নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি ময়মনসিংহ জেলা স্কুল থেকে ১৯৭৭ সালে এস.এস.সি এবং আনন্দ মোহন কলেজ থেকে ১৯৭৯ সালে এইচ.এস.সি পাশ করেছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৮৪ সালে এলএল.বি (সম্মান) এবং ১৯৮৫ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এলএল.এম পাশ করি।

মোহাম্মদ আলী আকন্দ

১৯৮৭ সালে আইনজীবী হিসাবে ময়মনসিংহ বারে এবং পরে ঢাকা বারে যোগদান করি। ১৯৯২ সালে সুপ্রিম কোর্ট বারে যোগ দেই।

মোহাম্মদ আলী আকন্দ › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাংলাদেশের আইসিটি উন্নয়নের প্রধান সমস্যাসমূহ:

১০ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ১০:৫৬

আইসিটি উন্নয়ন সূচক (IDI) হলো একটি সমন্বিত সূচক যা বিভিন্ন দেশের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) খাতে উন্নয়নের স্তর পরিমাপ করতে ব্যবহৃত হয়। এই সূচকটি আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়ন (আইটিইউ) দ্বারা প্রণীত হয়েছে। তিনটি উপাদান বিবেচনা করে এই সূচক নির্ধারণ করা হয়।

প্রথমটি হচ্ছে আইসিটি অবকাঠামো এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি কি কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। যেমন, কি পরিমাণ ল্যান্ডফোন, মোবাইল সেলুলার টেলিফোন ব্যবহার করা হয়, আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট ব্যান্ডউইথ, মানুষ কি পরিমাণ ব্যক্তিগত কম্পিউটার ব্যবহার করে, এবং বাসাবাড়িতে কি পরিমাণ এবং কত গতিতে ইন্টারনেট ব্যবহার করা হয়।

দ্বিতীয়টি হচ্ছে আইসিটি পরিষেবাগুলির ব্যবহার এবং ব্যবহারকারীদের সংখ্যা।
অর্থাৎ ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের সংখ্যা, স্থির ব্রডব্যান্ড সাবস্ক্রিপশন, মোবাইল ব্রডব্যান্ড সাবস্ক্রিপশন ইত্যাদি।

তৃতীয়টি হচ্ছে এই খাতে দক্ষতা কি পরিমাণ আছে। অর্থাৎ দেশের জনসংখ্যার শিক্ষার হার এবং আইসিটি ব্যবহারের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা কি পরিমাণ আছে।
যেমন প্রাপ্তবয়স্ক সাক্ষরতার হার, মাধ্যমিক শিক্ষার হার, উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষার হার।

দুঃখ জনক হলেও বাস্তব অবস্থা হচ্ছে বাংলাদেশের আইসিটি উন্নয়ন সূচক (IDI) অন্যান্য নিম্নমধ্য আয়ের দেশের গড় স্কোরের চেয়েও কম। এমনকি মিয়ানমার ও ভুটান থেকেও কম।

বাংলাদেশে আইসিটি উন্নয়নের ক্ষেত্রে হলিস্টিক অ্যাপ্রোচের অভাব রয়েছে। অর্থাৎ সামগ্রিক ভাবে উন্নয়ন পরিকল্পনা না করে, খণ্ডিত ভাবে কিছু উদ্যোগ নেয়া হয়। তাই কিছু ক্ষেত্রে অগ্রগতি হলেও অন্যান্য ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকছে। কারণ আইসিটি খাতে দীর্ঘদিন ধরে অদক্ষ, অশিক্ষিত, ভাসাভাসা জ্ঞান সম্পন্ন ব্যক্তিরা নেতৃত্ব দিচ্ছে।

শিক্ষা ব্যবস্থা এবং পাঠ্যক্রম ত্রুটিপূর্ণ হওয়ায় আইসিটি সেক্টরে দক্ষ, শিক্ষিত এবং যোগ্য জনবলের অভাব প্রকট। এমন কি উপযুক্ত শিক্ষক এবং শিক্ষা উপকরণের সুস্পষ্ট অভাব রয়েছে।

বাংলাদেশে ২৮টি হাইটেক ও সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক থাকলেও, তা কার্যকরী ভাবে ব্যবহার করা যাচ্ছে না। এই ক্ষেত্রেও পরিকল্পনা, দক্ষ জনশক্তি এবং রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব আছে।

আইসিটি সেক্টর নিয়ে সঠিক ভাবে চিন্তা করতে পারে এবং প্রোডাক্ট তৈরি করতে সক্ষম এমন মানব সম্পদের ঘাটতি রয়েছে।

বাংলাদেশে সব সমস্যার মত এই সেক্টরেও সমস্যার মূল কারণ নেতৃত্বের অভাব। নেতৃত্বের দুর্বলতার কারণে আইসিটি খাতে সঠিক নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের অভাব রয়েছে। আবার সঠিক নীতি প্রণীত না হওয়ার কারণে অথবা অবহেলার কারণে শিক্ষার মান উন্নয়নে সঠিক উদ্যোগের অভাব এবং দক্ষ মানব সম্পদ তৈরিতে বিনিয়োগের অভাব পরিলক্ষিত হয়।

আইসিটি খাতের উন্নয়নের জন্য উপযুক্ত অবকাঠামোর দরকার। কিন্তু পরিকল্পনা এবং জ্ঞানের অভাব এবং অবহেলার কারণে প্রযুক্তিগত অবকাঠামো গড়ে উঠে নাই। তাছাড়া বিদ্যমান অবকাঠামোও জ্ঞানের অভাবে সঠিক ভাবে ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে না। সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে এই খাতে উপযুক্ত শিক্ষিত জনবলের অভাব।

সমাধান কি ভাবে সম্ভব?

প্রথমেই বাংলাদেশের আইসিটি খাতের জন্য সুনির্দিষ্ট ও কার্যকর নীতি প্রণয়ন এবং তা সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। নীতি প্রণয়ন এবং তা বাস্তবায়নের জন্য এই বিষয়ে উপযুক্ত জ্ঞান সম্পন্ন ব্যক্তিবর্গকে নেতৃত্ব প্রদান করতে হবে।

দ্বিতীয়ত, এই খাতের জন্য মানব সম্পদ উন্নয়ন করতে হবে। শিক্ষার মান উন্নয়নের জন্য বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের যথাযথ প্রশিক্ষণ প্রদান করতে হবে। শিক্ষা ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ এবং সময় উপযোগী করতে হবে। উপযুক্ত শিক্ষক, শিক্ষা উপকরণ এবং মান সম্পন্ন শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।

তৃতীয়ত, অবকাঠামো উন্নয়ন করতে হবে। প্রয়োজনীয় প্রযুক্তিগত অবকাঠামো তৈরি এবং বিদ্যমান অবকাঠামোর কার্যকর ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে ।

চতুর্থত, এই খাতের উন্নয়নের জন্য সমন্বিত প্রচেষ্টা শুরু করতে হবে। দেশের সকল স্তরের মানুষের মধ্যে প্রযুক্তি ব্যবহারের সচেতনতা বৃদ্ধি এবং তাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে।

বাংলাদেশের আইসিটি খাতের উন্নয়নের জন্য একটি সমন্বিত ও হলিস্টিক অ্যাপ্রোচ গ্রহণ করতে হবে। এছাড়া, সঠিক নীতি, মানব সম্পদ উন্নয়ন, অবকাঠামো উন্নয়ন এবং শিক্ষার মান উন্নয়নের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ১১:৫১

ডঃ এম এ আলী বলেছেন:



বাংলাদেশের আইসিটি উন্নয়নের প্রধান সমস্যাসমূহ ভালভাবে উঠে এসেছে লেখাটিতে।
সমাধানের লক্ষ্যে প্রস্তবনাসুহ সংস্লিষ্ট কতৃপক্ষ গুরুত্বসহকারে ভেবে দেখে উপযুক্ত
বাস্তবায়ন কৌশল গ্রহণে এগিয়ে আসলে সুফল পাওয়া যাবে বলে মনে করি ।

শুভেচ্ছা রইল

১১ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ১২:১১

মোহাম্মদ আলী আকন্দ বলেছেন:


মজার বিষয় কি জানেন?

মজার বিষয় হচ্ছে আমি যা লিখেছি তা সংশ্লিষ্টরা ভাল ভাবেই জানেন।
এইগুলি খুব মামুলি বা সাধারণ বিষয়।


মূল সমস্যা নেতৃত্বে।
আমি আপনি বললেই নেতৃত্ব পরিবর্তন হবে না।
আবার যোগ্য নেতৃত্ব না আসলে সমস্যার সমাধান হবে না।

২| ১১ ই জুলাই, ২০২৪ সকাল ৯:০০

নয়া পাঠক বলেছেন: সমস্যা তো চিহ্নিত করলেন ভাইয়া! কিন্তু সমাধান করার রাস্তা কি ? আর এই সমাধানের জন্য যে স্বচ্ছতা বা সদিচ্ছা দরকার তা কি সংশ্লিষ্ট মহলের রয়েছে?

১১ ই জুলাই, ২০২৪ রাত ৯:৩০

মোহাম্মদ আলী আকন্দ বলেছেন:


মূল লেখাতেই "সমাধান কি ভাবে সম্ভব?" এই শিরোনামে ৪ দফা সমাধানের প্রস্তাব করেছি।

আপনার দ্বিতীয় প্রশ্ন হচ্ছে, "আর এই সমাধানের জন্য যে স্বচ্ছতা বা সদিচ্ছা দরকার তা কি সংশ্লিষ্ট মহলের রয়েছে?"
উত্তর হচ্ছে, "না।"

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.