নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
১৯৮৭ সালে আইনজীবী হিসাবে ময়মনসিংহ বারে এবং পরে ঢাকা বারে যোগদান করি। ১৯৯২ সালে সুপ্রিম কোর্ট বারে যোগ দেই।
দুর্নীতি দুইটি মৌলিক উৎস থেকে উৎসারিত হয়। একটি রাজনীতি আরেকটি ধর্ম।
প্রথমত রাজনীতি:
দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তি রাজনৈতিক উপাদানগুলোকে দুর্নীতি বা অসদাচরণকে আড়াল করার জন্য বা দুর্নীতি করার উপায় বা কার্যসিদ্ধির পন্থা হিসাবে ব্যবহার করে।
১. দেশপ্রেমের অপব্যবহার:
দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা যখন সমস্যায় পড়ে বা তাদের অবৈধ ক্রিয়াকলাপ রক্ষা করার প্রয়োজন হয় তখন তারা দেশপ্রেমিক হিসাবে নিজেকে উপস্থাপন করে যেমন স্বাধীনতার পক্ষ-শক্তি, মুক্তিযোদ্ধা, স্বাধীনতার চেতনায় বিশ্বাসী ইত্যাদি। এই দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা তাদের দুর্নীতিকে আড়াল করার জন্য এবং সাধারণ মানুষের মনোযোগ অন্য দিকে সরিয়ে দেয়ার জন্য দেশপ্রেমের বাণী প্রচার করতে থাকে। পরিষ্কার মনে রাখবেন যে ব্যক্তি দুর্নীতি করে সে দেশপ্রেমিক তো নয় ই বরং দেশের শত্রু।
২. নৈতিক দেউলিয়াত্ব:
দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তিটি যখন তার দুর্নীতির করার পিছনে কোন নৈতিক যুক্তি খুঁজে পায় না অর্থাৎ নৈতিক ভাবে দেউলিয়া হয়ে যায় তখন শেষ আশ্রয় হিসাবে দেশপ্রেম, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ইত্যাদিতে ব্যবহার করতে থাকে। সে যখন বুঝতে পারে মানুষের কাছে তার আচরণের কোন বৈধ ন্যায্যতা নাই, মানুষ তাকে ঘৃণা করছে, তখন মানুষের সমর্থন বা সহানুভূতি অর্জনের শেষ চেষ্টা হিসাবে দেশপ্রেম, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ইত্যাদি আপ্তবাক্য ব্যবহার করতে থাকে।
৩. অন্ধ জাতীয়তাবাদ:
দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তি বা ব্যক্তিসমষ্টি বা দল তাদের দুর্নীতিমূলক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাওয়ার জন্য অত্যধিক বা অন্ধ জাতীয়তাবাদের প্রচার করে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে তাদের অবৈধ কর্মকাণ্ড আড়াল করার চেষ্টা করে। অর্থাৎ অন্ধ জাতীয়তাবাদ অনৈতিক আচরণের মুখোশ হিসাবে কাজ করে। এই ভাবে দুর্নীতিপরায়ণ ব্যক্তিরা সাধারণ জনগণের দৃষ্টিকে আড়াল করে দুর্নীতির পক্ষে সমর্থন আদায় করে নেয়।
৪. ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট:
শুধু কোন একটি নিদিষ্ট দেশে নয় বরং দুর্নীতিগ্রস্ত প্রতিটা দেশে, সমাজে এবং ব্যক্তি বিশেষের ক্ষেত্রে এই প্রবণতা দেখা যায়। তাই অষ্টাদশ শতাব্দীতে স্যামুয়েল জনসন বলেছিলেন, "দেশপ্রেম হল একজন খারাপ ব্যক্তির শেষ আশ্রয়স্থল" ।
দ্বিতীয়ত ধর্ম:
১. মাফ চাইলে সব গুনাহ মাফ হয়ে যাবে:
দরবারী আলেমরা সব সময় অপপ্রচার করে যে একজন ব্যক্তি যত গুনাহই করুক না কেন আল্লাহর কাছে মাফ চাইলে আল্লাহ মাফ করে দিবেন। এই অপব্যাখ্যা দ্বারা প্রভাবিত হয়ে অধিকাংশ মানুষ নির্দ্বিধায় দুর্নীতি করতে থাকে। কারণ সে বিশ্বাস করে যত অপকর্মই সে করুক না কেন আল্লাহর কাছে মাফ চাইলে আল্লাহ মাফ করে দিবেন। অতএব দুর্নীতি করতে ভয় কি সে?
২. হজ করলে অতীতের সব গুনাহ মাফ হয়ে যাবে:
দরবারী আলেমরা এই অপব্যাখ্যা সবসময় অপ্রচার করে যে হজ করলে অতীতের সব গুনাহ মাফ হয়ে যাবে। এই অপব্যাখ্যা দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে অনেক মানুষ এমন কি হজে যাওয়ার টাকাটাও দুর্নীতির মাধ্যমে আয় করে। এমন কি এই কথা কিছু লোক এমন অন্ধ ভাবে বিশ্বাস করে যে সে হজে যাওয়ার আগে দুর্নীতিমূলক কর্মকাণ্ড বাড়িয়ে দেয়।
৩. দান করলে বা ভাল কাজ করলে অতীতের সব গুনাহ এবং পাপ মাফ হয়ে যাবে:
এই অপব্যাখা দ্বারা প্রভাবিত হয়ে অনেক মানুষ নির্দ্বিধায় দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করে। তারা অবৈধভাবে উপার্জিত সম্পদ থেকে কিছু অংশ দান খায়রাত, মন্দির, মসজিদ, মাদ্রাসা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, এতিমখানা ইত্যাদি নির্মাণ কাজে ব্যয় করে মনে করে যে তারা দুর্নীতির অপরাধ এবং দায় থেকে মুক্ত হয়ে গেছে। তারপর আবার দুর্নীতি আবার দানখয়রাত এই ভাবে সারা জীবন চলতে থাকে।
৪. ধর্মকে বর্ম হিসেবে ব্যবহার করা:
অনেক দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তি সাধারণ মানুষের দৃষ্টিকে আড়াল করার জন্য ধর্মকে বর্ম হিসাবে ব্যবহার করে। কোন ধর্মের কোন ধর্মীয় পোশাক না থাকা সত্ত্বেও তারা কোন একটা পোশাককে তাদের ধর্মীয় পোশাক হিসাবে প্রচার করে। তারপর দুর্নীতি করে সেই ধর্মীয় পোশাকের আড়ালে লুকিয়ে পরে এবং ধর্মীয় পোশাকের আড়ালে নির্দ্বিধায় দুর্নীতি করতে থাকে।
সারসংক্ষেপ:
নিঃসন্দেহে দুর্নীতিগ্রস্ত ব্যক্তির কোন দেশপ্রেম নাই, এবং কোন ধর্ম নাই। যে ব্যক্তি দুর্নীতি করবে সে মুখে যাই বলুক বা যে বেশভূষা ধারণ করুন না কেন সেই ব্যক্তি সেই দেশের, সমাজের, মানুষের এবং ধর্মের শত্রু।
০২ রা জুলাই, ২০২৪ ভোর ৫:২৩
মোহাম্মদ আলী আকন্দ বলেছেন:
আমি কোন কিছু ব্যাখ্যা করি নাই।
তাই ভুল ব্যাখ্যার কোন প্রশ্ন নাই এবং সুযোগ নাই।
আমি দরবারী আলেমদের অপ্রচার এবং অপব্যাখ্যার কথা বলেছি।
আর বলেছি মানুষের বিশ্বাসের কথা।
মানুষ দরবারী আলেমদের অপ্রচার এবং অপব্যাখ্যার সুযোগ নিয়ে অপরাধ করে।
ইসলামী লেবাস বলে কোন লেবাস আল্লাহ মানুষের জন্য নির্ধারণ করেন নাই।
অপরাধীরা নিজেদের অপকর্ম আড়াল করার জন্য একটা লেবাস ধারণ করে সেটাকে ইসলামী লেবাস বলে চালিয়ে দিচ্ছে।
©somewhere in net ltd.
১| ০২ রা জুলাই, ২০২৪ রাত ২:৫৭
শাহিন-৯৯ বলেছেন:
আপনি ভুল ব্যখ্যা করেছেন অথবা আপনি আলেমদের কথা মন দিয়ে শুনেননি আর শুনলেও বিস্তারিত মনযোগ দিয়ে শুনেননি।
স্পষ্ট বলা হয়ে থাকে- কেউ বান্দার হোক নষ্ট করলে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করবেন না,যতক্ষন না সেই ভুক্তভোগী তাকে ক্ষমা করবেন।
বারবার শত বার সহস্রবার আলেমরা বলেন- ইবাদত কবুলের শর্ত হালাল উপার্জন, এখন কোন ছাগল যদি অন্যায় করে দূর্নীতি করে ইসলামি লেবাস ধরে তাতে আলেমরা কি করতে পারে?