েছে। যেটা দেখলে সাধারণ মানুষ নিশ্চিত ভাবে বিশ্বাস করবে এই ভাইরাস চীনারা লেব্রটারীতে বানিয়ে ছেড়ে দিয়েছে।

তৃতীয়: বই বা ম্যাগাজিন বিক্রির কাটতি বাড়ানোর জন্য (প্রথম আমি যেটা বলেছি সেটার উপর ভিত্তি করে) এই সব কন্সপিরেসি থিউরি লেখা হয়। প্রোপাগান্ডা মেশিনের মত এখানে কোন সুনির্দিষ্ট টার্গেট থাকে না।

"তাত্বিক (sic) বিশ্লেষনে (sic) ভাল লাগা রইল।"

ভাল লাগার জন্য ধন্যবাদ।
তবে এই বিশ্লেষণ আমার না।
অথবা এই ধরণের বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ করার মত জ্ঞান এবং যোগ্যতা আমার নাই।
সূত্রে উল্লেখিত বৈজ্ঞানিক গবেষণামূলক লেখাগুলি এবং আরো কিছু লেখা এবং ভিডিও দেখে আমি যতটুকু বুঝতে পেরেছি তার সার সংক্ষেপ এই লেখা।

২| ১০ ই এপ্রিল, ২০২০ সকাল ১০:০৭

কলাবাগান১ বলেছেন: বিদ্রোহী ভৃগু এর কমেন্টে প্লাস এবং সহমত

১০ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ৯:৩৮

মোহাম্মদ আলী আকন্দ বলেছেন:



"বিদ্রোহী ভৃগু এর কমেন্টে প্লাস এবং সহমত"

বিদ্রোহী ভৃগু এর কমেন্টে প্লাস এবং সহমত পোষণ করার জন্য ঐ মন্তব্যের উত্তর এই ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।

৩| ১০ ই এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১২:৫১

নেওয়াজ আলি বলেছেন: নিপুণ ভাবনা

১০ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ৯:৪২

মোহাম্মদ আলী আকন্দ বলেছেন:


"নিপুণ ভাবনা"

এটা আমার বা কারো ভাবনা না।
এটা একটা গুজবের বা প্রোপাগান্ডার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা।

এই ব্যাখ্যা সাথে কেউ একমত না হলে আরেকটা বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দিয়ে এটাকে খণ্ডন করা যেতে পারে।

৪| ১০ ই এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১:২৪

রাজীব নুর বলেছেন: করোনার দিন শেষ হতে চলেছে।

১০ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ৯:৪৪

মোহাম্মদ আলী আকন্দ বলেছেন:



"করোনার দিন শেষ হতে চলেছে।"

আমরাও আশাবাদী।
দুঃসময় দীর্ঘদিন থাকেন না।
রাতের অন্ধকার ভেদ করে দিনের আলো আসে।

৫| ১০ ই এপ্রিল, ২০২০ দুপুর ১:৫৪

নতুন বলেছেন: আমেরিকা বা চায়না একে অপরকে দোষ দেবে এটা সাভাবিক।

কিন্তু আমাদের দেশে এই রকমের তথ্য বেশি ছড়ানোর কারন ইউটিউবার।

দেশে বত`মানে গুজবের ভিডিও অনেক বেশি বাজার পাচ্ছে। দেশির ভিডিও গুলি দেখনু বুঝতে পারবেন। এমন গুজবের ভিউার বেশি তাই এমন জিনিস অনেক বেশি পরিমানে বানাচ্ছে বাংলাভাষায় দেশী টিউবার রা।

১০ ই এপ্রিল, ২০২০ রাত ১০:০১

মোহাম্মদ আলী আকন্দ বলেছেন:



"আমেরিকা বা চায়না একে অপরকে দোষ দেবে এটা সাভাবিক (sic)।"

চীনের বিরুদ্ধে আমেরিকার অভিযোগটা হচ্ছে, চীন সঠিক সময়ে আমেরিকাকে জানায় নাই।
আমেরিকা কিন্তু এই কথা বলছে না চীন ইচ্ছাকৃত ভাবে ভাইরাস ছড়িয়েছে।
কিন্তু প্রোপাগান্ডা মেশিন বলছে চীন তার লেব্রটারীতে এই ভাইরাস বানিয়ে পৃথিবীতে ছেড়ে দিয়েছে।

"কিন্তু আমাদের দেশে এই রকমের তথ্য বেশি ছড়ানোর কারন ইউটিউবার।"

আমি আপনার সাথে একমত। শুধু বাংলাদেশে না, The Epoch Times নামক একটা প্রোপাগান্ডা মূলক পত্রিকার ইউটিউব চ্যানেল খুব চমৎকার চমৎকার ভিডিও বানিয়ে ইউটিউবে প্রচার করছে। এই ভিডিওগুলি এত বিশ্বাসযোগ্য করে তৈরি যে অনেক শিক্ষিত মানুষ এইগুলি বিশ্বাস করে।

"দেশে বত`মানে (sic) গুজবের ভিডিও অনেক বেশি বাজার পাচ্ছে। দেশির ভিডিও গুলি দেখনু বুঝতে পারবেন। এমন গুজবের ভিউার বেশি তাই এমন জিনিস অনেক বেশি পরিমানে (sic) বানাচ্ছে বাংলাভাষায় দেশী টিউবার রা।"

এই কথার সাথেও আমি একমত। যারা ভিডিও বানাচ্ছে তারা জানে এই ধরণের ভিডিওর দর্শক বেশি। মানুষ এগুলি পছন্দ করে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.