নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
কক্সবাজারের টেকনাফসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় এখন মরণ নেশা ইয়াবার ব্যবসা রমরমা চলছে । আর শুধু ইয়াবা না সাথে মানব পাচারের মতো ঘৃণ্য ব্যবসাও একই অবস্থায় চলছে । উপকূলীয় এলাকা টেকনাফে এখন ঘরে ঘরে মানব পাচারকারী গড়ে উঠেছে । এমন কোনো বাড়ি নেই যেই বাড়িতে কেউ এই মানব পাচারের সঙ্গে জড়িত না আছে । শুধু মানব পাচারে না ইয়াবা পাচারের পদ্ধতি হচ্ছে এলএমএল পদ্ধতিতে । দালাল চক্রের সদস্যরা প্রথমে গ্রামের কয়েকজন উঠতি বয়সের যুবকের সঙ্গে সঙ্গ গড়ে তোলেন তার পর ওই যুবকদের মগজ এমনভাবে ধোলাই করেন যে মালয়েশিয়ায় যুবকটি নিজেতো যাবেই পাশাপাশি এলাকার বা পরিচিত আত্মীয়স্বজন আরও কয়েকজন ছেলেকে সঙ্গে নিয়ে যেতে পারলে মোটা অঙ্কের টাকার কমিশন পাওয়া যাবে এরকম আসা করে তারা ।
কমিশনটি এমন হবে ১০ জন যাত্রী সংগ্রহ করে দিতে পারলে এক লাখ টাকা ওই যুবকটির পাবে । এভাবে একজনের মাধ্যমে আরেক জন আরেকজনের মাধ্যমে আরও আরেকজন সংগ্রহ করে দিলে মাল্টিলেভেল ব্যবসার মতো কমিশন পান । এভাবে গ্রামের একজন সহজ সরল যুবককে বুঝিয়ে মালয়েশিয়া যেতে আগ্রহী করে কুচক্র দল । একটি যুবকের হাত ধরে একের পর এক যুবক দালাল চক্রের মাধ্যমে সাগর পথে মালয়েশিয়া থাইল্যান্ড গেলে সবগুলো থেকে একটু একটু করে কমিশন প্রথম ছেলেটি পেতে থাকবে । অন্যদিকে একই পদ্ধতি অবলম্বন করা হয় ইয়াবার ক্ষেত্রেও । পাড়ার একটি বেকার ছেলেকে ফুসলায়া ফাসলায়া ইয়াবা পাচারের সঙ্গে সংযুক্ত করতে নানা প্রলোভন দেখানো হয় । ইয়াবার সিন্ডিকেট সদস্যরা যুবকদেরকে এই বলে যে তোরা নিজেরা ইয়াবা পাচার করবি । পাশাপাশি আরও বেকার ছেলেদের এই ব্যবসার সঙ্গে জরিত করবি তাহলে তোদের দেওয়া হবে অনেক মোটা অঙ্কের কমিশন । যে বেশি যুবক বা মহিলা কর্মী সংগ্রহ করে দেবে সে পুরস্কার হিসেবে পাবে একটি নতুন মোটরসাইকেল । আর এসব প্রলোভনেই ইয়াবা ব্যবসার প্রতি আসক্ত হচ্ছে এখানকার যুবসমাজ । শুধু এলাকার বেকার যুবরাই না নানা প্রলোভন দেওয়া হয় নারীদেরকেও । এমনকি বেশবুশে হুজুর ক্যাটাগড়ির কিছু ছেলে আসে তাদেরকেও ইয়াবা পাচারে ব্যবহার করা হয় । টেকনাফ থেকে নিরাপদ রুট হলো টেকনাফ টু কক্সবাজার রাস্তা । দেখা গেছে টেকনাফ থেকে কক্সবাজার যেতে সড়ক পথে চারটি চেকপোস্ট রয়েছে । তার মধ্যে দমদমিয়া বিজিবি চেকপোস্ট হোয়াইক্যং বিজিবি চেকপোস্ট উখিয়া কুতুপালং ডিবি পুলিশ চেকপোস্ট মরিচ্যা যৌথ বিজিবি চেকপোস্ট । এসব চেকপোস্টে মিনিবাস, মোটরসাইকেল, মাইক্রো, সিএনজি অটোরিকশা, চান্দেরগাড়ি, ট্রাক, পিকআপসহ বিভিন্ন যানবাহন দাড় করিয়ে চেক করা হয় । আসলে চেকপোস্টগুলো এমন চেক করে যে গাড়ি দাড় করিয়ে একজন বিজিবি সদস্য গাড়ির ভিতরে উঠল আর নামল এর বেশি কিছু নয় । অন্যদিকে টেকনাফ থেকে কক্সবাজার চট্টগ্রামে সাগরপথেও যাওয়া যায় । সাগরপথে কোনো চেকপোস্ট নাই । শুধু আগে থেকে খবর দেওয়া হলে কোস্টগার্ড নৌকা বা ট্রলার চেক করে । এ প্রসঙ্গে ৪২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক আবু জার আল জাহীদ বলেছেন আসলে একটি গাড়িকে যদি পুর্ণাঙ্গ ভালভাবে চেক করা হয় তাহলে এইরকম ব্যস্ত সড়কে লম্বা জ্যাম লেগে যাবে । তখন পরিস্থিতি হিতে বিপরীত হবে । সাধারণ যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়বে । তিনি আর বলেন আমরা সাধারণত ইনফরমেশনের ভিত্তিতে চেকপোস্টগুলোতে অভিযান চালাই ।
দালাল চক্রের মাধ্যমে পাচার হওয়া টেকনাফের পশ্চিম ময়েশখালী এলাকার রবিউল আলমের মা ফাতেমা জানিয়েছেন দালাল রফিক আমার ছেলেকে মালয়েশিয়া পাঠাবে বলে জানালে আমি তাকে না করি । পরে পাশের মৌলভীবাজার গ্রামের দালাল রফিক বলেছে মালয়েশিয়া গিয়ে ধরা পড়লে সর্বোচ্চ শাস্তি কয়েকদিনের জেল হয়। আবার জেলে গিয়েও নাকি কাজ করা যায় । জেল কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশিদের দিয়ে পাম বাগানে কাজ করায় । আর এতে মাসে ৩০থেকে প্রায় ৪০ হাজার টাকা কামানো যায় । এই টাকা বাড়িতে পাঠানোর ব্যবস্থাও আছে । তাহলে আর মালয়েশিয়া যাওয়া সমস্যা কোথায় । জেলে ঢুকলেও যখন টাকা পাওয়া যায় তখন একপর্যায়ে আমি এসব কথায় রাজি হয়ে যাই । আজ প্রায় দেড় মাস ধরে আমার ছেলেটা নিখোজ রয়েছে তার কোন খোজ নাই । তার একটি তিন মাসের অবুঝ শিশু সন্তানও আছে । অন্যদিকে আর খোজ নিয়ে জানা যায় এমএলএম কোম্পানি ডেসনিটির কার্যক্রম পদ্ধতি দেশের সবারই জানা আছে । সেই পদ্ধতিতে দালাল চক্র টেকনাফ, উখিয়া, চকোরিয়া, কক্সবাজার, রামু, চট্টগ্রাম ও দেশের বিভিন্ন এলাকায় নিয়োগপ্রাপ্ত দালাল সিন্ডিকেটের মাধ্যমে শিকার সংগ্রহ করে ও করছেন । এই জাল শুধু মানব পাচারেই না এই পদ্ধতি ইয়াবা চালানেও ব্যবহার করা হচ্ছে । এলাকার একটি বেকার বা উঠতি বয়সের যুবককে নতুন মোটরসাইকেল কিনে দেওয়ার লোভ দেখানো হয় । আর এই মোটরসাইকেলের লোভে ছোট বড় সবাই ইয়াবার জালে আটকা পড়ে যায় । দেখা গেছে টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা থেকে অনন্ত ৫ হাজার উঠতি ছেলে ইয়াবা চালানের সঙ্গে জরীত । এরা মিয়ানমার থেকে নাফ নদী দিয়ে টেকনাফের নাজিরপাড়া মৌলভীপাড়া, সাবরাং, নয়াপাড়া, শাহপরীর দ্বীপ, জালিয়াপাড়া, চৌধুরীপাড়া, পুরাতনট্রানজিট ঘাট, নাইট্যপাড়া, কেরুনতলি, দমদমিয়া, জাদিমোড়া, লেদা, আলিখালী, রঙিখালী, হ্নীলা চৌধুরীপাড়া, ফুলেরডেইল, ওয়াব্রাংসহ অর্ধশতাধিক ঘাট দিয়ে আসা ইয়াবার চালান মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের কাছ থেকে রিসিভড করে ইউনুছ, রফিক, মনিরুল্লাহ, সফিক, গিয়াসউদ্দিন, সরোয়ার, শাহ আলম, জাহাঙ্গীর, সোহেল, আজমউল্লাহ, সেলিম, সৈয়দমিয়া, তৈয়ব, জাফর, জাফর আলম পুতু, আইয়ুব, হাসেম, ফয়েজ, এমরান, নুরুল হুদা, মোস্তাক, ইলিয়াস, ফরিদ, জলিল, রহমান, বাবুল, মুনাফ, নূরুল ইসলামসহ সহস্রাধিক যুবক এসব কাজে সরাসরি জড়িত রয়েছে । বঙ্গোপসাগর অন্যদিকে মিয়ানমার । মাঝখানে টেকনাফ, যেখানে সব ধরনের চোরাকারবারি কার্যক্রম নিত্যদিনের ঘটনা । পার্শ্ববর্তী উপজেলা উখিয়াসহ সন্নিহিত এলাকার নাফ নদী এবং বঙ্গোপসাগরের উপকূলবর্তী বিভিন্ন ঘাট দিয়ে মানব পাচার, ইয়াবা পাচার এবং রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ ও সব ধরনের চোরাচালানের নেপথ্যে ছায়াসঙ্গীর ভূমিকা পালন করছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ।
তাদের ছত্রছায়া ছাড়া কারও পক্ষে এসব অপকর্ম করে পার পাওয়ার সুযোগ নেই । আড়ালে থেকে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে অপকর্মে জড়িতদের সম্ভাব্য বিপদমুক্ত করা এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে প্রশাসনকে জিম্মি করার কঠিন দায়িত্বটিই তারা পালন করছেন । আরেকদিকে রাজনৈতিক ক্ষমতাকে পুঁজি করে চোরাকারবারের সঙ্গে জড়িতদের প্রশাসনের কাছের মানুষ করে দেন জনপ্রতিনিধিরাই । আর তাদের কল্যাণেই একই চোরাকারবারিরাই সময়ের প্রয়োজন অনুযায়ী কখনো মানব পাচার কখনো ইয়াবা পাচারের মতো ভয়ঙ্কর সব অপরাধ সংঘটিত করছে ।
কৃতজ্ঞঃ বাংলাদেশ প্রতিদিন
১৮ ই মে, ২০১৫ রাত ৩:২৮
আমি মিন্টু বলেছেন: ঠিকয় ভাই অর্থনীতি আমাদেরকে বাচানোর পরিবর্তে মরণের পথেই নিচ্ছে । প্রথম মন্তব্যে ধন্যবাদ
২| ১৮ ই মে, ২০১৫ ভোর ৪:৩৭
মামুন ইসলাম বলেছেন: বেকারত্ব দরিদ্র আর প্রশাসনের দায়ত্ব অবহেলা এর জন্য দায় ।
৩| ১৮ ই মে, ২০১৫ সকাল ১০:১১
মিনি বেগম বলেছেন: ভালো শেয়ার ধন্যবাদ ।
৪| ১৮ ই মে, ২০১৫ দুপুর ২:৪০
কালের সময় বলেছেন: ভালো বলেছেন ।
©somewhere in net ltd.
১| ১৮ ই মে, ২০১৫ রাত ৩:০২
চাঁদগাজী বলেছেন:
দেশের অর্থনীটি মানুষকে ওদিকে নিচ্ছে