নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আল্লামা সোবহান

আল্লামা সোবহান › বিস্তারিত পোস্টঃ

লালন সাইঁয়ের আকিদা বিরুদ্ধ গাণ

১৭ ই মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৩:০০

আল্লামা সোবহান

শয়তান ইবলিস অলংকারপূর্ণ বাক্য দিয়ে মানুষ কে বিপথগামী করে থাকে। পবিত্র কুরআনে এ অলংকারপূর্ণ বাক্যকে বলা হয়েছে জুখরুফুল কাউল। ফকির লালন সাইঁ গান রচনা করেছেন সহ¯্রাধিক। কিন্তু দেখা যায় তার অধিকাংশ গানই একেবারেই ইসলামের আকিদা বিরুদ্ধ যা স্যাটানিক ছংস বলা যায়। প্রথমে আল্লাহ ও নবী সম্পর্কে খুবই অশালীন কথা ছেড়েছেন তার গানে। নি¤েœ কয়েকটি গানের কলি তুলে ধরা হল।

১। রাছুলকে চিনলে পরে খোদা চিনা যায়, গেল রূপ ভাড়ায়ে দেশ বেড়ায়ে, সেই দয়াময়। Ñ লালন সঙ্গীত, পৃ: ১১

এ গানে লালন সাইঁ আল্লাহ ও রসুলকে একই সত্তা বলে বিশ্বাস করতেন প্রমানিত হয়। রূপ ভাড়ায়ে অর্থ রূপ পরিবর্তন করে দয়াময় খোদা ও রসুল মহাম্মদ (ছ) একই জন একই অস্তিত্ব হিসেবে তুলে ধরেছেন । লালন শুধু আল্লাহ ও রসুলের মধ্যে একত্ব দেখাননি। তিনি মুরশিদকেও সংযুক্ত করে আল্লাহ রসুল ও মুরশিদ মিলিয়ে খোদার অস্তিত্ব মেনে নিয়েছেন। যেমন:

যেহি মুর্শিদ সেহিতো রাছুল

ইহাতে নেই কোন ভূল, খোদাও সে হয়।Ñ লালন সঙ্গীত পৃ: ৭



এমনি ভাবে অন্য আর এক গানে আদম (আ) কে সংযুক্ত করে ত্রিত্ত্ববাদি খোদা স্থির করেছেন। যেমন:

আত্মারূপে কর্তা হল, কর তার দিশে।

আল্লা আদম মোহাম্মদ এই তিনজন নাই ভেদাভেদ এক আত্মায় মিশে॥ Ñলালন পৃ:-৬ ১ম খন্ড

মুদ্রণে সাজিয়া প্রিন্টার্স। ১ নং কুতুবুদ্দিন আহমদ লেন। এন এম রোড কুষ্টিয়া।

লালন সাইঁ ইসলামের আখেরাত অবিশ্বাসী ছিলেন। তিনি আল্লাহকে জাত বা মূল অস্তিত্বের ছায়া গূণ যার ছিফাত নাম ধরেছেন। তিনি মূল অস্তিত্ব কে নফি এবং সেফাত অস্তিত্বকে এজবাত হিসেবে প্রকাশ করেছেন। লালন সাইঁ বলেছেনÑ

নফী এজবাদ যে বোঝেনা

মিছেরে তার পড়াশুÍনা।- লালন সঙ্গীত পৃ: ৯

আল্লাহর অবতার রসুল মুহাম্মদ লালনের এ কথা উচ্চারণ করাও মহাপাপ। তাই অন্য কেউ যাতে লালনের এ ধর্ম বিরুদ্ধ কথাকে সমর্থন না করে তার জন্য প্রতি টি মুসলিম নর নারীর সর্তক হতে হবে। কৌশলী লালন তার এ অবতারবাদ হিন্দু শাস্ত্র থেকে বহন করে মুসলিম সমাজে ছড়িয়ে দিয়েছেন। লালন সাইঁ আল্লাহ ও রছুলকে একই অজুদ সাব্যস্ত করতে গিয়ে এক আচানক তত্ত্ব প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি আল্লাহর আহাদ নাম ও নবী (ছ)- এর আহমদ নামের ভেদতত্ত্বের রূপ দিয়েছেন। এ রূপ তত্ত্ব দ্বারা যাতে আল্লাহ ও রছুলকে এক অস্তিত্ব বলা সুদৃঢ় হয় তার জন্য তিনি একের পর এক এভাবেই গেয়েছেন যেমন: - লা: সঙ্গীত পৃ: ১৪৬ ২য় যন্ত গানের নং ৩৭৮



আহাদে আহমদ এসে

নবী নাম কে জানালে?

নবী যে তনে করিল সৃষ্টি(সিজদা)

সে তন কোথায় রাখিলে?

আহাদ নামে পরোওয়ার

আহমদ রূপে সেহি এবার

জন্ম মৃত্যু হয় জানি তার

শরার আইন কই চলে॥

এ গানের প্রথম কলিতেই লালন সাইঁ আহাদে আহম্মদ অর্থাৎ আহাদ আল্লাহ হতে আহমদ নবী একই সত্ত্বা প্রকাশ করেছেন।আল্লাহর নাম আহাদ এ আহাদ যদিও আল্লাহর নাম নয়। আহাদ একটি সংখ্যাবাচক শব্দ। কিন্তু বাউল ঘেষা সুফীরা আহাদ আল্লাহর নাম হিসেবেই ধরেছেন এজন্য যে তারা নবীর আহমদ নামের সাথে ছন্দ মিলিয়েছে মাত্র। আর এ সুবিধাটা পারস্য সুফী স¤্রাট জালালুদ্দীন রূমীই সম্ভবত প্রথম গ্রহণ করেছিলেন। আর বাংলাদেশে লালন সাইঁ তারই উত্তর সুরী হয়ে ধরা দিয়েছেন। আহমদ অর্থ প্রশংসকারী আর আহাদ অর্থ একমাত্র একজন। অর্থ দুটো একেবারেই ফারাক। শুধু বর্ণের ছন্দে মেলান হয়েছে আহাদ ও আহমদ। তাই এ কোনো তত্ত্বই হতে পারে না।

লালন সাইঁ তার অনেক গানেই এ তত্ত্বকে ঢুকিয়েছেন যা একেবারেই পাগলামী অথবা শয়তানী ছাড়া নয়। লালন বলেছেন আহমদি রূপে হাদি

দুনিয়ায় দিয়েছেন ভার

লালন বলে শুনে দেলে

সেও তো বিষয় ঘোর আধার॥ -পৃ: ১৪৯ গা ৩৮১

আবহায়াতে আহাদ নুরী

জিন্দা চার যুগের উপর॥ পৃ: ১৫৩ গা ৩৮৫

আহাদে আহমদ বর্ত

জেনে কর তাহার অর্থ

হয়না যেন ভূল॥

লালন বলে ভেদ না জেনে

হলাম নামাকুল॥ -পৃ: ১৫৬, গা ৩৮৮

আহম্মদের নাম লিখিতে

মীম নফী হয় তার কিসেতে।

সিরাজ সাইঁ কয় লালন তাতে, কিঞ্চিত নজির দেখ তার॥ পৃ:১৬১ গা;৩৯৩

আহাদই যখন আহমদ নবী তখন নবী তো আর মানুষের সন্তান হতে পারেনা। এ বুঝের উপর লালন সাইঁ রছুলুল্লাহ (ছ) এর মানুষ পিতা অস্বীকার করেছেন।

তিনি বলেছেনÑ

রাছুল যিনি নয় গো তিনি আব্দুল্লাহর তনয়।

আগে বোঝ পরে মজ

নইলে দলীল মিথ্যা হয়।Ñ লালন সঙ্গীত, পৃ: ১৫৮ ২য় খন্ড ৪র্থ সংস্কারণÑ গান নং তনয়ে

বাউল স¤্রাট ফকির লালন শান বইয়ের লেখক

আকামদ্দীন লালন সাইঁয়ের এ গানে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলেছেনÑ

সব সৃষ্টির আগে যিনি আরশ মওলায় ছিলেন নুর সেতারা রূপে আল্লাহর পয়গ¤¦র সেই আদি রাসুল এলেন মা আমেনার ঘরে। এ প্রসঙ্গো বাউল স¤্রাট ফকির লালন সাইঁ বলেন, রাছুল যদি আব্দুল্লাহর তনয় হন আর তিনি রজ:বীজে জন্ম নেন তবে আল্লাহর দলিল যে মিথ্যা প্রমানিত হয় আকামুদ্দীন তার বইয়ের ৬১ পৃষ্ঠায় রহমান ফকিরের গানের ব্যাখ্যায় বলেছেন যিনি রাসুল তিনিই স্বয়ং আহাদ। তিনি নুরের নবী। রাজবীজে জন্ম নেননি, আপনার শক্তির জোরে আপনা আপনিই তিনি প্রকাশিত। তা-না হলে তাকে লা- শারিকি কেউই বলতনা। আউয়ালে নুর নবী নুররূপে শেষে এসে আমেনার ঘরে কুদরতি কায়দায় মানুষ রূপে তিনি প্রকাশিত হলেন। তার দেহ অবয়ব ছিলো নুরেরই গড়ন, নুরেরই ছাউনি আর নুরেরই আটন। লেখক হযরত মা আয়েশা সিদ্দিকার কথা বলতে গিয়ে বলেছেনÑ

হযরত মা আয়েশা সিদ্দিকা (রা) নবীজীর কোমরে বেল্ট বাধতে গিয়ে শেষ পযর্ন্ত বেল্ট পুরোটাই বের হয়ে আসে। এতেই বোঝা যায় যে, নবীজীর পুরো দেহ অবয়ব ছিলো নুরের গঠন। তাইতে তার ছায়া মাটিতে পড়েনি। পৃ: ৬১ বাউল স¤্রাট

রছুলুল্লাহ (ছ) কে আলোক মানব হওয়ার বুঝের উপর লালন সাইঁয়ের নবী তাত্ত্বিক গান গুলো সবই অবতার বাদি হিসেবে ধরা পড়েছে। রসুলুল্লাহকে আল্লাহরই অবতার বানিয়ে শয়তানের পথ প্রশস্ত করেছেন। লালন বলেছেনÑ

এমন দিন কি হবে রে আর

খোদা সেই করে গেল

রসুল রূপে অবতার॥

আদমের রূহ সেই

কিতাবে শুনিলাম তাই

নিষ্ঠা যার হলরে ভাই

মানুষ মুর্শিদ করলে সার॥ -লালন সঙ্গীত পৃ: ৩৯৩

এ গানে লালন নবী পাক (ছ) কে আল্লাহর সরাসরি অবতার রূপে চিহিত করে মুসলমানদের ঈমানে আঘাত হেনেছেন।

মুসলিম নর নারীর ঈমান পয়মাল করার হীন মানসে নিরঞ্জন সাঁই খোদাকে নুর নবী বলেছেনÑ এ গানটি ফকীর মন্টু শাহের সংগৃহীত ৪১২ নং গান। ৪র্থ সংস্করণ পৃষ্ঠা নং ১৮০। যেমনÑ

কীর্তি কর্মার খেলা বুঝতে পারে?

যে নিরঞ্জন সাঁই সেই নুর নবীর

নামটি ধরে।

চারেতে নাম আহম্মদ হয়,

মীম হরফ তার নফী লেখা যায়

এই কথাটি জানবো কোথায়

নিশ্চিত করে॥

গঠিতে সাইঁ সয়াল সংসার

এক দেহে দুই দেহ হয় তার

আহাদ আহাম্মদের বিচার

দেখ বিচারে॥

লালন সাইঁকে যারা বর্তমানে আল্লাহর জাতে মিশে যাওয়ার দাবি তুলেছেন সেই লালন সাইঁ নবী পাক (ছ) কে নিরঞ্জন বলে খেতাব দিয়েছেন। তিনি তার গানে বলেন,

ভবে কে তাহারে চিনতে পারে

এসে মদিনায় তরীক যে জানালে এ সংসারে।

সবে বলে নবী নবী, নবী কি নিরঞ্জন ভাবি,

দিল ঢুড়িলে দেখতে পাবি

আহমদ নাম বলে যারে॥Ñলালন গীতি পৃ: ৪৭ গান ৮৭

লালন নবীকে নিরঞ্জনই ভাবেননি। তিনি অতীন্দ্রিয় জ্ঞনের (?) অধিকারী হয়ে দেখেছেন যে, জগতের সবকিছুই নবীর অংগ। আকাশ পৃথিবী থেকে কীট-পতঙ্গ ভাইরাস প্রাণীকুল হেরি দাতাঁল বাঘ ভালুক মাছ হাঙ্গঁর কুমীর সবই নাকি নবীর অঙ্গে সৃষ্টি। লালন তার গানে এভাবেই নির্লজ্জের ভুমিকা নিয়েÑ বলেছেনÑ

নবীর অঙ্গে জগত পয়দা হয়

সেই যে আকার কি হল তার কে করে নির্ণয়॥

আব্দুল্লাহর ঘরে বলো, সেই নবীর জন্ম হল

মুলদেহ তার কোথায় রইলো শুধাব কোথায়? Ñ লালন গীতি আল-আমীন বুক ডিপো ৩৭/ ১

রছুলুল্লাহ ছিলেন মানুষ। তার পিতা আব্দুল্লাহ মাতা আমেনার সন্তান। আর তাঁকে লালন সাঁই সাপ থেকো পাখি ময়ূর রূপে দীর্ঘকাল থাকার এক আজগুবি তত্ত্ব দিয়ে মানুষ নবী অস্বীকার করেছেন। যেমন:

ময়ুররূপে কে গাছের পরে দুই ঠোঁটে তাছবি জপ করে

করিম রহিম শুনি গাছের নাম রেখেছেন সাঁই রব্বানী।

লালন সঙ্গীত-২৭ পৃ: গান নং-

এমনি ভাবে লালন সাঁই ইসলামের বিকৃতি ঘটিয়ে অসংখ্য গান লিখেছেন। যে সমস্ত গান মুসলিম নর নারীকে বিপথগামী করার উপাদান বলে চিহ্নিত করা যায়। নি¤েœ কতিপয় গান তুলে ধরছি। যেমন:

এক: নারী ভজনের গানÑ

আছে মায়ের ওতে জগত পিতা, ভেবে দেখনা।

হেলা করনা বেলা মেরনা

নিস্কামী নির্বিকার হয়ে

দাঁড়াও মায়ের শরণ লয়ে

বর্তমানে দেখ চেয়ে আছে,

আছে স্বরূপে রূপ নিশানা।

এ গানে জগত পিতা ¯্রষ্টাকে মায়ের পুত্র বলেছেন লালন এবং নিষ্কামী নির্বিকার হয়ে মায়ের শরণ বা ভক্তি দান করতে বলা হয়েছে। লালন সঙ্গীত ৩০০ পৃ: গান নং ৪৩২।

ভজন সাধন করতে লালন তার ¯্রষ্টা কে নারী ভেবেছেন। তিনি ¯্রষ্টাকে মা ডেকে বলেছেন এইÑ

তুমি মা সৃষ্টি কর্তা

সৃষ্টি করলে সবারি

যোগে যোগে তুমি হও মা যোগেশ্বরী

তোমার ভজন না বুঝিয়ে

কুযোগে মজিয়ে, মারা গেল জীব ঘোর তুফানে।

এ গানে তোমার ভজন কথার উপর লালনকে নারী ভজনকারী বলা যায়। অনেকে ভোজন শব্দে অর্থ টেনে আমার এ আখ্যায়নকে মশকারী মনে করে বসেছেন। নারী ভজন অর্থ নারীর বন্দেগী করা। সুরা নেছায় আছেÑ

ইঁই ইয়াদউনা মিন দুনিহী ইল্লা ইনাছা

ওয়া ইই ইয়াদউনা ইল্লা শইত-নাম মারিদা।

নিছা-১১৮

অর্থ (যারা অংশী স্থাপন করে) যারা নারীকে ছাড়া অন্য কাউকে ডাকেনা। তারা সেই শয়তানকেই ডাকে যে মারিদ (জেদি)।

লালন সাইঁ ¯্রষ্টা কে মা সাব্যস্ত করেই তো ডেকেছেন তুমি মা সৃষ্টি র্কতা। লালন নি:সন্দেহে একজন নারী রূপী শয়তানকে তার বিধাতা হিসেবে ডাক দিয়ে মোশরেকদের অন্তর্ভূক্ত হয়েছেন। যে মাকে সাধন যোগে ঈশ্বরী হিন্দু জাতির দেবী আর মুসলমানদের জন্য ফাতেমা বানাতেও লজ্জা বোধ করেন নি তিনি। তিনি মায়ের শরণ নেওয়া মানে মা ফাতেমাকে শরণ নিয়ে এবাদত করতে বলেছেন। এ গানে সে কথায় প্রকাশ পাচ্ছে যেমন:

নিলে ফাতেমার শরণ ফতেহ হয় করণ

আছে সাইঁর জবানে।

নারী ভজনেই মুক্তি তাই অসংখ্য নারীর শরণ নারীর ভজন করার পরামর্শ রয়েছে।

লালন সাঁই নারী ভজনের ভজক হয়ে নবী মুহাম্মদের লিঙ্গ পরিচয় দিতে সন্দেহ ভাজন হয়ে গেছেন। নবী পুরূষ ছিলেন কি প্রকৃতি ছিলেন তার গানে তুলে ধরেছেন।তিনি বলেছেনÑ

নবী যারে মানিতে হয়, উচিৎ বটে তাই জেনে লয় পুরূষ কি সে প্রকৃতি কায়, সৃষ্টি সৃজন কালে॥

Ñবাউল স¤্রাট ফকীর লালন শাহ পৃ: ৬৯

আলোচ্য গানের প্রথম কালিÑ আহাদে আহাম্মদ এসে-।

লালন সাইঁ শেষ পর্যন্ত মদীনার কবরে থাকা রছুল অস্বীকার করে রসুলুল্লাহকে হায়াতুল মুরসালীন বলে কুরআনে প্রমান থাকার মিথ্যা দাবি করেছেন। এত বড় ডাহা মিথ্যার উপর গান রচনা করতে পেরেছেন কি ভাবে তা ভাব Ÿার বিষয়। লালন এ যুগের জিন্দা পুরূষ হলে জিজ্ঞাসা করা যেত। বলা যেত কুরআনের কোন আয়াতের কত নম্বর আয়াতে রসুলুল্লাহ হায়াতুল মুরসালিন হওয়ার দলীল আছে? লালনের মিথ্যা দাবির গানটির প্রথম কলি রাছুল রাছুল বলে ডাকি । এ গানের ৫ নং সতর থেকে কুরআনের আয়াত নামে মিথ্যা কথা প্রকাশ করেছেন। যেমন-

হায়াতুল মুরছালিন বলে কোরআনেতে লেখা দেখি দ্বীনের রাছুল মারা গেলে কেমন করে দুনিয়ায় থাকি। পৃ: ৬৭

কুরআনের আয়াত নয় অথচ কোরআনের আয়াত বলে মিথ্যা কথা দিয়ে এ গানটি ধরে রাখা হয়েছে। কত গবেষক কত গানের ভেদতত্ত্ব গবেষনা করছেন কিন্তু আজ পর্যন্ত যে কোন গবেষক আলোচ্য গানের কোন বাদ-প্রতিবাদ করেছেন কিনা আমার জানা নেই। পবিত্র কুরআনের হায়াতুল মুরসালীন থাকার বিপরীত কথাই উল্লেখ হয়েছে তা হলো- ইন্নাকা মাইয়িতুন ও ইন্নাহম মাইয়িতুনÑ তুমি (মুহাম্মদ ছ:) মরণশীল এবং তারাও মরণশীল। সুরা জুমারÑ৩১

যে নবী পাড়ের কান্ডার জিন্দা সে চার যুগের হায়াতুল মুরছালিন নাম তার সেইজন্য কয়। Ñ লালন স¤্রাট ফকির লালন শাহ। পৃ: ৪৬০

আল্লাহর ঘোষনায় রসুল মহাম্মদ (ছ) জন্ম মৃত্যুর অধীন, আর লালন সাইঁ বলছেনÑ তিনি হায়াতুল মুরছালিন এত চরম মিথ্যা কথা। কুরআনে যা নেই লালন বলে তা আছে।

এ গান নিয়ে বাউল স¤্রাট ফকির লালন শাহ বইয়ের লেখক আকামুদ্দীন বলেছেনÑ নায়েবে রাসুলের হায়াতে আজও তিনি জিন্দা; তারই খবর জগতে আমরা কয়জন করেছি। পৃ: ৬৭

লালন সাইঁেয়র পুনর্জন্মবাদ:

ইসলামে পুর্নজন্মবাদ নেই। মিনহা খালাকনাকুম ওয়াফীহা নুয়িদুকুম ওয়া মিনহা নুখরিজুকুম তা-রাতান উখরা। অর্থ: আমি তোমাদেরকে ইহা (মাটি) হতে সৃষ্টি করেছি আর ওতেই ফিরিয়ে দেই, আর ওর থেকেই তোমাদেরকে পুণর্বার বের করবো।- তহা

এ আয়াতে মৃত্যুর পর মাটি হয়ে যাওয়া ফলে বরজখ জীবন এবং সেখানে কিয়ামত পর্যন্ত অপেক্ষা করার পর পুনরুন্থান। লালন পবিত্র কুরআনের এই স্পষ্ট ঘোষনাটিকে অস্বীকার করে বলেছেনÑ

এক: গুরু বস্তু চিনলামনা মন, না করলাম তার সেবা সাধন ঘুরতে বুঝি হলরে মন, এবার চুরাশী॥ পৃ: ১৭৮, লালন সঙ্গীত

এ গানে যে চুরাশী সংখ্যার উল্লেখ রয়েছে

এ হ’লÑ চুরাশি লক্ষবার জন্মের পর্নুজন্মবাদ। এটি হ’ল বৈদিক শাস্ত্রের বিশ্বাস। এ বিশ্বাস মুসলমানদের জন্য হারাম।

পুর্নজন্মের কুল আধার আউওয়াল নবীর জন্মান্তর বাদ প্রতিষ্ঠা করতে লালন বলেছেনÑ

নবী আউলে আল্লার নূর, দুওমেতে ৩ওবার ফুল॥

ছিয়েমেতে ময়নার গলার হার চৌঠমতে নুর ছিতারা -----ময়ূর।

আহাদে আহমদ বর্ত জেনে কর তাহার অর্থ হয়না যেন ভুল। লালন বলে ভেদ না জেনে হলাম নামাকুল। বা: স¤্রাট পৃ: ৪৪৯।

লালন সাইঁ ইসলামের আখেরাত বিশ্বাসী ছিলেননা। তিনি হিন্দু জাতির ৮৪ লক্ষ সোনী দার জন্মান্তরে বিশ্বাসী। বিধায় তিনি যতই সুবচন দিয়ে থাকুন তার অধিকাংশ গানই ইসলাম বিরূদ্ধ শরিয়ত বিরূদ্ধ আখেরাতের দোজখ বেহেস্ত পর্যন্ত তিনি বিশ্বাস করেন নি। ৮৪ লক্ষবার জন্ম নিলে তো দোজখ বেহেস্তের কথা থাকেইনা।

ছমঝো সাধন কর ভবে। এবার গেলে আর হবে।

লালন বলে ঘরতে হবে লক্ষ যোনীতে বাউল স¤্রাট, পৃ: ৫১২ ফকির লালন শাহ

খাটি মুসলমান দাবিদার আকামুদ্দীন এ গানের ব্যাখ্যা লিখতে গিয়ে চুরাশি ফেরে লিখতে গিয়ে ৪১১ পৃষ্ঠায় বলেছেনÑ

বাউল স¤্রাট ফকির লালন শাহ রূপকের ছাটাই ঘিরে বলেছেন ধর্ম কি? আর ধর্ম কেনই বা করে? তার চূড়ান্ত লক্ষ্যই বা কি? ধর্মের চূড়ান্ত লক্ষ্যে কিভাবে পৌছানো যায় তার কৌশল না জানা থাকার কারণে মানুষ আসল পথ হারিয়ে বিপথে চলে আস্তে আস্তে প্রান্ত পিতৃধন খুইয়ে জীবন তরী সাঙ্গঁ করে মানব জন্ম হারিয়ে পড়ে সে চুরাশির ফেরে। আকামুদ্দীন নিজেকে পত্রিকায় পত্রিকায় খাটি সুন্নী মুসলমান বলে দাবি করে ও লালন সাইঁয়ের ৮৪ লক্ষ যোনী জন্ম নেওয়ার বিশ্বাস পোষন করে বই লিখেছেন বাউল স¤্রাট ফকির লালন শাহ। এ ৮৪ লক্ষ যোনীতে জন্মান্তর হওয়ার বিশ্বাস রাখেন খাটি সুন্নী মুসলমান বলে দাবি করা নেহার হাস্যকর ছাড়া নয়।

লালন সাইঁয়ের কয়েকটি শয়তানী গান:

একÑ নামাজের বিরূদ্ধে ভেদ নামাজ:

লালন সাইঁ নামাজের অনেক গুলো নাম দিয়ে তার গানে শরিয়ত বিরোধী নামাজ প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি এক গানে লিখেছেনÑ

ক. পড়গা নামাজ ভেদ বুঝে সুঝে

বরজখ নিরীখ না হ’লে ঠিক

তো না নামাজ হয় মিছে॥

খ. পড়গা নামাজ জেনে শুনে

নিয়ত বাঁধগা মানুষ মক্কা পানে॥

বাউল স¤্রাট: পৃ: ২৩৭

গ. পড়বে দায়েমী নামাজ

এ দীন হল আখেরী॥ পৃ: ২৩৬

ঘ. বর্জোখ ব্যতীত সেজদা কবুল করে না খোদা

সকলি হবে বে-ফায়দা বেজার হবে ছব্বহান॥

ঙ. ঢোঁড় আজাজীলে সেজদা

বাকি রেখেছে কোন খানে

কর যে মন কর সেজদা, সেই জায়গা চিনে॥ পৃ:২৪১

চ. পড় নামাজ আপনার মুকাম চিনে।

মুর্শিদ ধরে জানতে হবে

নবীর মেম্বার আছে কোন খানে।

..... নিরীখ রেখ মুর্শিদ কদমে॥

লালন শরিয়তের নিয়ম নীতির বিরূদ্ধে নিজের পৃ:২৪৭

মনগড়া নিয়ম চালু করতে চেয়েছেন। আর নামাজ হল বরজোখ নিরীখ গুরু পদে। সিজদা কেন না গুরুই হ’ল লালন সাইঁয়ের মানুষ মক্কা (কাবা), দায়েমী নামাজ যদিও কথাটি কোরআন থেকে কিন্তু আমলে ভিন্ন ভেদ যা কলমে লেখা যায়না। ইসলামের ঈমান আকিদার বিরূদ্ধে প্রয়াত: লালন সাইঁ এমনি ভাবে একের পর এক গান রচনা করে গেছেন। তিনি ইসলামের ইবাদত ও কাজকে তাচ্ছিল্য করতে কোন রূপ দ্বিধা সংকোচ বোধ করেন নি। নি¤েœ কতিপয় গান তুলে ধরা হ’ল। যে গান গুলো সরকার কর্তৃক বাজেয়াপ্ত করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি।

এক: শোগল রাবেতা-

নজর একদিক দিলে আর একদিক অন্ধকার হয়॥

নীরে নুরে দুটি নিহার, কেমনে ঠিক রাখা যায়॥

আইন করলো জগৎ জোড়া, সেজদা হারাম খোদা ছাড়া মুর্রশিদ বরজোখ সামনে খাড়া, সেইদার সময় খুই কোথায় শোগাল রাবেতা বলে বরজোখ লিখলে দলিলে কারে সুরে কারে নিলে, দুই মনে এক কে দাঁড়ায়॥



দুই: আহাদ নাম লুকায়ে হাদি,

রূপটি ধরে আহম্মদি, এ ভেদ না জেনে বান্দা পড়ধি ফ্যারে

তিন: আগা কেটে হলি মুসলমান, মানুষে আনলিনে ঈমান মানুষ রূপে মরদুদ শয়তান ঘরে ঘরে জানি।

এ গানে মানুষে ঈমান আনা ও খতনা দেওয়ার বিরুদ্ধে বল হয়েছে। পৃ: ২১৬ গান-২১৬

চার: গয়াকাশি মক্কা মদিনা, বাইরে খুজলে ধান্দা যায় না দেহ রতি খুজলে পাবি সকল তীর্থের ফল তাহে॥

পাচঁ: কুদরতির সীমা কে জানে?

আপনি করে আপন জেকের খালজুবানে॥

.....খোদাকে খোদা চিনি

খোদ খোদা বলেছে আপনি

মান আরাফা নাফছাহু বানী

বোঝ তার কি হয় মানে॥

চার নং গানে লালন সাইঁ হিন্দু দের তীর্থভুমি গয়া কাশির সাথে মক্কা মদীনাকে তুলনা করেছেন।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৭ ই মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৩:২১

দালাল০০৭০০৭ বলেছেন: কোথায় কি প্রবেশ করাছেন।

ইসলামে হামদ.নাত ছাড়া আর কোন গান শোনা জায়েজ নেই সেটা মানুন তা হলেই ত সব চুকে যায়।

২| ১৭ ই মার্চ, ২০১৪ বিকাল ৩:৩৮

আল্লামা সোবহান বলেছেন: আরে ভাই গানের কথা কে বলছে এই গান গুলো যে ইসলাম এর বিরুদ্ধে সেইটা দেখার বিষয় বাট কোন প্রতিবাদ নেই

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.