নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাহিত্য, সংস্কৃতি, কবিতা এবং সমসাময়িক সামাজিক বিষয়াদি নিয়ে গঠনমুলক লেখা লেখি ও মুক্ত আলোচনা

ডঃ এম এ আলী

সাধারণ পাঠক ও লেখক

ডঃ এম এ আলী › বিস্তারিত পোস্টঃ

সপ্তদশ শতকের কবি ‘’কেতকাদাস ক্ষেমানন্দ’’ বিরচিত মনসা মঙ্গল কাব্য – ২য় পর্ব - চাঁদ সদাগরের নৌকা ডুবি

১০ ই জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৩:০২


১ম পর্বটি দেখার জন্য এখানে ক্লিক করুন
সপ্তদশ শতকের কবি ‘’কেতকাদাস ক্ষেমানন্দ’’ বিরচিত মনসা মঙ্গল কাব্য – ১ম ‌ পর্ব

২য় পর্ব

চাঁদ সদাগরের নৌকা ডুবি

দেবীর আজ্ঞায় হমুমান যায়
সাথে লয়ে মেঘগণ ।
পুস্কর দুস্কর আইল সত্তর
করি ঝড় বরিষন।।

আসি কালিদর উভয়েই কয়
ডুবাইতে সাধু তরী।
বীর হনুমান অতি বেগে যান
করিবার ঝড় বারি।।

পাবনী আকাশে প্রখর বাতাসে
হৈল মহা অন্ধকার ।
গেঠার গাবর নায়ের নফর ।
নাহিক দেখে নিস্তার ।।

গজ গুন্ডাকার পড়ে জলধার
ঘন ঘোর গর্জনে গর্জে ।
মনে পাইয়া ভয় বলে সদাগর
যাইতে নারিলাম রাজ্যে।।

হড় হড় হড় পড়িচে চিকুর
যেন বেগে ধায় গুলি।
বলে কর্ণধার নাহিক নিস্তার
ভাঙ্গিল মাথার খুলি ।।

দেখিবে অদ্ভূত হাসিছে বিদ্যুৎ
ছাইল গগনে ভানু।
বিপদ গণিয়া বলিছে কান্দিয়া
কেনগো বাণিজ্যে আইনু।।

তরী সাত খান চাপি হনুমান
চক্রাবর্তে দেয় পাক ।
ঘন ঘন ঝড়ে ছই গেল উড়ে
প্রবল পবন ডাক।।

হাঙ্গর কুমীর আসিয়া বিস্তর
তরী আশে পাশে ভাসে।
জলে ডিঙ্গা লয়ে রাখে পাক দিয়ে
অহি ধায় গ্রাস আশে।।

বিপদ ঘটালে কালীদ উথলে
তরঙ্গে তরুণী বুড়ে ।
হইয়া বিকল কান্দিয়া সকল
জলে ঝাঁপ দিয়া পড়ে ।।

মেঘের গর্জনে আর বরিষনে
কান্ডারী কাঁপিছে শীতে ।
শক্তি নাহি নড়ে মূর্ছাগত পড়ে
সবে রহে এক ভিতে ।।

ডিঙ্গার নফরে গ্রাসিল হাঙ্গরে
কাছি তার গিলে মাছে ।
চাপিয়া তরণি হনুমান আপনি
হেলায়ে দুলায়ে নাচে ।।

ঘন পড়ে ঝষ্ণনা ভাসিল ফতনা
ভেসে গেল কালীদহ জলে ।
ডিঙ্গা হৈল ডুবু ডুবু মনসার নাম তবু
সদাগর মুখে নাহি বলে ।।

যা করেন শিবশূল এবারে পাইলে কূল
মনসারে বধিব পরানে ।
যত বলে বেনিয়া এ সব শুনিয়া
কোপে জ্বলে বীর হনুমানে ।।

করি তবে হুড়মূড় তুলিল প্রবল ঝড়
হনুমান বাড়িল যে বলে ।
মতি গতি মনসার ঘা মারিয়া পদের
সাত ডিঙ্গা ডুবাইল জলে ।।

কান্দয়ে বাঙ্গাল হইনু কাঙ্গাল
ভেসে গেল পোস্তের হোলা ।
বিপদ সাগরে জলের উপরে
ভাসিয়া নিদান বেলা ।।

ডুবাইয়া নায় চাঁদ জল খায়
বিষহরী খল খল হাসে ।

জয় জয় মনসা তুমি মা ভরসা
রচিলেক কেতকাদাসে ।।


ছবিসুত্র : গুগল ইন্টার নেট
কবিতা সুত্র: ১ম পর্বে বর্ণিত

মন্তব্য ১৯ টি রেটিং +৪/-০

মন্তব্য (১৯) মন্তব্য লিখুন

১| ১০ ই জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৩:৩০

কালনী নদী বলেছেন: মা কালীর একটা ফটো দিলে ভাল হইত। আমি মা কালীর ভক্ত ।

সুন্দর ভাই +।

১০ ই জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৩:৫০

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ ভাই । ভাল কথা বলছেন , চারিদিকে তাকালে দেখা যায় আমাদের ফুলে ফলে ভরা আশার তরীখানি ডুবিয়ে দিয়ে অনেকেই খল খল করে হাসছে । তাদের জন্য কালীর মত একজন প্রয়োজন হবে , দেখা যাবে তাঁকে সময়কালে ।
ভাল থাকার শুভ কামনা থাকল ।

২| ১০ ই জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৫:২৮

কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন: ভাল লাগল এ পর্বও
ধন্যবাদ ছোট করে পর্ব দেয়ার জন্য

১০ ই জুলাই, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৩১

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: ধন্যবাদ ভাল লাগার জন্য ।

৩| ১০ ই জুলাই, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:০৪

সুমন কর বলেছেন: শেয়ার করার জন্য ধন্যবাদ। গুড পোস্ট। +

১০ ই জুলাই, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:৫৮

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: ধন্যবাদ দাদা ,
কবিতাটি সকলের সাথে শেয়ার করে পাঠৈর প্রবল ইচ্ছে থেকেই এ রকমের একটি প্রয়াস । বছর ত্রিশেক আগে সমমনা কয়েকজনে মিলে অন্বেষা নামে একটি কবিতা পাঠের অাসর গড়ে আমাদের এলাকার স্কুল প্রাঙ্গনে মনসা মঙ্গল কাব্যের কিছু কবিতা পাঠের নিমিত্ত একটি অনুষ্ঠান করেছিলাম । সেখানে ঐ সমস্ত কবিতা শুনার জন্য সাধকরণ মানুষের যে রকম সারা দেখেছিলাম তার বিন্দু বিসর্গও আজকের পাাঠক সমাজ এমনকি কবিতার প্রতি যাদের কিছুটা প্রিতি আছে সেখানেও অনুভুত হয়নি ।
মধ্যযুগীয় সে সমস্ত কবিতা পাঠ না করলে বুঝাই যায়না সে যুগেও বাংলার কাব্য ভুবন ছিল কত সমৃদ্ধ । একই শব্দের কত শত প্রতিশব্দ এবং সফলভাবে কাব্যের বিভিন্ন চড়নে তাদেরকে সফলভাবে প্রয়োগ করা যায় তা তাদের কবিতা পাঠ না করলে বুঝা যায়না ।

ভাল থাকার জন্য শুভ কামনা রইল ।

৪| ১০ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ১০:০৪

আবুল হায়াত রকি বলেছেন: বর্তমানে এই ধরণের রচনা সত্যি অসাধারণ আর আপনার কাব্যচয়ণ সেটা প্রশংসনীয়। পরের পর্বের জন্য আকর্ষণবোধ করছি।

১০ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ১১:৩৫

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ , আপনার প্রসংসাবানী শুনে ভাল লাগল সাথে উৎসাহিতও হলাম ।
আশা করি সহসাই পরের পর্ব পোষ্ট করতে পারব ।

শুভেচ্ছা রইল ।

৫| ১১ ই জুলাই, ২০১৬ সকাল ৯:৪৬

জুন বলেছেন: মনসামংগলের কিছু অংশ কে পুন: দেখা হলো আপনার কল্যানে।
+

১১ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ৯:০৩

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ, আধুনিক নতুনত্বের চোখ ধাধানো মনোরম লিখনীর প্রাধান্যতার ভীরে এই মধ্যযুগীয় লেখাটিতে কষ্টকরে সময় দেয়ার জন্য । কেতকাদাস ক্ষেমানন্দের মত কাল জয়ী একজন খ্যাতিমান ক্ষমতাধর কবির কথা আমরা কজনই বা স্মরণে রাখতে চাই । তার লিখা কাব্যগ্রন্থের কোন পুস্তক তন্য তন্য করে খুঁজেও অমাদের দেশের কোন গ্রন্থাগারে পাইনি । বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপক আমার প্রয়াত চাচার ব্যক্তিগত সংগ্রহ ঘেটে মনসা মঙ্গলের উপর প্রাপ্ত পুস্তকাদি সহায়ক ভুমিকা পালন করেছে । এসমস্ত কবিদের লিখা নিয়ে আমরা যতনা উৎসাহী তার থেকে অনেক বেশী উৎসাহী ও সিরিয়াস বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয় ও সংগ্রহকারীরা । লিখাটির প্রথম পর্ব লিখার সময় পরিচিত জনা কয় বাংলা সাহিত্যের অধ্যাপকের কাছে জানতে চেয়েছিলাম তারা কেও সম্পুর্ণ মনসা মঙ্গল কাব্য সম্ভারটি পাঠ করেছেন কিনা । জবাবটি অনেকটা নিরাশার মত । একারণে মনে হল
কালজয়ী কবিদের লিখা কবিতাগুলি আমরা সকলে মিলে শেয়ার করে পাঠান্তে সে সমস্ত কবিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর একটা প্রয়াশ নিতে পারি ।
ভাল লাগল এবং খুশী হলাম কেতকাদাস বিরচিত কবিতাটি পুণ: পাঠের জন্য ।

নিরন্তর ভাল থাকার শুভ কামনা থাকল

৬| ১১ ই জুলাই, ২০১৬ বিকাল ৫:৩৬

নীলপরি বলেছেন: অসাধারণ হয়েছে কবিতা । তুলনাহীণ কাজ । ++

১১ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ৯:০৮

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: ধন্যবাদ কবিতাটি পাঠের জন্য । আপনার প্রসংসাবানীতে নীজকে অনুপ্রানীত বোধ করছি ।
ভাল থাকার শুভেচ্ছা রইল ।

৭| ১৩ ই জুলাই, ২০১৬ সকাল ৮:৪৯

চাঁদগাজী বলেছেন:



মানুষের শত যুগের লোককথা এক সময় ধর্মে স্হান করে নিয়েছে, মানুষের জন্য উদাহরণ সৃস্টি করেছে; সেজন্য হিন্দু ধর্ম বেশ সহজ

১৩ ই জুলাই, ২০১৬ সকাল ৯:০২

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: লোককথা ও ধর্মের অপুর্ব সমন্বয় করেছেন । ধর্মকে মানুষের জিবনের গভীরে নিয়ে একে লোকাচারে পরিনত করতে পারলে ধর্মের কঠিন বর্মটি অনেক সহজ হয়ে আসে । অতি সুন্দর একটি ধারণা দিয়েছেন ।
ধন্যবাদ ।

৮| ১৩ ই জুলাই, ২০১৬ রাত ১১:২৮

শেয়াল বলেছেন: লেখার হাত ভাল আছে আপ্নার । হেইডা বলতেই হয় ।

১৪ ই জুলাই, ২০১৬ সকাল ৮:৪১

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: ধন্যবাদ আপনার সকল প্রসংসাবানী সর্বদাই আমাকে উৎসাহিত ও অনুপ্রানীত করে এবং ভুল শুধরাতে সুন্দর দিক নির্দেশনা দেয় সে জন্য কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি ।
নিরন্তন ভাল থাকার শুভেচ্ছা রইল ।

৯| ০৮ ই আগস্ট, ২০১৬ সকাল ৯:১৯

খায়রুল আহসান বলেছেন: দেবীর আজ্ঞায় হমুমান যায়
সাথে লয়ে মেঘগণ ।
পুস্কর দুস্কর আইল সত্তর
করি ঝড় বরিষন।।
- শুরুটাই খুব চমৎকার হয়েছে।
এই দূর্লভ কাব্যের সাথে সামু'র পাঠকদেরকে পরিচয় করিয়ে দেবার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

০৮ ই আগস্ট, ২০১৬ রাত ১১:০৭

ডঃ এম এ আলী বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ । এই চমৎকারিত্য পৌঁছাইয়া দেয়া হবে কবি কেতকাদাস ক্ষেমানন্দের সমীপে ।
আমি শুধূ অনুলিখক , তার লিখাটিকে পাঠক সমাজে পরিচিতি দেয়ার মানসে । আমি পুরা মনসা
মঙ্গল কাব্যটিকে অনুলিখন করে রেখে দিয়েছি যতন করে । পাঠক সারা নেই দেখে এখানে
দেয়ার ইচ্ছেটা রেখেছি দমন করে ।
শুভেচ্ছা রইল

১০| ১৭ ই আগস্ট, ২০১৬ সকাল ৭:১১

মহিউদ্দীন রুবেল ডেল্টা বলেছেন: ভাইয়া, শুভ সকাল। ' দেবীর আজ্ঞায় হমুমান যায়
সাথে লয়ে মেঘগন।' এখানে ' হমুমানের' হনুমান হবে বোধহয়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.