নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আল্লামা সোবহান

আল্লামা সোবহান › বিস্তারিত পোস্টঃ

আল্লামা সোবহান ও তাঁর তিন জন সঙ্গীদের উপর নির্যাতনের কালো রাত প্রসঙ্গ।

১৬ ই মার্চ, ২০১৪ রাত ১০:৪৫

গতকাল ছিল ১৬ই মার্চ। ১৯৮৩ সালের এ রাতে কুষ্টিয়া জেলার প্রখ্যাত আলেম আল্লামা সোবহান ও তাঁর তিন জন সঙ্গী নীলফামারী শহরের বড়বাজার মসজিদে নির্যাতীত হন। কেন তাদের উপর নির্যাতন করা হয়েছিল তা আজও অনেকের কাছে জিজ্ঞাসার বিষয় হয়ে রয়েছে। যে তিনজন সঙ্গী ছিলেন তাঁরা হলেন, ঝিনেদা জেলার বিশিষ্ট ইসলামী তত্ত্ববিদ মাষ্টার আজীজুর রহমান মরহুম, টাঙ্গাইল জেলার ডাঃ আবুল কালাম আযাদ ও আল্লামা সোবহানের কনিষ্ঠ ইসলামী চিন্তাবিদ মাষ্টার আতিয়ার রহমান।

ইসলামী জলসার নামে দাওয়াত করে নীলফামারীর হুজুরগণ প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে তাদেরকে মসজিদের উপর তলায় উঠিয়ে কয়েকটি ক্যাসেট সেট সামনে ধরে আল্লামার সাথে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন জামায়াত নেতা এ্যডভোকেট আব্দুল লতীফ। তিনি একটি প্রশ্নের তালিকা পড়ে প্রশ্ন করেন যে, আল্লাহর প্রশংসা সমস্ত নয় না অসংখ্য! এ প্রশ্নের জবাবে আল্লামা সোবহান “হামদান কাছিরান” অধিক প্রসংশার হাদিছ পড়ে জবাব দেন যে, অধিক অধিক প্রসংশা আল্লাহর এবং মানুষেরও ভাল কাজের জন্য প্রসংশা আছে যেমন নবী মুহাম্মদ (স)-এর নামের অর্থ প্রশংসিত। এ কথা বলার সংগে সংগে প্রতিক্রিয়াশীলেরা আল্লামা সোবহানের উপর চড়াও হয়। এরপর অপর তিনজন আলেমকেও তাঁর সাথী হওয়ার কারণে মারধর করতে থাকে। অতঃপর আল্লামা সোবহানকে অমলসেন হিন্দু বলে মসজিদের মেঝেতে ফেলে গলায় ছুরি চালাতে প্রস্তুত হয়। ঠিক সেই মুহুর্তেই ম্যাজিষ্ট্রেট আব্দুল ওয়াদুদ পুলিশ নিয়ে এসে তাদেরকে উদ্ধার করে থানায় পঠিয়ে দেন। কিছুক্ষণ পড়ে থানার সেন্ট্রি আল্লামা সোবহানকে কোনো কিছু জিজ্ঞাসাবাদ না করেই বেতের লাঠি দিয়ে পিটাতে থাকে এবং জ্ঞান শুন্য করে মেঝেতে ফেলে রাখে। পরদিন ম্যজিষ্ট্রেট সাহেব থানায় এসে আল্লামাকে হাজত থেকে বের করে আনতে আদেশ দিলে থানায় জমায়েত হাজার হাজার মানুষের সামনে জিজ্ঞাসা করেন যে আপনি নাকি কবরের আযাব বিশ্বাস করেন না; ম্যাজিষ্ট্রেট সাহেবের এ জিজ্ঞাসার জবাবে বলেন যে, আপনি কি গাজজালির কবরের আজাব সংক্রান্ত বিষয় পড়েছেন? ম্যাজিষ্ট্রেট বললেন, হ্যাঁ পড়েছি। তখন আল্লামা সোবহান ম্যাজিষ্ট্রেটকে আবার বললেন, আপনি এটাও পড়ছেন যে কাফিরদের দেহের উপরে নিরানব্বইটি ফণা বিশিষ্ট সাপ কামড়াতে থাকবে কিয়ামত পর্যন্ত এবং রছুলুল্লাহ বলেছেন, যদি একটি সাপ পৃথিবীতে আসতো তাহলে পৃথিবীতে সবুজ ঘাস জন্মাতো না। ম্যাজিষ্ট্রেট বললেন, আপনি এ কথার দ্বারা কি বোঝাতে চান? তখন আল্লামা বললেন এতে প্রমাণিত হয় যে, কবরের আজাব আলমে বরজোখে মাটির কবরে নয়। ম্যাজিষ্ট্রেট এ কথা শুনেই স্তম্ভিত হয়ে যান এবং তার পাশে বসা এডিসি সাহেবকে বললেন ইনি তো সক্রেটিস অব দিস এরা, এ যুগের সক্রেটিস। ম্যাজিষ্ট্রেট আল্লামার এ যুক্তিতে খুবই সন্তুষ্ট হলেন এবং জেল হাজতে নিরাপত্তার জন্য চারজনকেই পাঠিয়ে দেন। পরদিন সকালে ম্যজিষ্ট্রিট প্রশাসনের আরও কর্মকর্তাদের নিয়ে জেলের ভিতর আল্লামাকে নিয়ে বৈঠক করেন। তাদের মধ্যে সুবিজ্ঞ এক অধ্যাপক ছিলেন। তিনি আল্লামাকে বললেন, আল্লাহর জাত ও সেফাত কি অপৃথক না পৃথক। আল্লামা হেসে বললেন জাত থেকে সেফাত পৃথক হলে তো আল্লাহ খন্ডিত হয়ে যান। তিনি জাত ও সেফাত একই সত্তা। জবাব সঠিক হয়েছে বলে অধ্যাপক সাহেব স্বীকার করলেন। আল্লামা সোবহান ও তাঁর সঙ্গীগণকে সু-চিকিৎসা সহ ২৩ মার্চ-এ আদালতে তুলে বেকসুর খলিস দিয়ে নীলফমারী থেকে বিদায় দেন।

গতকালের সেই ১৬ই মার্চ এই দিনে চারজন আলেমের উপর মসজিদে অন্য কোনো খানে নয়, খুবই দুঃখ জনক ঘটনার শিকার হয়েছিলেন যা একটি বিরল ঘটনা। তাদের মধ্যে প্রবীণ শিক্ষক মাষ্টার আজিজুর রহমান আজ বেঁচে নেই। ইসলামের তাত্ত্বিক ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে জুলমের শিকার হয়ে ছিলেন তিনিও। যুগে যুগে হক পন্থীদের এ হেন নির্যাতনের ইতিহাস রয়েছে। আল্লামা সোবহানও তাঁর সঙ্গীদের নির্যাতনের ইতিহাস পাতায় সাক্ষর হয়ে থাকবে। আল্লামা সোবহানও তার সঙ্গীদের নির্যাতনে ঘটনাটি ইতিহাসে অম্লান থাকবে আশা করি।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ১:১০

ঊন্মাদ বলেছেন: আপনার ইউজার নেইম আল্লামা সোবহান, আবার আপনি লিখেছেন আল্লামা সোবহান সম্পর্কে এবং লেখাটি পড়ে এটাকে নিজের সম্পর্কে লেখা বলেও মনে হয় না। নিতান্ত কৌতুহলী হয়ে প্রশ্ন করছি, ব্লগের বিষয় "আল্লামা সোবহান" এবং ব্লগার "আল্লামা সোবহান" এর মধ্যে সম্পর্ক কি?

আমার কৌতুহলের কারণ, ব্লগে উল্লেখিত আল্লামা সোবহান এর পরিচয় সম্পর্কে যদি আমার ধারনা সঠিক হয় তাহলে তাঁর সাথে আমার একটি বিশেষ সম্পর্ক আছে।

ভাল থাকবেন।

২| ১৭ ই মার্চ, ২০১৪ দুপুর ২:৫০

আল্লামা সোবহান বলেছেন: আসলে এখানে আল্লামা সোবহানের সম্পর্কে লেখা হয়। এবং অনেক সময় তারও কিছু আর্টিকেল তুলে ধরা হয়। উম্মাদ ভাই

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.