নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এই ঘরটির জন্য আমরা কোন স্পেশাল ক্যারেক্টার / ইমোটিকন গ্রহন করছি না।\nশুধুমাত্র সংখ্যা ও যে কোন সাধারন ক্যারেক্টার ব্যবহার করুন।\n

আমি মিন্টু

আমি মিন্টু › বিস্তারিত পোস্টঃ

সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভান্ডারীর জীবনির কিছু অংশ

২৯ শে মে, ২০১৫ সকাল ১১:০৮

সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভান্ডারী বা সৈয়দ আহমদ উল্লাহ এর জন্ম হয় ১৮২৬ সালে আর মৃত্যু বরণ করেন ১৯০৬ সালে তিনি হলেন মাইজভান্ডারী তরীকার প্রতিষ্ঠাতা । সৈয়দ আহমদ উল্লাহ ছিলেন একজন সুফি সাধক বা পীর । তিনি আহমদ উল্লাহ মাইজভান্ডারী নামেই বেশি পরিচিত । তার অনুসারীগণ শুরু হতে যে সকল প্রচার প্রকাশনা বাংলা, আরবি, উর্দু এবং ইংরেজি সহ বিভিন্ন ভাষায় ছাপানো হয়েছে তাতে তার নাম গাউছুল আজম হযরত মৌলানা সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভান্ডারী কেবলা ক্বাবা কাদ্দাছাল্লাহু ছিরহুল আজিজ (কঃ) লেখা আছে । তাছাড়াও তিনি গাউছুল আজম, হযরত কেবলা, গাউছুল আজম মাইজভান্ডারী, বড় মৌলানা, খাতেমুল অলদ, শাই এ লিল্লাহ্ ইত্যাদি উপনামেও বিশেষভাবে পরিচিত বলে একধিক ভাষায় লিখিত বিভিন্ন লেখকের বই এবং নিবন্ধে উল্লেখ আছে ।
আহমদ উল্লাহ মাইজভান্ডারী পহেলা মাঘ ১২৩৩ বাংলা সন , ইংরেজীতে ১৮২৬ সালের ১৫ই জানুয়ারী বাংলাদেশের বন্দরনগরী চট্টগ্রাম শহর হতে ৪০ কিলোমিটার উত্তরে তৎকালীন প্রত্যন্ত মাইজভান্ডার গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন । তার পিতার নাম সৈয়দ মতিউল্লাহ মাইজভান্ডারী আর মাতার নাম সৈয়দা খায়রুন্নেছা । তার পারিবারিক নাম ছিল সৈয়দ আহমদ উল্লাহ ।

আহমদ উল্লাহর পুর্ব পুরুষ সৈয়দ হামিদ উদ্দিন গৌড় নগরে ইমাম এবং কাজীর পদে নিয়োজিত ছিলেন । গৌড় নগরে মহামারীর কারণে ১৫৭৫ সালে চট্রগ্রামের পটিয়া থানার কাঞ্চন নগরে বসতি স্হাপন করেন । তার নামানুসারে হামিদ গাঁও নামে একটি গ্রামও আছে । তার এক পু্ত্র সৈয়দ আব্দুল কাদের ফটিকছড়ি থানার আজিমনগর গ্রামে ইমামতি উপলক্ষে এসে বসতি স্হাপন করেন । তার পুত্র সৈয়দ আতাউল্লাহ পুত্র সৈয়দ তৈয়বুল্লাহর এবং পুত্র সৈয়দ মতিউল্লাহ মাইজভাণ্ডার গ্রামে এসে বসতি স্হাপন করেন ।
আহমদ উল্লাহ গ্রামের মক্তবের পড়ালেখা শেষ করার পর ১২৬০ হিজরীতে উচ্চ শিক্ষার্জনের উদ্দেশ্যে কলকাতা আলিয়া মাদ্রাসায় ভর্তি হন । তিনি ১২৬৮ হিজরীতে বিশেষ কৃতিত্বের সাথে পরীক্ষায় পাশ করেন । সেখানেই তিনি সর্বোচ্চ পর্যায়ের শিক্ষা সমাপন করে ধর্মীয় নানা অনুষ্ঠানাদিতে আমন্ত্রিত অতিথি বা বক্তা হিসাবে যথেষ্ট সুনামের সাথে ধর্মীয় প্রচার প্রচারণার কাজে লিপ্ত ছিলেন ।


তিনি শিক্ষা জীবন শেষে করে হিজরী ১২৬৯ সালে ব্রিটিশ শাসনাধীন অবিভক্ত ভারতের যশোর অঞ্চলের বিচার বিভাগীয় কাজী পদে যোগদান করেন এবং একই সঙ্গে মুন্সেফী অধ্যায়ন শুরু করেন । পরবর্তিতে ১২৭০ হিজরীতে কাজী পদে ইস্তফা দিয়ে তিনি কলিকাতায় মুন্সী বু আলী মাদ্রাসায় প্রধান মোদাররেছ হিসাবে যোগদান করেন । পরবর্তি সময়ে মুন্সেফী পরীক্ষায় তিনি প্রথম স্থান অধিকার করে ছিলেন ।

আহমদ উল্লাহ মাইজভান্ডারী হাদিস, তাফসির, ফিকহ, মন্তেক, হিকমত, বালাগত, উছুল, আকায়েদ, ফিলছফা, ফারায়েজ সহ যাবতীয় বিষয়ে অত্যন্ত অভিজ্ঞ ছিলেন । আরবী, উর্দু, বাংলা ও ফারসি ভাষায় তিনি বিশেষ পারদর্শী ছিলেন । ওয়ায়েজ এবং বক্তা হিসাবে তার নামডাক বিশেষ ভাবে ছডিয়ে পড়ে । অল্প কিছু দিন পরই তিনি আধ্যাত্মিক জীবন যাপনে আত্ম নিয়োগ করেন । তখন হতে তিনি বাকি জীবন একজন সুফি সাধক হিসাবে অতিবাহিত করেন ।

আহমদ উল্লাহ হযরত বড়পীর সৈয়দ আব্দুল কাদের জিলানী (কঃ)-এর বংশধর এবং উক্ত তরিকার খেলাফত প্রাপ্ত সৈয়দ আবু শাহামা মুহাম্মদ ছালেহ আল কাদেরী লাহোরী (রঃ) নিকট বায়েত গ্রহনের মাধ্যমে বেলায়ত অর্জন করেন এবং সৈয়দ দেলওয়ার আলী পাকবাজ (রঃ) এর নিকট হতে এত্তাহাদী কুতুবিয়তের ক্ষমতা অর্জন করেন । তিনি দিনে দ্বীনি শিক্ষাদান এবং রাতে এবাদত ও রেয়াজতের মাধ্যমে সময় কাটাতেন । এভাবে কঠোর সাধনার ফলে তিনি আধ্যাত্মিক জগতের সর্বোচ্চ বেলায়ত অর্জন করেছিলেন ।

আহমদ উল্লাহ মাইজভান্ডারী জীবদ্দশায় তার সুফি তরীকার দীক্ষা সমাজে মানুষের মাঝে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে দিতে বহু সুফি প্রতিনিধি বা খলিফা নিয়োগ করেন বলে উল্লেখ রয়েছে ।
আহমদ উল্লাহ মাইজভান্ডারী ১২৭৬ হিজরীতে ৩২ বছর বয়সে আজিম নগর নিবাসী মুন্সী সৈয়দ আফাজ উদ্দিন আহমদের কন্যা সৈয়দা আলফুন্নেছা বিবির সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন । কিন্ত বিয়ের ছয় মাসের মাথায় তার স্ত্রী মারা যান । সেই বছরই তিনি পুনরায় সৈয়দা লুৎফুন্নেছা বিবিকে বিয়ে করেন । ১২৭৮ হিজরী সালে তার প্রথম মেয়ে সৈয়দা বদিউন্নেছা বিবি জন্মগ্রহন করেন । কিন্তু মেয়েটি চার বছর বয়সে মারা যায় । এরপর তার আরোও একটি ছেলে জন্মগ্রহন করে অল্প দিনের মধ্যে মারা যান । অতঃপর ১২৮২ হিজরীতে দ্বিতীয় পুত্র সৈয়দ ফয়জুল হক (রঃ) এবং ১২৮৯ হিজরী সালে দ্বিতীয় কন্যা সৈয়দা আনোয়ারুন্নেছা জন্মগ্রহন করেন । তার দ্বিতীয় পুত্রও পিতার পুর্বে ইন্তেকাল করেন ।
আহমদ উল্লাহ মাইজভান্ডারী ১৯০৬ সালের ২৩শে জানুয়ারি ১৩১৩ বঙ্গাব্দ ১০ই মাঘ আশি বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন । মাইজভান্ডারেই তিনি সমাহিত হন এবং তার কবরের উপর বর্তমানে আধুনিক স্থাপত্য শৈলী খচিত মাজার বিদ্যমান ।


সৈয়দ আহমদ উল্লাহ মাইজভাণ্ডারীর সান্নিধ্যে এসে শত শত মানুষ আল্লাহর নৈকট্য লাভ এবং নামকরা অলিয়ে কামেলে রুপান্তরিত হয়েছিলেন । এ পর্যন্ত প্রায় ১৫৬ জনের নাম ঠিকানা এবং তাদের মাজার সম্পর্কে জানা যায় । যারা সারা বাংলাদেশ ও বার্মা এবং পাকিস্তানে ছড়িয়ে আছেন । নিচে কয়েকজনের পরিচয় দেয়া হলোঃ

১। অছিয়র রহমান (রঃ), চরণদ্বীপ, বোয়ালখালী, চট্টগ্রাম
২। কাজী আছাদ আলী (রঃ), আহল্লামৌজা, বোয়ালখালী, চট্টগ্রাম
৩। আব্দুল আজিজ (রঃ), খিতাবচর, বোয়ালখালী, চট্টগ্রাম
৪। আমিরুজ্জামান (রঃ), পটিয়া, চট্টগ্রাম
৫। আব্দুর রাজ্জাক (রঃ) প্রকাশ হাকিম শাহ, চট্টগ্রাম
৬। আমিনুল হক ফরহাদাবাদী (রঃ), ফরহাদাবাদ, হাটহাজারী, চট্টগ্রাম
৭। আমিনুল হক হারবাংগীরী (রঃ), বোয়ালখালী, চট্টগ্রাম
৮। খলিলুর রহমান (রঃ), রাঙ্গুনিয়া, চট্টগ্রাম
৯। আমানুল্লাহ আলী(রঃ), বাঁশখালী, চট্টগ্রাম
১০। ফরীদুজ্জামান আলী(রঃ), সাতকানিয়া, চট্টগ্রাম
১১। আব্দুল আজিজ (রঃ), মংড়ু, আরাকান, বার্মা
১২। মিয়া হোসাইন (রঃ), খেনুদি, আরাকান, বার্মা
১৩। আব্দুল কুদ্দুস (রঃ), বোয়ালখালী, চট্টগ্রাম
১৪। আব্দুল আজিজ (রঃ) সোনাপুর, নোয়াখালী
১৫। এয়াকুব গাজী (রঃ) শ্রীপুর, নোয়াখালী
১৬। নঞ্জির শাহ (রঃ) স্টেশন রোড, চট্টগ্রাম
১৭। এবাদুল্লাহ শাহ (রঃ), হারবাং, চকরিয়া, কক্সবাজার
১৮। ওয়ালী মস্তান (রঃ), পার্বত্য চট্টগ্রাম
১৯। জাফর আহমদ (রঃ) প্রকাশ মামু ফকির, রেঙ্গুন, বার্মা
২০। আব্দুল জলিল শাহ,প্রকাশ বালু শাহ, ছাদেকনগর, হাটহাজারী, চট্টগ্রাম
২১। গোলাম রহমান (রঃ), বরিশাল
২২। সৈয়দ আমিনুল হক (কঃ) ওয়াছেল, মাইজভাণ্ডার (নিজ ভ্রাতুসপুত্র)
২৩। সৈয়দ গোলামুর রহমান (কঃ) প্রকাশ বাবা ভাণ্ডারী, মাইজভাণ্ডার (নিজ ভ্রাতুসপুত্র)
২৪। সৈয়দ ফয়জুল হক (রঃ), মাইজভাণ্ডার (নিজ পুত্র)
২৫। সৈয়দ দেলাওর হোসাইন (কঃ), মাইজভাণ্ডার (নিজ পৌ্ত্র)
২৬। আব্দুল গফুর শাহ (রঃ) প্রকাশ কম্বলী শাহ, মোহনপুর, ফরিদপুর
২৭। আসরাফ আলী (রঃ), দুগাইয়া, চাঁদপুর
২৮। আব্দুল আজিজ (রঃ), ফেনী
২৯। আব্দুল হাদী (রঃ), কাঞ্চনপুর, চট্টগ্রাম
৩০। আব্দুল গনী (রঃ), কাঞ্চনপুর, চট্টগ্রাম
বাংলাদেশের কিছু সূফীদের নাম দিয়েদিলামঃ
১। সৈয়দ আমিনুল হক মাইজভান্ডারী বা ছোট মৌলানা
২। সৈয়দ গোলামুর রহমান মাইজভান্ডারী বা বাবা ভান্ডারী
৩। ছালেকুর রহমান রাহে ভান্ডারী বা দুলহায়ে হযরত
৪। আহমদ উল্লাহ মাইজভান্ডারীর খলিফা
৫। জালাল উদ্দিন মুহাম্মদ রুমি
৬। শাহ জালাল
৭। আমীমুল ইহসান
৮। শিতালং শাহ


তথ্যঃ ফার্সী গ্রন্থঃ আয়নায়ে বারী, লেখক: আব্দুল গণি কাঞ্চনপুরী, ।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে মে, ২০১৫ সকাল ১১:৫০

হানিফঢাকা বলেছেন: Sufism and Islam are not the same thing, very few people understand this.

০১ লা জুন, ২০১৫ রাত ১২:১৮

আমি মিন্টু বলেছেন: থ্যাঙ্কু ভাইয়া

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.