নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কিছু মনে করবেন না

আমু হাওলাদার

নৈরাজ্যের চুড়ান্ত অবস্থায় ইনোসেন্সের বিস্ফোরণ

আমু হাওলাদার › বিস্তারিত পোস্টঃ

কুলু অশরবু (খাও এবং পান কর)

০৫ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ৩:৩১

ব্যাচেলর শফিক কারণ ছাড়া কোন কাজ করে না। আগে করত না। এখনও করে না। অলস প্রকৃতির শফিক কাজ যে খুব করে, তাও না। দুই একটা ছোট্ট কাজ করে। এই ছোট্ট কাজের পেছনের কারণ স্বার্থবুদ্ধি। শফিকের স্বার্থবুদ্ধি ভাল হওয়ায়, প্রায় সময়ই শফিকের উপকার হয়।

শফিক আমার বন্ধু। দূর সম্পর্কের আত্মীয় যেমন হয়। শফিক তেমন। আত্মীয় তবে আত্মীয় না। বন্ধু তবে বন্ধু না। দূর সম্পর্কের বন্ধু। ছাড়া ছাড়া একটা ব্যাপার। আমি ওকে পছন্দ করি না। অপছন্দও করি না। এবং এতে আমার বা ওর কিছু যায় আসে না।

ওর রসবোধ ভাল।

একবার আমরা কয়েকজন ঢাকার রাস্তায় হাঁটছিলাম। একটা ঘোড়ার গাড়ি আর সঙ্গে একটা ঘোড়া রাস্তার পাশে পার্ক করা ছিল। ঘোড়াটা তিন পায়ের উপর দাঁড়িয়ে ছিল। এক পা বি্রাম নিচ্ছিল। লম্বা পশমওয়ালা ঘোড়ার লেজ দেখতে চৎকার। আরো চমৎকার দেখায়, যখন এই লেজ মাছি তাড়াতে ব্যস্ত থাকে। ঘোড়ার লেজ মাছি তাড়াচ্ছিল।

শফিক বলল, আমার ঘোড়াটাকে নিয়ে যেতে ইচ্ছে করতেছে। একজন জিজ্ঞেস করল, কোথায় নিয়ে যাবি? রাখবি কই? খাওয়াবি কী? শফিকের সরল-সোজা উত্তর, বিসমিল্লায়। সোজা চাপ-ভাজা-ছোকরাটাকে বলব, 'ঘোড়াটা ভেজে আন'!
এই ঘটনায় কেউ রস পেয়ে হেসেছিল। কেউ কেউ কথাগুলো ফালতু ভেবে কিছু বলেনি।

আমি একটু বেশি খাই। খিদে পায় বেশি। মাঝেমধ্যে আমার যে স্টারে দুই প্লেট কাচ্চি খাওয়ার পর আরেক প্লেট নিতে ইচ্ছে করে না, তা না। ইচ্ছে করে। মনে চায়, আর একটু খাই। শফিকের কথা শুনে আমার মনে হল, মন্দ না। হাতি ঘোড়া বাঘ সব খেয়ে ফেলা উচিৎ। রাস্তার পাশে ব্যাটা জিরিয়ে নিচ্ছে গাড়ি টানবে বলে। তার থেকে বরং পেটের মধ্যে গলে যাক!

আগে পাবলিক ট্রান্সপোর্টের থেকে ব্যক্তিগত যানবাহন ছিল বেশি। মানুষ নিজের ঘোড়ায় চলতো। নিজের গরুর গাড়িতে বউকে বাপের বাড়ি পাঠাত। চূড়ান্ত ঠ্যকায় না পড়লে এই বাহন মানুষ বিক্রি করত না। যেমন বিক্রি করত না হালের বলদ। যেমন এখনকার মানুষ গাড়ি বেচে খেয়ে ফেলে না।

আবার ইসলামে বিশেষ সময়ে বাহনের ঘোড়া খাওয়ার অনুমতি আছে। যুদ্ধে বা দূর্ভিক্ষে ঘোড়া খাওয়া যেতে পারে।

আমি শফিককে জিজ্ঞেস করলাম, তুই কি মনে করিস দেশে জরুরী অবস্থা চলে? শফিক বলে, অবশ্যই ( শফিক রাজনীতি সচেতন)। আমি আরো জিজ্ঞেস করি, তুই কি মনে করিস দেশে দূর্ভিক্ষ চলে? শফিক বলে, হ্যাঁ। আমরা দুইজন কথাটা বুঝতে পারি। এরপরও আরেকজন বুঝায়ে দেয়, জরুরী অবস্থা আর দূর্ভিক্ষ কিছু মানুষের জন্য। অনেকেই সুখে আছে। শফিক শুধরে দেয়- কিছু মানুষ সুখে আছে। টেন পার্সেন্ট। আবার এদের হাতেই দেশের শতকরা নব্বই ভাগ সম্পদ। জরুরী অবস্থা আর দূর্ভিক্ষ অধিকাংশ মানুষের জন্য।

-হুম।

শফিকের বাড়ি কুড়িগ্রাম। থাকে ঢাকায়। ওর খারাপ অভ্যাস হচ্ছে,অন্যের বাসায় বাসায় থাকা। অন্যের কাঁধে চড়া। অন্যের পয়সায় বেশি দামের সিগারেট খাওয়া। আমার কাছে সিগারেট চাইল। দিয়ে দিলাম। জ্বেলেও দিলাম। দুটো টান দিয়ে সিগারেট আমার হাতে দিয়ে যে পথ পেরিয়ে এলাম, সেই পথে হাঁটা দিল।
ঘোড়াটার কাছে এসে সোজা বাঁধন খুলে দিল।

ঘোড়াটার রঙ ছিল সাদা। বোকা ঘড়েল ঘোড়া চাবুক খেয়ে অভ্যস্ত। তাড়া না দিলে নড়ে না। কোত্থেকে একটা চ্যাপ্টা তক্তা নিয়ে ঘোড়াটার বাম পাছায় চটাশ করে এক বাড়ি মারল শফিক। ছুটতে শুরু করল সাদা ঘোড়া। পিছন থেকে শফিক চিৎকার করে ঘোড়াকে বলল, "ছুটে পালা, নাইলে খেয়ে ফেলব।"

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.