নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কারিগর

আশিকুর রহমান অমিত

লিখতে পারি না পারি ব্লগিং টা শখ। ফেসবুকেঃ https://www.facebook.com/ashiqur.amit সত্য যতয় তিক্ত হোক সেটার পক্ষে থাকার চেষ্টা করি কিন্তু অনেক সময় তা হয়ে উঠে না। রাজশাহী প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে যন্ত্রকৌশলে পড়াশোনা শেষ করে এখন কামলা। এক কালে রস আলোতে ফান আইডিয়া দিতাম। এখন জীবনটা রম্য হয়ে গেছে। অবসর কাটে গল্পের বই আর মজিলায় স্বেচ্ছাসেবা।

আশিকুর রহমান অমিত › বিস্তারিত পোস্টঃ

গল্পঃ পুনরাবৃত্তি‬

১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১০:২৪

১৪ ফেব্রুয়ারি তে পাঞ্জাবী পরিধান করা একটা ছেলের ঘোরার কথা কোন মেয়ের সাথে, কিংবা বন্ধু বান্ধবীর গ্রুপের সাথে। তথাকথিত ভালোবাসা দিবসের কমন চিত্র। কিন্তু রাফসান বসে আছে চায়ের দোকানে। মুখ টা ঠিক বাংলা পাঁচের মত। পাশে দুটা লাল গোলাপ। এতক্ষণ যত্ন করে রাখা গোলাপ দুটা অবহেলিত অবস্থায় পরে আছে বেঞ্চে। কিছুক্ষণ পর চায়ের কাপ রাফসানের হাতে এসে পৌছালো। দুই চুমুক দেওয়ার পর রাফসান ভাবতে লাগলো কি হয়েছে।



অনিতা রাফসানের ক্লাস মেট। ক্লাসের সেরা সুন্দরী না হলেও মোটামুটি সুন্দরীদের একজন। সেকেন্ড সেমিস্টার থেকেই কেন যেন অনিতা কে মনের এক কোনে জায়গা দিয়ে ফেলে রাফসান। সেই থেকে নানান চেষ্টা অনিতার দৃষ্টি আকর্ষণের। যদিও বন্ধু হিসেবে কাছে যেতে বেশি দেরি করেনি রাফসান কিন্তু মনের কথা বলা কি এত সোজা। তাই অনিতার পিছনে কত ছোটা। বিচ্ছিরি জ্যাম ডিঙ্গিয়ে অনিতার বাসায় নোট পৌঁছে দেওয়া। সময় অসময়ে অ্যাসাইনমেন্ট মেইল করে দেওয়া, ফটোকপি করতে এক সাথে যাওয়া। মাঝে মাঝে একসাথে বার্গার কিংবা আইসক্রিম খাওয়া।



রাফসানের মনে হত অনিতা একদিন বুঝে ঠিকই জিজ্ঞেস করবে, “ কিরে রাফসান আমাকে পছন্দ করিস না কি”। কিন্তু সে প্রশ্ন করার কোন লক্ষণ দেখতে পাইনি রাফসান। যদিও তার প্রতি অনিতার আচরণ ছিল যথেষ্ট পজিটিভ। অনিতার ভাল রকমের বন্ধু বলতে সে একজন। তবুও গানের ভাষায় বন্ধুর চেয়ে একটু খানি বেশি হতে চেয়েছিল রাফসান। তাই নিজেই ১৪ তারিখে প্রপোজ করার জন্য গোলাপ ফুল আর পাঞ্জাবি পরে হাজির ক্যাম্পাসে। ক্যাম্পাসে ছিল এক্সট্রা ক্লাস।



কিন্তু সর্বনাশের মাথায় বাড়ি। বন্ধুদের আড্ডায় অনিতা এই কি বলল? সে রিয়াদ স্যারের প্রেমে পরেছে। আর রিয়াদ স্যার ও কিনা রাজী!!!! রিয়াদ আহমেদ রাফসানদের ভার্সিটির বিবিএ ফ্যাকাল্টির টিচার। হ্যান্ডসাম আর ড্যাশিং শব্দ টা উনার সাথে যায়। কিন্তু ব্যাটার চোখে অনিতাই পরল? আর অনিতা একজন কম্পিউটার সাইন্সের ছাত্রী হয়ে বিবিএ এর স্যার কে পছন্দ করল। যতদূর মনে পরে রাফসানের, রিয়াদ স্যার অ্যাকাউন্টিং এর ক্লাস নিয়েছিলেন এক সেমিস্টারে। তাতেই? আর সবচেয়ে বড় কথা অনিতা এই কথাটা আগে বলেনি? ওর সাথে একটু কথা বলতেই হবে...



- এই অনিতা একটু দাঁড়া

- কিরে রাফসান কই গেছিলি?

- চা খেতে

- ডাকলি না যে? আমিও যেতাম

- রিয়াদ স্যারের সাথে যাবি

- ধ্যাত এখন থেকে ক্ষেপানো শুরু করে দিয়েছিস?

- কথাটা আমাকে আগে জানালে পারতি না?

- কেন আগে জানালে কি হত?

- আগে জানানো যেত না?

- সরি দোস্ত, সত্যি সারপ্রাইজ দিতে চাইছিলাম। আর শুনেছি ভালোবাসার কথা আগে কাউকে বলা উচিত না

- কাউকে বলা উচিত না, কাউকে ভালোবাসাও উচিত না

- মানে?

- মানে কিছু না । প্রেমিক প্রেমিকা এক ইউনিভার্সিটিতে ভালই জমবে

- কচু জমবে, উনি এম এস করতে ইংল্যান্ডে যাচ্ছে।

- তুমিও যাবা এক সময়। যাই হোক বাড়ি গেলাম। পরে কথা হবে।



হাটা শুরু করল রাফসান । কিছুটা বিভ্রান্ত। গোলাপ দুটো তখন পরে রয়েছে চায়ের দোকানের বেঞ্চে। সূর্যের আলোয় গোলাপ দুটো শুকিয়ে যাচ্ছে, যে ভাবে ব্যর্থ প্রেমিকের প্রেম শুকিয়ে যায়।



প্রায় পাঁচ বছর পরের কথা। রিমো ছেলেটার মেজাজ খারাপ। মুখ দিয়ে গালি বের হয়ে যাচ্ছে অনবরত। নওরীন মেয়েটা এইটা কি করল?? রিমো বিবিএ তে পড়া ছেলে। স্পাইক দেওয়া চুল নিয়ে ডিবেট করে অসাধারণ। নওরীনের প্রতি ভাল রকমের দুর্বল। যদিও বুঝতে দেয় না। নওরীন তার ডিবেট পার্টনার। সেই নওরীন ক্লাসে বোম ফাটালো আজকে। তার বিয়ে ঠিক হয়েছে। আরে একটা আধুনিক মেয়ে এত তাড়াতাড়ি কি করে বিয়ে করে। কিন্তু নওরীন কিনা খুশি! একবারো বুঝলো না তার প্রতি রিমোর দুর্বলতার কথা।

নওরীন বিয়ে করতে যাচ্ছে রাফসান নামে এক ছেলের সাথে। রাফসান দেশের সেরা প্রোগ্রামারদের একজন। বেচারা নওরীন সারাদিন পিসির সামনে পরে থাকা এক ছেলের ঘাড়ে যেয়ে পরবে। রিমো অবশ্য জানতো না রাফসান তাঁদের ভার্সিটি থেকে গ্র্যাজুয়েট কমপ্লিট করেছে।



হতাশ হয়ে বসে থাকলো রিমো। মিষ্টি টাইপের একটা মেয়েকে হারানোর বেদনা তার মনে। হিংসে হচ্ছে রাফসানের প্রতি। ইস আগে যদি নওরীন কে বলত তার ভালোবাসার কথাটা। নওরীনের সামনে দুটো গোলাপ নিয়ে যেয়ে বললেই হয়ত হত। আচ্ছা রাফসান ব্যাটা কি নওরীনের জন্য গোলাপ কিনেছিল? দুটো লাল গোলাপ।



মন্তব্য ৬ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৪:০৬

সপ্নাতুর আহসান বলেছেন: পুনরাবৃত্তি !!
একই ভাবে মন ভেঙ্গে যাওয়া এবং একই ধরণের দুটি লাল গোলাপ এর সাক্ষী !! সুন্দর গল্প।

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সকাল ৮:১০

আশিকুর রহমান অমিত বলেছেন: ধন্যবাদ পড়ার জন্য :)

২| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ১:৫৬

গেরিলা রুমি বলেছেন: এত ভালো লিখেন কেন? B:-) B:-)

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সকাল ৮:১০

আশিকুর রহমান অমিত বলেছেন: রেজাল্ট খারাপ তাই! ;)

৩| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ২:৩৬

শান্তির দেবদূত বলেছেন: চমৎকার করে দুটি ঘটনাকে একসাথে বেধেছেন! অভিনব! ভালো লাগলো অনেক। লেখালেখি চালিয়ে যান, আশা করি সামনে আরও ভালো ভালো লেখা পাবো আপনার কাছ থেকে। শুভেচ্ছা ও শুভকামনা রইল।

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সকাল ৮:১০

আশিকুর রহমান অমিত বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.