নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

একদিন সবকিছু গল্প হয়ে যায়...

আহমাদ মোস্তফা কামাল

জন্ম : ১৪ ডিসেম্বর, ১৯৬৯; মানিকগঞ্জ। পৌষের কোনো এক বৃষ্টিভেজা মধ্যরাতে এদেশের এক প্রত্যন্ত গ্রামে জন্ম হয়েছিলো আমার, মায়ের কাছে শুনেছি। হঠাৎ বৃষ্টির সেই শীতের রাতে আঁতুর ঘরে মার পাশে দাইমা নামক আমার অ-দেখা এক মহিলা ছাড়া আর কেউ ছিলো না। উঠোনে রেখে দেয়া প্রয়োজনীয় সাংসারিক অনুষঙ্গ বৃষ্টির হাত থেকে বাঁচাতে দাইমা বাইরে গেলে প্রায়ান্ধকার ঘরে জন্ম হয়েছিলো আমার। জন্মেই দেখেছিলাম, আমার চারপাশে কেউ নেই- মা ছাড়া। আজ, এই এতদিন পর- আমার চারপাশে সহস্র মানুষের ভিড়- তবু মার কাছে ফিরতেই ভালো লাগে আমার। যোগাযোগ : [email protected] [email protected]

আহমাদ মোস্তফা কামাল › বিস্তারিত পোস্টঃ

অভিলাষী মন চন্দ্রে না পাক, জ্যোৎস্নায় পাক সামান্য ঠাঁই

০৯ ই জুলাই, ২০০৮ রাত ১২:১৮

[যারা কবিতা ভালোবাসেন, এই পোস্টটি তাদের প্রতি উৎসর্গ করা হলো।]



কোনো কোনো কবি তাঁর জীবনকালেই মিথিক্যাল চরিত্র হয়ে ওঠেন। যেমন নির্মলেন্দু গুণ বা আবুল হাসান। আমাদের তারুণ্যের সময়ে তেমনি রুদ্র মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ হয়ে উঠেছিলেন। স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে প্রথম সারিতে থেকে, অনিয়ন্ত্রিত জীবন যাপন করে, তসলিমা নাসরীনের সঙ্গে প্রেম, বিয়ে, স্বল্পকালীন সংসার করে এবং সংসার ভেঙে তিনি হয়ে উঠেছিলেন তরুণদের নিত্য আলোচনার বিষয়বস্তু।



তাঁর সঙ্গে ব্যক্তিগত পরিচয় হয়ে ওঠেনি কখনো। তখন যেচে পড়ে পরিচিত হওয়ার সাহসও ছিলো না। আমি তখন সদ্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েছি, আর তিনি বিখ্যাত কবি। কিন্তু কাছ থেকে অনেকবার দেখেছি তাঁকে, কথা শুনেছি। তাঁর মৃত্যুর কিছুদিন আগে, একবার কেউ একজন-- 'কেমন আছেন, রুদ্রদা'-- জিজ্ঞেস করলে তিনি উত্তর দিয়েছিলেন-- 'জীবন প্রতিশোধ নিচ্ছে! 'জীবন প্রতিশোধ নিচ্ছে!!' খুব মনে পড়ে তাঁর ওই কথাগুলো। তিনি তখন বেশ অসুস্থ, হয়তো অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপনের দিকেই ইঙ্গিত করেছিলেন ওই কথাগুলো দিয়ে।



তো ওই সময় দ্রোহে ও প্রেমে বারবার তিনি উচ্চারিত হতেন। মনে পড়ে, এরশাদ-বিরোধী আন্দোলনের সময় তাঁর একটি কবিতার কথা--



রোদ্দুরে শুকিয়ে যাবে।

আর যদি বৃষ্টি নামে

অঘ্রানের পড়ন্ত বেলায়

ধুয়ে যাবে রক্তের দাগ,

বুলেটে ছিটকে পড়া হলুদ মগজ...



পুরোটা উদ্ধৃত করলাম না, শুধু এটুকু বলি-- 'এক্সরে রিপোর্ট' শিরোনামের কবিতাটির ছত্রে ছত্রে ছিলো আপোসকামীতার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ। তাঁর 'মানুষের মানচিত্র' সিরিজও দারুণ নাড়া দিয়েছিলো পাঠককে। একেক সময় মনে হতো-- কেবল দ্রোহের জন্যই তাঁর জন্ম হয়েছে। কিন্তু তাঁর মধ্যে যে গভীর বেদনাবোধ ছিলো, ছিলো অসামান্য রোমান্টিকতা, তার প্রমাণ পেতেও দেরি হয়নি আমাদের। তরুণদের মুখে মুখে ফেরা তাঁর অভিমানের খেয়া কবিতাটির কথা এই প্রসঙ্গে বলা যেতে পারে। পুরোটা তুলে দিচ্ছি।



'এতোদিন কিছু একা থেকে শুধু খেলেছি একাই

পরাজিত প্রেম তনুর তিমিরে হেনেছে আঘাত

পারিজাতহীন কঠিন পাথরে



প্রাপ্য পাইনি করাল দুপুরে,

নির্মম ক্লেদে মাথা রেখে রাত কেটেছে প্রহর বেলা_

এই খেলা আর কতোকাল আর কতোটা জীবন!

কিছুটা তো চাই- হোক ভুল হোক মিথ্যে প্রবোধ,

অভিলাষী মন চন্দ্রে না পাক, জ্যোৎস্নায় পাক সামান্য ঠাঁই

কিছুটা তো চাই, কিছুটা তো চাই।



আরো কিছুদিন, আরো কিছুদিন-- আর কতোদিন?

ভাষাহীন তরু বিশ্বাসী ছায়া কতোটা বিলাবে?

কতো আর এই রক্ততিলকে তপ্ত প্রণাম!

জীবনের কাছে জন্ম কি তবে প্রতারণাময়?



এতো ক্ষয়, এতো ভুল জমে ওঠে বুকের বুননে,

এই আঁখি জানে, পাখিরাও জানে, কতোটা ক্ষরণ

কতোটা দ্বিধায় সন্ত্রাসে ফুল ফোটে না শাখায়



তুমি জানো নাই-- আমি তো জানি

কতোটা গ্লানিতে এতো কথা নিয়ে, এতো গান, এতো হাসি নিয়ে বুকে

নিশ্চুপ হয়ে থাকি



বেদনার পায়ে চুমু খেয়ে বলি এই তো জীবন,

এইতো মাধুরী, এই তো অধর ছুঁয়েছে সুখের সুতনু সুনীল রাত।



তুমি জানো নাই-- আমি তো জানি

মাটি খুঁড়ে কারা শষ্য তুলেছে,

মাংসের ঘরে আগুন পুষেছে

যারা কোনোদিন আকাশ চায়নি নীলিমা চেয়েছে শুধু,

করতলে তারা ধরে আছে আজ বিশ্বাসী হাতিয়ার



পরাজয় এসে কণ্ঠ ছুঁয়েছে লেলিহান শিখা,

চিতার চাবুক মর্মে হেনেছো মোহন ঘাতক

তবুও তো পাওয়ার প্রত্যাশা নিয়ে মুখর হৃদয়,

পুষ্পের প্রতি প্রসারিত এই তীব্র শোভন বাহু।



বৈশাখী মেঘ ঢেকেছে আকাশ

পালকের পাখি নীড়ে ফিরে যায়--

ভাষাহীন এই নির্বাক চোখ চোখ আর কতোদিন?

নীল অভিমানে পুড়ে একা আর কতোটা জীবন?

কতোটা জীবন?'



'কিছুটা তো চাই-- হোক ভুল হোক মিথ্যে প্রবোধ,

অভিলাষী মন চন্দ্রে না পাক, জ্যোৎস্নায় পাক সামান্য ঠাঁই

কিছুটা তো চাই, কিছুটা তো চাই... '



(অভিমানের খেয়া/ রুদ্র মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ)





ওই সময়ে খুব কম তরুণই ছিলো, যারা এই কবিতাটি পড়েনি। বিশেষ করে--



কিছুটা তো চাই-- হোক ভুল হোক মিথ্যে প্রবোধ,

অভিলাষী মন চন্দ্রে না পাক, জ্যোৎস্নায় পাক সামান্য ঠাঁই



লাইন দুটো তো নিত্য সহচরই হয়ে উঠেছিলো আমাদের। না পাওয়ার বেদনা, প্রেমহীনতা, নিঃসঙ্গতা, আর হাহাকারের এমন নিপুণ চিত্র কজনই বা আঁকতে পারেন?



আর এই লাইনগুলো?--



'তুমি জানো নাই-- আমি তো জানি

কতোটা গ্লানিতে এতো কথা নিয়ে, এতো গান, এতো হাসি নিয়ে বুকে

নিশ্চুপ হয়ে থাকি'



মনে কি হয় না, এ তো আমারই মনের কথা? কবি তো তিনিই- যিনি অগুনিত পাঠকের মনের কথা কোনো এক অলৌকিক উপায়ে বলে দিতে পারেন।



কিন্তু এটা ছাড়াও, তুলনামূলকভাবে কম আলোচিত বা কম পঠিত একটি কবিতাও আমার কাছে অসামান্য মনে হয়েছে।

আবার পুরোটা উদ্ধৃত করি--



'হাত বাড়ালেই মুঠো ভরে যায় ঋণে

অথচ আমার শস্যের মাঠ ভরা।

রোদ্দুর খুঁজে পাই না কখনো দিনে,

আলোতে ভাসায় রাতের বসুন্ধরা।



টোকা দিলে ঝরে পচা আঙুলের ঘাম,

ধস্ত তখন মগজের মাস্তুল

নাবিকেরা ভোলে নিজেদের ডাক নাম

চোখ জুড়ে ফোটে রক্তজবার ফুল।



ডেকে ওঠো যদি স্মৃতিভেজা ম্লান স্বরে,

উড়াও নীরবে নিভৃত রুমালখানা

পাখিরা ফিরবে পথ চিনে চিনে ঘরে

আমারি কেবল থাকবে না পথ জানা--



টোকা দিলে ঝরে পড়বে পুরনো ধুলো

চোখের কোণায় জমা একফোঁটা জল।

কার্পাস ফেটে বাতাসে ভাসবে তুলো

থাকবে না শুধু নিবেদিত তরুতল

জাগবে না বনভূমির সিথানে চাঁদ

বালির শরীরে সফেদ ফেনার ছোঁয়া

পড়বে না মনে অমীমাংসিত ফাঁদ

অবিকল রবে রয়েছে যেমন শোয়া



হাত বাড়ালেই মুঠো ভরে যায় প্রেমে

অথচ আমার ব্যাপক বিরহভূমি

ছুটে যেতে চাই-- পথ যায় পায়ে থেমে

ঢেকে দাও চোখ আঙুলের নখে তুমি।'



(খতিয়ান/ রুদ্র মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ)



শষ্যের মাঠ ভরে আছে, অথচ মুঠো ভরে যায় ঋণে; দিনের রোদ্দুর নেই, অথচ রাত ভেসে গেছে আলোতে; হাত বাড়ালেই মুঠো ভরে উঠছে প্রেমে, অথচ বিরহ, কেবলি বিরহ। কারণ--



'ছুটে যেতে চাই-- পথ যায় পায়ে থেমে

ঢেকে দাও চোখ আঙুলের নখে তুমি।'





কেউ কেউ বুঝি এমন করেই আঙুলের নখে চোখ ঢেকে দেয়!



আর তাই--



'ডেকে ওঠো যদি স্মৃতিভেজা ম্লান স্বরে,

উড়াও নীরবে নিভৃত রুমালখানা

পাখিরা ফিরবে পথ চিনে চিনে ঘরে

আমারি কেবল থাকবে না পথ জানা'



রুদ্রর তাই ঘরে ফেরা হয়নি আর। আমাদের কারো কারো কখনোই ফেরা হয় না!

মন্তব্য ৫০ টি রেটিং +১৮/-০

মন্তব্য (৫০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৯ ই জুলাই, ২০০৮ রাত ১২:২২

অ্যামাটার বলেছেন: ধুররর...
সুন্দর পোষ্টগুলো শুধু রাত করে ঘুমতে যাবার সময়ই আসে;
যাই হোক+দিয়ে বুকিং দিয়ে রাখলাম,কাল পড়ব।

০৯ ই জুলাই, ২০০৮ রাত ১২:৩০

আহমাদ মোস্তফা কামাল বলেছেন: রাতই তো কবিতা পড়ার উত্তম সময়! এত তাড়াতাড়ি ঘুমান কেন? পোস্টটা পড়ে ঘুমাতে যান প্লিজ! ;)

২| ০৯ ই জুলাই, ২০০৮ রাত ১২:২৪

আকাশচুরি বলেছেন: রুদ্রর তাই ঘরে ফেরা হয়নি আর। আমাদের কারো কারো কখনোই ফেরা হয় না!

++++++

০৯ ই জুলাই, ২০০৮ রাত ১২:৩১

আহমাদ মোস্তফা কামাল বলেছেন: :) :) :) :) :) :)

৩| ০৯ ই জুলাই, ২০০৮ রাত ১২:২৭

মৈথুনানন্দ বলেছেন: জানলাম! :)

০৯ ই জুলাই, ২০০৮ রাত ১২:৩২

আহমাদ মোস্তফা কামাল বলেছেন: কি জানলেন?

৪| ০৯ ই জুলাই, ২০০৮ রাত ১২:৩১

একরামুল হক শামীম বলেছেন: কবিতা আমার খুব ভালো লাগে। লেখাটা দারুন লাগলো।
রুদ্র মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ স্বল্প সময়ে বাংলা সাহিত্যে অনেক ভালো কবিতা দিয়ে গেছেন।

০৯ ই জুলাই, ২০০৮ রাত ১২:৩৪

আহমাদ মোস্তফা কামাল বলেছেন: এটা লেখা না বলে 'কবিতা'র পোস্ট বলাই ভালো! নিজে তো কবিতা লিখতে পারি না, তাই অন্যের কবিতা দিয়েই...

৫| ০৯ ই জুলাই, ২০০৮ রাত ১২:৩৮

ফাহমিম বলেছেন: আরএমএস জিন্দাবাদ।

প্রিয় তে রাখলাম।

০৯ ই জুলাই, ২০০৮ রাত ১:২৭

আহমাদ মোস্তফা কামাল বলেছেন: ধন্যবাদ।

৬| ০৯ ই জুলাই, ২০০৮ রাত ১২:৩৯

নুরুন্নবী হাছিব বলেছেন: হুমম..ভাল লাগলো...

০৯ ই জুলাই, ২০০৮ রাত ১:৩১

আহমাদ মোস্তফা কামাল বলেছেন: আমারও।

৭| ০৯ ই জুলাই, ২০০৮ রাত ১২:৪৯

ইফতেখার ইনান বলেছেন: ভাল লাগল...

০৯ ই জুলাই, ২০০৮ রাত ১:৩২

আহমাদ মোস্তফা কামাল বলেছেন: ধন্যবাদ।

৮| ০৯ ই জুলাই, ২০০৮ রাত ১২:৫৫

মৈথুনানন্দ বলেছেন: রুদ্র ও তার কবিতাকে!

( সায়েব সাফেক্সটা আমি আন্তরিকতা বোঝাতে ব্যবহার করি!! ) :)

০৯ ই জুলাই, ২০০৮ রাত ১:৩৪

আহমাদ মোস্তফা কামাল বলেছেন: আর আমি সায়েব সাফেক্সটা ধমক হিসেবে গ্রহণ করি, বুঝলেন মৈথু সায়েব! ;(

৯| ০৯ ই জুলাই, ২০০৮ রাত ১:২৮

মেহরাব শাহরিয়ার বলেছেন: যদিও আমি কবিতা বুঝি খুবই কম ,
প্রতিটা লাইন পড়লাম , ভালো লাগা থেকেই পড়া

০৯ ই জুলাই, ২০০৮ রাত ১:৩৬

আহমাদ মোস্তফা কামাল বলেছেন: ভালো লাগা জানানোর জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ, মেহরাব শাহরিয়ার।

১০| ০৯ ই জুলাই, ২০০৮ রাত ১:৩২

মানুষ বলেছেন: "নিরাপদ দেশলাই" কবিতটা সব চেয়ে প্রিয় আমার কাছে

০৯ ই জুলাই, ২০০৮ রাত ১:৪৫

আহমাদ মোস্তফা কামাল বলেছেন:

'সঞ্চিত বারুদ বক্ষে, তবু প্রয়োজন ছাড়া জ্বলি না কখনো।

জ্বলে ওঠা বারুদের নিজস্ব স্বভাব,
স্বভাবের দোষে তাকে দূরে রাখে সতর্ক মানুষ।

বিস্ফোরণ বুকে আছে, আমি তার নিয়ন্ত্রণ জানি,
আমাকে নিকটে রাখো, বুকে রাখো শীতার্ত কুমারী--
প্রয়োজন ছাড়া আমি জ্বলি না কখনো।'........


এটাও চমৎকার কবিতা। ধন্যবাদ মনে করিয়ে দেবার জন্য।

১১| ০৯ ই জুলাই, ২০০৮ রাত ১:৫৮

আবদুর রাজ্জাক শিপন বলেছেন:
রুদ্র কিছু কবিতা পড়লে রক্ত টগবগ করে । তেমনি একটি কবিতা--


বাতাসে লাশের গন্ধ

রুদ্র মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ


আজো আমি বাতাসে লাশের গন্ধ পাই
আজো আমি মাটিতে মৃত্যুর নগ্ননৃত্য দেখি
ধর্ষিতার কাতর চিৎকার শুনি আজো আমি তন্দ্রার ভেতরে...
এ দেশ কি ভুলে গেছে সোই দুঃস্বপ্নের রাত, সেই রক্তাক্ত সময় ?
বাতাসে লাশের গন্ধ ভাসে
মাটিতে লেগে আছে রক্তের দাগ ।
এই রক্তমাখা মাটির ললাট ছুঁয়ে একদিন যারা বুক বেঁধে ছিলো ।
জীর্ণ জীবনের পুঁজে তারা খুঁজে নেয় নিষিদ্ধ আঁধার ,
আজ তারা আলোহিন খাঁচা ভালোবেসে জেগে থাকে রাত্রির গুহায় ।
এ যেন নষ্ট জন্মের লজ্জার আড়ষ্ট কুমারী জননী,
স্বাধীনতা-- একি হবে নষ্ট জন্ম ?
একি তবে পিতাহীন জননীর লজ্জার ফসল ?

জাতির পতাকা আজ খামছে ধরেছে সেই পুরোনো শকুন ।

বাতাসে লাশের গন্ধ
নিয়ন আলোয় তবু নর্তকীর দেহে দোলে মাংশের তুফান ।
মাটিতে রক্তের দাগ--
চালের গুদামে তবু জমা হয় অনাহারী মানুষের হাড় ।
এ চোখে ঘুম আসেনা । সারারাত আমার ঘুম আসে না-
তন্দ্রার ভেতর আমি শুনি ধর্ষিতার করুণ চিৎকার,
নদীতে পানার মতো ভেসে থাকা মানুষের পচালাশ
মুন্ডুহীন বালিকার কুকুরে খাওয়া বীভৎস শরীর
ভেসে ওঠে চোখের ভেতরে- আমি ঘুমুতে পারিনা, আমি
ঘুমুতে পারিনা...
রক্তের কাফনে মোড়া - কুকুরে খেয়েছে যারে, শকুনে খেয়েছে যারে
সে আমার ভাই, সে আমার মা, সে আমার প্রিয়তম পিতা ।
স্বাধীনতা, সে- আমার স্বজন- হারিয়ে পাওয়া একমাত্র স্বজন-
স্বাধীনতা- আমার প্রিয় মানুষের রক্তের কেনা অমূল্য ফসল ।
ধর্ষিতা বোনের শাড়ী ওই আমার রক্তাক্ত পতাকা ।

০৯ ই জুলাই, ২০০৮ রাত ২:১৯

আহমাদ মোস্তফা কামাল বলেছেন: কতবার যে পড়েছি এই কবিতা, তার হিসেব নেই। আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ কবিতাটি শেয়ার করার জন্য।

১২| ০৯ ই জুলাই, ২০০৮ রাত ২:২১

হনলুলু বলেছেন: অসংখ্য ধন্যবাদ রুদ্রকে নিয়ে একটা এতো সুন্দর পোস্টের জন্য ।
অসম্ভব প্রিয় কবি .........

০৯ ই জুলাই, ২০০৮ রাত ২:৫২

আহমাদ মোস্তফা কামাল বলেছেন: আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ ।

১৩| ০৯ ই জুলাই, ২০০৮ রাত ২:৩৬

বহুরূপী মহাজন বলেছেন: অসাধারণ লাগল। অনেকদিন পর ব্লগে এসে ভাল কিছু পড়তে পেলাম, সেজন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

০৯ ই জুলাই, ২০০৮ রাত ২:৫৩

আহমাদ মোস্তফা কামাল বলেছেন: আপনাকেও অসংখ্য ধন্যবাদ ।

১৪| ০৯ ই জুলাই, ২০০৮ রাত ৩:২০

ফারহান দাউদ বলেছেন: ঠিক এরকম কোন একটা কথা খুঁজছিলাম,এরকম মন বিষন্ন করা কিছু,
অভিলাষী মন চন্দ্রে না পাক, জ্যোৎস্নায় পাক সামান্য ঠাঁই।

০৯ ই জুলাই, ২০০৮ রাত ১১:৩২

আহমাদ মোস্তফা কামাল বলেছেন: পেলেন তো!!

১৫| ০৯ ই জুলাই, ২০০৮ ভোর ৪:১২

চুপকথা ... বলেছেন: আমি কবিতা বুঝি না
ভাল লাগলো

০৯ ই জুলাই, ২০০৮ রাত ১১:৩৩

আহমাদ মোস্তফা কামাল বলেছেন: কবিতা বোঝেন না, তা-ও ভালো লাগলো!! দারুণ তো!

১৬| ০৯ ই জুলাই, ২০০৮ ভোর ৬:৪০

রন্টি চৌধুরী বলেছেন: বলার কিছুই নেই। পড়ার আছে।

০৯ ই জুলাই, ২০০৮ রাত ১১:৩৫

আহমাদ মোস্তফা কামাল বলেছেন: 'বলার কিছুই নেই। পড়ার আছে।'-- ভবিষ্যতে এই মন্তব্যটি আপনার ওপর প্রয়োগ করা হবে! ;)

১৭| ০৯ ই জুলাই, ২০০৮ সকাল ৮:৩৮

অ্যামাটার বলেছেন: সুন্দর পোষ্ট;
রুদ্র সম্বন্ধে অনেক কিছু জানলাম,আসলে তার সম্পর্কে এতদিন শুধু জানতাম যিনি 'অনিয়ম-টা কেই নিয়ম বানিয়ে ফেলেছিলান'। ক্ষনজন্মা কবিকে স্যালুট।

০৯ ই জুলাই, ২০০৮ রাত ১১:৩৬

আহমাদ মোস্তফা কামাল বলেছেন: যাক, পড়েছেন তাহলে! ধন্যবাদ।

কবিকে স্যালুট।

১৮| ০৯ ই জুলাই, ২০০৮ সকাল ১১:২২

যীশূ বলেছেন: লেখাটা ভালো লাগলো।

০৯ ই জুলাই, ২০০৮ রাত ১১:৩৭

আহমাদ মোস্তফা কামাল বলেছেন: ধন্যবাদ।

১৯| ০৯ ই জুলাই, ২০০৮ সকাল ১১:২৯

বৃত্তবন্দী বলেছেন: ভলো লাগলো.........

০৯ ই জুলাই, ২০০৮ রাত ১১:৩৮

আহমাদ মোস্তফা কামাল বলেছেন: ধন্যবাদ।

২০| ০৯ ই জুলাই, ২০০৮ রাত ৯:১৪

ফয়েজ রেজা বলেছেন: পোষ্টটি ভালো লেগেছে, তবে অনেক বড় মশাই।

০৯ ই জুলাই, ২০০৮ রাত ১১:৩৯

আহমাদ মোস্তফা কামাল বলেছেন: রুদ্র বড় কবিতা লিখলে আমার কি দোষ?!? :(

আমি তো মাত্র কয়েকটা লাইন লিখেছি! ;)

২১| ০৯ ই জুলাই, ২০০৮ রাত ৯:৪১

শওকত হোসেন মাসুম বলেছেন: বেশ্যাকে তবু বিশ্বাস করা চলে/রাজনীতিকের ধমনী শিরায় সুবিধাবাদীর পাপ/ব্শ্যোকে তবু বিশ্বাস করা চলে/বুদ্ধিজীবির শিরায় শিরায় সচেতন অপরাধ/বেশ্যাকে তবু বিশ্বাস করে চলে..............

০৯ ই জুলাই, ২০০৮ রাত ১১:৪০

আহমাদ মোস্তফা কামাল বলেছেন: এটাও চমৎকার কবিতা। ধন্যবাদ।

২২| ০৯ ই জুলাই, ২০০৮ রাত ১০:৩৩

রিফাত হাসান বলেছেন: রুদ্রের অনেকগুলো কবিতা পড়লাম। ভাল লাগল।

০৯ ই জুলাই, ২০০৮ রাত ১১:৪১

আহমাদ মোস্তফা কামাল বলেছেন: ধন্যবাদ।

২৩| ১০ ই জুলাই, ২০০৮ রাত ১০:৩৪

মৈথুনানন্দ বলেছেন: আমারও পউষ মাসে জন্ম। শুনেছি পউষ মাসের জাতক পউষ মাসেই মারা যায় - যেমন আমার বাবা গেছিলেন।

১১ ই জুলাই, ২০০৮ রাত ১০:৩৯

আহমাদ মোস্তফা কামাল বলেছেন: পৌষে গেলেই কি, আর বৈশাখে গেলেই কি! যাওয়া তো যাওয়াই! তবু, জানা থাকলো, পৌষে না হয় কিছু বাড়তি প্রস্তুতি থাকবে!

২৪| ১১ ই জুলাই, ২০০৮ রাত ৯:৪৩

মোসতফা মনির সৌরভ বলেছেন: অনেকদিন পর এসে কিছু ভাল লেখকের সন্ধান পেলাম সা হো ই এ। একটি একটি করে লেখা পড়ছি। চালিয়ে যান।

১১ ই জুলাই, ২০০৮ রাত ১০:৪০

আহমাদ মোস্তফা কামাল বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।

২৫| ২৪ শে আগস্ট, ২০০৮ দুপুর ১:৪৮

আহমেদ হেলাল ছোটন বলেছেন: ভালো লাগল।

০১ লা সেপ্টেম্বর, ২০০৮ রাত ৩:২৯

আহমাদ মোস্তফা কামাল বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.