নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ইসলাম ধর্মে মোজেস ( পর্ব ১)
প্রাচীন কালে যারা মরুভূমি অতিক্রম করতেন তারা তদের যাত্রাপথে একমাত্র উদ্দেশ্য থাকতে নির্দিষ্ট লহ্ম্যে পৌছানোর জন্য পথের মরুদ্যান বা কূপের নিকট পৌছানো । কারণ তা হলে গাছের ছায়াতে সূর্যের প্রচন্ড তাপ থেকে শরীরকে সুশীতল করা কূপের পানি প্রচন্ড তৃষ্ণা কে নিবারণ করা যায় । সর্বোপারি মরুভূমির জনশূন্যতা থেকে রহ্মা পেয়ে মানুষের সঙ্গ লাভ করা যায় । মূসা শেষ পর্যন্ত মাদইয়ানের একটি মরুদ্যানে পৌছাতে সহ্মম হলেন কিন্তু তিনি ছিলেন পথশ্রমে ক্লান্ত এবং তৃষ্ণার্থ সুতরাং স্বাভাবিকভাবে তিনি পানি পান করার জন্য আগ্রহী ছিলেন । কিন্তু কুপে তখন একদল রাখাল তাদের জন্তুদের পানি পান করাচ্ছিলেন । সে সময়ে তিনি লহ্ম্য করেন যে দুজন রমণীদ্বয় তাদের পশুপালকে আগলিয়ে রেখেছেন তাদের পশুদের পানি পান করানোর জন্য । তখন মূসা আঃ রমণীদ্বয়কে জিজ্ঞেস করলো তোমাদের কি ব্যাপার ? তোমরা তোমাদের পশুপালকে আগলিয়ে দাড়িয়ে আছ কেন ? অন্যদের ন্যায় কূপের কাছে এনে পানি পান করাও না কেন ? তারা জওয়াব দিল আমাদের অভ্যাস এই যে আমরা পুরুষের সাথে মেলামেশা থেকে আত্মরহ্মার জন্য পশুপালগুলোকে পানি পান করাই না যে পর্যন্ত তারা কূপের কাছে থাকেন । তারা চলে গেলে আমরা পশুপালগুলোকে পানি পান করাই । রমণীদ্বয় এটাও বলল যে আমাদের পিতা অতিশয় বৃদ্ধ ।
তিনি একাজ করতে পারেন না । তাই আমরা একাজ করতে বাধ্য হয়েছি । অতঃপর মূসা আঃ রমণীদ্বয়ের প্রতি দয়াপরবশ হয়ে কূপ থেকে পানি তুলে তাদের পশুপালগুলোকে পান করিয়েছিলেন । কোন কোন রেওয়ায়েতে আছে যে রাখালদের অভ্যাস ছিল তারা জন্তুদেরকে পানি পান করানোর পরে একটি ভারী পাথর দ্বারা কূপের মুখ বন্ধ করে দিতেন । ফলে রমণীদ্বয় তাদের উচ্ছিত পানি পান করাত । এই ভারী পাথরটি দশ জনে মিলে স্থানান্তরিত করতো । কিন্তু মূসা আঃ একাকী পাথরটি সরিয়ে দেন এবং কূপ থেকে পানি উত্তোলন করেন । আর এ কারণেই রমণীদ্বয়ের একজন মূসা আঃ সম্পর্কে সে রমনীদ্বয়ের পিতার কাছে বলেছিলেন যে সে অনেক শক্তিশালী । মূসা আঃ সাত দিন ধরে কোনকিছু আহার করেন নাই । তখন এক বৃহ্মের ছায়ায় এসে আল্লাহু তাআলার সামনে নিজের অবস্থা এবং অভাব পেশ করলেন । এটা দোয়া করার একটা সূহ্ম পদ্ধতি । রমণীদ্বয় নির্দিষ্ট সময়ের পূর্বেই বাড়ী পৌছে গেলে বৃদ্ধ পিতা এর কারণ জিজ্ঞেস করলেন । কন্যাদ্বয় ঘটনা খুলে বললেন । পিতা দেখলেন লোকটি অনুগ্রহ করেছেন তাকে এর প্রতিদান দেয়া উচিত ।
তাই তিনি কন্যাদ্বয়ের একজনকে তাকে ডেকে আনার জন্যে পাঠালেন । মূসা তখন সবেমাত্র বিশ্রাম নিচ্ছিলেন ঠিক সে সময় মেয়েটি লজ্জাজড়িত পদক্ষেপে সেখানে পৌঁছালো । প্রয়োজনবশত সেখানে পৌছে মেয়েটি লজ্জা সহকারে কথা বলেছে । বালিকাটি বিণীতভাবে বললেন মুসা আঃ কে যে আপনি আমাদের জন্য যা করেছেন তার জন্য আমার পিতা আপনার কাছে কৃতজ্ঞ । তাই তিনি আপনাকে ব্যক্তিগতভাবে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনের জন্য এবং পারিশ্রমিক দেবার জন্য ডেকেছেন । তাফসীরে আরোও বলা হয়েছে যে মূসা আঃ তার সাথে পথ চলার সময় বললেন তুমি আমার পশ্চাতে চল এবং রাস্তা বলে দাও । বলাবাহুল্য মেয়েটি প্রতি দৃষ্টিপাত থেকে বেঁচে থাকাই ছিল এর লহ্ম্য। সম্ভবত এই কারণেই মেয়েটি তার সম্পর্কে পিতার কাছে বিশ্বস্ততার সাহ্ম্য দিয়েছিলেন । এই মেয়েটির পিতা কে ছিলেন এ সম্পর্কে তফসীরকারকগণ মতভেদ করেছেন । কিন্তু কোরআনের আয়াতসমূহ থেকে বাহ্যত এ কথাই বোঝা যায় যে তিনি ছিলেন হযরত শোয়ায়ব আঃ ।
বৃদ্ধ পিতা এবং মূসার আঃ দেখা হওয়া মাত্রই তাদের মাঝে বন্ধুতে পরিণত হয়ে যায় । মূসা তাকে তার জীবন কাহিনী সব খুলে বলেন । তিনি কে ছিলেন কিভাবে তিনি কোথায় থেকে এখানে এলেন কি পরিপ্রেহ্মিতে তিনি জন্মভূমি মিশর ত্যাগে বাধ্য হলেন । তার সকল ঘটনা পূর্ণ বিবরণ তিনি রমণীদ্বয়ের বৃদ্ধ পিতার কাছে বর্ণনা করলেন । সম্ভবত তাদের সাথে রমণীদ্বয়রাও এই কাহিনী শুনার জন্য সেখানে অংশগ্রহণ করেছিলেন । রমণীদ্বয়ের এক জন্য তার বাবার কাছে যে বলতে লাগল এই যে গৃহের কাজের জন্য আপনার একজন চাকরের প্রয়োজন । আপনি চাইলে তাকেই নিযুক্ত করতে পারেন । মেয়েটির পিতা হযরত শোয়ায়ব আঃ নিজেই নিজের পহ্ম থেকে কন্যাকে হযরত মূসার আঃ এর সাথে বিবাহে দেওয়ার কথা ও ইচ্ছা ব্যক্ত করলেন । তার প্রস্তাব ছিল মূসা তার যে কোন একটি কন্যাকে বিবাহ করতে পারে বিনিময়ে তাকে কমপহ্মে আট বছর তার পশুচারণের কাজ করতে হবে । অবশ্য তুমি ইচ্ছা করলে দশ বছরও থাকতে পার । সূরা আল কাসাসের ২৮ নং আয়াতে আল্লাহু তাআলা উল্লেখ করেন
( মূসা বললেন আমার ও আপনার মধ্যে এই চুক্তি স্থির হল । দুটি মেয়াদের মধ্য থেকে যে কোন একটি পূর্ণ করলে আমার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ থাকবে না । আমরা যা বলছি তাতে আল্লাহর উপর ভরসা । )
যখন হযরত মূসা আঃ দশ বছর পূর্ণ করলেন যখন তখন হযরত শোয়ায়ব আঃ এর কাছে প্রস্তাব করলেন এখন আমি জননী এবং ভগ্নির সাথে সাহ্মাতের উদ্দেশে মিসর যেতে চাই । ফেরাউনের সিপাহীরা তাকে গ্রেফতার এবং হত্যার জন্যে খোজ করছিল । এ আশঙ্কার কারণেই তিনি মিসর ত্যাগ করেছিলেন । দীর্ঘদিন অতিবাহিত হওয়ার ফলে এখন সে আশঙ্কা অবশিষ্ট নেই । শোয়ায়ব আঃ তাঁকে স্ত্রী অর্থাৎ নিজের কন্যাসহ কিছু অর্থকড়ি এবং আসবাবপত্র দিয়ে বিদায় দিলেন । পথিমধ্যে শাম অঞ্চলের শাসকদের পহ্ম থেকে বিপদাশঙ্কা ছিল তাই তিনি পরিচিত পথ ছেড়ে অখ্যাত পথ অবলম্বন করলেন । তখন ছিল শীতকাল । স্ত্রী ছিলেন অস্তসত্তা এবং তার প্রসবকাল ছিল নিকটবর্তী । সকালে বা বিকাল যে কোন সময় প্রসবের সম্ভাবনা ছিল । রাস্তা ছিল অপরিচিত । তাই তিনি মরু অঞ্চলে পথ হারিয়ে তূর পর্বতের পশ্চিমে এবং ডান দিকে চলে গেলেন । গভীর অন্ধকার ছিল । কনকনে শীতও ছিল । মাটি ছিল বরফসিক্ত । সে দুর্যোগ ময় মুহুর্তে স্ত্রীর প্রসব বেদনা শুরু হয়ে যায় । মূসা আঃ শীতের কবল থেকে আত্মরহ্মার্থে আগুন জ্বালাতে চাইলেন । কিন্তু তিনি আগুন জ্বালাতে ব্যর্থ হলেন । হঠাৎ তিনি দেখলেন তূর পর্বতে আগুলে দেখতে পেলেন । সেটা ছিল প্রকৃতপহ্মে নূর । তিনি পরিবারবর্গকে বললেন তোমরা এখানেই অবস্থান কর । আমি আগুন দেখেছি । সম্ভবত আগুনের কাছে কোন পথপ্রদর্শক ব্যক্তিও পেয়ে যেতে পারি যার কাছ থেকে আমরা পথের সন্ধান জানতে পারবো । পরিবারবর্গের মধ্যে স্ত্রী যে ছিলেন তা তো সুনিশ্চিত । কোন কোন রেওয়ায়েত থেকে জানা যায় যে কোন খাদেমও সাথে ছিল । তাকে উদ্দেশ করেও সম্বোধন করা হয়েছে । আবার কোন কোন রেওয়াতে আছে যে কিছুসংখ্যক লোক সফর সঙ্গীও ছিল । কিন্তু পথ ভুলে তিনি তাদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছিলেন ।
৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৪:১২
আমি মিন্টু বলেছেন: ধন্যবাদ ভাইয়া দোআ করবেন ।
২| ০৩ রা অক্টোবর, ২০১৫ রাত ২:২৬
আমি মিন্টু বলেছেন: হায়রে মানুষ রঙ্গিন ফানুস
০৩ রা অক্টোবর, ২০১৫ রাত ২:৩৫
আমি মিন্টু বলেছেন: হুম ।
©somewhere in net ltd.
১| ৩০ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৫৭
জেকলেট বলেছেন: আল্লাহ আপনাকে উ্ত্তম প্রতিদান দিন।