নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সাধারণ পাঠক ও লেখক
যে চারটি অংগ নিয়ে যুক্ত রাজ্য গঠিত তার মধ্যে স্কটল্যন্ড একটি । এর আয়তন প্রায় ৩০১৪৪ বর্গ মাইল আর লোক সংখ্যা অর্ধ কোটির কিছু বেশী প্রায় ৫৫ লক্ষ । রাজধানী এডিনবরা । অন্যান্য গুরুত্বপুর্ণ শহরের মধ্যে গ্লাসগু, ডান্ডি ও এবারডীন অন্যতম । গতকাল সামুর পাতায় স্কটল্যান্ড এর উপর একটি চমৎকার পোষ্ট দেখলাম । পোষ্টটির উপর মন্তব্য করতে গিয়ে মন্তব্য কলাম ভারী হয়ে যাবে বিবেচনায় এ বিষয়ে পৃথক একটি পোস্ট করা হবে বলে আবেগের বসে বলে ফেলেছিলাম । কথা যখন দিয়েছি তখন একটু যোগ তো করতেই হয় । ব্লগের লিখাটি যারা দেখবেন দ্বিত্বতার কারণে খানিকটা বিরক্ত যে হবেন তা ধরে নিয়েই আমার দেয়া কথার দায় শোধের জন্য ছোট্ট এ প্রয়াসটি নেয়া হয়েছে ।
যাহোক মূল কথায় ফিরে আসা যাক । এবারডীন শহড়ের বর্তমান লোক সংখা ২লক্ষ ২৮ হাজার । এখানে মুসলিম জনসংখা প্রায় ৫ হাজার যার মধ্যে এক হাজারের ও অধীক বাংলাদেশী বংশোদ্ধত ।
এবারডীন শহরে বর্তমানে তিনটি মস্জিদ চালু আছে । মস্জিদ তিনটি হলো ( ১) মসজিদ এন্ড ইসলামিক এসোসিয়েশন অফ এবারডীন, (২)এবারডীন মুসলিম এসোসিয়সন মস্জিদ (৩)সৈয়দ শাহ মোস্তফা জামে মস্জিদ । এছাড়া বর্তমানে প্রায় ১০০০ মুসুল্লী ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন ‘মস্জিদ আল হিকমা” নামে আরো একটি বিশালাকার মস্জিদ ও ইসলামী সেন্টারের নির্মাণ কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে।
এবারে আসা যাক মুল প্রসংগে । এবারডীন শহরের কেন্দ্রস্থলে কোন মস্জিদ না থাকায় মুসল্লীদের নামাজের সুবিধার্থে বছর কয়েক আগে বাংলাদেশী বংশোদ্বত মুসলমানদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় শহড়ের কেন্দ্রস্থলে সৈয়দ শাহ মোস্তফা জামে মস্জিদ নামে একটি মস্জিদ নির্মিত হয় । যার ছবি উপরে দেখানো হয়েছে।
কিন্তু মসজিদে স্থান সংকোলনের অভাবে অনেক মুসুল্লীকেই মসজিদের বাইরে প্রচন্ড শীতের মধ্যে ( এবারডীন শহড়ে শীত কালে তাপমাত্রা প্রায়ই শুন্য থেকে মাইনাস ৪/৫ ডিগ্রীতে নেমে আসে) নামাজ পড়তে হত বিশেষ করে জুম্মার দিনে । মুসুল্লীদের এত কষ্টের মধ্যে নামাজ পড়তে দেখে মসজিদ সংলগ্ন চার্চের রেভারেন্ড ড:আইজাক পোবালান তার অনুসারীদের সাথে আলাপ আলোচনা করে প্রতিবেশী মুসলিমদের উপসনার স্বার্থে চার্চের একটি অংশ মসজিদের সাথে যুক্ত করে দিয়ে নামাজ আদায়ের জন্য উম্মোক্ত করে দেন । ছবিতে দেখুন । নীচের ছবিটি এবারডীন সিটির ক্রাউন স্ট্রিটে অবস্থিত এপিসকোপাল চার্চের ।
সৈয়দ শাহ মোস্তফা জামে মস্জিদ এর প্রধান ইমাম শেখ আহম্মদ মাগারবী এবং এপিসকোপাল চার্চের রেভারেন্ড ড: আইজাক পোবালানের যৌথ ঘোষনা পর্বটির ছবি নীচে দেখুন।
মুসল্লীরা কিভাবে গীর্জা হতে মস্জিদে রূপান্তরিত অংশে নামাজ আদায় করছে তা নীচের ছবিতে দেখুন ।
মিডিয়া বিশেষ করে বিবিসির বদৌলতে বিষয়টি তখন বৈশ্বিক আলোচনার শীর্ষে চলে আসে এবং সমসাময়িক কমপারেটিভ রিলিজিয়াস স্টাডির একটি উর্বর ক্ষেত্রে পরিণত হয়। দুনিয়ার বিভিন্ন প্রান্তের ইসলামী ও অনৈসলামী বিশিস্ট আলেম ও পন্ডিত বর্গ এ বিষয়ে নিরীক্ষা ধর্মী গবেষণা কার্যক্রম হাতে নেন । অতি সম্প্রতি (গত সেপ্টেম্বর ২০১৫ সালে ) এবারডীন ইউনিভার্সিটির সোসিওলজী বিভাগের হেড অফ দি ডিপার্টমেন্টের নেতৃত্বে আমেরিকা যুক্তরাস্টের স্পনসরশীপের আওতায় মুসলমান ও খ্রিষ্টান ধর্মীয় সম্প্রদায় কিভাবে পাশপাশি একসাথে যার যার ধর্মীয় উপাসনা ও প্রার্থনা করছে তার উপর একটি নিরীক্ষা ধর্মী গবেষণা পরিচালনা করে । ঘটনাক্রমে এ গবেষণা কর্মের সাথে এই প্রতিবেদকের কিছুটা সংস্লিস্টতা ছিল । গবেষণা কর্মটির প্রতিবেদন এখনও চুড়ান্ত হয়নি । প্রতিবেদনটি প্রকাশ হলে আশা করি বিস্তারিত জানা যাবে , জানা যাবে এর আন্তর্জাতিক প্রভাব । বিশ্বব্যপী ধর্মীয় সহিংসতা পরিহার করে সকলের শান্তিপুর্ণ সহবস্থান , উপসনা ও প্রার্থনার ক্ষত্রে সৃস্টি হতে পারে নতুন একটি অধ্যায়ের । এমনিতেই ,এখন পশ্চিমা বিশ্বে হাজার হাজার বিশালাকৃতির গীর্জা জনশুন্য ও বিরানভুমিতে পরিনত হওয়ার পর্যায়ে । এগুলি যদি আল্লার কৃপায় মসজিদে রুপান্তরিত হয়ে মানুষকে দ্বিন ইসলামের দিকে ধাবিত করে তবে এর চেয়ে ভাল আর কি হতে পারে । দেশ দেশান্তরে মহান ইসলামের বিজয় হবে এতো আল্লাহ তায়ালার ইচ্ছাধীন ও তাঁরই বিধান এবং এখতিয়ারধীন ।
এবারডীন শহড়ের মানুষজন যে যার মত শান্তিপুর্ণ সহাবস্থানে নামাজ ও প্রার্থনা করতে থাকুন । এবারডীন সিটির কথা যখন আলোচনা পর্যায়ে চলেই এলো তখন চলুন না আমরা এবারডীন ও তার আশেপাশের উল্লেখযোগ্য স্থাপনা ও নিদর্শন সমুহ এ সুযোগে একবার প্রদক্ষীন করে আসি । জ্ঞানের দুয়ার সুযোগ পেলে কিছুটা বিসতৃত করে নিতে দোষ কি , জ্ঞানের বিস্তার সাধন সেতো ইসলামেরও একটি শিক্ষা ।
এবারডীনকে বর্তমানে ‘ক্যাপিটেল সিটি অফ অয়েল’ বলে আখ্যায়ীত করা হয় । ১৯৬০ এর দশকে উত্তর সাগরে তেল ক্ষেত্র আবিস্কার ও সেখান থেকে ব্যপক হারে তেল উত্তোলন ও দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিতরণের ফলে এটাকে তখন থেকে কেপিটাল সিটি অফ অয়েল হিসাবে অবিহিত করা হয়ে থাকে । গভীর সমুদ্রে এর তেল উত্তোলন কর্মযজ্ঞ নীচের ছবিতে দেখুন ।
শুধু তেলই নয় , এর পোতাশ্রয়টি কিভাবে শহড়ের কের্দ্রস্থলে সম্প্রসারিত করে বড় বড় বানিজ্যক জাহাজকে নগরের কেন্দ্র পর্যন্ত নিয়ে আসছে তা নীচের ছবিতে লক্ষনীয় :
এবারডীন থেকে মাত্র ২৫ মিনিটের ড্রাইবে পৌঁছে যাওয়া যায় নৈশর্গিক শোভামন্ডিত স্টোনহেভেন নামক সাগর সৈকতে । ছবিতে দেখুন স্টোনহেভেন এর উপভোগ্য গ্রামীন প্রাকৃতিক মনোমুগ্ধকর দৃশ্য়।
যদিও আমাদের দেশের সাগর উপকুল , সুন্দরবন, মহেশখালী কিংবা টেকনাফ বা সেন্ট মাটিনের মনোলোভা প্রাকৃতিক দৃশ্য়াবলী আরো অনেক অনেক বেশী সুন্দর ও মনলোভা। তাই এই ফাকে এখানে আমাদের দেশের কয়েকটি মন কেড়ে নেয়া দৃশ্য জোরে দেয়া হলো আমাদের বিদেশী বন্ধুদেরকে দেখানোর জন্য । যাদেরকে পারি ব্যক্তিগতভাবে বলব পোষ্টটি দেখার জন্য বাকিরা মাবৈ !
আমাদের সুন্দরবন:
জলে কুমীর ডাংগায় পৃথিবীখ্যাত রয়েল বেঙ্গল টাইগার , বনে অপুর্ব সুন্দর মায়া হরিণের মায়াবী বিচরণ, গহীন অরণ্যে মাওয়ালির জগত বিখ্যাত পদ্য মধু আহরণ, সকাল বিকাল পানি ও ডাংগার অপুর্ব সংমিশ্রন এত বড় জীব বৈচিত্রে ভরপুর ম্যনগ্রোভ ফরেষ্ট পৃথিবীতে দ্বিতীয় আর একটি ও নেই।
সেন্টমার্টিন
পৃথিবী বিখ্যাত প্রবাল দ্বীপ , একে নিয়ে তো আমরা গর্ব করতেই পারি । এর মাঝে লুকিয়ে আছে মহামূল্যবান খনিজ আকর যা এনে দিতে পারে অমাদেরকে বিশাল ঐশর্যের উপকরণ । নিরন্তন গবেষণা চলছে কিভাবে এ রত্নভান্ডার থেকে কাংখিত মনিমুক্তা আহরণ করে অর্থনৈতিক উন্নয়নের হাতিয়ারে পরিনত করা যায় । আমাদের দেশের তরুর বিজ্ঞানী সমাজ এ মহত কাজে তাদের উদ্ভাবণী শক্তি নিয়ে এগিয়ে আসবেন এ কামনাই করি । সামুর কবি ভাই বোনেরাও এ বিষয়গুলিকে কাব্যিক অনুভুতি ও অপুর্ব কথামালায় প্রতিনিয়ত তুলে আনছেন দেখতে পাচ্ছি । এ সমস্ত অনুভুতি ও কথামালার ব্যপক প্রচার ও প্রসার একান্তভাবে কাম্য , তবেই না জগত পরিসরে পরিচিতি পাবে বাংলাদেশের প্রাকৃতিক নৈসর্গের কাব্যিক বিবরণ ও সুখানুভুতির ইতিহাস ।
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত
বিশ্বের সেরা বেলাভুমি সমুদ্র সৈকত , এর কথা কজন বিদেশীই বা জানে । তাই সুযোগ পেলেই এ বার্তা পৌঁছে দিতে হবে পৃথিবীর আনাচে কানাচে । দেশের পর্যটনের উন্নতি ডেকে আনে দেশের সার্বিক দেশের উন্নতি , দেশকে বিদেশীরা জানতে পারে , চিনতে পারে , এর ফল হয় বহুমাত্রিক ।
পরিশেষে বলতে চাই, বিদেশকে দেখতে গিয়ে যেন নীজেকে ভুলে না যাই , আমার দেশটি যে সকল দেশের সেরা সে যে আমার জম্মভুমি । কথাটা যেন মনে থাকে সবসময় সর্ব কাজের ফাকে, এ চেতনা বুকে রেখে সকলের সুখ শান্তি কামনা করে ইতি টানলাম ।
১৫ ই মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১:২৮
ডঃ এম এ আলী বলেছেন: সরদার ভাই, ধন্যবাদ , অতি সত্য একটি কথা বলেছেন । আমাদের ধর্মীয় নেতাদের বোধদয়ের জন্যই মুলত: প্রচেষ্টা । যতদিন না সধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত লোকজন ধর্মীয় নেতৃত্বের অাসনে বসতে না পারবে ততদিন পর্যন্ত এ রকম চলতেই থাকবে । আর একটি কথা, ধর্মীয় নেতা নির্বাচনী পরিক্ষায় কমপারেটিভ রিলিজিয়নের উপর সমপরিমান নম্বরের পরীক্ষায় উত্তীর্ন হওয়ার বিধান চালু করা প্রয়োজন । এরকম হলে তারা ধর্ম বিষয়ে সঠিক জ্ঞানী হবেন , অন্যথায় একটা ঘাটতি থেকেই যাবে । উল্লেখ্য যে হিরা গুহায় নবুয়তি পাওয়ার পর নবী করিম( সা ও নবুয়তি প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার বিষয়ে বিবি খাদিজার চাচা যিনি খ্রিষ্ট ধর্ম ও বা্ইবেলের উপর একজন জ্ঞানী ব্যাক্তি ছিলেন তার কাছেও গিয়ছিলেন । নবুয়তি লাভের পর নবির সকল কাজই হাদিস । সে হিসাবে তাঁকে অনুসরন করে আমাদের ধর্মীয় নেতাদেরও উদারতা দেখানো প্রয়োজন । কিন্ত বাস্তবে কি দেখা যাচ্ছে, কোন কোন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান থেকে মা্ইকে ডেকে বিধর্মীদের উপসনালয়ে আঘাত হানার মত ঘটনাও ঘটছে ।
২| ১৫ ই মার্চ, ২০১৬ দুপুর ১২:১৬
নুর আমিন লেবু বলেছেন: আমার দেশ, আমার অহংকার
১৫ ই মার্চ, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:০০
ডঃ এম এ আলী বলেছেন: ধন্যবাদ এই তো চাই । ঘরে ঘরে জনে জনে তাই হোক ।
৩| ১৫ ই মার্চ, ২০১৬ বিকাল ৩:০৬
বিজন রয় বলেছেন: ভাল সম্প্রীতি।
১৫ ই মার্চ, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:০৪
ডঃ এম এ আলী বলেছেন: ধন্যবাদ, কামনা করি আপনার মত করে হৃদয়ের মধ্যে থাকা সম্প্রীতির বৃত্তটা ক্রমেই বড় থেকে বড় হোক ।
৪| ০২ রা জুলাই, ২০১৬ রাত ৯:৫৭
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: ভাল লাগল এমন উদারতা দেখে
০২ রা জুলাই, ২০১৬ রাত ১০:৩৪
ডঃ এম এ আলী বলেছেন: ধন্যবাদ দেখার জন্য ।
৫| ১৩ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১০:২৪
ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: এমন উদারতা সবার কাম্য হওয়া উচিত।
১৩ ই এপ্রিল, ২০১৭ রাত ১০:৩৩
ডঃ এম এ আলী বলেছেন: ধন্যবাদ ফরিদ ভাই , শুনে খুব খুশি হলাম ।
৬| ০৪ ঠা জুন, ২০১৮ সকাল ১০:৩০
খায়রুল আহসান বলেছেন: দুটি ভিন্ন ধর্মের অনুসারীদের মাঝে এমন সৌহার্দ্য এবং সম্প্রীতির কথা জেনে অভিভূত হ'লাম। ধন্যবাদ, বিষয়টি তুলে ধরার জন্য।
০৭ ই জুন, ২০১৮ ভোর ৫:৩৭
ডঃ এম এ আলী বলেছেন: ধন্যবাদ শ্রদ্ধেয় আহসান ভাই । অনেক পুরাতন একটি পোষ্টে মুল্যবান মন্তব্য রেখে যাওয়ায় খুব খুশী হলাম । ভিন্ন ধর্মাবলম্বিদের মধ্যে সম্পৃতির মাধ্যমে বিশ্ব শান্তিময় হোক , তবে এটাই এখন একটি বড় চ্যলেঞ্জ ।
৭| ০৭ ই জুন, ২০১৮ ভোর ৫:৪৯
মনিরা সুলতানা বলেছেন: অনেকদিন পর সাম্প্রতিক মন্তব্য ঘরে আপনার নাম দেখলাম!!!!
আশা করছি ভালো আছেন!!ভালো ছিলেন?
রামাদানের শুভেচ্ছা!
©somewhere in net ltd.
১| ১৫ ই মার্চ, ২০১৬ সকাল ১১:০০
সরদার ভাই বলেছেন: তবে মহা সত্য হচ্ছে কোন মুসলিম ধর্মীয় নেতা এই উদারতা দেখানোর সাহস পাবেন না। ধর্মীয় গোড়ামি ইসলামের উপর চেপে বসেছে।