নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
তোমাকেই জ্বালাতে হবে আশার রবি, সোনালি প্রভাতের রাঙ্গা ছবি, তোমাকেই আঁকতে হবে......
পৃথিবীতে ধর্মের কোনো অভাব নেই । হাজারো ধর্ম রয়েছে এখানে। সেগুলোর মধ্যে কিছু মানবসৃষ্ট জমিনি আর গুটি কয়েক নাযিল কৃত আসমানি।তন্মধ্যে মানুষের তৈরি করা ধর্মরীতির তো আদতেই কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই। আর নাযিল হওয়া আসমানি ধর্মগুলোর মধ্যে আল্লাহ তা'আলার কাছে তাঁর পক্ষ থেকে সর্বশেষ নাযিল কৃত ইসলামই একমাত্র মনোনীত ধর্ম। তবে দুনিয়ার বাস্তবতায় অন্যান্য ধর্মের উপস্থিতি এখনো আছে। এটাকে অস্বীকার করার জো নেই। কেউ পারবেও না।
পৃথিবীর কোনো ধর্মাবলম্বীই নিজের ধর্মের পরিচয় দিতে লজ্জাবোধ করেনা, গৌরবের সাথে সে তার ধর্মীয় পরিচয় প্রকাশ করে। কোনো হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান কিংবা অন্যান্য যারা আছে কেউই ধর্মীয় বিষয়ে নিজেকে কখনো হীনমন্য ভাবে না। একজন নাস্তিকও তার নাস্তিকতার পরিচয় দেয় দম্ভভরে স্বগৌরবে!
কিন্তু একমাত্র জাতি মুসলিম, যে নিজেকে এই কথিত সভ্য সমাজে কিংবা আধুনিকতার স্টেজে নিজের ধর্মীয় পরিচয় প্রকাশ করতে লজ্জাবোধ করে। হীনমন্যতার শিকার হয়। এই সমাজে, এই কালে সে নিজেকে মুসলিম পরিচয়ে ছোট মনে করে, সংকোচবোধ করে। ইসলামকে সে নানাবিধ অভিযোগের শিকার মনে করে।
অথচ পৃথিবীতে একমাত্র ইসলামই মানবসভ্যতার যাবতীয় উপায়-উপকরণ ও উপাদান পরিপূর্ণভাবে বাতলে দিয়েছে। কিয়ামত পর্যন্ত পৃথিবীর তাবৎ সমস্যার পূর্ণ সমাধান কোথাও বিস্তারিত, কোথাও মৌলনীতির আকারে বলে দিয়েছে। কিন্তু অন্যান্য মতবাদ মানবসমস্যার পরিপূর্ণ সমাধান দূর কি বাত, মানুষের জগতে স্বয়ং মানবজাতির 'মানবমূল্যায়নই' সঠিকভাবে উপস্থাপন করেনি ও আজ পর্যন্ত করতে পারেনি।মানুষের রূপ-স্বরূপ, তার হাকিকত, মানবসমাজে তার অবস্থান, মান-মর্যাদা এবং তার অধিকার সুস্পষ্টভাবে পরিপূর্ণ আকারে দর্শাতে পারেনি।
মোটকথা, একজন মানুষ মানুষ হিসেবে তার অস্তিত্ব, জীবনবিধান, সমাজে বসবাসরীতি ও পৃথিবীতে তার দায়-দায়িত্ব কী, ইহকাল ও পরকালে তার বিভিন্ন কর্মফল কী হবে, সে বিবরণ বিস্তারিত আলোচনা করেছে ইসলাম। যা অন্য কোনো ধর্ম ও দর্শনে নেই। থাকলেও তা আংশিক। এজন্যই ইসলাম সর্বশেষ, সর্বাঙ্গীন ও সর্বকালীন। ধর্মের মিছিলে স্বয়ং ধর্মকর্তা অন্য সব ধর্মের কার্যকারিতার সমাপ্তি টেনে সর্বাবস্থায়, সর্বকালের জন্য ইসলাম নাযিল করে মনোনীত করে নিয়েছেন। পূর্বাপর নাযিলকৃত ও মানবসৃষ্ট কোনো ধর্মই এখন আর আল্লাহ তা'আলার কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। তবে হ্যাঁ, কেউ যদি অন্য ধর্মের পরম্পরা ধরে রাখে বা কোনো নূতন রীতি পালন করে তাহলে তাকে বাধ্য করে ধর্মান্তর করার অধিকারও ইসলাম দেয় না। এক্ষেত্রে সে স্বাধীনতা পেয়ে থাকে।
ইসলামে এমন মানবমুক্তির পথপ্রদর্শন ও পরিপূর্ণ জীবনদর্শন থাকা সত্ত্বেও কোনো মুসলমানের মুসলমানিত্ব জাহির করতে সংকোচ করা তার হীনমন্যতা, পরাজিত মনোভাব ও মানসিক বিপর্যয়ের অন্যতম লক্ষণ। চেতনা দূরীভূত হওয়ার অন্যতম কারণ। এর থেকে পরিত্রাণ ব্যতীত ইসলামের পুনর্জাগরণ সম্ভব নয়। কেননা, চেতনাবিহীন ও মানসিক বিপর্যস্ত জাতি কখনো সফল হতে পারে না। এমন জাতির সদস্যরা নিঃসার দেহবিশিষ্টের ন্যায়।
বাদ যোহর।
25/ আফ্রিকি মনযিল
দারুল উলূম দেওবন্দ, ভারত।
23/12/2017 ঈ,
©somewhere in net ltd.