নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি এক সুবোধ বালক /অবুঝ শিশুর মতো /মোর চলন বলন/খাই-দাই ফুর্তি করি / সাধ্যমত লিখি-পড়ি /আর কিছু নেই কথন।

আমানউল্লাহ রাইহান

তোমাকেই জ্বালাতে হবে আশার রবি, সোনালি প্রভাতের রাঙ্গা ছবি, তোমাকেই আঁকতে হবে......

আমানউল্লাহ রাইহান › বিস্তারিত পোস্টঃ

মাদরাসায় ছাত্ররাজনীতি : তৃতীয় নয়নে

০২ রা নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ১০:৫০

বাংলাদেশের কওমি মাদরাসাগুলো সাধারণত ভারতে অবস্থিত ঐতিহাসিক স্বাধীনতা বিপ্লবের সূতিকাগার দারুল উলূম দেওবন্দ ও আকাবিরে দেওবন্দের অনুসারী। চিন্তা-চেতনায়, আদর্শে, দ্বীনি ও ধর্মীয় দর্শনে, আকিদা ও ফিকহে এবং নিয়ম-কানুনে, এমনকি সিলেবাস ও পাঠ্যক্রমেও সেগুলো দেওবন্দের অনুসারী।
এখন কথা হলো আকাবিরে দেওবন্দের ওখানে "জমিয়তে তলাবায়ে হিন্দ" বা কোনো প্রকার ছাত্ররাজনীতি যখন নাই
তো তাঁদেরই আদর্শের স্লোগানে বাংলাদেশে
কেনো "ছাত্রজমিয়ত, ছাত্র খেলাফত, ছাত্র মজলিস, ছাত্র আন্দোলন" ইত্যাদি।

মাদরাসাজগতে যারা ছাত্ররাজনীতি করে এদের পরিণতিটা কি...???
একদল হিংসুক বেয়াদব উপহার দিয়েছে।যারা বড়দের ব্যপারে মুখ খুলতে ভয় পায় না। কথায় কথায় কাদা ছুঁড়াছুঁড়ি করে। বিশেষ করে চেতনায়ে দেওবন্দের নামে চুলাচুলিটা বেশি চলে। সাথে দিয়েছে কিছু বড় গলার "মাইক", যারা কেন্দ্রীয় নেতাদের অনুকরণে
কথায় কথায় 'দেওবন্দ দেওবন্দ' বলে চিল্লাচিল্লি করে। অথচ দেওবন্দের চিন্তাধারা, দর্শন ও নযরিয়া সম্পর্কে তেমন জ্ঞান রাখে না।

কথায় কথায় 'আকাবির আকাবির' করে। আকাবিরদের যিন্দেগি লইয়া টানাটানি করে কিন্তু আকাবিরদের প্রাথমিক যিন্দেগি নিয়ে কোনো আলোচনা নাই।
আর না থাকারই কথা। আকাবিরের যিন্দেগির প্রথম অংশ ইলমি যিন্দেগি। মুতালাআ, অধ্যাবসায় ও জ্ঞানসাধনার যিন্দেগি।এই অধ্যায় আলোচনা করলে পিছনে কেউ থাকবে না। অথচ এই যিন্দেগিই ছিলো একজন আদর্শ ছাত্রের অনুকরণের, পালনের।একজন "মিছালি তালিবের" জীবনের পাথেয়। একজন মেহনতি ছাত্রের জীবনাদর্শ।

কিন্তু আমাদেরকে বোকা বানিয়ে, আকাবিরদের মুতাআখখার যিন্দেগির সবক দিয়ে, মেধা বিকাশের ধোঁয়া তুলে আমাদেরকে লেখাপড়া, ইলমচর্চা থেকে দূরে সরিয়ে দিয়েছে।ইলমি ইনহিমাক এখন আর নেই। সবই গতানুগতিক হয়ে গেছে। সামনের দিনগুলোতে আরো কতকিছু ঘটবে আল্লাহই ভালো জানেন।

বাকি রইলো কলেজ - ভার্সিটি।
কলেজ-ভার্সিটির ছাত্ররাজনীতির ফলাফল আমাদের চোখের সামনেই।
মারামারি, হানাহানি, খুন-খারাবি, টেন্ডারবাজি, লেনদেন - টাকা - পয়সা, পদ নিয়ে সংঘর্ষ নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপার।

মাদরাসাজগতে এসব ঘটনা ঘটে বলে আমার জানা নাই। কারণ, এরা তো নিজেরাই অর্থনৈতিক সমস্যায় ভোগে। আর যেহেতু ক্ষমতাই নাই, তো পদ নিয়ে মারামারির প্রশ্নই আসে না।
তারপরও 'ভাঙ্গা চেয়ার' নিয়ে মাঝে মাঝে যে টানাটানি শুরু হয়! বাপরে বাপ!
এগুলো দেখে ওরাও হয়তো মনে মনে কুটি কুটি হাসে!

এখন কথা হলো, ছাত্ররা রাজনীতিও করতে পারবেনা তো বসে বসে আঙ্গুল চুষবে..??

না। সে যে ছাত্রের খাতায় নাম লিখিয়েছে, ছাত্রদের যেই কাজ সেটাই সে করবে। তা না হলে সেতো ছাত্রই না।
যতদিন সে ছাত্র, ততদিন সে ছাত্র হিসেবেই থাকবে। যখন তার একাডেমিক ছাত্রজীবন শেষ হবে এরপর সে স্বাধীন। চাই সে রাজনীতি করুক, চাকরি করুক, বাড়ির কাজ করুক, কৃষি কাজ করুক, তার যোগ্যতানুযায়ী যা মন চায় করুক। কেউ বাধা দিবেনা। কিন্তু যতদিন সে ছাত্র, ততদিন তার জন্য অন্য ধান্ধায় সময় দেওয়ার ফুরসত কোথায়?

যারা দেওবন্দ, বসুন্ধরা গিয়েছেন তারা দেখে থাকবেন ওখানে ছাত্রদের তাবলিগে যাওয়ারও নিয়ম নেই। তালিবে ইলম যখন এক 'সাবিলুল্লাহয়' আছে তখন অন্য 'সাবিলুল্লাহয়' যাওয়ার সময় কোথায় তার?

"লেখাপড়াই ছাত্রদের বড় রাজনীতি" ।
এই কথাটা হাফিজ্জি হুযুর রাহ. কোন প্রেক্ষাপটে বলেছিলেন? আমার তো মনে হয়, কেউ হয়তো ছাত্রদের রাজনীতিতে আনার প্রস্তাব দিয়েছিলেন, যার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি এই উক্তি করেছিলেন।
কিন্তু এখন তো ছাত্ররাজনীতির কর্ণধারদের মুখেই এই বাণী শোনা যায় বেশি।

বাকি রইলো রাজনীতি।
আমাদের দেশে মাদরাসাগুলোতে ছাত্ররাজনীতি আমদানি করা হয়েছে বড় দলগুলোকে বাঁচানোর জন্য। কোনো হুকুমত, খেলাফত কায়েম করার জন্য নয়।এই স্বীকৃতি তারাই দিয়েছেন। আমার বানানো নয়।
যখন এরা জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়েছে তখন দল বাঁচাতে, পিকেটার বাড়াতে ছাত্রদের ব্যবহার শুরু করেছে। এজন্য দেখবেন, এদের কোনো সমাবেশে সাধারণ মানুষের চেয়ে ছাত্রদের উপস্থিতি বেশি। কারণ, এরা জনবিচ্ছিন্ন রাজনীতি করে।এজন্য এরা যত্তসব ফালতু যুক্তি দিয়ে ছাত্রদের দলে ভিড়ায়।

যখন কোনো প্রেক্ষাপট সামনে আসে, তখন আন্দোলনের দায়িত্ব রাজনীতিবিদদের উপর। তারা তাওহিদি জনতাকে সাথে নিয়ে মাঠে নামবে। যেমন হেফাজতের আন্দোলনের সময় আমরা দেখেছি।
ছাত্ররা তাদের কাজ করবে। যেমন উন্নত বিশ্বের কলেজ-ভার্সিটিগুলোতে হয়। তাওহিদি জনতা কিভাবে মাঠে নেমেছে। এখন যদি না আসে তাহলে এটা নেতাকর্মীদের ব্যর্থতা। তারা কেনো মানুষের আস্থা অর্জন করতে পারেনি।
এর দায় এখন ছাত্রদের উপর কেনো বর্তাবে? তারা কেনো ওদের পাপের শাস্তি ভোগ করবে? ছাত্রদের কেনো মাঠে আসতে হবে?

মেনে নিলাম যে, এখন তারা জনবিচ্ছিন্ন তাই ছাত্রদের মাঠে নামাতে হয়। তাহলে এর জন্য কি ছাত্ররাজনৈতিক দল বানাতে হবে?
আমরা এমনিতেই মুরব্বি, উস্তাদের কথায় চলার চেষ্টা করি। আমাদের মুরব্বিগণ ডাক দিলে আমরা যাবো না তো কারা যাবে? আমাদের কি ইসলামের দরদ নাই? এর জন্য দল পাকাতে হবে? এভাবে তো আরো বিচ্ছিন্নতা তৈরি হয়েছে। কোনো জাতীয় ইস্যুতে একদল ডাক দিলে অন্যদলের ছাত্ররা আসেনা। দলান্ধতার বশে অন্য দলের ছাত্রদের মাদরাসা থেকে বহিষ্কারও করা হয়! কী আজব রাজনীতি! চেতনা বাঁচিয়ে রাখার নামে অবচেতন ও দলান্ধ মন-মানসিকতা!

ইখলাসের সাথে কোনো ধর্মীয় ইস্যুতে ডাক আসলে ছাত্ররা স্বেচ্ছায় আসবে, তার ঈমান তাকে নিয়ে আসবে। এর জন্য দলাদলির প্রয়োজন নেই। এর নযির বাংলাদেশেই আছে। আর পাক-ভারতের মাদরাসাগুলোতে তো ছাত্ররাজনীতিই নাই। অথচ যুক্তির বিচারে বাংলাদেশের চেয়ে ভারতে ছাত্ররাজনীতি দরকার বেশি। কারণ, তারা সেখানে সংখ্যালঘু। কিন্তু সেখানে কোনো ছাত্ররাজনীতির দল নেই। তারা জনবিচ্ছিন্ন রাজনীতি করে না। জমিয়তের কনফারেন্সগুলো দেখলেই পরিষ্কার হয়ে যাবে।

শেষকথা, লেখাপড়াই ছাত্রদের বড় রাজনীতি। এই বিষয়টি সামনে রেখে আমাদের উচিত ইলমচর্চা, মুতালাআ, অধ্যাবসায় ও জ্ঞানসাধনায় আত্মনিয়োগ করা। নিজেকে আগে জাতির জন্য তৈরি করা। নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করা। তা না হলে জাতি তো দূরের কথা, নিজেই নিজের থেকে উপকৃত হতে পারবোনা। আর কোনো সময় রাজপথে নামতে হলে মাদরাসার নিয়ম অনুযায়ী, উস্তাদের নির্দেশমতো নামবো। অসুবিধা কি...???

বাদ যোহর।
30 /10 /2017 ঈ.

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০২ রা নভেম্বর, ২০১৭ বিকাল ৫:১০

মোঃ মাইদুল সরকার বলেছেন: আলোচনা ভাল লাগলো।

শুভ ব্লগিং।

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:৩৮

আমানউল্লাহ রাইহান বলেছেন: ধন্যবাদ প্রিয়

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.