নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি এক সুবোধ বালক /অবুঝ শিশুর মতো /মোর চলন বলন/খাই-দাই ফুর্তি করি / সাধ্যমত লিখি-পড়ি /আর কিছু নেই কথন।

আমানউল্লাহ রাইহান

তোমাকেই জ্বালাতে হবে আশার রবি, সোনালি প্রভাতের রাঙ্গা ছবি, তোমাকেই আঁকতে হবে......

আমানউল্লাহ রাইহান › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমরাও উদ্যোগ নিতে পারি

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০১৮ বিকাল ৪:৪২





বাবা সুদি ঋণ নিয়ে ছেলের জন্য টাকা পাঠিয়েছে। ছেলে এক মশহুর কওমি মাদরাসায় ইফতা বিভাগে পড়ে। চোখের সামনে এই ঘটনা ঘটতে দেখে নিজেরে স্থির রাখতে পারছি না। সুদের বিরুদ্ধে যে ইসলাম যুদ্ধ ঘোষণা করেছে, সেই ইসলামের শিক্ষানবিস ও ইসলামি প্রতিষ্ঠানের ছাত্রের জীবনে এই চড়াই-উৎড়াই! আর এই ছেলেই সুদ সংক্রান্ত কুরবানি বিষয়ক ফতোয়া লিখেছিলো আমার সামনেই!

ছেলে যেনো জানতে না পারে সেজন্য বাবার কী কসরত! কিন্তু বাস্তবতা চাপা থাকে না বলেই সে বাস্তবতা। পোলাটা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো, অর্থনীতি নিয়ে সে এক বছরের একটা কোর্সে ভর্তি হবে, আরো কিছু দিন পড়াশোনা করবে, কিন্তু অর্থনীতিই তার জীবনে কাঁটা হয়ে দাঁড়ালো!
লোকে বলে, এইসব করুণ ও নিদারুণ জীবনযাপনে পড়াশোনা ভালো হয়। কিন্তু চোখের সামনে এইসব দেখে আমার পড়াশোনায় আরও মন বসে না। নাজুক তবিয়তের মানুষ। মাথা খারাপ হয়ে যায়, মেজাজ বিগড়ে যায়।

আমরা এমন এক সমাজে, 'মুসলমান সমাজে' বাস করি, যেখানে ছেলেকে মাদরাসায় পড়াতে বাবার সুদি ঋণ নিতে হয়! ছিঃ অথচ এই ছেলেই হয়তো কোনও দিন বাবার সামনেই সুদের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিবে, ফতোয়া দিবে, বাবার সামনেই হাদিস শুনিয়ে সুদদাতা-গ্রহিতা-সাহায্যকর্তাকে জাহান্নামের আজাবের বিবরণ দিবে!

আমরা যেদিন হায়দারাবাদের ঐতিহাসিক 'গোলকুন্ডা ফোর্ট' দর্শন করতে গিয়েছিলাম, সেদিন জুমাবার ছিলো। কেল্লার জামে মসজিদে জুমার নামাযের পর এলান হয়েছিলো এই মর্মে, "সুদমুক্ত ঋণ দানের জন্য একটি সংস্থা-সংঘ প্রতিষ্ঠা করা হবে। অমুক অমুক থাকবেন। আপনাদের সবাইকে হাজির থাকার অনুরোধ।"
অর্থাৎ তারা একটি শুভ উদ্যোগ নিয়েছে মানুষকে সুদের করাল গ্রাস থেকে বাঁচানোর জন্য। সুদের শাস্তি থেকে রক্ষা পাবার জন্য। আমরাও চেষ্টা করে দেখতে পারি, ছোট করে হলেও। অন্ততঃ এক গ্রামের মানুষ তো সহযোগিতা পাবে, তাতেই কম কিসে!

আমাদের সমাজে একজন বাবা তার ছেলেকে শিক্ষিত করার জন্য, পড়াশোনা করানোর জন্য, উচ্চশিক্ষা দেওয়ার জন্য কত আপ্রাণ সাধনা করে। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, কিছু দূর এগুতেই সব স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যায়। আমাদের সমাজ কেনো কোনও ছেলে-মেয়ের দায়িত্ব নিতে পারে না? তারা কি পারে সবাই মিলে সহযোগিতা করতে।

আরে, ফতোয়া মোতাবেক প্রত্যেক এলাকায় একজন বিজ্ঞ ইসলামি বিশেষজ্ঞ বানানো সেখানকার মুসলমানদের উপর ওয়াজিবে কিফায়া! কোনও এলাকায় এমন কাউকে বানাতে না পারলে সবার উপর গোনাহ বর্তাবে। এইসব বাদ দিলাম, নিজে পেট পুরে খাবেন, নিজে জাজিমে ঘুমাবেন, নিজের সন্তানকে ডক্টর বানাবেন, আর গরিবের বাচ্চা পয়সার অভাবে পড়তে পারবে না, খাইতে পারবে না, পরতে পারবে না, ইসলামে এইসব বৈষম্য নাই।

নামাজ পড়তে পড়তে কপালে দাগ লাগলেও এসবের জন্য আপনি দায়ী থাকবেন। আপনার ইসলাম আপনারে খালি কপাল ঠুকার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রাখছে, আর বছরে এক দুই দিন দান-খয়রাতের নাটকরে মুক্তির পথ বানিয়ে দেখাইছে, এই ইসলাম আল্লাহর নাযিল করা ইসলাম না। ফাইভ স্টার মসজিদের গেইটে পড়ে থাকা পথশিশু আপনার এই কথিত মুসলমানিত্ব চ্যালেঞ্জ করে দেয়। সেই ইসলামরে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেয়, যে ইসলাম আপনি দেখান, বয়ান করেন, প্রচার করেন।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.