নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মানুষ মানুষের জন্য , জীবন জীবনের জন্য একটু সহানুভুতি কি মানুষ পেতে পারেনা...ও বন্ধু...
(পাঁচ)
বকুলের মা বাগানে পাতা কুড়াতে গিয়ে বাঁশ বাগানের ঝোপের মধ্যে আমাদের বইয়ের ব্যাগ পেয়েছে। ব্যাগ পেয়ে শফিকের মায়ের কাছে দিয়ে গেছে । বকুলের মা'কে কেন যে সবাই বকুলের মা ডাকে আমরা তা বুজতাম না। একদিন মায়ের কাছে জানলাম, অনেক বছর আগে তার মেয়ে খালে ডুবে মরে গিয়েছিলো। সেই মেয়েটির নাম ছিলো বকুল। বকুল মরে যাবার পর বকুলের বাপ বকুলের মাকে তালাক দিয়েছিলো। তারপর থেকে আমাদের উত্তরের দিকের ভিটার কোনায় ছনের ছাউনি দিয়ে কুঁড়ে ঘড় বানিয়ে থাকতো। এবাড়ি ওবাড়ির টুকটাক কাজ কাম করে দিয়ে তার দিন চলতো।
বিপত্তি বাধলো মধু মাষ্টার স্কুল ছুটির পর বাড়ি ফেরার পথে রহম আলীকে জিগ্যেস করেছে - শফিক আজ স্কুলে যায়নি কেন? তারপর থেকে মেজাজ গরম হয়ে আছে।
আমরা বই না পেয়ে পুকুড় পাড়ের তালগাছ তলায় এসে দাঁড়িয়ে ভাবছি বই কে নিয়ে গেলো। হঠাৎ মাইকেল একটা ভোঁ-দৌড় দিলো। দৌড়াতে দৌড়াতে বলছে ’’শফি ঐ তোর বাপে আইছে পালা পালা।’’
আমরা পেছনে ফিরে তাকিয়ে আর দৌড় দিতে পারলাম না। ধরা পরলাম রহম আলীর হাতে। খপ করে শফিকের কলার একহাতে আর একহাতে আমার হাত ধরে টানতে টানতে শফিকদের উঠানে নিয়ে গেলো। আমাকে কষে কয়েকটা চড়-থাপ্পড়, লাথি মারলো। হাতের কাছে বাশের কঞ্চি পেয়ে শফিককে বেধরক পেটানো শুরু করলো।
আমার কান্নার আওয়াজ পেয়ে না ছুটতে ছুটতে এ বাড়ি এসে ছোঁ-মেরে আমাকে টেনে নিলেন। মাকে দেখে রহম আলী গলা খেকিকে উঠলো-
- তোমার ছেলের জন্যি আমার ছেলেডা খারাপ হইয়ে যাচ্ছে। কিরাম মা হইছো তুমি?
-তাই বলে আমার ছেলের গায়ে তুমি হাত দেয়ার কে?
-হাত দিছি ভালো করিছি, তোমার ছেলে যেনো আমার ছেলের সাথে আর না মেশে।
-আমি দশজনকে ডেকে সালিশ বসাবো। তুমি তোমার ছেলেরে মারো কাটো তাতে আমার কিছুনা। আমার ছেলেরে মারছো কেন?
মা আমাকে বাড়িতে নিয়ে আসলো। কিন্তু শফিককে কে ছাড়াবে জমের হাত থেকে। শফিক মার খেয়ে সব ঘটনা বলে দিলো।
আমার বাবা ছিলেন নিরীহ টাইপের মানুষ। কারো সাথে লাগতে যেতেন না। সব সময় ঝামেলা এড়িয়ে চলতেন। কিন্তু আমার মা তৎপর হয়ে এলাকার দুই চারজন গন্য-মান্য লোকের কাছে নালিশ দিয়ে সালিশ ডাকলেন।
শুক্রবার মধু মাষ্টারের উঠানে সালিশ। মধু মাষ্টারের পুরো নাম "মধুসূদন কর" হলেও সবাই মধু মাষ্টার বলে ডাকতো।
সালিশ শেষে রহম আলী জানালেন-
-আমি আমার জমি বিক্রি করে এই গ্রাম ছেড়ে মোংলা বন্দরে চলে যাবো শফিকের ফাইনাল পরিক্ষা শেষ হলেই। ওপাড়ার কালু মহাজনের কাছে বায়না করে দশ হাজার টাকা নিয়েছি। মোংলা পোর্টে গিয়ে চাকরি নেবো।
সত্যিই একদিন শফিকেরা চলে গেলো গ্রাম ছেড়ে মোংলা বন্দরে।
আমি রয়ে গেলাম গাঁয়ে।
(চলবে...........)
২৮ শে জুলাই, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৩২
মোগল সম্রাট বলেছেন: আসলেই অনেক কস্টের
২| ২৮ শে জুলাই, ২০২২ বিকাল ৫:০৩
সোনাগাজী বলেছেন:
মংলা শহর এলাকার লোকজনের আর্থিক অবস্হা কেমন?
২৮ শে জুলাই, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:২৮
মোগল সম্রাট বলেছেন: বর্তমানে মংলা শহর এলাকার লোকের অর্থিক অবস্থা এখন অনেকটা ভালো। নতুন পয়শাওয়ালা লোক পয়দা হইছে কিছু। তবে আদতে ধনী লোকের সংখ্যা হাতে গোনা ২/৪ জন। লোকাল মানুষদের হাতে রাজনৈতিক ক্ষমতা কিছুটা এসেছে বহুকাল পরে তাও যৎসামান্য। । আগে পুরোটাই বহিরাগতদের হাতে ছিলো। নোয়াখালী, বরিশাল, টিটাগং থেকে লোকজন এসে মংলা শহরে থাকতো। হাট-বাজার, শ্রমিক নেতা, ব্যাবসায়ী সব তারাই নিয়ন্ত্রণ করতো।
৩| ২৮ শে জুলাই, ২০২২ বিকাল ৫:৩৬
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
"যেতে নাহি দিব হায়,
তবু চলে যায়"
শফিকের জন্য রহম আলীর
দিলে রহম পয়দা হোক।
২৮ শে জুলাই, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৩৪
মোগল সম্রাট বলেছেন: রহম আলী আজো বে-রহম!!!!!
৪| ২৮ শে জুলাই, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:১৯
শায়মা বলেছেন: আহারে ভাইয়া।
কষ্টটা বুঝতে পারছি।
ছোটবেলার কষ্টগুলোই বেশি মনে থেকে যায়।
বড় হতে হতে কষ্টেরা সহ্য হয়ে যায়।
২৮ শে জুলাই, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৩৬
মোগল সম্রাট বলেছেন: শুভকামনা নিরন্তর।
৫| ২৮ শে জুলাই, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৩২
শাওন আহমাদ বলেছেন: বাকিটার অপেক্ষায় রইলাম।
২৮ শে জুলাই, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৩৫
মোগল সম্রাট বলেছেন: অনুপ্রাণিত হলাম।
ধন্যবাদ
৬| ২৮ শে জুলাই, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৪৬
জুল ভার্ন বলেছেন: যথারীতি ভালো হয়েছে।
২৮ শে জুলাই, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৫৭
মোগল সম্রাট বলেছেন: আমিও যথারীতি ধইন্য হইলাম।
শুভকামনা আপনার জন্য।
৭| ২৮ শে জুলাই, ২০২২ রাত ৯:০৪
শেরজা তপন বলেছেন: এপর্ব পড়লাম- কষ্টের সমাপ্তি!
২৮ শে জুলাই, ২০২২ রাত ১০:২৩
মোগল সম্রাট বলেছেন: ধন্যবাদ। কষ্ট করে পড়ার জন্য
শুভকামনা আপনার জন্য।
৮| ২৮ শে জুলাই, ২০২২ রাত ৯:৩৬
মোহাম্মদ গোফরান বলেছেন: আর কত পর্ব বাকি?
২৮ শে জুলাই, ২০২২ রাত ১০:২৪
মোগল সম্রাট বলেছেন: এখনো নব্বইয়ের দশকে আছি। দেখি কদ্দূর যাওয়া যায়।
ধন্যবাদ মন্তব্য করার জন্য।
৯| ২৯ শে জুলাই, ২০২২ রাত ২:১৪
সোনাগাজী বলেছেন:
ওখানকার কলকারখানাগুলো চলছে?
২৯ শে জুলাই, ২০২২ সকাল ১০:১৪
মোগল সম্রাট বলেছেন: চলছে। নতুন নতুন ভারি শিল্প কারখান হয়েছে।
১০| ২৯ শে জুলাই, ২০২২ রাত ৮:৩৬
ইসিয়াক বলেছেন: ছোটবেলার বন্ধু বিচ্ছেদের মত কষ্ট আর কিছুতে নেই।আমি যখন ঢাকার মোহাম্মদ পুর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়তাম ওখানে আমার একটা বন্ধু ছিল।খুবই কাছের। ওর নাম ছিল রায়হান।আমি একবার বেশ অনেকদিনের জন্য দেশের বাড়ি বেড়াতে এলে সেই ফাঁকে ওরা সপরিবারে কানাডা চলে যায়।সময় ১৯৮৫ সাল।তখন মোবাইল ইন্টারনেট ছিল না।আর যোগাযোগ হয় নি।চিরকালের মত হারিয়ে যায় আমার জীবন থেকে রায়হান। আজো আমি তাকে খুঁজে বেড়াই। সত্যি বলতে কি আমার লেখালিখি ওরই অনুপ্রেরণায়।যদি কোনদিন আমার কোন লেখা ওর চোখে পড়ে। আমাকে যদি চিনতে পারে এই আশায় লিখে যাই।
©somewhere in net ltd.
১| ২৮ শে জুলাই, ২০২২ বিকাল ৪:২৫
সৈয়দ মশিউর রহমান বলেছেন: কেউ চলে যাওয়াটা অনেক কষ্টের।