নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মানুষ, মানুষের জন্যে।

[email protected],[email protected] স্কাইপঃAkramsBD

আকরাম

সাইকোথেরাপী অন লাইন *****www.psychobd.com

আকরাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

অবহেলা, অপমানের বোধই আত্মহত্যার প্রধান কারণ

২০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:৫২



সংকট থেকে বিচ্ছিন্নতাবোধ। মনে বিশ্বাস জন্মানো যে পৃথিবীতে সবাই আমাকে হেয় করছে। এই বিশ্বাস থেকে বিষণ্নতা। বিষণ্নতা থেকে বেপরোয়া হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নেওয়া। মনোচিকিৎসক ও সমাজবিজ্ঞানীরা বলেছেন, পরিবার ও সমাজকে কিশোর-তরুণদের জন্য অনুকূল পরিবেশ গড়ে দিতে হবে। তাদের আশ্বস্ত করতে হবে, তারা মনোযোগের কেন্দ্রে আছে। তাহলেই জীবনকে ভালোবাসতে শিখবে তারা। নিজেকে শেষ করে ফেলার মতো সিদ্ধান্ত আর নেবে না।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ৪ সেপ্টেম্বর প্রথমবারের মতো বৈশ্বিক আত্মহত্যা পরিস্থিতির প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ওই প্রতিবেদন বলেছে, বাংলাদেশে বছরে গড়ে ১০ হাজারের ওপর মানুষ আত্মহত্যা করে। সংস্থা বলছে যে উন্নত বিশ্বের

দেশগুলোয় সত্তরোর্ধ্ব মানুষ একাকিত্ব থেকে অনেক সময় আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেও বাংলাদেশে এ চিত্রটি পুরোপুরি আলাদা। এখানে আত্মহত্যার ঝুঁকিতে আছে ১৫-২৯ বছর বয়সীরা। সবচেয়ে কর্মক্ষম বয়সে আত্মঘাতী হচ্ছে

বিপুলসংখ্যক মানুষ।

কিশোর-তরুণেরা কেন আত্মহত্যা করছে, জানতে চাইলে সমাজবিজ্ঞানী মাহবুবা নাসরীন বলেন, সমাজে জটিলতা বাড়ছে। জটিলতার সঙ্গে সন্তানদের খাপ খাওয়ানোর শিক্ষা দেওয়ার ক্ষেত্রে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই পিছিয়ে আছে পরিবার ও সমাজ। তিনি বলেন, বাংলাদেশের কৃষিভিত্তিক যৌথ পরিবার মানুষের প্রয়োজনেই ভেঙেছে। মানুষ শহরমুখী হয়েছে, অণু পরিবারে বাস করছে। যৌথ পরিবারের অনেক নেতিবাচক দিক আছে। কিন্তু সেখানে পারিবারিক অশান্তি মেটানোর জন্য তৃতীয় পক্ষ থাকে। অণু পরিবারে সে সুযোগ নেই। বাবা-মায়ের মধ্যে ভালোবাসার অভাব সন্তানদের খুব কষ্ট দেয়। শহরে পারস্পরিক মেলামেশার অভ্যাস কম। ফলে কিশোর-তরুণদের মনের যে ভাবনা, একাকিত্ব, হতাশা, বিষণ্নতার যে বোধ তারা, সেটা প্রকাশের সুযোগ পায় না। ক্রমে একা হয়ে যেতে থাকে। এ থেকে অনেকে আত্মহত্যার পথ বেছে নেয়।

জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের কমিউনিটি অ্যান্ড সোশ্যাল সাইকিয়াট্রি বিভাগের অধ্যাপক মো. তাজুল ইসলাম বলেন, কিশোর-তরুণদের মধ্যে পরিবর্তন এক দিনে আসে না। অভিভাবককে, স্বজনকে, সমাজকে কিশোর বা তরুণদের আচার-আচরণে পরিবর্তন এসেছে কি না, খেয়াল করতে হবে। কিশোর-তরুণেরা অপমান সহ্য করতে পারে না। তিনি বলছিলেন, ইভ টিজিংয়ের কারণে আত্মহত্যার যে ঘটনাগুলো ঘটেছে, তার পেছনে অপমানিত হওয়ার একটা বোধ কাজ করেছে। কিশোর-তরুণদের বোঝাতে হবে, আত্মহত্যায় বীরত্ব নেই। এর অর্থ হলো পরিস্থিতিকে মোকাবিলা না করে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা।

কিশোরদের সাময়িকী কিশোর আলোর সম্পাদক, জনপ্রিয় লেখক আনিসুল হক বলেছেন, ‘যাঁদের আমরা ঈর্ষণীয় জীবনের অধিকারী বলে মনে করি, তাঁদের বেশির ভাগেরই শৈশব-কৈশোর কেটেছে পারিবারিক অশান্তি, লাঞ্ছনা, গঞ্জনা, অপমান কিংবা চরম দারিদ্র্যে। তাঁরা আত্মহত্যা করেননি। যার একসময় মনে হচ্ছে জীবনটা কষ্টের, আর বেঁচে থাকা চলে না, সে যদি শেষ পর্যন্ত জীবনটা যাপন করে, তাহলে দেখবে, জীবনটা কত আনন্দের। জীবন কাউকে খালি হাতে ফেরায় না।’

ডব্লিউএইচও বিশ্ব আত্মহত্যা পরিস্থিতি নিয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদনে সংবাদমাধ্যমকেও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে বলেছে। আত্মহত্যাকে গৌরবজনক কোনো বিষয় হিসেবে উপস্থাপন না করার পরামর্শ দিয়েছে। সংস্থাটি বলেছে, পত্রিকায় আত্মহত্যার পদ্ধতি সম্পর্কে পুঙ্খানুপুঙ্খ কোনো বর্ণনা দেওয়া উচিত হবে না। আত্মহত্যায় যেসব উপকরণ ব্যবহৃত হয়, সেগুলো যেন নাগালের বাইরে থাকে, সেদিকে নজর দিতে হবে।

সমাজবিজ্ঞানীরা বলেছেন, সচেতনতা বাড়লে সমাজের জটিলতা কমে আসবে। মাহবুবা নাসরীন বলেন, বাবা-মায়ের বিচ্ছেদ সন্তানকে বিপর্যস্ত করে বেশি। তাদের বোঝাতে হবে, দুজন প্রাপ্তবয়স্ক নারী-পুরুষের মধ্যে বিচ্ছেদ হতে পারে। কিন্তু সন্তানের সঙ্গে বাবা কিংবা সন্তানের সঙ্গে মায়ের যে সম্পর্ক, সেটায় কোনো মিথ্যা নেই। সেটি একদম সত্য। সন্তান বাবা মা দুজনের কাছেই সবচেয়ে মূল্যবান। সন্তানকে বাবা এবং মার সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া জরুরি। একই সঙ্গে তারা যেন মনে না করে যে তারা মূলধারার বাইরে, সে জন্য তাদের একই ধরনের পরিবারের সঙ্গে মেলামেশার সুযোগ করে দিতে হবে। সামাজিক যোগাযোগ বাড়াতে হবে। আশার কথা, বহুতল ভবনে ফ্ল্যাট-বাড়িগুলোয় এখন মেলামেশা বা উৎসব-অনুষ্ঠানে মিলিত হওয়ার একটা সংস্কৃতি গড়ে উঠছে।

অন্যদিকে মনোচিকিৎসকেরা বলছেন, বেশির ভাগ সময়ে আত্মহত্যার একটা প্রস্তুতি থাকে মানুষের। কারণ, আচরণগত পরিবর্তন দেখা দিলে মনোচিকিৎসকের কাছে যেতে হবে। কাউন্সেলিং আর থেরাপি থেকে সুস্থ হয়ে উঠতে পারে বিষণ্নতায় ভোগা মানুষ।



Psychotherapy online

অনলাইন থেরাপী এন্ড কাউন্সেলিং

http://www.psychobd.com/

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ১:২৮

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: আমার মতে এটা পুরোপুরিই আর্থ-সামাজিক অবস্থার উপর নির্ভর করে।
প্রথমে পরিবারের ভিতরকার সংঘাত-হিংসায় সন্তান হয়ে পরে একাকি,বিষন্ন।এইসময়টিতে যখন সে তার মনে কথাগুলি খুলে বলার কাউকে পায় না তখন হয়তো সে আত্মহননের পথ বেছে নেয়।
আরেকটি গুরুত্বপুর্ন ব্যাপার নেশা। এটা যেকোন ধরনেরই হোক না কেন ধীরে ধীরে মানসিক শক্তিকে দূর্বল করে দেয়। বয়স্করা যেখানে নেশা করে হিসেবী,পরিমিত আকাড়ে সেখানে অপরিনত বা যুবক/যুবতীরা করে অকাতরে। আর তাদের আসরে নেগেটিভ কথারই প্রচলন বেশী। একেতো আত্মবিশ্বাস কমতে থাকা তার উপর এধরনের কথা-বার্তা প্রভাব ফেলে তাকে ঠেলে দিতে পারে আত্মহত্যায়।
আকরাম ভাই আমার দৃষ্টিভঙ্গী আপনার সাথে শেয়ার করলাম। ভুল বা বাহুল্য হলে ক্ষমাপ্রার্থী।(অনেকদিন পরে এলেন!!)

০৭ ই অক্টোবর, ২০১৪ রাত ২:০৫

আকরাম বলেছেন: ধন্যবাদ।
সুন্দর বিশ্লেষন।
আছি সব সময়ই, তবে পাঠক হিসেবে।

২| ২২ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ বিকাল ৪:১৩

জাফরুল মবীন বলেছেন: আপনার লেখাটি পড়লাম।এরকম একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সচেতনতা তৈরী করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যা অাপনি এরকম একটি পোস্ট লিখে তা করার চেষ্টা করেছেন।ধন্যবাদ অাপনাকে।

আমি ১০ই সেপ্টেম্বর “বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবস” উপলক্ষে একটি আর্টিকেল লিখেছিলাম সামুতে।সময় হলে পড়ে দেখার অনুরোধ রইলো Click This Link

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.