নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মানুষ মানুষের জন্য , জীবন জীবনের জন্য একটু সহানুভুতি কি মানুষ পেতে পারেনা...ও বন্ধু...
একঃ
বনফুল পরিবহন নামে একটা বাসে গ্রাম থেকে আম-কাঠাল, পেয়ারা, আতপ চাউল সহ আরো অনেক কিছু পাঠিয়েছে আব্বা। আমি সেগুলো রিসিভ করতে যাত্রাবাড়ী মোড়ে দাড়িয়ে আছি। ঘটনা কোরবানির ঈদের আগের। হঠাৎ আমির আলীর সাথে দেখা। ডেমরায় থাকাকালীন সময়ে তার সাথে পরিচয় ঘনিষ্টতা ছিলো।
প্রায় বছর পাঁচেক আগে ও এলাকা ছেড়ে এসেছি। তবুও যোগাযোগটা থেকে গেছে।
আমির আলীকে দেখতাম ওখানকার একটা মসজিদে পাঁচ ওয়াক্ত আজান দিতো আর সকালে মসজিদের বারান্দায় ঐ এলাকার বাচ্চাদের আরবি পড়াতো। বাচ্চার সুর করে ছেপারা পড়তো একসাথে। আলিফ-যবর-'আ', বা যবর 'বা'। কচিকাঁচাদের সেই গলার আওয়াজ অনেক দুর থেকেও শোনা যেতো।
আমির আলীর সাথে মাঝে মধ্যে মোবাইলে যোগাযোগ হলে তার সংসারের টানাটানি, দায় দেনা, মসজিদ কমিটি বেতন বাড়ায় না, বাইরে কাজ করতে দেয় না ইত্যাদি ইত্যাদি শুনতাম। সেদিন দেখা হলো সামনা সামনি, তাও প্রায় বছর দেড়েক পর।
আমির আলী মুয়াজ্জিনের চাকরি ছয়মাস আগে ছেড়ে দিয়ে এখন যাত্রাবাড়ীর মোড়ে ভ্যান গাড়িতে করে শরবত বিক্রি করে বেলা এগারোটা থেকে বিকেল তিনটা পর্যন্ত। আর সন্ধ্যার পর চলে যায় চিটাগং রোডে। সেখানে বিশাল একটা মাদ্রাসার সামনে হাঁস-মুরগির ডিম সিদ্ধ করে বিক্রি করে। সাথে একটা কড়াইতে দুধ জাল দিয়েও বিক্রি করে রাত দশটা পর্যন্ত।
আমির আলীর বেশভূষা, পোষাক-আশাক আগের মতো আর নেই। মাথায় টুপি থাকলেও লম্বা জুব্বা নাই। লুঙ্গি আর টি শার্ট গায়ে দিয়ে শরবত বেচে। সংসারের অভাব অনটন অনেক কমে গেছে, দায়-দেনাও শোধ হচ্ছে দ্রুত।
ইতোমধ্যে বনফুল পরিবহনের সুপারভাইজার ফোন করে জানালো "ভাই ধোলাইপাড় মোড়ে আসেন"। আমি রিকশা ডাকলাম।
আমির আলী আমার দেয়া ধারের পাঁচ হাজার টাকা ফেরত দিতে চেয়েছে আগামী মাসে। বিকাশ নম্বর আছে কিনা জিজ্ঞেস করেছিলো। আমি বলেছি- "আমার কোন বিকাশ নম্বর নাই"!!
দুইঃ
মতিন এম.এ পাশ করেছে বছর দুয়েক আগে। এরকম একটা সুপার অলস ছেলে কিভাবে এম.এ পাশ করলো আমার বুঝে আসেনা। বাবা মায়ের একমাত্র ছেলে। একদম নিম্ন বিত্ত পরিবার। বাবা দিন মজুরির কাজ করে সংসার চালায় এখনো। আমার আবার দুর সম্পর্কে ভাগনা হয়।মতিন গত ছয় মাস কোন ফোন-টোন করে না। আগে প্রায় প্রতি সপ্তায় কল দিয়ে একটা চাকরির জন্য কতো রিকোয়েস্ট করতো। একবার একটা চাকরির ব্যবস্থাও করেছিলাম তার জন্য । একটা প্যাকেজিং কোম্পানিতে। কিন্তু কম বেতনের কথা শুনে আর ঢাকায় আসেনি।
শনিবার রাতে মতিকে ফোন দিলাম ভালো-মন্দ খোঁজ খবর নিতে। শুনলাম মতি মিয়া শাদি করেছে ছয় মাস আগে। বৌয়ের সাথে প্রেমের সম্পর্ক ছিলো বিয়ের আগে থেকে। শরমে আমারে জানায়নি। বিয়ের পর বউয়ের চাপে পড়ে এলাকার বাজারে কসমেটিকের দোকান দিয়েছে। কিন্তু ব্যবসার অবস্থা ভালো না।
এবার আর মতি মিয়া আমার কাছে চাকরির জন্য রিকোয়েস্ট করেনি। এবার সে দুবাই যাওয়ার জন্য চেষ্টা করতেছে। আমার কাছে কোন বিশ্বস্ত এবং ঈমানদার আদম ব্যাপারী আছে কিনা জানতে চেয়েছে। টাকা পয়সা নাকি শ্বশুরবাড়ি থেকে সব দেবে। আমি বলেছি আমার পরিচিত এবং ঈমানদার কোন আদম ব্যাপারি নাই।
তিনঃ
মেহেরুন পাঁচ বছর আগে বিধবা হয়েছিলো। এখন তার বয়স পঁয়ত্রিশ। দুই মেয়ের মা। বড় মেয়ে ক্লাশ সেভেনে পড়ে। আর ছোটটা টু'তে। শশুর বাড়ি বলতে ঢাকায় ফ্লাট বাড়িতে ভাড়া থাকা। ঢাকায় আর কিছুই নাই। জামাইয়ের একটা দোকান ছিল কোন একটা মার্কেটে। সেই দোকান ভাড়া দিয়ে এবং বাপের বাড়ি থেকে ছোট ভাই প্রতি মাসে হাত খরচ বাবদ কিছু টাকা পাঠায় সেটা দিয়ে কোন মতে টেনেটুনে সংসার চলে মেহেরুনের।
মেহেরুন আমার চাচাতো বোনের বান্ধবী। একই গ্রামে আমরা থাকলেও আলাদা আলাদা পাড়ায় আমাদের বাড়ি ছিলো। একসময় তার সাথে আমার বিয়ের কথা-বার্তাও হয়েছিলো এক ঘটকের মাধ্যমে। দুই পরিবারের একমতে না পৌছাতে না পারায় বিয়েটা হয়নি আমার সাথে।
মেহেরুন আই.এ পাশ করার পরপরই বিয়ে হয়েছিল তারই ফুপাতো ভাইয়ের সাথে। বিয়ের পর আর লেখাপড়া হয়নি। পুরোপুরি গৃহিণী হয়ে গিয়েছিলো। স্বামী মরার পরের বছরেই তেজগাঁও কলেজে বি.এ ভর্তি হয়েছিলো। এবার সে বি.এ পাশ করেছে। আমার চাচাতো বোনের কাছ থেকে মোবাইল নাম্বার সংগ্রহ করে মাস তিনেক আগে আমার সাথে যোগাযোগ করেছে।
মেহেরুন চাকরির জন্য জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। আমি বিডি জবসে তার বায়োডাটা তৈরি করে কয়েকটা কোম্পানিতে এ্যাপলাই করে দিয়েছিলাম। গত পরশু দিন বনানীর একটা অফিস থেকে ইন্টারভিউয়ের জন্য কল করেছে রিসিপশনিষ্ট পদের জন্য।
মেহেরুন আমাকে কল করে জানতে চেয়েছে কোম্পানির কেউ কি আমার পরিচিত। আমি জানিয়ে দিয়েছি অনলাইনে আবেদন করেছিলাম তার জন্য। কিন্তু আমার পরিচিত কেউ ওখানে নাই!!!
চারঃ
কুতুবউদ্দিনকে চাকরী থেকে সাসপেন্ডও করা হয়েছে তিন মাস আগে। কুতুব আমার কলেজের দোস্ত। আমাদের পাশের থানায় ওদের বাড়ি। আমাদের গ্রামের একটা বাড়িতে জায়গির থাকতো। ইন্টারমিডিয়েটে ভর্তি হয়েছিলো আমাদের কলেজে। ও আর্টসের ছাত্র ছিলো আর আমি কমার্সের। কুতুবউদ্দিন ইন্টার পাশ করে সদরে চলে যায়। সেখান থেকে গ্রাজুয়েশন শেষ করেই তহশিলদারের চাকরি পেয়েছিলো।
আশপাশের জেলা গুলোতে ঘুরে ঘুরে বহু বছর চাকরি করেছে।
ঢাকার মোহাম্মদ পুরের বছিলায় ছয়তলা বাড়ি আছে কুতুবউদ্দিনের। সর্বশেষ কর্মস্থল সাভার তহশিল অফিস থেকে তাকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। বহুকাল তার সাথে যোগাযোগ ছিলোনা। ফেজবুকের ফ্রেন্ড লিষ্টে সে থাকলেও কোনদিন আমার কোন পোস্টে লাইক কমেন্ট করেছে বলে আমার মনে পড়েনা।
হঠাৎ করে গত শুক্কুরবার আমার মোবাইলে তার কল পেয়েছি। সন্ধ্যার পর টিএসসিতে এসে দেখা করেছি দুজন। এখন আমি প্রতিদিন সন্ধ্যার পর অফিস থেকে ফিরে কুতুবউদ্দিনের সাথে টং দোকানে আড্ডা মারি রাত দশটা পর্যন্ত।
গতকাল কুতুবউদ্দিন আমার কাছে জানতে চেয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়ে আমার কোন জ্যাক আছে কিনা? আমি বলে দিয়েছি "আমার কোন জ্যাক নেই দোস্ত আর আজকের চা-বিড়ির বিলটা তুই দে দোস্ত!!!
পাঁচঃ
বাসার সামনের গলির পুরো রাস্তাটা গত দুই মাস ধরে সিটি করপোরেশনের লোক কেটে খুড়ে মোটা মোটা কনক্রিটের পাইপ ডুকিয়ে ফেলে রেখেছে। এখন বৃষ্টির দিন। এক পশলা বৃষ্টি হলে থিক থিকে কাদা হয়ে একদম মাখামাখি হয়ে যায়। সেই কাদা জুতোর তলায় করে সিড়ি থেকে বাসার দরজার সামনে পর্যন্ত চলে আসে।
একদিন পর পর সিঁড়ি মোছার জন্য কদমের মা আসে। সাত তলা থেকে সিড়ি মুছতে মুছতে নিচতলা পর্যন্ত মুছে দিয়ে যায়। মুছতে মুছতে একগাদা গালাগাল করতে থাকে। কাকে গালাগাল করে আল্লায় জানে।
প্রতিদিন এই দেড়শো মিটার গলির পথ পাড়ি দিয়ে মেইন রাস্তায় উঠি। যেতে যেতে গ্রামের কাঁদার রাস্তার কথা মনে পড়ে। মনে পড়ে এরকম এক মাইল কাঁদার রাস্তায় হেটে হেটে স্কুলে যেতাম। স্কুলের পুকুরে পা ধুয়ে ক্লশে ঢুকতাম।
আজ সকাল থেকে খুব বৃষ্টি হচ্ছে। বাচ্চাদের স্কুলে যেতে নিষেধ করেছি কিন্তু বৌ গলা খাঁকারি দিয়ে বলে উঠেছে "পোলাপান লাই দিয়া নষ্ট করবা না, যাও স্কুলে দিয়ে আসো"। আমি নিরুপায়। ছেলেকে রেইন কোট পড়িয়ে স্কুল ব্যাগটা আামর পিঠে ঝুলিয়ে বৌকে বললাম ছাতাটা দাও, বৌ বললো ছাতা গত সপ্তায় ভুলে বাসে রেখে নেমে গেছি ঢাকেশ্বরী মন্দিরের সামনে। বাসায় আর কোন ছাতা নাই।!!
ঢাকা,
১৬ আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ।
ছবিঃ অন্তর্জাল।
প্রাত্যহিকী-১
প্রাত্যহিকী-২
প্রত্যহিকী-৩
প্রাত্যহিকী-৪
প্রাত্যহিকী-৫
প্রাত্যহিকী-৬
প্রাত্যহিকী-৭
০১ লা জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৫:০৩
মোগল সম্রাট বলেছেন:
আমার আবার বৌয়ের কথা না শুনলে কপালে শনির দশা আসে। মানে একদম সুট করেনা। সুতরাং বৌয়ের আদেশ শিরোধার্য
শুভকামনা নিরন্তর।
২| ০১ লা জুলাই, ২০২৪ রাত ১১:০৪
ঢাকার লোক বলেছেন: মোঘল সম্রাটের দিনলিপি যে দেখছি আর দশটা বড়ই সাধারণ প্রজারই মত! নেই কোনো হাতি ঘোড়া, নেই কোনো মন্ত্রী পারিষদ, নেই কোনো সামান্যতম দাপট !
তবে লেখা বেশ হয়েছে, পুরানো বন্ধু, পরিচিত জনের খোজঁখবর নেয়া জীবনকে নিশ্চয়ই আনন্দময় করে !
০২ রা জুলাই, ২০২৪ দুপুর ১২:৫৫
মোগল সম্রাট বলেছেন:
মোঘল সম্রাটেরা শেষ হয়ে গেছে সেই কতো শত বছর আগে । এখন তাদের সেই সম্রাজ্যে এ যুগের শাষকেরা তাদের মন্ত্রিী-সান্ত্রিরা শাসন করছে।
লেখা পড়ে আপনার ভালো লেগেছে জেনে আনন্দিত হলাম।
শুভকামনা নিরন্তর।
৩| ০২ রা জুলাই, ২০২৪ সকাল ৮:৪৩
জনারণ্যে একজন বলেছেন: @ সম্রাট, দু'বার পড়লাম লেখাটা।
কি যে নির্মোহ ভঙ্গিতে প্রতিটা ঘটনার বর্ণনা দিলেন! হয়তো এজন্যই পড়তে আরো বেশি ভালো লেগেছে। মেহেরুনের ব্যাপারটা জেনে মন খারাপ হলো। কিন্তু কি আর করা, বলুন। কত অদৃশ্য সুতোয় যে হাত-পা বাঁধা!
পাঁচ নাম্বার ঘটনা আমি জাস্ট ভিজুয়ালাইজ করলাম। এরকম ছোট্ট, সাধারণ কিন্তু বৈচিত্রময় জীবন চেয়েছিলাম বলেই হয়তো এটা অধরাই থেকে যাবে।
ভালো থাকবেন আপনি। অনেক অনেক শুভকামনা থাকলো।
০২ রা জুলাই, ২০২৪ দুপুর ১২:৪৭
মোগল সম্রাট বলেছেন:
লেখা পড়ে আপনার ভালো লেগেছে জেনে আপ্লুত হলাম।
জীবনের প্রতিটা দিনই বৈচিত্রময় হতে পারে যদি আমরা সেটা সত্যিই চাই। কিন্তু অধিকাংশ মানুষই তা পারেনা। তার অনেক কারনও আছে। ঐযে বললেন: অদৃশ্য সুতোয় হাত-পা বাধাঁ।
অনেক অনেক শুভকামনা আপনার জন্য ।
৪| ০২ রা জুলাই, ২০২৪ সকাল ১০:২৮
শ্রাবণধারা বলেছেন: ছোট ছোট দৈনন্দিন জীবনের গল্পগুলো ভালো লাগলো।
০২ রা জুলাই, ২০২৪ দুপুর ১২:৪৭
মোগল সম্রাট বলেছেন:
ধন্যবাদ এবং শুভকামনা।
৫| ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১১:৫৪
শার্দূল ২২ বলেছেন: সালাম জানবেন সম্রাট সাহেব। আমি জানতাম আপনি কোন পোস্ট দিলে আমাকে ভিজিট করেন, আজকে হতাশ হলাম, । বাংলাদেশের এমন অবস্থায় সম্রাট কিভাবে নীরব থাকে আমার মাথায় আসছেনা। নির্ভয়ে কিছু বলেন আমাদের আগের বাংলাদেশ বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ । আমি বাজি ধরে বলতে পারি এখানে আপনার সাথে আমার মিলবেনা তবুও আমি বিরোধিতা করে হলেও আপনার পোষ্টে কিছু বলতে চাই। আমি অনেক চেষ্টা করেছি একটা পোষ্ট দিতে, আর আমি জানি এরপর এখানে বসে সবার মন্তব্যের জবাব দেয়া আমার পক্ষে সম্ভব বা সময় কোনটাই হবেনা তাই এড়িয়ে গেছি।
তবে একটা কথা শুধু বলি দেশে ভালোর দিকে গেলে আমি হ্যাপি, আর খারাপের দিকে গেলে জ্ঞানপাপিদের জন্য রইলো ঘৃণা।
কেমন আছেন আপনি? কিভাবে পার করলেণ এই দুর্যোগ দুর্ভোগ বা এখনো করছেন? জানাবেন
২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৩:৩০
মোগল সম্রাট বলেছেন:
প্রিয় শার্দুল ভাই,
শুভেচ্ছা জানবেন। আমি ভালো আছি। তবে জুলাই মাসের শেষ দিকে পাহাড় থেকে ঘুরে এসে দেখি বড় বড় পাহাড় সমান সমস্যার মোকবেলা করতে হচ্চে প্রতিদিন প্রতি নিয়ত। ।
অনেক দুর্ভোগের মধ্য দিয়ে সময় পার করতে হয়েছে ভাই। টিয়ার সেল, ইট পাটকেল আর রাবার বুলেটের সামনে একদিন পড়েছিলাম। ভাবছিলাম প্রাণটা বুজি ঘরে নিয়ে যেতে পারবোনা। উপরওয়ালার কৃপায় বেচে গেছি সেদিন। ঘরে বাইরে আরো অনেক প্রবলেম মোকাবেলা করতে হয়েছে মন্তব্যের ঘরে লিখতে পারছিনা।
আর দেশ নিয়ে ব্লগের অনেক মহাপুরুষ অনেক চমকপ্রদ পোষ্ট প্রসব করেছেন ৫ তারিখের পর থেকে। আমি ২/৪ লাইন লেখার অপচেষ্ট হিসাব একটা লেখা শুরু করছিলাম এখনো শেষ করতে পারিনি সময়ের অভাবে। আশাকরি না যে শিঘ্রই শেষ করা যাবে।
দেশের মায়ায় দশ বছর আগে দেশান্তরী হতে গিয়েও কেন যে থেকে গিয়েছিলাম সেটা বার বার মনে করিয়ে দিয়ে বৌ প্রতিদিন খোটা দিয়ে যায়। এখন পরিস্থিতি দেখে ভাবি হয়তো বৌ ঠিকই বলতেছে
আপনার জন্য অনেক শুভকামনা ও দোয়া।
৬| ২৩ শে সেপ্টেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৩৪
শার্দূল ২২ বলেছেন: সালাম জানবেন সম্রাট ভাই, আপনার জবাব থেকে জানা গেলো কেমন ঝঞ্ঝাটে আছেন। (( শব্দটা কি এটাই? জানিনা, বুঝেছেন এতেই চলবে। ভাষাতো বুঝার জন্যই, তাইনা? আমি আর কোথায় রবি ঠাকুরের সঞ্চয়িতা ( সঞ্চিতা) লিখতে যাচ্ছি))
সম্রাট ভাই এর রাজনৌতিক আদর্শ আমি এখনো ধরতে পারিনি। খুব একটা প্রোয়োজন ও নাই। আমিও এসব ব্যপারে একটু টালমাটাল। তবে পাহাড়ের মত শক্ত দাড়িয়ে থাকি রাজাকার ইস্যুতে। এখানে কোন ছাড় নাই। মানুষ আমাকে বলে যারা ৭১ দেখেনি তুমি তাদের রাজাকার কেন বলো। বললাম মুজিবকে দেখেনি যারা তারা মুজিবের আদর্শ ধারণ করে আওয়ামিলিগ হতে পারলে ৭১ না দেখা মানুষ গুলো জামাতের ৭১ ভুমিকাকে সমর্থণ করলে রাজাকার হবেনা কেন?
রাজাকার কি করছে?। কার কি করেছে জানিনা আমার পরিবারে আঘাৎ হেনেছে নির্মম ভাবে। আজকের প্রজন্ম জানেনা ৭১ এ এর কথা। জানলেও বিশ্বাস করেনা, বিশ্বাস করলেও অনুভব করতে পারেনা। যার গা তার ব্যথা। তোফাজ্জলের পা থেকে এক টুকরো মাংস খুলে পড়ে গেছে। ওরা ঐ জায়গায় গামছা পেছিয়ে আবার বাড়ি দিয়েছে। মানুষ ভাবছে এ আর এমন কি। মাংস এক টুকরোইতো। কসাই দোকানে আস্ত গরুর পা ঝুলিয়ে কেটে কুটে দেয়া কত দেখেছি ।
১৯৭০ জানুয়ারি আব্বু তৎকালিন পাকিসটান পুলিশে নিয়োগ নিয়ে করাচিতে যোগ দেন। ১৯৭১ মে আব্বু পালিয়ে দেশে আসেন, খুব সাহসি ছিলো বলে রাজারবাগ থানায় ঢুকেন সহকর্মিদের সাথে যুদ্ধ নিয়ে পরিকল্পনা করতে, ধরা খেয়ে যান হানাদারের হাতে। ১৪ দইন বন্ধি থাকেন, উরুতে গরম লোহা ঢুকিয়ে দেন তারা। জানালা ভেংগে পালিয়ে যান কয়জন মিলে। গ্রামের পথ ধরে ১ মাস সময় লাগিয়ে নিজ গ্রামের দিকে হাটেন। আব্বু গ্রামে পৌছার আগেই হানাদার পৌছে যান বাড়িতে, আব্বুকে না পেয়ে ছোট চাচা কে নিয়ে যান আজও জানিনা আমার চাচ্চুকে মেরে লাশ কোথায় ফেলে ডেয়া হয়েছে। লক্ষ লক্ষ লাশের ভিরে হারিয়ে গিয়েছেন তিনিও। দাদি বড় ছেলেরে খবর জানেননা, শুধু শুনেছেন হানাদারের হাতে বন্ধি হয়েছেন। চোখের সামনে ছোট ছেলেকেও ধরে নিয়ে গেলো। শোক সামলাতে না পেরে দাদি মারা গেলেন । আব্বু বাড়ি এসে দেখলেন ছোট ভাইকে নিয়ে গেছে, মা মারা গেছে, দাদাভাই বিছানায় পংগু । আব্বুর জন্য ছোট চাচুকে ধরে নিয়ে গেলো এই অপরাধ আব্বুকে অস্থির করে তুললো। এই দিকে ডান পা ফুলে হাতির মত অবস্থা । হানাদার আবার আসলো। দুর থেকে আব্বুর এক চাচাতো ভাই রাজাকার আব্বুকে দেখিয়ে দিলো। তখন ছবির যুগ ছিলোনা, শুধু নাম ঠিকানা দিয়ে আর রাজাকারের মাধ্যমে হানাদার চিনে নিতো। এখানে আমার প্রশ্ন ধর্মের কোন দিকটার উন্নতি করার জন্য পুরো বিদ্ধস্ত একটা পরিবারের বেচে যাওয়া মানুষ আমার আব্বুকে হানাদারের হাতে ধরিয়ে দেয় আব্বুর নিজেরি চাচাতো ভাই হক রাজাকার । ? রাখে আল্লাহ মারে কে , সেবারো আব্বু বেঁচে গিয়ে চিকিৎসার জন্য ভারত চলে যান।
সম্রাট ভাই আজকের প্রজন্ম কি আমার আব্বুর কষ্ট বুঝবে? যারা নিজেকে রাজাকর বলে মাথায় পতাকা বেধে স্লোগান দিচ্ছে।
©somewhere in net ltd.
১| ০১ লা জুলাই, ২০২৪ বিকাল ৪:১৪
মৌরি হক দোলা বলেছেন: মোগল সম্রাটও বউকে বলতে পারলো না, "আমার এই বৃষ্টিতে ছেলেকে নিয়ে বের হওয়ার ইচ্ছা নাই"!!!!!