নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সৎ মানুষদের পছন্দ করি ! নিজে সৎ থাকার চেষ্টা করি !!!

আসছে নতুন প্রজন্ম , আসবে নতুন দিন !

আহমেদ আলিফ

তোমাকে একটি নতুন সকাল এনে দিবো ...

আহমেদ আলিফ › বিস্তারিত পোস্টঃ

জীবন কথা: পর্ব দশ ( ছোট বেলার তিনটি স্মৃতি )

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৩৪

আমার বয়স তখন পাঁচ/ছয়। আব্বার একটি পাঁচ ব্যাটারির বড় টর্চলাইট ছিলো। পোলাপান যাতে খেলতে গিয়ে ব্যাটারি হারিয়ে না ফেলে তাই দিনের বেলা ব্যাটারিগুলো মা আলমারিতে তালা দিয়ে রাখতেন, চাইলেও দিতেন না।



একদিন বিকেলে আমি বাহিরে খেলতে ছিলাম। হঠাৎ করে একটি বড় পিঁপড়া আমার চোখে এসে পড়ে, আমিতো চিৎকার। আমার সাথে যারা খেলতেছিলো তারাও দেখে আমার চোখে কোনায় একটি পিঁপড়ার অংশ দেখা যাচ্ছে । তাড়াতাড়ি মাকে খবর দেওয়া হলো । মা এসে আমাকে আদর করে কুলে বসিয়ে স্নেহমাখা স্বরে বললেন "চুপ করে কুলে বস, আমি পিঁপড়া বের করে দিচ্ছি"



মা'র আদর পেয়ে হঠাৎ আমার মাথায় বুদ্ধি এলো এখন যা চাবো তাই দেবে। তাই কান্নার সুর পাল্টে বলতে থাকলাম " ব্যাটারি দাও, ব্যাটারি নিবো, আমাকে ব্যাটারি দাও....;)" মা বুঝতে পারলেন আমি কি চাচ্ছি। মা বড় আপাকে আঁচল থেকে চাবি নিয়ে আলমারি থেকে ব্যাটারি আনতে বললেন।



আমি মনে মনে চাচ্ছিলাম ব্যাটারি আনার আগেই মা যেনো আমার চোখের পিঁপড়া বের করতে না পারে। অবশেষে বড় আপা ব্যাটারি এনে আমার হাতে দেয়। আমি অন্য চোখ খুলে ব্যাটারি গুলো দেখার চেষ্টা করি কিন্তু হায়, চোখের জলে দৃষ্টি ঝাপসা হবার জন্য আমার সাধের ব্যাটারিগুলো পষ্ট দেখে পাই নাই।/:):((





আর একটি স্মৃতি: তখন ছিলো শীতকাল। আমাদের ঘরে একটি কাঠের মিরসেফ ছিলো (এখনও আছি) । আমি ছোট ছিলাম বলে নিচের থাকে পা দিয়ে উপরের থাকের জিনিস খুঁজতাম। একদিন দুপুর বেলা কি জেনো খুঁজতে ছিলাম। মা উপরের থাকে নারিকেল তেল রোদে গরম করে গলিয়ে রেখেছিলেন। আমার অসাবধানের জন্য তেলের শিশিটা নিচে মাটির মেঝেতে পড়ে যায়।



আমারতো মাথায় হাত। কিন্তু আমি খেয়াল করে দেখলাম নারিকেল তেল ঠান্ডা মাটিতে পড়ে জমে সাদা হয়ে গেলো এবং দেখতে ফোঁটা ফোঁটা দুধের মত লাগছে। আমার মাথায় একটা বুদ্ধি আসলো । মা তখন রান্না ঘরে কাজ করছিলেন। তাড়াতাড়া মাকে গিয়ে বললাম "মা, কে জেনো তুমার দুধ ফেলে দিয়েছে";) (যেহেতু আমরা ভাই বোন অনেকটি ছিলাম)



মা বললেন "দুধ কোথায় পাবি, আজতো দুধ রাখিই নাই!" আমি বললাম না- তুমি দেখে যাও। আমার পীড়াপিড়িতে মা ঘরে এসে দেখেই বুঝতে পারলেন এটা দুধ না নারিকেল তেল। আর আমার পীড়াপীড়ি দেখে বুঝতে পারলেন তার কোন সন্তান এই কাজ করেছে।



কিন্তু আমাকে অবাক করে দিয়ে আমার মমতাময়ী মা সব বুঝেও না বুঝার ভান করলেন। আর আমি ভাবলাম আমার টেকনিক মনে হয় কাজে লেগেছে;)





আর একটি স্মৃতি মনে পড়লো: একবার কোথা থেকে যেনো আমি ফুটবলের ভিতরে থাকে রাবারের একটি ব্লাডার পাই। রাবার যে আগুনে ভালো জ্বলে এটা আমার পূর্ব অভিজ্ঞতা আছে। (এর আগে কারেন্টের পুরাতন তার ঝুলিয়ে আগুন ধরিয়ে দিতাম। ছপ ছপ করে নিচে প্লাষ্টিক গলে পরতো দেখতে খুব মজা পেতাম। একবার একটা ফোঁটা হাতে এসে পড়ে। যার দাগ এখনও আছে)



যাই হোক ব্লাডারটা কি করি! কি করি! চিন্তা করছিলাম। হঠাৎ মনে হলো ব্লাডারের সাথে যদি কেরোসিন মিশায় তাহলে এটা আরো ভালো জ্বলবে! তাই মিশালাম কেরোসিন। এখন এটা জ্বালাবো কোথায়? নিরাপদ হিসাবে রান্না ঘরের চুলাকে বেছে নিলাম। রান্না ঘরে গিয়ে দেখি মা চুলায় দুধের পাতিল বসিয়ে রেখেছেন।



চুলাতে হালকা আগুন ছিলই। ব্লাডারটা দিয়ে একটু ফুঁ দিতে আগুন ধরে উঠে এবং আমার ধারনার চাইতেও বেশি জুরে আগুন জ্বলতে থাকে। আমি এখন কি করি, আমি বুঝতে ছিলাম এখনই দুধ উথলে উঠে সব দুধ পরে যাবে ( এর আগে মা যখন দুধ গরম করতেন দুধ উথলে উঠলে জ্বাল কমিয়ে দিতেন বা পাতিল চুলা থেকে সরিয়ে নিতেন। আমি মাকে বলতাম "তুমার আধা পাতিল দুধ, যদি বেশি হয়ে উথলে পরে যায় যাক না। তুমার এক পাতিল থাকলেই তো হলো। মা বলতেন এই বেশি আসলে বেশি না। যখন দুধ আবার ঠান্ডা হবে দেখবি দুধ আগের চেয়ে আরও কমে গেছে)





কিছুক্ষণ অপেক্ষা করলাম, না দুধ তো উথলে পরে না । আসলে সেদিন মা অল্প ভাত রান্না করতে হবে বলে বড় ভাতের পাতিলে ভাত না বসিয়ে এই দুধের পাতিলে ভাত বসিয়েছিলেন। আগুনের তাপে উপরের ভাত সহ পুড়ে পাতিলও পুড়ে কালো হয়ে যায়। এই অবস্থা দেখে আমি আস্তে করে বাহিরে চলে আসি।



মা গোসল করে এসে দেখেন এই অবস্থা। কিন্তু কাকে কি বলবেন। তবে তার বিজ্ঞানী ছেলে যে এটা করতে পারে তা মনে হয় সন্দেহ করেছিলেন।





ছোটবেলার আর একটি স্মৃতি আমার বিজ্ঞান মনস্ক ছোটবেলা !



জীবন কথার সব লিখা এখানে

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৪০

সবুজ সংকেত বলেছেন: সুন্দর হয়েছে ৷

০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৪৩

আহমেদ আলিফ বলেছেন:
ধন্যবাদ!‍

২| ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ১১:৫১

আহমেদ আলিফ বলেছেন:
কতো কথা আজ মনে পড়ে হায় গরিব ঘরেতে তার!!
ছোট খাটো কতো বায়না ছেলের পরে নাই মিটাইবার!!


এই কবিতাটি কি কারো সংগ্রহে আছে? থাকলে প্লিজ শেয়ার করেন।
সম্ভবত জসিম উদ্দিনের পল্লী জননী কবিতা!

৩| ২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:৫৯

আদম_ বলেছেন: হাহাহাহাহাহাহাহাহাহাহাহা
ভীষণ মজাদার। আপনার এই অন্তরখোলা কথাবার্তা আমাকে সব সময় টানে।

২২ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ সকাল ৮:২৯

আহমেদ আলিফ বলেছেন:
আমার লেখার একজন ভক্ত আছে জেনে
আমার খুব ভালো লাগে...

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.