![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ডা: অপূর্ব পন্ডিত (১৪ ফেব্রুয়ারি , ২০১৩) : গণজাগরণ মঞ্চ। শাহবাগের এই আন্দোলন এখন আর শাহবাগে নেই। পুরো দেশের প্রায় প্রতিটি জেলা ও শহরে ঐক্যবদ্ধ এই আন্দোলন চলছে। যুদ্ধপরাধীদের বয়কট এবং ফাঁসির দাবিতে উজ্জীবিত এ আন্দোলন। রাজনৈতিক লেবাসকে এ আন্দোলন বয়কট করেছে। দেশের প্রচলিত ধারার রাজনৈতিক নেতৃত্বে অনেকেই আজ হতবিহ্বল। অনেক বরেণ্য বুদ্ধিজীবী, রাজনৈতিক নেতৃত্বেও বলতে শুনেছি, এরকম আন্দোলন এর আগে দেশে আর হয়নি। তরুণদের এ আন্দোলনকে ভিন্ন খাতে নেওয়ার চেষ্টা হয়েছে, হবে। রাজনৈতিক দখলদারিত্ব, আন্দোলনের ফসল যে যার মতো নিজের ঘরে নেওয়ার কিংবা, মতানৈক্য তৈরির চেষ্টা তো হবেই- তবু ৩ মিনিটের নীরব কোটি মানুষ প্রমাণ করেছে হিংসা, অপশক্তির ও সন্ত্রাসের রাজনীতির বাইরেও কিছু কথা আছে।
এই গণজাগরণের ফলে এক ধরনের রাজনৈতিক টানাপড়েন, মধ্যস্থতার সিদ্ধান্ত থেকে আওয়ামী লীগ বেরিয়ে আসতে বাধ্য হয়েছে। সরকারি নীতি-নির্ধারকরা অনেকেই আন্তর্জাতিক চাপ এবং মিডিয়ার আক্রমণে দিকহারা ছিলেন তারাও অনেকটাই হাঁপ ছেড়ে বেঁচেছেন মনে হচ্ছে। বিএনপি প্রথমে বলতে চেয়েছে এটা আওয়ামী জয়বাংলার আন্দোলন। এখন যদিও কিছু কিছু শর্ত উল্লেখ করছেন। তাদের কেউ কেউ এই আন্দোলনকে গণআন্দোলন বলতে বাধ্য হয়েছেন। রাজাকারের সঙ্গে০ জোট ভাঙার ব্যাপারে যদিও এখনো কিছু বলেনি তারা। গণজাগরণ মঞ্চ থেকে বলা হয়েছে আমরা একাত্তরের যুদ্ধপরাধীদের ফাঁসি চাই। ’৭৫-এর পটপরিবর্তনের পর থেকে রাজনীতির নামে দেশে যা চলে আসছে, তা রাজনীতির কোনো সংজ্ঞায় পড়ে না। চলছে শুধু ক্ষমতার হাত বদলের খেলা। সামরিক শাসন, গণতন্ত্রের পোশাকে শাসকশ্রেণীর দুর্বত্ত, লুটেরা, দখলদার, দুর্নীতিবাজদের দখলে রয়েছে রাজনীতি, দেশ। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির নামে রাজনীতি করেও অনেকেই যুদ্ধপরাধীদের অপশক্তিকে শক্তিশালী করেছে।
পারিবারিক দ্বন্দ্ব, হিংসা-বিদ্বেষ আর ক্ষমতা কুক্ষিগত করার লক্ষ্যে দেশের সংবিধানকে ইচ্ছেমতো কাটাছেঁড়া করা হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের সবগুলো অর্জনকে ভূলুণ্ঠিত করা হয়েছে। বাঙালি জাতীয়তাবাদকে কেটে বাংলাদেশি বানানো হয়েছে। মডারেট মুসলিম কান্ট্রি বানানোর চেষ্টায় অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশকে দুর্নীতিতে শীর্ষে উঠানোর অপচেষ্টাও হয়েছে। সব মিলিয়ে ’৭১-এর রাজাকার, আলবদররা হয়েছে দিনদিন শক্তিশালী। গত ৪২ বছরে তাদের বিচার করার মতো অবস্থা তো দূরের কথা, তাদের পৃষ্ঠপোষকতাই করা হয়েছে। কিন্তু দেশের সাধারণ মানুষ, নতুন প্রজন্ম কিন্তু এই অপরাজনীতিকে মেনে নেয়নি। তাই আজ নতুন প্রজন্ম ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। এই দেশ আমার, এদেশে রাজাকারের কোনো ঠাঁই নেই- গণজাগরণ মঞ্চের জাদুর কাঠির মূলমন্ত্রটিই সেখানে। দেশের মানুষ রাজাকারের ফাঁসি চায়। কোনো আপসের স্থান সেখানে নেই।
©somewhere in net ltd.