নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কারিগর

আশিকুর রহমান অমিত

লিখতে পারি না পারি ব্লগিং টা শখ। ফেসবুকেঃ https://www.facebook.com/ashiqur.amit সত্য যতয় তিক্ত হোক সেটার পক্ষে থাকার চেষ্টা করি কিন্তু অনেক সময় তা হয়ে উঠে না। রাজশাহী প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে যন্ত্রকৌশলে পড়াশোনা শেষ করে এখন কামলা। এক কালে রস আলোতে ফান আইডিয়া দিতাম। এখন জীবনটা রম্য হয়ে গেছে। অবসর কাটে গল্পের বই আর মজিলায় স্বেচ্ছাসেবা।

আশিকুর রহমান অমিত › বিস্তারিত পোস্টঃ

কোহিনূর হীরার ইতিহাস

১৮ ই মে, ২০১৩ বিকাল ৩:৫৮

ঘোড়া ছুটিয়ে এসে পৌঁছান যুবক। প্রবেশ করেন পিতার তাবুতে। হাতে তুলে দেন উজ্জ্বল পাথরটি। বলে উঠেন, “আব্বাজান এটা একটা হীরক খণ্ড এখান থেকে হাজার মাইল দক্ষিণে গোলকুন্ডার খনিতে পাওয়া যায়- এত বড় হীরকখণ্ড আগে দেখেনি। গোয়ালিয়রের রাজপরিবারের রত্নাকর একবার এর মূল্য নির্ধারণ করতে গিয়ে বলেছিলও যে পুরো পৃথিবীর অর্ধদিনের ব্যয় নির্বাহ করা যাবে এটা দিয়ে”। কথাগুলো বলছিলেন মুঘল সাম্রাজ্যের ২য় সম্রাট হুমায়ূন তাঁর পিতা সম্রাট বাবর কে। আর এই হীরকখণ্ড টি হচ্ছে পৃথিবীর বিখ্যাত হীরা কোহ-ই-নূর।





মোঘল বাহিনীর হাতে পরাজিত হন গোয়ালিয়রের শাসক। সেই শাসকের মাতা অপেক্ষায় থাকেন ছেলের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সুসম্পন্ন করার জন্য। কিন্তু তাঁর তাবুতে আক্রমন করেন ডাকাতের দল। ডাকাতের হাত থেকে তাদের উদ্ধার করেন শাহজাদা হুমায়ূন। কৃতজ্ঞতা স্বরূপ সেই মহিলা হুমায়ুনের হাতে তুলে দেন কোহিনুর হীরা।





১০৫.৬ ক্যারেটের এই হীরার ইতিহাস কিন্তু বহু আগের। নানা ঘটনা জড়িত রয়েছে এর সাথে। কারো মতে এই হীরার বয়স ৫ হাজার বছর। কারো মতে কর্ণাটকের কোলার খনি থেকে কেউ বা বলে গোয়ালিয়রের খনি থেকে এসেছে কোহিনুর। হিন্দু মিথলোজিতে আছে এই হীরাটার কথা। চন্দ্র গুপ্ত মৌর্যের হাতেও এসেছিল এই হীরাটা এইরকম শোনা যায়। কিন্তু শক্ত কোনও ভিত্তি নেই এই কথাগুলোর।



যাই হোক ইতিহাসবিদদের মতে ১৩০৬ খ্রিষ্টাব্দে মালওয়ার শাসক কাকাতিয়া সাম্রাজ্যের শাসকের হাতে তুলে দেন কোহিনুর কে। কাকাতিয়া সাম্রাজ্যের হাত থেকে এই হীরা আসে দিল্লীর পাগলা সুলতান বলে খ্যাত মুহম্মদ বিন তুঘলকের হাতে সম্ভবত ১৩২৩ খ্রিষ্টাব্দে। পরে লোদী সাম্রাজ্যের শাসকরা এটার মালিক হবার সৌভাগ্য অর্জন করেছিলেন।



সম্রাট বাবরের লিখিত বাবর নামাহর মতে গোয়ালিয়রের সেই নাম না জানা রাজপরিবারের হাত থেকে তারা কোহিনুর হীরাটি পান। প্রসঙ্গত সেই রাজপরিবার আর ইব্রাহিম লোদি এক সাথে লড়েছিলেন পানিপথের প্রথম যুদ্ধে। সম্রাট বাবরের হাত ধরে সেই হীরা আসে সম্রাট হুমায়ূনের হাতে। ইতিহাসবিদেররা বাবর নামা কে শক্তিশালী রেফারেন্স হিসেবে গন্য করেন।



আবার হাতবদলঃ

সম্রাট হুমায়ূন রাজ্যহারা। আশ্রয় নিয়েছেন পারস্যের অধিপতি শাহ তামাস্পের কাছে। কৃতজ্ঞতার নিদর্শন হিসেবে কিংবা উপহার বিনিময়ের রেওয়াজ হিসেবে পারস্যের সম্রাটের হাতে তুলে দেন এই মহামূল্যবান হীরাটি। পরবর্তীতে পারস্যের শাহর সহযোগিতায় দিল্লীর মনসদ ফিরে পান হুমায়ূন। কিন্তু মোঘল সম্রাটদের হাতছাড়া হয়ে যায় কোহিনূর। সম্রাট আকবর দ্য গ্রেট এবং তাঁর পুত্র সম্রাট জাহাঙ্গীরের সাম্রাজ্যের সময় এই হীরা তাদের কাছে ছিল না।



ফিরে আসা মুঘলদের কাছেঃ

পারস্যের শাহ আহমেদনগরের শাসক বুরহান নিজাম শাহ কে উপহার হিসেবে দেন কোহিনুর। মূলত নিজাম শাহ শিয়া ছিলেন বলেই এই উপহার দেওয়া। প্রায় ১০৯ বছর এই হীরা ছিল আহমেদনগরের নিজাম শাহ এবং গোলকুন্ডার কুতুব শাহ দের কাছে। পরে সুলতান আবদুলা কুতুব শাহের প্রধানমন্ত্রী মির জুমলা এই হীরা সম্রাট শাহজাহানের হাতে তুলে দেন। শাহজাহান এই হীরাটা কে বসান তাঁর বিখ্যাত ময়ূর সিংহাসনে। সম্রাট শাহজাহান পর সম্রাট আওরঙ্গজেবের কাছে ছিল এই হীরা। এই সময় কোহিনুরের স্থান ছিল মুঘল কোষাগারে। পরে মুহম্মদ শাহ রঙ্গিলার কাছে ছিল এই হীরাটা। ( উইকির মতে আওরঙ্গজেব তাঁর রাজধানী লাহোরে নিয়ে আসেন, কোহিনুর হীরার স্থান হয় তাঁর নিজ হাতে গড়া লাহোরের বাদশাহি মসজিদে)



অতঃপর হাত ছাড়াঃ

পারস্যের নাদির শাহ ভারত আক্রমন করে লুঠ করে নেন ময়ূর সিংহাসন সহ এই কোহিনুর হীরা। কিন্তু বেশিদিন ভাগ্যে সইল না তাঁর। আততায়ীদের হাতে খুন হয়ে যান নাদির শাহ। হীরা চলে যায় নাদির শাহ্‌র আফগান জেনারেল আহমেদ শাহ দুররানীর কাছে। নাদির শাহর লাশ দেখার সময় কায়দা করে তাঁর সিল টা আহত করের দুররানী এবং সেই সূত্রে মালিক হন কোহিনুরের। তাঁর মৃত্যুর পর হীরা আসে তাঁর সন্তান তিমুর শাহর কাছে। তিমুরের কাছ হতে জামান শাহর হাতে আসে সেখান থেকে সেখান হতে সুজা উল মূলকের কাছে। তিমুর শাহর ছোট সুজা উল মূলক তাঁর সৎ ভাই মাহমুদের কাছে পরাজিত হয়ে কাশ্মীরের গভর্নর আতা মুহাম্মদ খানের কাছে বন্দী হন ১৮১১ সালে। কিন্তু পাঞ্জাবের শিখ রাজা মহারাজ রঞ্জিত সিং সুজা কে উদ্ধার করেন এবং তাকে পরিবার সমেত লাহোরে পাঠিয়ে দেন। বদলে সুজা উল মূলক ১৮১৩ সালে রঞ্জিত সিং এর হাতে তুলে দেন কোহিনুর হীরা।



পাঞ্জাব থেকে ইংরেজদের হাতেঃ





রঞ্জিত সিং মারা গেলে হীরার মালিক হন তাঁর ১১ বছরের ছেলে মহারাজ দিলীপ। কিন্তু ১৮৪৯ সালে ব্রিটিশরা দখল করে নেয় পাঞ্জাব আর বলা চলে দিলীপের হাত থেকে কেড়ে নেয় কোহিনুর হীরাটি। এইভাবে এই উপমহাদেশের কাছ হতে হাতছাড়া হয়ে যায় তাদের অন্যতম মহামূল্যবান সম্পদটি। লর্ড ডালহৌসি ১৮৫০ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির পক্ষ থেকে মহারানী ভিক্টোরিয়ার হাতে তুলে দেন হীরাটি। এই আনুষ্ঠিকতা সম্পন্ন করার জন্য তাঁরা দিলীপ কে নিয়ে যান লন্ডনে। সেই থেকে কোহিনুর শোভা পাচ্ছে রানীর মুকুটে। টাওয়ার অফ লন্ডনে দেখানোর জন্য মুকুটটি রয়েছে।





তথ্যসূত্রঃ

১) অ্যাম্পেয়ার অফ দ্য মোঘল রাইডারস ফ্রম দ্য নর্থ-অ্যালেক্স রাদারফোর্ড

২) উইকি লিঙ্ক

৩)ওয়েব সাইট

৪) ব্লগ

৫)ছবি নেট থেকে প্রাপ্ত

মন্তব্য ২৬ টি রেটিং +১৫/-০

মন্তব্য (২৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই মে, ২০১৩ বিকাল ৪:৩২

খাটাস বলেছেন: অনেক তথ্য নির্ভর পোষ্ট। কষ্ট করে তথ্য গুলো সংগ্রহ ও শেয়ারের জন্য ধন্যবাদ। প্লাস দিয়ে রেখে দিলাম।

১৮ ই মে, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:০২

আশিকুর রহমান অমিত বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই। তাও ঠিক ভাবে গুছিয়ে লিখতে পারিনি বলে দুঃখ লাগছে।

২| ১৮ ই মে, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:০৪

কালোপরী বলেছেন: :)

১৮ ই মে, ২০১৩ রাত ৯:১০

আশিকুর রহমান অমিত বলেছেন: :)

৩| ১৮ ই মে, ২০১৩ রাত ৮:০৫

মিনহাজুল হক শাওন বলেছেন: মেলাকিছু জানলাম। প্লাচ

১৮ ই মে, ২০১৩ রাত ৯:১০

আশিকুর রহমান অমিত বলেছেন: ধন্যবাদ :)

৪| ১৮ ই মে, ২০১৩ রাত ৮:৩৩

শাওণ_পাগলা বলেছেন: এতো হাতবদল হইছে যে আউলায়ে গেসি! তথ্যবহুল! প্লাস :)

১৮ ই মে, ২০১৩ রাত ৯:১১

আশিকুর রহমান অমিত বলেছেন: ধন্যবাদ। শেষের দিকে আমার নিজের আউলায়ে গেছিলো

৫| ১৮ ই মে, ২০১৩ রাত ৯:২৪

সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামি বলেছেন: মাথা ঘুরাইতাছে ভাই ,,, এত বার হাত বদল হয়েছে B:-)

১৮ ই মে, ২০১৩ রাত ৯:৩৬

আশিকুর রহমান অমিত বলেছেন: প্রথম দিকে ভাই আরো হাত বদল হইছে কিন্তু ঐতিহাসিক ভিত্তি নেই তাই ঐ গুলো স্কিপ করেছি। আর শেষের দিকে তো ভালই হাত বদল হইছে। সবার লোভ ছিল এইটার প্রতি।

৬| ১৮ ই মে, ২০১৩ রাত ১১:১৪

নাহিদ সৈকত বলেছেন: শাওণ_পাগলা বলেছেন: এতো হাতবদল হইছে যে আউলায়ে গেসি! :D :D :P :P

পোস্টের জইন্ন্য পিলাস++++++++

১৯ শে মে, ২০১৩ রাত ১২:০১

আশিকুর রহমান অমিত বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই

৭| ১৯ শে মে, ২০১৩ রাত ১:৩৭

অমৃত সুধা বলেছেন: এক সেকেন্ডেই মুভি ডাউনলোড!
http://dhakajournal.com/?p=7686

১৯ শে মে, ২০১৩ সকাল ১০:১৫

আশিকুর রহমান অমিত বলেছেন: B:-) B:-)

৮| ১৯ শে মে, ২০১৩ সকাল ৮:৩৬

বাংলাদেশী দালাল বলেছেন:
খাটাস বলেছেন: অনেক তথ্য নির্ভর পোষ্ট। কষ্ট করে তথ্য গুলো সংগ্রহ ও শেয়ারের জন্য ধন্যবাদ। প্লাস দিয়ে রেখে দিলাম।

১৯ শে মে, ২০১৩ সকাল ১০:১৪

আশিকুর রহমান অমিত বলেছেন: ধন্যবাদ ভাই

৯| ২০ শে মে, ২০১৩ রাত ১২:৫৩

C/O D!pu... বলেছেন: ভালো লাগলো...

২০ শে মে, ২০১৩ রাত ১:৩৪

আশিকুর রহমান অমিত বলেছেন: ধন্যবাদ :)

১০| ২০ শে মে, ২০১৩ দুপুর ১২:৫২

সোহানী বলেছেন: চমৎকার পোস্ট +++++++

২০ শে মে, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:১৩

আশিকুর রহমান অমিত বলেছেন: :) :)
ধন্যবাদ

১১| ২৩ শে মে, ২০১৩ সকাল ৮:৩৬

ইউক্লিড রনি বলেছেন: পিডিএফ কইরা রাখলাম। :-B

২৪ শে মে, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৩৭

আশিকুর রহমান অমিত বলেছেন: B-) B-)

১২| ১৯ শে জুন, ২০১৩ সকাল ১১:৪৭

খেয়া ঘাট বলেছেন: খুব সুন্দর লিখেছেন।
অনেক আগে আমি একটা গল্প লিখেছিলাম কোহিনূর নিয়ে।

++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
একগুচ্ছ প্লাস।

১৯ শে জুন, ২০১৩ রাত ১১:০৬

আশিকুর রহমান অমিত বলেছেন: ধন্যবাদ :)

১৩| ০২ রা জুলাই, ২০১৩ সকাল ১০:০৯

আমিনুর রহমান বলেছেন:


দুর্দান্ত পোষ্ট +++
চিন্তা করতাছি আমাদের হীরা কবে আবার আমাদের হাতে :| :| :|

০৩ রা জুলাই, ২০১৩ সকাল ৯:০৪

আশিকুর রহমান অমিত বলেছেন: এটাই ভাবছিলাম ভাইয়া, হীরাটাকে এই উপমহাদেশে নিয়ে আসা উচিত।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.