নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

এই ঘরটির জন্য আমরা কোন স্পেশাল ক্যারেক্টার / ইমোটিকন গ্রহন করছি না।\nশুধুমাত্র সংখ্যা ও যে কোন সাধারন ক্যারেক্টার ব্যবহার করুন।\n

আমি মিন্টু

আমি মিন্টু › বিস্তারিত পোস্টঃ

পর্নো সামগ্রী সম্পর্কে পূর্ণ আইন জানুন ।

০৬ ই আগস্ট, ২০১৫ সকাল ১০:৪২


পর্নোগ্রাফি যৌন উদ্দীপনা সৃষ্টির উদ্দেশ্যে যৌনসংক্রান্ত বিষয়বস্তুর প্রতিকৃতি অঙ্কন বা পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা । পর্নোগ্রাফি বিভিন্ন মাধ্যমের সাহায্যে উপস্থাপন করা হতে পারে এর মধ্যে অর্ন্তভূক্ত রয়েছে বই, সাময়িকী, পোষ্টকার্ড, আলোকচিত্র, ভাস্কর্য, অঙ্কন, পেইন্টিং, অ্যানিমেশন, সাউন্ড রেকর্ডিং, চলচ্চিত্র, ভিডিও এবং ভিডিও গেম । বিগত কয়েক দশকে পর্নোগ্রাফি উৎপাদন তথা ভোগ্যপণ্য হিসেবে ভোগকে কেন্দ্র করে একটি বিরাট শিল্প গড়ে উঠেছে। মূলত ভিসিআর ডিভিডি এবং ইন্টারনেটের ব্যাপক ব্যবহার ও যৌন বিষয়বস্তুর প্রদর্শনে সমাজের অধিকতর উদার মনোভাব এই শিল্প গড়ে ওঠার অন্যতম কারণ । পর্নোগ্রাফির অভিনেতাদের মধ্যে যে সব থেকে বেশি হিট করে তাকে সাধারণত পর্ন স্টার বলে । মূলধারার অভিনেতা অভিনেত্রীদের তুলনায় এদের অভিনয়ের গুণমানও সাধারণত পৃথক হয় । শখের পর্নোগ্রাফি এই শিল্পের জনপ্রিয় একটি ধারা এবং তা ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিনামূল্যে বিতরিত হয়ে থাকে ।
পর্নোগ্রাফির মাধ্যম একাধিক হতে পারে মুদ্রিত সাহিত্য, ফটোগ্রাফ, ভাস্কর্য, অঙ্কন, চিত্রকলা, অ্যানিমেশন, শব্দ রেকর্ডিং, পর্নোগ্রাফিক চলচ্চিত্র, ভিডিও, অথবা ভিডিও গেম। অবশ্য সরাসরি দর্শকদের সামনে যৌন ক্রিয়াকলাপ আচরিত হলে তাকে সংজ্ঞা অনুসারে তাকে পর্নোগ্রাফি বলা হয় না । কারণ পর্নোগ্রাফি বলতে উক্ত আচরণটিকে বোঝায় না বোঝায় উক্ত আচরণের বর্ণনাকে । এই কারণে সেক্স শো স্ট্রিপটিজ জাতীয় প্রদর্শনীকে পর্নোগ্রাফির পর্যায়ভুক্ত করা হয় না ।

দেশভেদে পর্নোগ্রাফি তথা শিল্পে নগ্নতার প্রদর্শনী ও ফটোগ্রাফির প্রতি সাংস্কৃতিক ও আইনগত দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্য লক্ষিত হয় ।
Softcore বা লঘু পর্নোগ্রাফি হল বাণিজ্যিক নিশ্চল still ফটোগ্রাফি বা ছবি যাতে অশ্লীল যৌন উদ্দীপনামূলক বিষয়বস্তু থাকে, কিন্তু তা পর্নোগ্রাফির মত সুস্পষ্ট নয়।এতে প্রধানত অর্ধনগ্ন ও নগ্ন কলাকুশলী ও যৌনদৃশ্যের মাধ্যমে যৌন উদ্দীপনা সৃষ্টি করা হয়। বিভিন্ন ম্যাগাজিন ও সমাচারপত্রে নগ্ন অভিনেতা বা মডেলদের ছবি সরাসরিই দেখানো হয়।তবে লঘু পর্নোগ্রাফিতে পুরুষ বা নারী যৌনাঙ্গ দেখানো হয় না । বিভিন্ন আর্ট ফিল্মে এই ধরনের নগ্নতাকে নান্দনিক দৃষ্টিকোণ থেকেও ব্যবহার করা হয় ।
শিয়ায় পর্নোগ্রাফি হল এশিয়ায় সৃষ্ট ও দৃষ্ট পর্নোগ্রাফি এবং পর্নোগ্রাফির এক বা একাধিক প্রকরণ যা বিশ্বের অন্যান্য অংশে প্রদর্শিত ও বাজারজাত করার কিছু নিয়ম নিষেধজ্ঞা আছে ।
সেগুলো যেমনঃ
পূর্ব এশিয়া
উত্তর কোরিয়া
অবৈধ ও নিষিদ্ধ ।
দক্ষিণ কোরিয়া
অবৈধ ও নিষিদ্ধ ।
গণপ্রজাতন্ত্রী চীন
অবৈধ ও নিষিদ্ধ ।
হংকং
আঠারো বছরের সময়সীমা ।
জাপান
স্বল্প আপত্তিকর তবে ব্যাপকভাবে প্রচলিত ।

চীনা প্রজাতন্ত্র তাইওয়ান
প্রকাশ্যে জনসম্মুখে আঠারো বছরের নিচের কম বয়সীদের জন্য নিষিদ্ধ ।
দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া
ব্রুনাই
সংখ্যালঘু উচ্চবিত্তদের জন্য এবং ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য অনুমোদিত ।
ইন্দোনেশিয়া
অবৈধ ও নিষিদ্ধ ।
মালয়েশিয়া
অবৈধ ও নিষিদ্ধ ।
ফিলিপাইন দ্বীপপুঞ্জ
অবৈধ কিন্তু গোপনে বানিজ্যিকভাবে ব্যাপক প্রচলিত ।
সিঙ্গাপুর
সামাজিকভাবে প্রচলিত কিন্তু আইনগতভাবে অবৈধ ।
থাইল্যান্ড
অবৈধ ও শিথিলভাবে নিষিদ্ধ ।
ভিয়েতনাম
অবৈধ ও নিষিদ্ধ ।
পশ্চিম এশিয়া
আজারবাইজান
আইনগতভাবে তিরষ্কৃত তবে বৈধতা বা অবৈধতার ব্যপারে কিছু উল্লেখিত হয় নি । তবে শিশু পর্নোগ্রাফি নিষিদ্ধ ।
দক্ষিণ এশিয়া
ভারত
দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র বৈধতা প্রদানকারী দেশ । তবে তা আঠারো বছরের সময়সীমা বিশেষ শর্তসমূহ প্রকাশ্য দর্শন নিষিদ্ধ ।
পাকিস্তান
অবৈধ ও নিষিদ্ধ । ইন্টারনেটের সকল পর্নগ্রাফিক ওয়েবসাইট চিহ্নিতকরণের মাধ্যমে ব্যান ও নিয়মিত হালনাগাদ পর্যবেক্ষণ ।
বাংলাদেশ
২০১২ সালে বাংলাদেশ ৯ম জাতীয় সংসদ অধিবেশনে পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১২ পাশের মাধ্যমে বাংলাদেশে পর্নোগ্রাফি নিষিদ্ধ করা হয় ।
শ্রীলঙ্কা
কঠোরভাবে নিষিদ্ধ ।
মধ্যপ্রাচ্য
ইরান
গোপনে প্রচলিত, আইনগতভাবে নিষিদ্ধ এবং প্রশাসনিক আইন প্রয়োগ ও প্রযুক্তিগত প্রতিরোধ ব্যবস্থা ।
ইসরায়েল
প্রচলিত তবে ১৮ বছরের নিচে শিশু পর্ণোগ্রাফি নিষিদ্ধ ।
গাজা উপত্যকা
ইন্টারনেট ছাকন বা ফিল্টারিং ব্যবস্থা প্রনয়ন ।
লেবানন
কঠোরভাবে নিষিদ্ধ ।

সৌদি আরব
কঠোরভাবে নিষিদ্ধ এবং ইন্টারনেটভিত্তিক সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইটসমূহ প্রবেশের অযোগ্যকরণ ।
আমাদের বাংলাদেশের জন্য পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১২
পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১২ বাংলাদেশের একটি আইন যার মাধ্যমে পর্নোগ্রাফি বহন বিনিময়, মুঠোফোনের মাধ্যমে ব্যবহার করা, বিক্রি নিষিদ্ধ করা হয়েছে । প্রথমে আইনটি প্রস্তাব আকারে বিল মন্ত্রী পরিষদ কর্তৃক অনুমোদিত হয় । নবম জাতীয় সংসদের ১ম অধিবেশন চলাকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাহারা খাতুন ২৯শে জানুয়ারি তারিখে বিলটি উত্থাপন করেন । বিলটি পরীক্ষা করার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয় ।
অতঃপর ২০১২ সালে ২৮ ফেব্রুয়ারি তারিখে পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১২ অনুমোদন লাভ করে ।
পর্নোগ্রাফীর সংজ্ঞার্থ
এই আইনে পর্নোগ্রাফর সংজ্ঞার্থ প্রদান করা হয়েছে । বলা হয়েছে যেবিলে বলা হয়েছে, যৌন উত্তেজনা সৃষ্টিকারী কোনো অশ্লীল সংলাপ, অভিনয়, অঙ্গভঙ্গি, নগ্ন বা অর্ধনগ্ন নৃত্য চলচ্চিত্র, ভিডিও চিত্র, অডিও ভিজুয়াল চিত্র, স্থির চিত্র, অংকিত চিত্রাবলী, বা অন্য কোনো উপায়ে ধারণকৃত ও প্রদর্শনযোগ্য বিষয় যার কোনো শৈল্পিক মূল্য নেই তা পর্নোগ্রাফি হিসেবে বিবেচিত হবে । অধিকন্তু, যৌন উত্তেজনা সৃষ্টিকারী অশ্লীল বই, পত্র পত্রিকা, ভাস্কর্য, কল্প মূর্তি, মূর্তি, কার্টুন বা প্রচারপত্র পর্নোগ্রাফি হিসেবে বিবেচিত হবে । এসবের নিগেটিভ বা সফট ভার্সনও পর্নোগ্রাফি হিসেবে গণ্য হবে ।
নিষেধাজ্ঞা
এই আইনানুযায় পর্নোগ্রাফি উত্পাদন, সংরক্ষণ, বাজারজাতকরণ, বহন, সরবরাহ, ক্রয়-বিক্রয় ও প্রদর্শন বেআইনী ও নিষিদ্ধ । এই নিষিদ্ধ কর্ম সম্পাদনের জন্য শাস্তির বিবিধ বিধান রাখা হয়েছে । এ আইনের অধীনে সংঘটিত অপরাধ আমলযোগ্য এবং অজামিনযোগ্য ।
শাস্তির বিধানঃ
পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে বলা হয়েছে যে কোনো ব্যক্তি পর্নোগ্রাফি উত্পাদনের উদ্দেশ্যে কোনো নারী, পুরুষ বা শিশুকে প্রলোভন দিয়ে জ্ঞাতে বা অজ্ঞাতে স্থির, ভিডিও বা চলচ্চিত্র ধারণ করলে বিচার প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সর্বোচ্চ ৭বছরের কারাদণ্ড ও ২ লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড আরোপ করা যাবে । এই বিলে আরো বলা হয়েছে যে, যদি কোনো ব্যক্তি পর্নোগ্রাফির মাধ্যমে কারও সম্মানহানি করে বা কাউকে ব্ল্যাকমেইল করে বা করার চেষ্টা চালায় তবে বিচারক ২ থেকে ৫বছর মেয়াদী কারাদণ্ড আরোপ করতে পারবেন এবং তদুপরি, ১ থেকে ২লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদণ্ড আরোপ করতে পারবেন । শিশুদের ব্যবহার করে পর্নোগ্রাফি উত্পাদন ও বিতরণকারীদের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ শাস্তি ১০ বছরের কারাদণ্ড এবং অধিকন্তু ৫ লাখ টাকা জরিমানা আরোপের বিধান রাখা হয়েছে ।
তদন্ত পদ্ধতি
পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১২ অনুসারে পর্নো সিডি বা ডিভিডি তৈরির দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেফতারি পরোয়ানা ছাড়াই গ্রেফতার ও তার আস্তানায় তল্লাশি চালিয়ে আলামত আটক করা যাবে । তল্লাশিকালে আটককৃত সফট কপি, রূপান্তরিত হার্ডকপি, সিডি, ভিসিডি, ডিভিডি, কম্পিউটার বা অন্য কোনো ডিজিটাল বা ইলেকট্রিকাল ডিভাইস, এক্সেসরিজ, মোবাইল ফোনে সিম, যন্ত্রাংশ, অপরাধ কাজে ব্যবহৃত অন্য কোনো যন্ত্র বা যন্ত্রাংশ, সরঞ্জাম বা বস্তা আদালতে প্রমাণ বা প্রদর্শনী হিসেবে উপস্থাপন করতে হবে । এই আইনের ৫ ধারায় বলা হয়েছে যে পর্নোগ্রাফির অভিযোগ পাওয়া গেলে তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক বা তার সমমর্যাদার কর্মকর্তাকে দিয়ে ৩০ দিনের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করতে হবে । তদন্তের প্রয়োজনে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অনুমতি নিয়ে আরো ১৫ দিন এবং আদালতের অনুমোদন পাওয়া গেলে আরো ৩০ দিন পর্যন্ত তদন্তকার বৃদ্ধি করা যাবে ।
অন্যান্য বিধান
এ আইনে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির ৭ দিনের মধ্যে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা সম্ভব না হলে আদালত একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দিয়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিতে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিতে পারবে । এ সময়ের মধ্যে অভিযুক্ত ব্যক্তি আদালতে আত্মসমর্পণ না-করলে তার অনুপস্থিতিতেই বিচার কার্য সমাধা হবে । কেউ এ অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হলে ৩০ দিনের মধ্যে তাকে আপিল করতে পারবেন । এ ছাড়া বিলে মিথ্যা অভিযোগ দায়েরকারীর জন্যও শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে । এ আইনের অধীনে সংঘটিত অপরাধ আমলযোগ্য এবং অজামিনযোগ্য অপরাধ হিসাবে অভিযোগ ছাড়াই রাষ্ট্র তথা আদালত আমলে নিতে পারবে ।

তথ্যসূত্রঃ পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন ২০১২ । এটা ২০১২ সনের ৯ নং আইনের আওতা বুক্ত ।
তাছাড়াও Click This Link

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.