নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কিছু মনে করবেন না

আমু হাওলাদার

নৈরাজ্যের চুড়ান্ত অবস্থায় ইনোসেন্সের বিস্ফোরণ

আমু হাওলাদার › বিস্তারিত পোস্টঃ

যেভাবে বিচ্ছেদজনিত কঠিন সময় পার করতে হয়

০৮ ই জুন, ২০২০ ভোর ৪:২৮



প্রেম ভাঙা সাধারণ ব্যাপার। অধিকাংশ গভীর প্রেম ভেঙে যায়। যদি আপনাকে আপনার প্রিয়জন ছেড়ে যায়, আপনার মনে প্রশ্ন আছে, দুনিয়ার সব প্রেম ভাঙতে পারে, তাই বলে আমাদেরটা? ও আমাকে এত ভালোবাসত! এখন আর আমার সঙ্গে থাকতে পারছে না? আমাকে ভালোবাসতে পারে না? আপনার মনে গভীর প্রেম আছে আপনার চলে যাওয়া সঙ্গীর জন্য। আশা করি নিচের পরামর্শ আপনার কাজে লাগবে।

আপনি নিজের আরো দুটি লক্ষণ মিলিয়ে নিন, আপনার নিচের পরামর্শ দরকার কি না। এক, আপনার এই অবস্থা আর সহ্য হচ্ছে না। সব ছেড়ে-ছুড়ে নির্জন কোথাও চলে যেতে ইচ্ছা করে। এমন জায়গায়, যেখানে আপনাকে কেউ চিনবে না। আরেকটা হল, আপনার মরে যেতে ইচ্ছা করে। অন্য সবার মতো মুখে মুখে না। আপনি সত্যিই ভাবেন আপনি মরে গেলে সব যন্ত্রণার অবসান ঘটবে। একটু দম নিন।

আসলে আপনি আপনার মূল্যবান জীবন অন্তত শেষ করতে চান না। যে কোন মূল্যে আপনি বাঁচতে চান। নিচের পাঁচ পরামর্শ আপনার জন্য।

আপনি মাঝেমধ্যে ভাবেন মানসিক থেরাপি বা কাউন্সেলিং নেবেন। টাকা পয়সার কথা চিন্তা করে ভাবনা বেশি দূর আগায় না। ধরে নিচ্ছি আপনি বড় হয়েছেন। আপনার প্রেমটা নিব্বা-নিব্বিদের প্রেম ছিল না। সত্য হল, একটু বয়স বাড়লে, পুরোপুরি পরিনত হওয়ার আগে অনেকের প্রেম ভেঙে যায়। যিনি প্রেম ভেঙে দিয়েছেন, তার জন্য এই পরামর্শ কাজ করবে না। যিনি ভাঙতে চান নাই, বিপরীতজন তার কাছ থেকে চলে গেছে, এমন মানুষের জন্য নিচের পরামর্শ। পরামর্শগুলো আমার এক লেখক বন্ধুর। আমি একটু ব্যাখ্যা করে দিচ্ছি।

১. কষ্ট পাওয়াটা যদি একমাত্র উপায় হয়, তাহলে চুপচাপ কষ্ট পান
আপনি বিপরীত মানুষটাকে চোখের সামনে বদলে যেতে দেখছেন। আপনার আর তার আগে প্রচুর মতের মিল দেখা যেত। এখন আপনি যদি তাকে বলেন, আমি তোমার সঙ্গে কথা বলে স্বস্থি পাই। আমার সঙ্গে একটু কথা বলো? সে বলবে, আমি তোমার সঙ্গে কথা না বললে শান্তি পাই। কথা বলা সম্ভব না। আপনি যদি বলেন, আমাকে একটু সময় দেও? সে বলবে অনেক বেশি সময় নেওয়া হয়েছে। আর না। আপনি যা বলবেন, সে প্রায় সব কিছুতেই বিপরীত বলবে। আপনার কি তার কাছে কিছু করার আছে? ভুলের মধ্যে থাকবেন না। তার কাছে আপনার কিছু করার নেই। আপনি যত চেষ্টা করবেন, সে ক্রমেই সরে সরে যাবে। আপনি যদি দেখেন তার ফেরার সম্ভাবনা আছে, খেয়াল করে দেখুন, সে কি ছয় সাতবারের মতো চলে যাই সরে যাই অমুক তমুক করেছে? মানুষ একদম সরে যাওয়ার আগে ছয় থেকে সাতবার মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। ফিরে আসবে এমন না। ভাববে যে কোনভাবে ঠিকঠাক হয় কি না। চারবারের পর আপনার আশা কম। আপনি কোন পর্যায়ে আছেন?

এবার কষ্ট পাওয়াই যদি একমাত্র উপাদান হয়, আপনার থাউজ্যান্ড ওয়ার্ড সীমিত করুন। কথা আপনাকে শুধু নিচের দিকে নামাবে। আপনাকে আগে যে ধরনের কথা সে কল্পনাতেও বলতে পারতো না, এখন বলবে। সে ভাবে আপনাকে এইভাবে ভুলিয়ে দেয়া যাবে। উড়ে যাওয়ার আগে একটা খুঁটি শক্ত করে ধরুন। খুঁটিটা হল চুপচাপ কষ্ট পাওয়া। সে এতে বিভ্রান্ত হবে। আপনাকে আঘাত করার আগে ভাববে। সহ্য করা সব থেকে বড় ওষুধ, কষ্ট যখন পাবেন, চুপচাপ পান।

২. ফ্যাক্টগুলা মেনে নিন
সে চলে গেছে, সরে গেছে, এটা বাস্তব। একমাত্র সত্য। আপনি তার চলে যাওয়ায় পেছনে কোন যুক্তি খুঁজে পাবেন না। সে যেসব কারণ আপনাকে বলবে, আপনার মনে হবে, আপনার ভালোবাসার কাছে এসব কারণ খুবই তুচ্ছ। এসব সমস্যা আপনি খুব সহজেই দূর করতে পারেন। তাকে ধরে রাখার জন্য আপনি যে কোন ছাড় দিতে রাজি। যে কোন শর্ত আপনি মেনে নেবেন। কিন্তু আপনার এসব ছাড়, আশা, চাওয়া কোন কাজে লাগবে না। সে চলে গেছে। তার ফ্যান্সি যুক্তিকে আপনার সম্মান করতে হবে। কারণ আপনি তার মতকে গুরুত্ব দেন না তেমন, এমন একটা কথা আপনার নামে বলে সে। তাই তার মত মেনে না নিতে পারলেও মেনে নেন। তার মতই সত্য। বাস্তবসম্মত। শুনতে বাজে লাগলেও মেনে নিন। আপনি মেনে নিতে না পারলে এই বাজে সময়টা লম্বা হবে। একসময় বাধ্য হয়ে মেনে নিবেন। তার আগেই, বুদ্ধিমানের মতো মেনে নেওয়া ভালো। যেসকল অবস্থা তৈরী হয়েছে সে চলে যাওয়ার পর, সেগুলো সত্য। মেনে নিন সে আর আপনার সঙ্গে কথা বলবে না। আপনি যখন তাকে খুব করে একটা বার দেখরে চাইবেন, সে দেখা দিতে পারবে না। একটাবার তাকে ছুঁতে চাইবেন, আপনি পারবেন না। সে এলাউ করবে না। সে হয়তো অন্য কারো কাছে খুব দ্রুত নিজের দুঃখ শেয়ার করবে। আপনার মনে হবে সে স্বার্থপরের মতো ক্রমেই সুখী হতে চলেছে। আপনি তাকে ধরে রাখার চেষ্টা করবেন। আপনি ভাববেন, আপনার চেষ্টায় কাজ হবে। সে ফিরতেও পারে। না সে ফিরবে না। আপনার আশা আপনাকে খেয়ে ফেলার আগেই আপনি আশা করা ছাড়ুন। আপনাকে এই বাজে অবস্থা থেকে বের হতে আশাহীনতা খুব ভালো কাজ করবে। মেনে নিন, সে যেসব কারণ দেখিয়েছে, তা সত্য। যেসব ফ্যাক্ট আছে, আপনি না মানলেও সেগুলো কাজ করে।

৩. এক্সপেক্টেড আউটকাম মাথা থেকে সরায়ে ফেলুন
আপনি এখন নানা কিছু করার চেষ্টা করবেন, তাকে ফিরে পাওয়ার জন্য, তার সঙ্গে একটু কথা বলার জন্য, তাকে একটু দেখার জন্য। এমনকি সে যদি রাস্তা দিয়ে হেঁটে যায়, তার বাতাস আপনার গায়ে লাগানোর জন্যও আপনি বড় মূল্য দিতে রাজি। অনেক কিছু করবেন আপনি। ফল আশা করবেন। ট্রিক টাইপের চিন্তা বের হবে আপনার মাথা থেকে। আপনি ভাববেন এটা শতভাগ নিখুঁত প্ল্যান। কাজ করবেই। নো নো নো নো। কোন কিছু করা বা ঘটার ফলে কোন অবস্থা বদলে যাবে, এই আশা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলুন। এক মূহুর্তের জন্যও বদলাবে না। মাঝখান থেকে সে আপনাকে আরো বিভ্রান্ত, আরো যন্ত্রণায় ঠেলে দিয়ে যাবে আপনার প্রচেষ্টার কারণে। তাই কোনরকম আশা করবেন না। ফল পাবেন, ভুলে যান। কিছু হবে না। এক্সপেক্টেড আউটকাম মাথা থেকে সরিয়ে ফেলুন। চুপচাপ ফ্যাক্টগুলো মেনে নিন। কষ্ট পাওয়ার হলে নিজের মনে কষ্ট পান।

৪. অন্যকিছুতে মন দিন

আপনি কুকুর বিড়াল একদম পছন্দ করতেন না ধরে নিলাম। বিড়াল দেখলেই আঘাত করতে চাইতেন। এই সময়ে আপনি একটা পেট নিন। একটা কুকুর পালেন। সুযোগ থাকলে বাগান করেন। জিমে যান। শরীরের বাজে অবস্থা করতেছেন অনেকদিন ধরে। স্বাস্থ্য ঠিক করেন। অন্য কোন মানুষ আপনার জীবনে আর কোনদিন আসবে না। আপনি আসতে দিবেন না। প্রতিজ্ঞা করেছেন। আপনি সৎ। অন্য মানুষদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করুন। পুরোনো বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে বেশ কিছুদিন আপনার সঙ্গে একরকম দূরত্ব তৈরী হয়েছে। প্রেমের জটিলতার কারণে। তাদেরকে সময় দিন। তাদের সঙ্গে কথা বলুন। নতুন দুই-একজনকে নক দিন। কথা বলুন। দেখা করুন। প্রথম প্রথম আপনার নিজেকে খুব ছোট, নিচু, বাজে লাগবে। মনে হবে, আপনি একজনকে ভুলে যাওয়ার জন্য এসব করছেন। দাঁত চাপুন। আপনি অন্যদের সঙ্গে থাকলে আপনার আগের স্যোশাল লাইফটা ফেরত আসবে। জনে জনে আপনার কষ্টের কথা, দুঃখের কথা বলে বেড়াবেন না। নোবডি গিভস আ ফাক। মাঝখান থেকে আপনি মেজারড হবেন। আপনি কোন একটা কাজে ঢুকতে পারলে খুব ভালো হয়। নতুন কিছু ট্রাই করেন। অনেকে এই পয়েন্টে সিগারেট এবং গাঁজা খাওয়ার চেষ্টা করে। সিগারেট খাওয়া বাড়িয়ে দেয়। আপনার টাকা জলের মতো খরচ হবে। কাজের কাজ কিছু হবে না। আপনি একটা ভালো কাজ করার চেষ্টা করেন। আপনি খারাপ না। ভালো কাজ খুঁজে পাবেন। কাজটাতে মন দেন। ধর্ম পালন করা কাজে দেয়।

৫. একজন কারো সঙ্গে সম্পূর্ণ ভিন্ন কিছু নিয়ে আলাপ করুন

নতুন কোন কাজ খুঁজে বের করা বা অন্য কিছুতে মন দেয়ার জন্য এই ধাপ। আপনার মনযোগ এতদিন পুরোপুরি ছিল আগের মানুষটার জন্য। সেই মনযোগ আপনার আছে এখনো। এখনো রাত দুইটায় সে অনলাইনে আসলে আপনি ভাবেন, আহা ও জেগে আছে। এসব মনযোগ আপনাকে পেছনে টেনে রাখবে। মানুষটা কিন্তু আর নাই। আপনি নতুন একজনের সঙ্গে প্রচুর কথা বলুন। মানুষ স্বভাবত নিঃসঙ্গ। আপনি সঠিক মানুষের সঙ্গে যে কোন বিষয় নিয়েই কথা বলার চেষ্টা করতে পারেন। ভালো মানুষ, সঠিক মানুষ, আপনাকে মেজার করা ছাড়াই কথা বলবে। একজন হয়তো রাতের আকাশ পছন্দ করে। তারা চিনুন একটা দুইটা। মানুষের হাত দেখে ভূত ভবিষ্যৎ বলে দেওয়া যায়। পামিষ্ট হয়ে যান। কথা বলুন একদুইজনের সঙ্গে। চট করে প্রেমে পড়ে যাবেন না আবার।

পৃথিবীতে ৭ বিলিয়ন মানুষ আছে। আপনি ভালোবাসেন এমন একজনকে, যে আপনারে আবহেলা করে। ভুলে যান। নিজের হাতল নিজের হাতে নিন। কন্ট্রোল করেন।


"ডিফেন্স মেকানিজম কার কীভাবে কাজ করে, বলা কঠিন। মন থেকে মেনে নেওয়ার চেষ্টা করুন, যা হইছে, সেটা হতোই।"

আর এসব পরামর্শ ভুল প্রমাণ পরে সে যদি ফেরে, এর মানে সে যায় নাই। তাকে তার মতো করে ভালোবাসুন। প্রেমের পরীক্ষায় সিলেবাসের বাইরে থেকে প্রশ্ন আসে। এই পরীক্ষায় পাশ করতে হয়।

Please visit ahmadmuddasse.wordpres.com

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.