![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
গল্প লেখার নেশা আমার আশৈশব। মাধ্যমগুলো বদলে গেছে সময়ে সময়ে - কখনও গল্প, কখনও উপন্যাস, কখনও নাটক, কখনও চলচ্চিত্র কিংবা কখনও টিভি নাটক। যে মাধ্যমেই কাজ করি না কেন, একই কাজ করেছি - গল্প বলেছি। আমি আজন্ম গল্পকার - এক সাদামাটা গল্পকার। মুঠোফোন : ০১৯১২৫৭৭১৮৭. বৈদ্যুতিক চিঠি : [email protected]ফেসবুক : http://www.facebook.com/shajahanshamim.scriptwriterদৃষ্টি আকর্ষণ : আমার নিজের লেখা সাহিত্যকর্ম যেমন উপন্যাস ও নাটক - যা এই ব্লগে পোস্ট করেছি, তার সর্ব স্বত্ব সংরক্ষিত। আমার লিখিত অনুমতি ছাড়া এসবের কিছুই কোনো মাধ্যমে পুনঃপ্রকাশ করা যাবে না।
পটকার শব্দ আর তারা বাতির ঝলকানি ছাড়া শবে বরাত দেখব কোন দিন ভাবি নি।
আমার শৈশবে শবে বরাত আসার অনেক আগে থেকেই টাকা জমাতাম। মামা-কাকা যার কাছ থেকে পেতাম, টাকা সংগ্রহ চলত। তার পটকা আর তারা বাতি কিনে সে কি আনন্দ।
পটকার শব্দ হত বেশি এবং তারা বাতিও এখনকার তারা বাতির দ্বিগুণ বড় হত। কতগুলি পটকা ছুঁড়ে মেরে ফোটাতে হত এবং কতগুলি আগুন ধরিয়ে ফোটাতে হত। এক দম পিচ্চিকালে আগুনে পোটকা কিনি নি ভয়ে। কিশোর বয়সে আগুন দেয়ার পটকা কিনতাম।
মহল্লার বিশেষ বিশেষ বাড়ির সামনে পটকা ফুটিয়ে আনন্দ পেতাম। বিশেষত যে বাড়ির মুরুব্বি রগচটা, সেখানে পোটকা ফুটিয়ে ভদ্রলোককে ক্ষেপিয়ে খুব মজা করতাম।
সকালের দিকে পটকা কিনতাম। বিকেল হতেই ফোটানো শুরু হত। অনেকে আগের দিন অগ্রিম কিনে আনত। আমার মনে আছে বাজারে ২/৩ বোমের দোকান ছিল। ওরা শবে বরাতে প্রচুর ব্যবসা করত। সেই দোকান এখন আর নাই।
মা হালুয়া করতেন। আগের রাতে থেকেই শুরু হত প্রস্তুতি। বুটের হালুয়া বানাতে প্রচুর কষ্ট করতেন মা। বিশেষত বুটের হালুয়া শুকনা করে আনার জন্য প্রচুর নাড়তে হত। হাত ব্যথা হয়ে যেত নাড়তে নাড়তে। সুজির হালুয়া ও বুটের হালুয়া একটা বড় ট্রের মধ্যে নিয়ে তারপর বেলুন দিয়ে বেলতাম। তারপর কেটে কেটে সাইজ করতাম।
বিকেলে পটকা ফোটানোর সময় যখন মা বলতেন খালা বা মামার বাসায় হালুয়া দিয়ে আসতে হবে তখন আর ভালো লাগত না। তারপরও হালুয়া রুটি নিয়ে যেতে হত বাড়ি বাড়ি।
একটু বড় হওয়ার পর প্রতি শবে বরাতে কুকুরের লেজে বোম বেঁধে দিয়ে মজা করতাম। একটা দড়ির মধ্যে অনেকগুলো বোম বেঁধে তারপর সেই দড়িটা কোন একটা ঘুমন্ত কুকুরের লেজে বেঁধে দেয়া হত। বাঁধা শেষে দড়ির মাথায় আগুন লাগিয়ে দেয়া হত। বোম ফাটতে শুরু করলে কুকুর ভয়ে দৌড়াদৌড়ি শুরু করত। শেষ পর্যন্ত কখনও কখনও কুকুর ভয়ে পুকুরে গিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ত। আমরা হাসতে হাসতে এ ওর গায়ে লুটিয়ে পড়তাম।
আমাদের মহল্লায় এক ভদ্রলোক খুব মদ খেতেন। একবার শবে বরাতে কুকুরের লেজে বোম বেঁধে সেই কুকুর তার বাড়ি গিয়ে ঢুকল। ভদ্রলোক খুব বিরক্ত হলেন এবং মাতাল অবস্থায় আমাদের খুব গালাগালি করলেন।
আমরা গেলাম ক্ষেপে। কুকুরের লেজে যে রকম করে বোম বেঁধেছি, সে রকম করে দড়িতে বোমা বেঁধে শেষ রাতের দিকে ভদ্রলোকের জানালার কাছে ছুঁড়ে দিয়ে দৌড়ে পালালাম। ভদ্রলোক ভীষণ ভয় পেয়ে ঘুম থেকে জেগে গেলেন। কিন্তু আর গালাগালি করার সাহস পেলেন না।
পর দিন আমাদের মহল্লার মুরুব্বিদের কাছে বিচার দিলেন। আমরা কেউ স্বীকার করলাম না।
নামাজ পড়তে যেতাম দল বেঁধে। তারপর রাতে আড্ডা চলত। রিক্সা নিয়ে ঘুরতাম এখানে ওখানে। অবধারিতভাবে বোম ফাটাতাম যেখানে সেখানে।
এখন টেলিভিশনে দেখি, পুলিশ বোমাবাজি নিষেধ করে দেয়, তখন সেটা ছিল আনন্দের ব্যাপার। শুনেছি, পটকা তৈরিও নাকি নিষেধ। জেএমবির হাতে পড়তে পারে বিধায় সব ধরনের বিস্ফোরক নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
আজ শবে বরাতের দিন কোন পটকার শব্দ পেলাম না। কোন তারা বাতি জ্বলতে দেখলাম না। বাচ্চারা সব সন্ধ্যার মধ্যেই ঘরের ভেতর সেধিয়ে রয়েছে। কেমন যেন মনমরা সবাই। ওদের মুখের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলি। ভাবি, আমাদের সেই শৈশব ওরা কোন দিনও পাবে না। ইট, কাঠ, পাথরের ফ্লাটের ভিতর খাচায় বন্দী পাখির মতো ওদের কোন আবেগ নাই। আমাদের মতো স্বতঃস্ফুর্ত আনন্দ করার মতো ওদের সেই ক্ষমতাও বোধ হয় নাই।
০৭ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ১২:৩৩
লেখাজোকা শামীম বলেছেন: আমরাও তো অনেক পরীক্ষা দিয়া আইছি। তাই বইলা কান্দাকাটি করি নাই।
২| ০৭ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ১২:২৬
এস.কে.ফয়সাল আলম বলেছেন: অনেক ভাল লাগল ভাই আপনার এই লেখাটি। আমি যদিও অনার্স ফাইনাল ইয়ারে পড়ি, তারপরেও আজ ছোটদের সাথে পটকা ও তারাবাতি জ্বালিয়েছি।
আচ্ছা শামীম ভাই আপনিই বলেন শখ কি বয়স মানে ???
ভাল থাকবেন সব সময়। (ভাল কথা নামাজ পড়ে সব ব্লগার দের জন্য দোয়া করতে ভুলবেন যা যেন)
০৭ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ১২:৩৫
লেখাজোকা শামীম বলেছেন: তাই নাকি , আমি একটাও তারা বাতি জ্বালাতে পারলাম না আজ। সত্যি, শখের কোন বয়স নাই।
৩| ০৭ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ১২:২৬
আমড়া কাঠের ঢেকি বলেছেন: মাইনাস, শবে বরাত কি পটকা ফুটানির লাইগা নাকি!
০৭ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ১২:৩২
লেখাজোকা শামীম বলেছেন: আমারে মাইনাস দিয়া লাভ কী, দেন আমার শৈশবরে।
৪| ০৭ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ১২:২৭
শাহেনশাহ বলেছেন: হেমন্তের গান আছে 'ছেলেবেলার গল্পশোনার দিনগুলো এখন কত দূরে...'! আপনার লেখাটা নস্টালজিয়া চাগিয়ে তুল্ল, সাথে একটা দীর্ঘশ্বাস!
০৭ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ১২:৩৪
লেখাজোকা শামীম বলেছেন: আহা, কী সব দিনগুলি !
৫| ০৭ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ১:০৮
দীপান্বিতা বলেছেন: শুভ শবেবরাত......
কিন্তু 'ঘুমন্ত কুকুরের লেজে বেঁধে দেয়া হত। বাঁধা শেষে দড়ির মাথায় আগুন লাগিয়ে দেয়া হত। বোম ফাটতে শুরু করলে কুকুর ভয়ে দৌড়াদৌড়ি শুরু করত। শেষ পর্যন্ত কখনও কখনও কুকুর ভয়ে পুকুরে গিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ত। আমরা হাসতে হাসতে এ ওর গায়ে লুটিয়ে পড়তাম। '
- এই জায়গাগুলো পড়ে কষ্ট লাগল......
হয়ত ছেলেরা এসবেই আনন্দ পায়!...........কিছু মনে করবেন না যেন!
০৭ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ১:১৯
লেখাজোকা শামীম বলেছেন: কিছু মনে করি নাই। এখন এই কাজ কখনও করব না। কাউকে করতে দেখলে বিরাট ধমক দিব। কুকুরটার যন্ত্রণার কথা ভাবব, যেমন আপনি ভেবেছেন। কিন্তু শিশুরা মাঝে মাঝে নিষ্ঠুরের মতো কাজ করে, যদিও সেটা না বুঝে।
৬| ০৭ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ১:২৪
'লেনিন' বলেছেন: নাহ আপনে হেন কুকর্ম নাই যে করেন নাই! বোমা/পটকা মিস করি। তবে আপনার কুকুরের লেজে বাধা ইত্যাদি ব্যাপারগুলো ছোটোবেলা থেকেই ঘৃণা করতে শিখেছিলাম।
বছর দশেক আগেও একবার গ্রাম্য মেলা থেকে পটকা এনে ফুটিয়েছিলাম খুব সম্ভব ৪০টার মতো
০৭ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ১:৩৭
লেখাজোকা শামীম বলেছেন: সেই সময়টা এমনই ছিল। এখনকার বাচ্চাদের মতো আমরা ভদ্র প্রাণী ছিলাম না।
৭| ০৭ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ১:৫৮
মনির হাসান বলেছেন: এককালে শবে বরাত ঈদের থেকে কোন অংশে কম ছিল'না । এখনকার পোলাপাইন চিন্তাও করতে পারবেনা ... ৮০/৯০ সালের দিকে শবে বরাত'এর রাত কি জিনিষ ছিল ।
০৭ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ২:৩৭
লেখাজোকা শামীম বলেছেন: আমি নিরীহপন্থায় সেই কথাগুলিই স্মরণ করার চেষ্টা করছি মাত্র। কোন বদ মতলব নাই।
৮| ০৭ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ২:০৩
দি ফ্লাইং ডাচম্যান বলেছেন: ওদের মুখের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলি। ভাবি, আমাদের সেই শৈশব ওরা কোন দিনও পাবে না। ইট, কাঠ, পাথরের ফ্লাটের ভিতর খাচায় বন্দী পাখির মতো ওদের কোন আবেগ নাই। আমাদের মতো স্বতঃস্ফুর্ত আনন্দ করার মতো ওদের সেই ক্ষমতাও বোধ হয় নাই
বস চউক্ষে পানি আইসা পড়ল! আসলেই দিনগুলা মজার ছিল।
০৭ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ২:৫৮
লেখাজোকা শামীম বলেছেন: সত্যি অনেক মজার ছিল।
৯| ০৭ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ২:০৭
সায়েম মুন বলেছেন: নষ্টালজিয়া!
০৭ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ৩:০৬
লেখাজোকা শামীম বলেছেন: তা তো বটেই।
১০| ০৭ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ২:১৫
|জনারন্যে নিসংঙগ পথিক| বলেছেন:
ভাইরে মোহাম্মদপুর টাউনহল বাসা নিয়েছি তিনমাস হলো। আজ দুদিন পটকার আওয়াজে ঘুমাইতে পারতেছি না। এখন ইচ্ছা করতেছে বাইদ্ধা পিডাই। দু-একটা ফুটা , পোলাপাইন মানুষ - কিন্তু দেখতাছি এরা কম্পিটিশান দিয়া ফুটাইতাছে।
তয় এটা ঠিক, ছোটবেলায় শবে-বরাত ছিলো ঈদের মতই। টাইগারপাস রেলওয়ে কলোনিতে থাকতাম, চট্টগ্রাম। শবে বরাতের বিকেলে হালুয়া, বরফি, মুগডালের পিঠা, রুটি প্রতিবেশীদের দিতে গিয়ে কতোবার যে মাঠ পেরোতাম। রাতে মিসকিন দের খাওয়াতে হত। পটকাবাজী আর মোড়ে মোড়ে আড্ডা, সারারাত নামাজ পড়তে গিয়ে ভোঁস ভোঁস ঘুমানো তো আছেই ।
যায় দিন ভালো, আসে দিন খারাপ ?
১১| ০৭ ই আগস্ট, ২০০৯ ভোর ৬:১৮
বিদ্রোহী রণ ক্লান্ত বলেছেন: বুজলাম না এই পোষ্টে মাইনাস কেন.....???
অসম্ভব সুন্দর হয়েছে| আজ শবে বরাত তার ঐতিহ্য হারিয়েছে, মনে হয় দুটি ঈদও শবে বরাতের মতই পানসে হয়ে যাবে....!!
আমি আরো খুশি হব যদি একটা পোষ্ট দেন কেন এমন হচ্ছে কারন গুলো নিয়ে|
(পোষ্টে প্লাস)
১২| ০৭ ই আগস্ট, ২০০৯ ভোর ৬:৪০
ইশতিয়াক অাহমেদ বলেছেন: নেন শামীম ভাই আরেকটা....
Click This Link
পড়তে পারেন...
লেখক বলেছেন: আমারে মাইনাস দিয়া লাভ কী, দেন আমার শৈশবরে।
এই উত্তরটা জটিল হইছে...
০৭ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ১১:০৮
লেখাজোকা শামীম বলেছেন: আগেই পড়ে শেষ করেছি।
১৩| ০৭ ই আগস্ট, ২০০৯ বিকাল ৩:৪০
নাহিন বলেছেন: পটকা ফুটালে আব্বা বিশাল ঝাড়ি দিতো নামাযীদের অসুবিধার কথা বলে। কানে তুলতে পারতাম না কথা গুলা- শব্দে যে কানে তালা লেগে থাকতো ।
তবে তারা বাতি বেশি পছন্দের ছিলো আমার । আর বাসায় সেগুলো কম্পারেটিভলি লিগ্যাল ছিলো (মানে বানাইসিলাম আরকি, দেখো পটকা ফুটাই না, তারাবতি জ্বলাই টাইপ
)।
এখন আর সেই দিন নাই ।
ছোটভাইটাও এখন এইসবের জন্য অনেক বড়ভাবে নিজেরে- আমারে তারাবাতি কিনে দেয়ারই কেউ নাই ।
ভাবতেসি কেমনে বানায় শেখা লাগবে ।
১৪| ০৭ ই আগস্ট, ২০০৯ সন্ধ্যা ৬:১৭
জেনন বলেছেন: লেখক বলেছেন: আমারে মাইনাস দিয়া লাভ কী, দেন আমার শৈশবরে।
এইতারেও মাইনাচ দিতে পারলামনা..................... কেমনে যে কি করি!!!!! দইতে যায় মাইনাচ............ মনে পড়ে কিছুক্ষন আগে পড়ে আসা উপরের লেখা................ কি আর করুম............মনে প্রানে দু চক্ষু আমার বন্ধ করিয়া দিলাম একখান পিলাচ.............. কতৃপক্ষ একের অধিক পিলাচের ব্যবস্থা করলে দিতআম ারো কয়েকখান.............
ভালো লাগলো..............চলে গেলাম নস্টালজিয়ায়..............
০৭ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ১১:০৯
লেখাজোকা শামীম বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ।
১৫| ০৮ ই আগস্ট, ২০০৯ সকাল ৯:৫৮
বড় বিলাই বলেছেন: আহারে স্মৃতি। ভালো লাগল। তবে কুকুরে লেজে পটকা বাঁধাটা আমার কখনই পছন্দ না।
০৮ ই আগস্ট, ২০০৯ সকাল ১১:৫৩
লেখাজোকা শামীম বলেছেন: আমার পছন্দ নয়। কিন্তু সেই বয়সে এই নিষ্ঠুরতা আমাদের কেমন যেন আনন্দ দিত। তবে এতে করে কুকুরটা কোন ক্ষতি হত না, কেবল ভয় পেত।
©somewhere in net ltd.
১|
০৭ ই আগস্ট, ২০০৯ রাত ১২:২৪
ভাঙ্গা পেন্সিল বলেছেন: মিয়া পুলাপানরে কুপরামর্শ দিয়েন না। কাইল পরীক্ষা