নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নিজেকে খুঁজে ফিরি অহর্নিশ, কে আমি, কোথায় ছিলাম, কোথায় এলাম আর কিছুদিন পর কোথায় যাবো?
শুরুতে পড়তে:
ডিজুস প্রেম। পর্ব-১
ডিজুস প্রেম। পর্ব-২
ডিজুস প্রেম। পর্ব-৩
ফোন রিসিভ করেই ফুপিয়ে কান্নার আওয়াজে আমি কিছুটা বিব্রত। কি ব্যাপার এই মেয়ে এভাবে কাঁদছে কেনো। বার বার জিজ্ঞেস করেও তার কান্নার কোন কারণ জানতে পারলাম না। সে তার মতো করে কেঁদেই যাচ্ছে। অগ্যতা আমাকে ভিন্ন পথ ধরতে হলো।
-দেখো তুমি কান্না থামাবে নাকি আমিও কান্না শুরু করব। আর যদি কাঁদতে না পারি ফোন কেটে দিয়ে মোবাইল বন্ধ রাখব।
অষুধে মনে হয় কাজ হলো। তার ফোঁপানোর গতি কিছুটা কমল। এবার ভাঙ্গাস্বরেই তার আক্রমণ-
- আজ দুইদিন আমি খাইতে পারি না, সারারাত ঘুমাইতে পারি না। আর উনি আসছেন দুইদিন পরে ফোন দিয়ে কান্দি কেন তার খোঁজ নিতে! এই তোমার বন্ধুত্ব। এই তোমার আমার প্রতি দরদ না?
ঘটনার শুরুর পর থেকে বেশ কয়েকদিন কেটে গেছে, দুজনের সম্বোধন আপনি থেকে তুমিতে পরিণত হয়েছে এবং দুজনে ভালো বন্ধুও হয়ে গিয়েছি আমরা। এই বন্ধুত্বের সম্পর্কে উন্নিত হতে আমাদের প্রায় ১০-১২ দিন কেটে গেছে। তার কথার সুরে আমি ভিন্ন কিছুর গন্ধ পেলাম।
- মানে তুমি বলতে চাও তোমার প্রতি আমার দরদ নেই একদম?
- যদি দরদ থাকত তাহলে দুইদিন ফোন বন্ধ করে থাকলে কিভাবে?
- আরে বাবা এমন একটা যায়গায় বেড়াতে গিয়েছিলাম যেখানে মোবাইলের নেটওয়ার্ক ছিল না। তো কি করব। আমি সেদিনই চলে আসতাম কিন্তু গাড়িটা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় আর আশেপাশে কোন মিস্ত্রী না থাকায় আমাকে এ দু'দিন সেখানে থাকতে হয়েছিল। কি বলব আমার কি যে কষ্ট হয়েছিল।
- মিথ্যে বলবা না, তোমার যদি কষ্ট হতো তবে যেভাবে মিস্ত্রি যোগাড় করতে পেরেছো সেভাবে মোবাইলে ফোন দিয়ে একবার তো বলতে পারতে যে এই সমস্যা। তাহলে তো আমার এমন কষ্ট হতো না।
- বাব্বাহ, একজন অপরিচিত মানুষের জন্য এতটা দরদ কেনো তোমার?
- মানে কি বলতে চাও? তুমি কি দুদিন পরে ফোন দিয়ে এখন আমার সঙ্গে ঝগড়া করতে চাও।
- না না, ঝগড়া কেনো করব! কিন্তু আমি ঠিক বুঝতে পারছি না তুমি আমাকে কোনদিন দেখোনি, শুধুমাত্র কয়েকদিন কথা বলেছো আমার সঙ্গে। তাও তোমাকে আমার সঙ্গে কথা বলানোর জন্য আমি কত অনুরোধ, উপরোধ করে তবেই রাজি করিয়েছি। আর এখন দেখছি তুমি আমার সঙ্গে কথা না বলে নাওয়া-খাওয়া পর্যন্ত ছেড়ে দিয়েছো, ঘটনা কিন্তু আমার কাছে সুবিধার মনে হচ্ছে না।
- আমি সুবিধা অসুবিধা জানি না, নিজে আমাকে পাগল করে দিয়ে এখন যদি তুমি এভাবে আমারে কষ্ট দাও তাহলে কিন্তু আমি তোমারে খুন করব!
- ও মাগো মাইয়া কয় কি? তুমি কি আমার ঠিকানা জানো? কিভাবে আমারে খুন করবা?
- সেটা জানি না তবে এখন জানতে চাই তোমার নাম, পরিচয়, ঠিকানা, জন্ম তারিখ, সব আমাকে তুমি এখন বলবা।
- ঠিক আছে বলব তবে এখন তো একটু বিজি আছি রাতে কথা বলব কেমন? এখন রাখি।
তার প্রতিউত্তরের অপেক্ষা না করেই লাইনটা কেটে দিয়ে বাথরুমে যাই গোশল করতে, ফিরে এসে দেখি ১০টা মিসকল উঠে আছে। ব্যাপার কি? কল ব্যাক করি।
- এভাবে ফোন রাখলা কেনো? আমি কি এতই সস্তা না কি আমার চাইতেও সুন্দরী কাউকে পাইছ যে এখন আমার কথা ভাবার একটুও সময় নাই তোমার।
- মানে কি? আমি কি তোমার সঙ্গে প্রেম করি নাকি যে সুন্দর কাউকে পাইলে তোমার অসুবিধা?
- আমি এত কিছু বুঝতে চাই না, আমি দুদিন ধরে কলেজে যাইনি, খাওয়া-দাওয়াও ঠিকমতো করিনি, রাতে ঘুমাতে পর্যন্ত পারিনি, আর উনি কাজ আছে বলেই ফোন কেটে দিয়ে, দায়িত্ব পালন করছেন।
ব্যাপারটা ঠিক সুবিধার মনে হচ্ছিল না আমার কাছে। ঘটনা কি? মেয়েটা এতটা আবেগী আচরণ করছে কেনো আমার সঙ্গে। আমরা তো স্রেফ বন্ধু, সময় কাটানোর জন্য এবং ফ্রি-অফার উসূল করার জন্য দুজনে কথা বলি সেটা তো আমি সরাসরিই তাকে বলেছি। কিন্তু ঘটনা তো দেখি অন্যদিকে গড়াচ্ছে, নাহ একে আর বেশি পাত্তা দেওয়া যাবে না। শেষে কোথাকার কোন পেত্নী না বুড়ি আমার ঘাড়ে চেপে আমার জীবনটা নষ্ট করে দেবে।
- ও আচ্ছা! স্যরি আমার মনেই ছিল না একদম। এখন লক্ষ্মী মেয়ের মতো ফোনটা রাখবা, রেখে গোশল করবা, গোশল করে নাস্তা করবা তারপর কলেজে যাবা। আমি একটু পরে অফিসে রওনা হবো। অফিসে গিয়ে মেসেজ দিয়ে খোঁজ নেব প্রতিটা কাজ ঠিকমতো করছো কি না। যদি শুনি করো নাই তাহলে আমার মোবাইল একদম বন্ধ হয়ে যাবে। আর কোনদিন তোমার সঙ্গে কথা বলবো না।
- কি বললা তুমি!
-যা বললাম শুনো নাই, ঠিকমতো নাওয়া-খাওয়া সেরে কলেজে যাবা, কলেজ থেকে ফিরে কাজ-কর্ম থাকলে সেগুলো করে ঘুম দিবা। এর পর রাতে আমি ফোন করবো।
- সত্যি ফোন করবে তো?
- আরে বাবা সত্যি সত্যি সত্যি! নাও এবার তো ফোন রাখ।
- ঠিক আছে, কিন্তু তোমার মোবাইল যদি বন্ধ পাই তাইলে কিন্তু খবর আছে।
- আচ্ছা ঠিক আছে বন্ধ পাইবা না আমি দুইটার একটা মোবাইল চার্জে দিয়া আরেকটা নিয়া অফিসে যাচ্ছি। অফিস থাইকা ফিরা ওইটা দিয়া কথা কমু আর এইটারে চার্জে দিমু। এবার দয়া করে ফোন রাখো, বাই।
ফোন কেটে দিয়ে আমি ড্রেসআপ করে নাস্তা করে অফিসের দিকে রওনা দিতে না দিতেই মেসেজ টোন, গোশল করলাম এবার নাস্তা করবো। একটু পরে আবার মেসেজ 'নাস্তা করলাম, কলেজে যাচ্ছি, রাতে কিন্তু ফোন দিবা।'
সেদিন রাতে যথারীতি ১২.০১ মিনিটে তার মিস কল! আমি ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম। রিংটোনে ঘুম ভাঙলে দেখি ৪টা মিসকল। ফোন ব্যাক করতে না করতেই ওপাশ থেকে রিসিভ করে সে।
- কি ব্যাপার ৫ মিনিট দেরি হলো কেনো?
- ঘুমাই গেছিলাম।
- ওরে আমার বন্ধুরে এত দরদ আমার লাইগ্যা আমি সারারাইত না ঘুমাইয়া তার লগে কথা কওনের লাইগ্যা জাইগা রইছি আর সে কি আরামে ঘুমাইতেছে।
- কেনো তোমারে না কইছিলাম ঘুমাইতে, আমি রাতে ফোন করব।
- এখন কি দিন নাকি। এখন রাত সাড়ে বারোটা বাজে। হুম বুঝলাম! এবার বলো তো সোনা, তোমার জন্ম তারিখ কবে?
- জন্ম তারিখ! এইটা দিয়া কি করবা?
- সেটা তোমার জানার দরকার নাই, আমি কইছি না তোমার সব বিস্তারিত তথ্য তুমি আমারে দিবা, নাম, ঠিকানা, জন্ম তারিখ সব সব কিছু আমি জানতে চাই যেন তুমি আর হঠাৎ কইরা আবার হারাই না যাও।
- ও আচ্ছা! আমার জন্ম তারিখ মে মাসের ২৫ তারিখ!
- কিহ্! কত বললা?
- আরে বাবা মে মাসের ২৫ তারিখ।
- কি আশ্চর্য। এইটা কিভাবে সম্ভব। তুমি নিশ্চয় আমার পূর্ব পরিচিত এবং আমার সব কিছু জাইন্যা আমার লগে মজা করতে আছো। মিষ্টার আমি তোমারে আমার জন্ম তারিখ কইতে কই নাই। আমি তোমার জন্ম তারিখ জানতে চাইছি।
এবার আমার আবারো অবাক হওয়ার পালা। মেয়েটা বলে কি, সে কি আসলেই আমার সঙ্গে এভাবে মজা করছে না সত্যি সত্যি তার সঙ্গে আমার নাম ও জন্ম তারিখ কাকতালীয়ভাবে মিলে গেলো। নাহ্ এমন ঘটনা কিভাবে সম্ভব?
২০ শে মার্চ, ২০১৯ দুপুর ২:১৯
আমি মুক্তা বলেছেন: কী জানি, হলেও হতে পারে। অপেক্ষার প্রহর যেন দীর্ঘ না হয়। ধন্যবাদ মন্তব্য ও ভালোলাগা প্রকাশে।
২| ২০ শে মার্চ, ২০১৯ দুপুর ১:২৫
রাজীব নুর বলেছেন: ডিজুস পুলাপাওনের প্রেম ভালোবাসার উপর আমার আস্থা নাই।
২০ শে মার্চ, ২০১৯ দুপুর ২:১৯
আমি মুক্তা বলেছেন: আস্থা তো ভাই আমারও নাই, তবে দেখি ঘটনা কতদূর গড়ায়।
৩| ২০ শে মার্চ, ২০১৯ দুপুর ২:৩০
যায্যাবর বলেছেন: বলেন কি? ঘটনা এতদূর? কাকতাল হলে একটা ক্ষেত্রে হতে পারে কিন্তু এখানে তো দেখছি একের পর এক হয়েই যাচ্ছে। তা ভাই আর কি কি মিল আছে দুজনার মধ্যে?
২০ শে মার্চ, ২০১৯ দুপুর ২:৩৪
আমি মুক্তা বলেছেন: ভাই হইলে সমস্যা কি? আমার মন চেয়েছে আমি লিখেছি। আর কি কি মিল আছে সেটাতো আমি এখনও জানি না। দেখি কি কি মিল পাওয়া যায়। সঙ্গে থাকার জন্য এবং লাইক দেয়ার জন্য ধন্যবাদ।
৪| ২০ শে মার্চ, ২০১৯ বিকাল ৪:০৭
মাহমুদুর রহমান বলেছেন: সুন্দর হচ্ছে ।বেশ সাজানো গোছানো লেখা।লেখা চলুক দেখি পরবর্তী পর্বে কি হয়।
২০ শে মার্চ, ২০১৯ বিকাল ৪:৪৪
আমি মুক্তা বলেছেন: ধন্যবাদ মাহমুদুর ভাই। মন্তব্যও সুন্দর লেগেছে। অপেক্ষায় থাকার জন্য ধন্যবাদ, সম্ভব হলে আগামীকাল পরের পর্ব দেব।
৫| ২০ শে মার্চ, ২০১৯ রাত ১১:৪৯
পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: প্রথম দিকে একটা পড়েছিলাম। পরে আর পড়া হয়নি। আজকের পর্বটা যে কারণে প্রথমে বুঝতে একটু অসুবিধা হচ্ছিল। ভারত বেশ ভালো লিখেছেন । পোস্টে লাইক ।
শুভকামনা জানবেন।
২১ শে মার্চ, ২০১৯ সকাল ১০:০৯
আমি মুক্তা বলেছেন: শুভকামনা ও লাইকের জন্য অনেক ধন্যবাদ! প্রতি পর্বের লিংক দিয়ে রেখেছি। সময় পেলে পড়বেন, অবশ্য আমার লেখা আপনার মত তেমন মজবুত নয়, তবে চেষ্টা করছি কিছু একটা বের করার।
৬| ২১ শে মার্চ, ২০১৯ সকাল ১০:১৬
মুক্তা নীল বলেছেন: মিতা, মেয়েটা অদৃশ্য মায়াজালে আটকে যাচ্ছে......
এরপরের ঘটনা কি? ভালো লেগেছে গল্প।
২১ শে মার্চ, ২০১৯ সকাল ১০:৩৩
আমি মুক্তা বলেছেন: মিতা! ধন্যবাদ গল্প ভালো লাগায়, পরের পর্ব কিছুক্ষণ পরেই পেয়ে যাবে। আর মেয়েটা অদৃশ্য মায়াজালে আটকে যাচ্ছে..... না আমাকে আটকে ফেলছে সেটা তো আমার নিজের কাছেও এক বিস্ময় বন্ধু! দেখা যাক পরের ঘটনা কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়।
পোষ্টে আপনার মন্তব্য পেয়ে সত্যি নিজেকে ধন্য মনে করছি মিতা!
©somewhere in net ltd.
১| ২০ শে মার্চ, ২০১৯ সকাল ১১:৪২
ম্যাড ফর সামু বলেছেন: বলে কি! এমন কাকতালীয় ঘটনা হতে পারে নাকি? সত্যি পারেনও বটে!
গল্প ভালো লাগলো। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম