![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার লেখা যে কেউ নকল করতে পারবেন,কপি পেস্ট করতে পারবেন । আপনারা যারা আমাকে পছন্দ করেন না, তারা দূরে গিয়া মরেন ।
প্রায় সাত বছর আগের ঘটনা।
একদিন অফিসের কাজ শেষে ঢাকার গুলিস্তানের ফুটপাথ দিয়ে হাটছিলাম। এক লোক এসে বললেন, ভাই, বেকারির কারখানাটা কই?
আমি না বোঝার ভান করে বললাম, চিনি না।
পেছনে থাকা আরেকজন বললেন, ভাই, বেকারির দোকানে গেলে কি কারখানার খোজ পাওয়া যাবে?
বললাম, পেতে পারেন।
আরো বললেন, সেখানে কি স্যাকারিন কেনে? কতো টাকা কেজি?
বললাম, ভাই, কি ব্যাপার বলেন তো?
প্রথম ব্যক্তি বললেন, ভাই, আমি একটা বেকারির দোকানে কাজ করতাম। মালিক আজ প্রায় তিন মাস বেতন দেয় না। তাই আমি কারখানা থেকে স্যাকারিন চুরি করে এনেছি বেচার জন্য। ভাই, আমাকে যদি একটু সাহায্য করতেন!
তৃতীয় ব্যক্তি বললেন, ভাই, এদিকে আসেন। আমরা তাকে সেগুলো বেচে দেবো এবং যা লাভ থাকবে তা দুজনে ভাগ করে নেবো।
ঠিক আছে। আমি বললাম।
আমরা একটি বেকারির দোকানে গেলাম। দোকানির সঙ্গে কথা বললাম, স্যাকারিন কতো টাকা কেজি?
দোকানি বললেন, তিন হাজার টাকা কেজি।
আমরা স্যাকারিনওয়ালাকে বললাম, ভাই, দুই হাজার টাকা কেজি।
তিনি বেচার জন্য রাজি হলেন।
বললাম, স্যাকারিন দেন।
তিনি বললেন, আগে টাকা দেন।
বললাম, আগে তো বেচি।
তিনি আমাকে বিশ্বাস করলেন না।
তৃতীয় ব্যক্তি বললেন, তিনি যদি বিশ্বাস না করেন তাহলে আপনার কাছে টাকা থাকলে দেন।
বললাম, আমার কাছে তো কোনো টাকা নেই।
তৃতীয় ব্যক্তি বললেন, ভাই, যদি মোবাইল ফোনসেট থাকে তাহলে তাই দেন।
আমি সাত-পাচ না ভেবে আমার মোবাইল ফোনসেটটা বের করে দিলাম। তারপর স্যাকারিন নিয়ে দোকানির কাছে গেলাম।
দোকানি স্যাকারিন চেক করার জন্য ব্যাগটা হাতে নিলেন। ব্যাগ চেক করার পর বললেন, ভাই, ব্যাগে তো স্যাকারিন নেই। ব্যাগে তো ময়দা।
এ কথা শুনে আমার তো মাথায় হাত! পেছনে তাকিয়ে দেখি তৃতীয় ব্যক্তিও নেই। মানে আমার মোবাইল সেটটাও নেই।
পরে বুঝলাম, সবাই ওদের লোক।
মানে সবই সাজানো।
দুই
খুব ইচ্ছা ছিল কারো সঙ্গে বন্ধুত্ব করা।
একদিন রাত প্রায় দুইটা হবে। মোবাইল ফোনে একটা মিসড কল এলো।
পাচ মিনিট পর কল ব্যাক করলাম।
ওপাশ থেকে সুন্দর এক মেয়েলি কণ্ঠে বললো, ভাই, আপনি কি সাগর?
আমি বললাম, জি ভাই।
সে বললো, মৌচাকে ঢিল-এ আপনার একটা লেখা পড়লাম। খুব সুন্দর হয়েছে।
বললাম, ওই কথাটা দিনের এক সময়ও তো বলতে পারতেন, তাই না?
ওপাশ থেকে মোটামুটি করুণ কণ্ঠে বললো, ভাই, সরি।
তখন আমি একটু নরম হলাম। বললাম, ঠিক আছে, আপনার নাম কি?
সে বললো, সুমি। বাসা ঢাকার বাড্ডায়। দুই ভাই, এক বোন। পড়ি গুলশান কমার্স কলেজে ইন্টারমিডিয়েট।
এরপর প্রথমে আপনি, পরে তুমি, তারপর তুই। সবশেষে বন্ধুত্ব।
ফোনে প্রায় সময়ই কথা হতো।
সে দেখা করতে চাইলো।
একদিন সন্ধ্যায় ওর সঙ্গে দেখা করার জন্য বাড্ডায় গেলাম।
খুব মিষ্টি চেহারা, টোল পড়া গাল, ববকাট চুল।
দুজন মিলে ঘুরলাম। ফুচকা খেলাম। অনেক গল্প শেষে বাসায় এলাম। তারপর কথা চলতে থাকলো।
একদিন ও ফোন করে বললো, দোস্ত, আমার পাচ হাজার টাকা লাগে, ধার দিস।
বললাম, দোস্ত, আজ নয়, পরশু বেতন পাবো। তখন দেবো।
ঠিক আছে।
বেতন পাওয়ার দিনই সন্ধ্যায় রওনা দিলাম। ওর সঙ্গে দেখা করে রেস্টুরেন্টে খাওয়া-দাওয়া সেরে একটা গলির মুখে দাড়িয়ে গল্প করছিলাম।
হঠাৎ পাচ-ছয় যুবককে আসতে দেখে ও বললো, দোস্ত, এলাকার বড় ভাইয়েরা। আমাকে দেখলে বকা দেবে। বলে সে আড়ালে চলে গেল।
যুবকরা এসে আমাকে বললো, ভাই, কোন এলাকার?
বললাম, টঙ্গী থাকি।
হঠাৎ করে নেতা গোছের এক যুবক আমার গালে চড় মেরে বললো, টঙ্গীর পাগল বাড্ডায় এসে প্রেম করো।
বললাম, ভাই, দেখুন, আমি ওর বন্ধু। আমাদের প্রেম-ট্রেম নয়।
তারপর ঠাস ঠাস করে চড় মেরে নেতা বললো, তোর কাছে পাচ হাজার টাকা আছে, দিয়ে দে।
মানিব্যাগ বের করে সব টাকা আর দুইটা মোবাইল ফোনসেট ওরা নিয়ে নিল।
আমার কিছুই করার ছিল না। বিশেষ অনুরোধে দুইটা সিম কার্ড ও বাস ভাড়ার জন্য বিশ টাকা, ভোটার আইডি কার্ডসহ কিছু দরকারি কাগজ রাখতে দিল।
আমি রাস্তা ধরলাম। তবে আসার সময় সুমির সঙ্গে দেখা হয়নি।
বাসে বসে চিন্তা করলাম। হঠাৎ মনে হলো, আমার কাছে যে পাচ হাজার টাকা আছে তা সুমি যুবকদের না বললে কিভাবে জানলো?
তারপর আর যোগাযোগ হয়নি।
প্রায় দুই মাস পর একদিন ফোনে বললো, দোস্ত, আমি সুমি।
আমি বললাম, রাখ তোর দোস্ত, শালি।
©somewhere in net ltd.