নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
ক্ষুদিরাম বসু ছিলেন ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের শুরুর দিকের সর্বকনিষ্ঠ এক জন বিপ্লবী। ফাঁসি বা মৃত্যুর সময় তার বয়স ছিল মাত্র ১৮ বছর ৭ মাস ১১ দিন।ক্ষুদিরাম বসু ডিসেম্বর ১৮৮৯ তৎকালীন সময় ব্রিটিশ ভারতের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সির অন্তর্গত মেদিনীপুর জেলার শহরের কাছাকাছি কেশপুর থানার অন্তর্গত মোহবনী গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার পিতা ত্রৈলকানাথ বসু ছিলেন নাড়াজোল প্রদেশের শহরে আয় এজেন্ট। তার মা লক্ষীপ্রিয় দেবী। তিন কন্যার পর মা লক্ষীপ্রিয় দেবীর কোলে তার চতুর্থ সন্তান অর্থাৎ ক্ষুদিরাম বসুর জম্ম হয় । এর আগে তার দুই পুত্র মৃত্যুবরণ করেন। অপর পূত্রের মৃত্যুর আশংকায় তিনি তখনকার সমাজের নিয়ম অনুযায়ী তার পুত্রকে তার বড় বোনের কাছে তিন মুঠি খুদের শস্যের খুদ বিনিময়ে বিক্রি করে দেন। খুদের বিনিময়ে ক্রয়কৃত শিশুটির নাম পরবর্তীতে ক্ষুদিরাম রাখা হয়। ক্ষুদিরাম বসু পরবর্তিতে তার বড় বোনের কাছেই বড় হয়েছিলেন।
মেদিনীপুরে ক্ষুদিরাম বসুর আগমনঃ
ক্ষুদিরাম বসু তার প্রাপ্তবয়সে পৌঁছানোর অনেক আগেই একজন ডানপিটে, বাউণ্ন্ডুলে, রোমাঞ্চপ্রিয় হিসেবে পরিচিত লাভ করেছিলেন। ১৯০২ সাল থেকে ১৯০৩সাল সময়ে যখন বিপ্লবী নেতা শ্রী অরবিন্দ এবং সিস্টার নিবেদিতা মেদিনীপুর ভ্রমণ করেন ও তারা জনসম্মুখে বক্তব্য রাখেন এবং বিপ্লবী দলগুলোর সাথে গোপন পরিকল্পনা করেন তখন তরুণ ছাত্র ক্ষুদিরাম বিপ্লবে যোগ দিতে অনুপ্রাণিত হন। ১৯০৪ সালে ক্ষুদিরাম তার বোন অপরূপার স্বামী অম্রিতার সাথে তমলুক শহর থেকে মেদিনীপুরে চলে আসেন। এবং সেখানে তিনি মেদিনীপুর কলেজিয়েট স্কুলে ভর্তি হন।
ক্ষুদিরামের বৈপ্লবিক কর্মকাণ্ড
মেদিনীপুরে তার বিপ্লবী জীবনের অভিষেক। তিনি বিপ্লবীদের একটি নবগঠিত আখড়ায় যোগ দেন। ১৯০২ সালে জ্ঞানেন্দ্রনাথ বসু এবং রাজনারায়ণ বসুর প্রভাবে মেদিনীপুরে একটি গুপ্ত বিপ্লবী সংগঠন গড়ে উঠেছিলো। সেই সংগঠনের নেতা ছিলেন হেমচন্দ্র দাস কানুনগো এবং সত্যেন্দ্রনাথ বসু ছিলেন হেমচন্দ্র দাসের সহকারী। এটি রাজনৈতিকভাবে সক্রিয় ব্রিটিশবিরোধীদের দ্বারা পরিচালিত হতো। অল্প কিছু সময়ের মধ্যেই ক্ষুদিরাম তার গুণাবলীর জন্য সবার চোখে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেন। বীর ক্ষুদিরাম সত্যেন্দ্রনাথের সাহায্যে বিপ্লবী দলভুক্ত হয়ে সেখানে আশ্রয় পান। ক্ষুদিরাম তারই নির্দেশে সোনার বাংলা শীর্ষক বিপ্লবাত্মক ইশতেহার বিলি করে গ্রেপ্তার হন।
ক্ষুদিরামের উপনিবেশবাদবিরোধী সংগ্রামে যোগ
ক্ষুদিরাম বসু তার শিক্ষক সত্যেন্দ্রনাথ বোস এর নিকট হতে এবং শ্রীমদ্ভগবদগীতা পড়ে ব্রিটিশ উপনিবেশের বিরুদ্ধে বিপ্লব করতে অনুপ্রাণিত হলেন। তিনি বিপ্লবী রাজনৈতিক দল যুগান্তরে যোগ দেন। ১৬ বছর বয়সে ক্ষুদিরাম পুলিশ স্টেশনের কাছে বোমা পুতে রাখেন এবং ইংরেজ কর্মকর্তাদের লক্ষ্য করেন। একের পর এক বোমা হামলার দায়ে ৩ বছর পর তাকে আটক করা হয়। ১৯০৮সালের ৩০শে এপ্রিল মুজাফফরপুর বিহারে রাতে সাড়ে আটটায় ইওরোপিয়ান ক্লাবের সামনে বোমা ছুড়ে তিনজনকে হত্যার দায়ে অভিযুক্ত ক্ষুদিরামের বিচার শুরু হয় ১৯০৮সালের ২১ মে তারিখে যা আলিপুর বোমা মামলা নামে পরিচিত হয়। বিচারক ছিলেন জনৈক বৃটিশ মিঃ কর্নডফ এবং দুইজন ভারতীয় লাথুনিপ্রসাদ এবং জানকিপ্রসাদ। রায় শোনার পরে ক্ষুদিরামের মুখে হাসি দেখা যায়। তার বয়স খুব কম ছিল। বিচারক কর্নডফ তাকে প্রশ্ন করেছিলেন যে ফাসিতে মরতে হবে সেটা সে বুঝেছে কিনা? ক্ষুদিরাম আবার মুচকে হাসলে বিচারক আবার প্রশ্নটি করেন। ক্ষুদিরাম তখন উদ্ধৃত কথাটি বলেন। তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় ভোর ছয় টায়। ফাসির মঞ্চ ওঠার সময়ে তিনি হাসিখুশি ছিলেন। ক্ষুদিরামকে নিয়ে কাজী নজরুল ইসলাম কবিতা লিখেছিলেন এবং অনেক গানও তখন রচিত হয়েছিল। যেমনঃ
একবার বিদায় দে মা।
একবার বিদায় দে মা ঘুরে আসি।
হাসি হাসি পরব ফাঁসি দেখবে ভারতবাসী।
কলের বোমা তৈরি করে
দাঁড়িয়ে ছিলেম রাস্তার ধারে মাগো,
বড়লাটকে মারতে গিয়ে
মারলাম আরেক ইংলন্ডবাসী।
হাতে যদি থাকতো ছোরা
তোর ক্ষুদি কি পড়তো ধরা মাগো
রক্ত-মাংসে এক করিতাম
দেখতো জগতবাসী
শনিবার বেলা দশটার পরে
জজকোর্টেতে লোক না ধরে মাগো
হল অভিরামের দ্বীপ চালান মা ক্ষুদিরামের ফাঁসি
বারো লক্ষ তেত্রিশ কোটি
রইলো মা তোর বেটা বেটি মাগো
তাদের নিয়ে ঘর করিস মা
ওদের করিস দাসী
দশ মাস দশদিন পরে
জন্ম নেব মাসির ঘরে মাগো
তখন যদি না চিনতে পারিস
দেখবি গলায় ফাঁসি।তার মৃত্যুর পর বৃটিশদের খুন করার জন্য তরুণরা উদ্বুদ্ধ হয়েছিল।
ক্ষুদিরামের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য
ক্ষুদিরাম বসু সম্পর্কে হেমচন্দ্র কানুনগো লিখেছেন যে ক্ষুদিরামের সহজ প্রবৃত্তি ছিলো প্রাণনাশের সম্ভাবনাকে তুচ্ছ করে দুঃসাধ্য কাজ করবার।তার স্বভাবে নেশার মতো অত্যন্ত প্রবল ছিলো সৎসাহস। আর তার ছিলো অন্যায় অত্যাচারের তীব্র অনুভূতি। সেই অনুভূতির পরিণতি বক্তৃতায় ছিলো না বৃথা আস্ফালনেও ছিলো না অসহ্য দুঃখ কষ্ট, বিপদ আপদ, এমনকি মৃত্যুকে বরণ করে প্রতিকার অসম্ভব জেনেও শুধু সেই অনুভূতির জ্বালা নিবারণের জন্য নিজ হাতে অন্যায়ের প্রতিবিধানের উদ্দেশ্যে প্রতিবিধানের চেষ্টা করবার ঐকান্তিক প্রবৃত্তি এবং সৎসাহস ক্ষুদিরাম চরিত্রের প্রধান বৈশিষ্ট্য ছিল।
তথ্যসূত্রঃ ইন্টারনেট
২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:০২
আমি মিন্টু বলেছেন: ধন্যবাদ বিজন রয় ভাই । ভালো থাকুন সর্ব সময় ।
২| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:২৩
বিজন রয় বলেছেন: এটাই সম্ভবত আপনার দেয়া সবচেয়ে ভাল পোস্ট।
???
২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:০৫
আমি মিন্টু বলেছেন: আমারো তাই মনে হচ্ছে । আবারও ধন্যবাদ ভাই ।
৩| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:৩৭
রেজওয়ানা আলী তনিমা বলেছেন: মোটামুটি নির্মোহ দৃষ্টিকোণ ও বেশ তথ্যবহুল একটি লেখা। অনেক ধন্যবাদ।
২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৪:০৯
আমি মিন্টু বলেছেন: ধন্যবাদ আপু ।
৪| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:০০
কালের সময় বলেছেন: আপনার পোস্ট থেকে অনেক কিছু জানা হল ।
২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ২:১৫
আমি মিন্টু বলেছেন: জানার জন্য ধন্যবাদ ভাই কালের সময়।
৫| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৫:২৭
মিজানুর রহমান মিরান বলেছেন: ক্ষুদিরাম সম্পর্কে আমার কৌতুহল অনেক। আপনার লেখা থেকে অনেক তথ্য পেলাম। ধন্যবাদ।
২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ২:১৭
আমি মিন্টু বলেছেন: আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ মিজানুর ভাই ।
৬| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১৮
এ কে এম রেজাউল করিম বলেছেন:
পাঠক পাঠিকাদের কাছে আমার জানতে ইচ্ছাঃ ক্ষুদিরাম-এর ফাঁসীর রায়ের মামলা্য এবং তার জীবন বাঁচানোর জন্য তখনকার দিনের নেতা চিত্তরঞ্জন দাস (দেশ বান্ধু) কোন ভূমিকা বা আগাইয়া আসেনি কেন ??????
২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ২:৫৩
আমি মিন্টু বলেছেন: ধন্যবাদ আপনাকে ।
৭| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ৯:১৪
প্রামানিক বলেছেন: অনেক মূল্যবান পোষ্ট। ধন্যবাদ
২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ২:৫৭
আমি মিন্টু বলেছেন: ধন্যবাদ প্রামানিক ভাই ।
©somewhere in net ltd.
১| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ বিকাল ৩:২২
বিজন রয় বলেছেন: ওহ! ক্ষুদিরাম আমার প্রতিটি রক্তকণিকায় অগ্নিস্ফুরণ!!
অসাম পোস্ট।
++++++