নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
১৯৮৭ সালে আইনজীবী হিসাবে ময়মনসিংহ বারে এবং পরে ঢাকা বারে যোগদান করি। ১৯৯২ সালে সুপ্রিম কোর্ট বারে যোগ দেই।
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বাংলাদেশ চূড়ান্ত ভাবে পাকিস্তানের অধীনতা থেকে মুক্ত হয়েছিল। আর ২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট ইন্ডিয়ার কাছ থেকে স্বাধীন হয়েছে।
স্বাধীন রাষ্ট্র সঠিক ভাবে পরিচালনার জন্য একটি সংবিধানের প্রয়োজন হয়। ১৯৭২ সালে প্রণীত সংবিধান সব দিক থেকে ভুল, ত্রুটিপূর্ণ এবং অকার্যকর। এই ত্রুটিপূর্ণ সংবিধানের কারণেই বাংলাদেশের প্রতিটি সরকার ছিল অগণতান্ত্রিক, ও অকার্যকর। এই সংবিধানে এমন কিছু বিধান আছে যা যেকোন নির্বাচিত সরকারকে শপথ নেয়ার সাথে সাথেই জন বিচ্ছিন্ন এবং স্বৈরাচারে পরিণত করে।
বাংলাদেশ জনরাষ্ট্র (Republic) এর জন্য একটি সংবিধানের প্রস্তাব করা প্রয়োজন। এই প্রস্তাবসমূহ আলোচনা ও যুক্তি সাপেক্ষে সব সময় পরিবর্তন, পরিবর্ধন এবং সংশোধন করা যাবে।
ছোট ছোট বিষয় যা সাধারণত মানুষের দৃষ্টি এড়িয়ে যায় কিন্তু শাসকের মনোজগৎ তৈরি করতে অনেক বড় ভূমিকা রাখে। এই সব বিষয় নিয়ে আলোচনা শুরু করা হচ্ছে।
পদসমূহের সাংবিধানিক বা আনুষ্ঠানিক নামকরণ:
(ক) রাষ্ট্রপতি:
রাষ্ট্রপতি এই সমাসবদ্ধ পদটি দুইটি পদের সমন্বয়। রাষ্ট্র এবং পতি। অর্থাৎ যিনি রাষ্ট্রের পতি। রাষ্ট্রের অর্থ আমরা জানি কিন্তু পতি শব্দের অর্থ কি? পতি শব্দের আভিধানিক অর্থ হচ্ছে, মনিব, মালিক, স্বামী, প্রভু, পালক, রক্ষক, রক্ষাকর্তা, অধীশ্বর, অধিপতি, রাজা ইত্যাদি।
সাহাবুদ্দিন কি আমাদের রাষ্ট্রের মনিব, না কী মালিক বা স্বামী বা প্রভু বা পালক বা রক্ষক বা রক্ষাকর্তা বা অধীশ্বর বা অধিপতি বা রাজা? না, কোনটাই না। তাই তাকে রাষ্ট্রপতি বলা এক দিক থেকে যেমন ভুল ও মিথ্যা অন্য দিক রাষ্ট্রপতি শব্দটি তাকে রাজা হয়ে উঠতে মানসিক ভাবে সাহায্য করে।
তাই প্রস্তাবিত সংবিধানে রাষ্ট্রপতি নামে কোন পদ থাকবে না। এই পদাধিকারীকে রাষ্ট্রের প্রধান নির্বাহী অথবা প্রধান নির্বাহী নামে অভিহিত করা হবে।
ইংরেজি অনুবাদ হবে Chief Executive of Bangladesh or Chief Executive.
অনুরূপ ভাবে "পতি" যুক্ত যত পদ আছে সেগুলি থেকে "পতি" বাদ দিতে হবে। যেমন, বিচারপতি হবে বিচারক, সভাপতি হবে সভা পরিচালক, ইত্যাদি।
(খ) মন্ত্রী:
মন্ত্রী শব্দের অর্থটা খারাপ না। রাজাকে যিনি মন্ত্র অর্থাৎ উপদেশ, পরামর্শ, বা পরিকল্পনা দিতেন তাকে মন্ত্রী বলা হতো।
যেহেতু জনরাষ্ট্রে কোন রাজার অস্তিত্ব নাই তাই খামাখা মন্ত্রীরও কোন প্রয়োজন নাই।
তাই প্রস্তাবিত প্রধান নির্বাহীকে যারা উপদেশ, পরামর্শ, বা পরিকল্পনা দিবেন তাদেরকে উপদেষ্টা বলাই বাঞ্ছনীয় এবং যুক্তিযুক্ত।
ইংরেজি অনুবাদ হবে Advisor.
(গ) মন্ত্রণালয়:
মন্ত্রীর আলয় বা ঘরকে বলা হয় মন্ত্রণালয় অথবা আধুনিক অর্থে যে অফিস বা ঘর থেকে উপদেশ দেয়া হয় তাকে বলা হয় মন্ত্রণালয়। প্রস্তাবিত সংবিধানে যেহেতু কোন মন্ত্রীই থাকছে না সেখানে মন্ত্রণালয় থাকার কোন সুযোগ নাই।
মন্ত্রণালয়গুলো নির্বাহী বিভাগের খণ্ড খণ্ড অংশ। সামগ্রিক ভাবে যদি নির্বাহী বিভাগকে একটা পূর্ণ বিভাগ হিসাবে বিবেচনা করেন তাহলে মন্ত্রণালয়গুলো একেকটা উপ বিভাগ। এই বিবেচনায় বর্তমান অর্থ মন্ত্রণালয়ের নাম হবে অর্থ উপবিভাগ বা "অর্থ বিভাগ", "বাণিজ্য বিভাগ" ইত্যাদি।
ইংরেজি অনুবাদ হবে Department of Commerce.
(ঘ) সংসদ:
"সংসদ" শব্দটি সংস্কৃত থেকে উদ্ভূত, যার অর্থ "একত্রিত হওয়া" বা "একসঙ্গে বসা।" এই শব্দটার মধ্যে অস্পষ্টতা বিদ্যমান। কারা একত্রিত হয়েছে বা কারা একসঙ্গে বসেছে এটার অস্পষ্টতা রয়ে গেছে।
একটি জনরাষ্ট্র পরিচালিত হয় জনগণের প্রতিনিধি দ্বারা। তাই জনগণের প্রতিনিধিরা যেখানে বসবেন বা একত্রিত হবেন সেই স্থানের নাম হবে প্রতিনিধি সভা
ইংরেজি অনুবাদ হবে Representative Assembly.
(ঙ) সংসদ সদস্য:
সংসদ সদস্য দ্বারা জনগণের প্রতিনিধি বুঝায় না। সংসদ সদস্য পরিচয়ের মধ্যে সংসদ প্রধান হয়ে উঠে। যেমন ঢাকা ক্লাবের সদস্য, এখানে ঢাকা ক্লাবটা মুখ্য। একজন মানুষ ঢাকা ক্লাবের সদস্য হয়ে গর্বিত হয়। এটি ক্লাবের সদস্য কোন ব্যক্তি বা গুষ্টির প্রতিনিধিত্ব করে না। অনুরূপ ভাবে একজন ব্যক্তি সংসদের সদস্য হয়ে মূলত কারো প্রতিনিধিত্ব করে না। তার প্রধান কাজ হয়ে দাঁড়ায় গম বিতরণ এবং সে মনে করে ট্যাক্স ফ্ৰী গাড়ি সহ অন্যান্য সুযোগ সুবিধা পাওয়া তার অধিকার।
তাই প্রস্তাবিত সংবিধানে বর্তমান সংসদ সদস্যের নাম পরিবর্তন করে জন প্রতিনিধি বা শুধু প্রতিনিধি রাখতে হবে। যখন একজন মানুষ নিজেকে জন প্রতিনিধি পরিচয় দিবে সে তখন ট্যাক্স ফ্ৰী গাড়ির কথা চিন্তাই করতে পারবে না।
ইংরেজি অনুবাদ হবে Member of Representative Assembly.
(চ) স্পিকার:
বর্তমানে আইন প্রণয়ন বিভাগের প্রধান বা সংসদের সভা পরিচালনাকারীকে স্পিকার বলে সম্বোধন করা হয়।
প্রস্তাবিত সংবিধানে "স্পিকার" শব্দের পরিবর্তে প্রতিনিধি সভা পরিচালক বা সভা পরিচালক বলা যেতে পারে।
ইংরেজি অনুবাদ হবে Director of Representative Assembly
(ছ) মহামান্য এবং মাননীয়:
জনগণের কোন প্রতিনিধি জনগণের কাছে মহামান্য বা মাননীয় হতে পারে না। জনগণের প্রতিনিধি জনগণের সমান সম্মানের অধিকারী। কোন ব্যক্তি যেমন নিজেকে মহামান্য বা মাননীয় বলে না, ঠিক তেমনি, জনগণ তার প্রতিনিধি অর্থাৎ "প্রধান নির্বাহী" বা "জন প্রতিনিধি" বা কোন "উপদেষ্টাকে" মহামান্য বা মাননীয় বলতে পারে না।
জনরাষ্ট্রের কর্মচারীরা জনগণের সম্মানার্থে জনগণের প্রতিনিধিকে মহামান্য বা মাননীয় ইত্যাদি বলতে পারে। তবে ব্যক্তিগত ভাবে আমাকে কেউ এই ধরণের সম্বোধন করলে আমি বিনয়ের সাথে তাকে বারণ করবো।
২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৪৬
মোহাম্মদ আলী আকন্দ বলেছেন:
সংবিধান বিশেষজ্ঞ বলা ঠিক হবে না।
আমি আইন, সংবিধান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, সরকার ও রাজনীতির ছাত্র।
সুদীর্ঘ প্রায় ৩০ বছর সুপ্রিম কোর্টে আইন পেশায় নিয়োজিত ছিলাম।
সংবিধান বিষয়ে আমি অনেক মামলায় অংশ নিয়েছি।
এই পড়াশুনা ও মামলা করার সুবাদে অসংখ্য বার সংবিধান পড়া ও পর্যালোচনার সুযোগ হয়েছে।
এতে এই সংবিধানের অনেক ত্রুটিবিচ্যুতি, ও অসঙ্গতি আমার চোখে পরেছে।
আমি ধারাবাহিক ভাবে সম্পূর্ণ সংবিধানের একটি পর্যালোচনা করবো এবং আপনাদের সাথে শেয়ার করবো।
২| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ১১:৫৫
নূর সজিব বলেছেন: বাংলাদেশ একটি রাষ্ট্র NGO না, এনজিওর মনোভাবে দেশ চলে না, রাষ্ট্রপ্রতি-মন্ত্রী পরিষদ দেশ চালানোর কাজে লাগে CEO-Adviser-Rep এটা NGO hierarchy, বক্তব্য শুনে আপনাকে গেঞ্জি বলে মনে হচ্ছে।
২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৫৩
মোহাম্মদ আলী আকন্দ বলেছেন:
কষ্ট করে লেখাটা পড়ে মতামত দেয়ার জন্য ধন্যবাদ।
আপনি যে দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টা দেখেছেন আমি সেই ভাবে দেখি নাই।
আপনার মন্তব্য পাওয়ার পর বিষয়টা অন্য দৃষ্টিকোণ থেকেও পরীক্ষা করে দেখবো।
©somewhere in net ltd.
১| ২১ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪৮
কামাল১৮ বলেছেন: আপনি সংবিধান বিশেষজ্ঞ এটা জানা ছিলো না।