নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
তোমাকেই জ্বালাতে হবে আশার রবি, সোনালি প্রভাতের রাঙ্গা ছবি, তোমাকেই আঁকতে হবে......
মির্জা গালিবের পরোপকার, আত্মদান ও তাঁর মহানুভবতা কিংবদন্তি হয়ে আছে!
সমাজ থেকে ক্ষুধা, দারিদ্র্য, মন্দা, অভাব-অনটন দূর করতে তাঁর চেষ্টা ও আগ্রহ-উদ্দীপনার কম ছিলো না। নিজে ঋণগ্রস্ত, নিঃস্ব ও আজীবন অর্থকষ্টে জর্জরিত হওয়া সত্ত্বেও গরিব-অসহায়দের অকাতরে বিলিয়ে দিতেন। তাঁর দরজা থেকে কারো খালি হাতে ফিরতে হতো না। সমাজের অন্ধ, খোঁড়া, অচল-অসহায়, বিকলাঙ্গ-প্রতিবন্ধী মানুষেরা তার দরবারে হামেশা পড়ে থাকতো। গরিব-দুঃখীদের নিজের সামর্থ্যের চেয়েও অধিক সাহায্য-সহযোগিতা করতেন, যার ফলে নিজেই দারিদ্র্যের কষাঘাতে দিনাতিপাত করতে হতো।
এতো কিছু করার পরও, কিছুই করতে পারেননি বলে এক বন্ধুর কাছে আক্ষেপ প্রকাশ করে লিখেন,
"ভবঘুরে ও স্বাধীনচেতা মনোভাব, মহানুভবতা, দান-খয়রাত, আত্মদান ও পরোপকারের যে উৎসাহ-উদ্দীপনা আল্লাহ পাক আমর মধ্যে পর্যাপ্ত পরিমাণে দিয়েছেন, তার ছিটে-ফোঁটাও জীবনে প্রকাশ করতে পারিনি!
শরীরে এতোটুকুন শক্তিও নেই যে, হাতে লাঠি তুলে সাথে একটি শতরঞ্জি ও সুতার রশি সমেত একটি লোটা নিয়ে পায়দল বেড়িয়ে পড়বো!
এমন সামর্থ্যও নেই যে, এই দুনিয়ার সব মানুষের মেজবান হয়ে যাবো। তাদের ভরণ-পোষণের ভার আমি নিয়ে নিবো। সারা দুনিয়ার না হতে পারি, অন্ততঃ আমি যেখানে বসবাস করি, সেই এলাকায় যেনো কোনো বস্রহীন, ক্ষুধার্ত মানুষের মুখ দেখতে না হয়!
আমি তো খোদার ক্রোধ বর্ষিত, মানুষের কাছে নিগৃহীত, বৃদ্ধ, অক্ষম, অসুস্থ, ফকির ও রিক্তহস্ত নিঃস্ব নাফরমান বান্দা! আমার অবস্থা ঐ ব্যক্তির মতো, যে অন্যের হাতে ভিক্ষার ঝুলি দেখতে চায় না ঠিক, কিন্তু নিজে মানুষের দারে দারে ঘুরে বেড়াতে হয়!"
এভাবেই মানবতার কবি গালিব নিজের ভাষায় মানুষের কথা লিখতেন, অন্যের মনের কথা তুলে ধরতেন, তাই তো তিনি আজো বেঁচে আছেন! তাঁর সমালোচকদের কতোজনই বা মনে রেখেছে!
5 জুন, 2018 ঈ.
©somewhere in net ltd.