নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মাহমুদ আলী আলমগীর

মাহমুদ আলী আলমগীর › বিস্তারিত পোস্টঃ

এরশাদ সিকদার বনাম রানা প্লাজার মালিক রানা এবং প‌্যারাডক্স

২৫ শে এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১০:০০

একসময়ের ভয়ংকর সন্ত্রাসী এরশাদ শিকদার মানুষের বুকের উপরে উঠে লাফাতো যতক্ষন না পাজরের হাড় ভাঙ্গার শব্দ পাওয়া যেত। মৃত্যু নিশ্চিত করে, লাশের সাথে সিমেন্টের বস্তা বেধে নদীতে ফেলে দেয়া হতো।



গতকাল সাভারের রানা প্লাজায় টনকে টন ওজনের পিলার, বীমের চাপে শত মানুষের পাজরের হাড় ভেঙ্গে গেছে, হাজার বস্তা সিমেন্টের চাপে পিশে চ্যাপ্টা হয়ে গেছে মানুষ।



এরশাদ শিকদার কত মানুষ খুন করেছে? ২০, ৩০, ৫০ কিংবা ১০০? কতদিনে খুন করেছে? এক মাস, ছয়মাস, এক বছর কিংবা ৫ বছরে?



রানাপ্লাজায় শত শত মানুষ মারা গেছে মাত্র কয়েক ঘন্টায়।



কিন্তু এরশাদ শিকদার তো একজন কুখ্যাত সন্ত্রাসী, সে মানুষ মেরে মজা পেতো, তার সাথো রানা প্লাজার ঘটনার তুলনা হবে কেনো? রানা সাহেব তো সন্ত্রাসী নন। আর এটা তো নিছকই দূর্ঘটনা, এটার সাথে এরশাদ শিকদারের তুলনা কি চলে?



তুলনাটা আপনারাই করবেন।



সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে নানারকম তথ্য দেয়া হচ্ছে। বিল্ডিঙয়ের স্তম্ভ ধরে বিরোধী দলের কর্মীরা টানাটানি করার কারনে এই দুর্ঘটনা হতে পারে। আবার, হাজার হাজার মানুষও ঐ বিল্ডিঙয়ে ছিলো না, যারা মালামাল বের করার জন্য গিয়োছিলো তারাই হতাহত হয়েছে।



গতকাল টক শোতে শুনলাম এই বিল্ডিঙয়ের ফ্যাক্টরী গুলো নাকি 'কম্প্লায়েন্ট' ছিলো! কি ভয়ংকর কথা, এই যদি হয় 'কম্প্লায়েন্ট'-এর নমুনা তাহলে 'কম্প্লায়েন্ট' না কোন গুলা?



আজকে এটা নিয়ে লিখতেছি, কদিন পরে আবার হেফাজত, নাস্তিক, রাজাকার, তত্ত্বাবধায়ক - এই সব নিয়ে ব্যস্ত হয়ে যাবো সবাই। এদেরকে আবার আমরা মনে করব যেদিন আবার কোন বিল্ডিং ধসে পড়বে বা আগুন লাগবে। আর যদি সেদিনের মৃত্যু সংখ্যা আজকের সংখ্যাকে না ছাড়ায়, তহলে সেটা বড় কোন নিউজই হবে না।



আর আমাদের সাংবাদিক ভাইরা উঠে পরে লাগবেন কিভাবে ভাঙা বিল্ডিঙয়ে মাইক্রোফন, ক্যামেরা নিয়ে সরাসরি সম্প্রচার করা যায়, কিভাবে আরেকটা টিভি চ্যানেলের চাইতে আরেকটু আগে, আরেকটু ভিতরে, আরেকটু রগরগে বিভৎস ছবি প্রকাশ করা যায়, কিংবা একজন মৃত্যু পথযাত্রী আহত আটকা পরা মানুষকে কি প্রশ্ন করলে দর্শক আনন্দিত হবে সেই সবের ট্রেনিং নিতে।



দুনিয়ার বিশিষ্ট অর্থণীতিবিদরা অবাক আমাদের দেশের উন্নতি দেখে, এতটাই অবাক যে তারা এর নামও দিয়েছে, একটা বিশেষ বিশেষনও আছে আমাদের, 'প‌্যারাডক্স' !

যা ঘটছে প্রতিদিন আমাদের চারপাশে, কোনটা 'প‌্যারাডক্স' না?







মন্তব্য ২ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১০:১৮

প‌্যাপিলন বলেছেন: সাংবাদিকদের আচরণ খুবই দু:খজনক। মানুষের জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে নিউজ প্রায়োরিটিকেই মুখ্য যারা ভাবে তাদের মনুষ্যত্ব নিয়েই সন্দেহ লাগে।

২| ২৫ শে এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১০:২০

কে বা কারা বলেছেন: কলুর ছেলে সোহেল রানা। সাভারের এক সময়ে যুবলীগ নেতা। ক্ষমতার দাপটে হয়েছেন কোটি কোটি টাকার মালিক। তার দখলবাজির হাত থেকে রেহাই পাননি সংখ্যালঘুরাও। গতকাল যে ভবনটি ধসে পড়ে, তার মধ্যেও এক সংখ্যালঘুর সম্পত্তি রয়েছে। এক সময়ে এই সোহেল রানা তার বাবার তেলের ঘানিতে কাজ করতেন। বোতলে ভরে সরিষার তেল বিক্রি করতেন হেঁটে হেঁটে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, সোহেল রানার বাবার নাম আবদুল খালেক। সবাই তাকে খালেক কলু বলেই চিনতেন। বাড়ি সাভারের বাজার রোডে। বাড়িতে গরুর ঘানিতে তেল বানাতেন আবদুল খালেক। স্থানীয় অধরচন্দ্র হাইস্কুল থেকে নবম শ্রেণী পাস করেছেন রানা। এরপর অভাবের তাড়নায় তার আর লেখাপড়া হয়নি। তাদের বাড়িটিকে এখনো কলুর বাড়ি হিসেবেই জানেন স্থানীয়রা।

এই সোহেল রানাই রাজনীতি করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। প্রথমে একটি তেল তৈরির মেশিন বসান। গরুর ঘানি থেকে উন্নতি হয় মেশিনে। নাম দেন রানা অয়েল মিল। গোলাপ ফুল মার্কা নামের সেই সরিষার তেল সরবরাহ করা হয় রাজধানীসহ বিভিন্ন এলাকায়। সেই রানা আজ পৌঁছেছেন সমাজের উচ্চপর্যায়ে। আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত থাকায় তিনি থোড়াই কেয়ার করতেন স্থানীয় প্রশাসনকে। ১৯৯৮ সালের ঘটনা। তখনো আওয়ামী লীগ ক্ষমতায়। এই সোহেল রানা তখন দখল করেন স্থানীয় রবীন্দ্রনাথ সাহার জমি। সেখানে ডোবার ওপরে রানা প্লাজা নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয় ওই বছরই। রবীন্দ্রনাথ সাহা আদালতে মামলা করলেও সে মামলা বেশিদূর এগোয়নি। একপর্যায়ে পাগল হয়ে যান রবীন্দ্রনাথ সাহা। ২০০৬ সালে পৌরসভা থেকে ছয় তলা ভবনের অনুমোদন নেয়া হয়। ২০০৭ সালের পরিবর্তিত প্রোপটে রবীন্দ্রনাথ পাগলা আবার মাঠে নামলে র‌্যাব-৪-এর কর্মকর্তা কমান্ডার আরিফের কারণে তিনি আবার পিছু হটেন বলে স্থানীয় সূত্র জানায়।

স্থানীয় সূত্র জানায়, সোহেল রানা এখন কোটি কোটি টাকার মালিক। সাভারের অসংখ্য মানুষের জমি তিনি দখল করেছেন বলে জানা যায়। স্থানীয় প্রশাসন ছিল তার কাছে জিম্মি। তার ইশারায় সাভারে অনেক কিছুই ঘটত। গতকাল হরতালকারীদের শায়েস্তা করতেই তার নির্দেশে গার্মেন্টগুলো খোলা রাখা হয় বলে স্থানীয় সূত্র জানায়। এলাকায় তার রয়েছে বিশাল বাহিনী। এই বাহিনী সাভারের বেশির ভাগ অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করছে বলে জানা যায়। গতকাল ভবন ধসের সময় তিনি নিজেও আটকা পড়েছিলেন। দুপুর ১২ টার দিকে তাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ। ধারণা করা হচ্ছে প্রশাসনের সহায়তায় তিনি অজ্ঞাত কোথাও গিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

http://www.dailynayadiganta.com/?p=171181

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.