![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
তোমাকে একটি নতুন সকাল এনে দিবো ...
আমর দাদার ছিলো নাত-নাতনীর বিশাল বাহিনী । এর ভিতরে নিয়মিত বাহিনীতে (চার ছেলের ঘরের) আমার ১৪ জন সবসময় কাছে থাকতাম আর রিজার্ভ ফোর্সএ থাকতো ৬ জন (দুই ফুপু এক কাকার) যারা মাঝে মাঝে মূল বাহিনীতে যোগ দিতো। এতো গুলো নাত-নাতনীর প্রিয় দাদা হওয়া কিন্তু চারটে খানি কথা নয়। কথায় আছে দশের মুখ ছাই দিয়েও ভরাও কঠিন।
সারা বাংলাদেশের মত আমাদের এলাকাতেও শীতের সময় ওয়াজ-মাহফিল লেগেই থাকতো। দাদা ছিলেন হাজী মানুষ। প্রায় প্রত্যেক মাহফিলে যেতেন আর তবারক হাতে রাত ২টা ৩টার দিকে বাহিনীকে ডেকে জাগাতেন। বেশি ডাকতে হতো না, কারন দাদা মাহফিলে গেছে তাই আমরা ঘুমালেও আমাদের কান সজাগ থাকতো। তবারক হিসাবে প্রায়ই থাকতো মাংস দেওয়া খিচুরি। পারাপারি করে চেটেপুটে খেতে আহ কি স্বাদ....
আমি তখন প্রাইমারিতে পড়ি। একদিন ভাবলাম আমিও মাহফিলে যাবো, মাহফিল থেকে যখন তবারক নিয়ে ফিরবো দাদার মত আমাকেও সব ভাই-বোন ঘিরে ধরে তোয়াজ করবে কল্পনা করতেই বুকটা খুশিতে ফুলে উঠলো। দাদকে বললাম “ দাদা আমিও আপনার সাথে মাহফিলে যাবো ” দাদা বললো, না তুই ছোটো, শীতের রাত, এত রাত পর্যন্ত তুই জেগে থাকতে পারবি না। কিন্তু আমিতো নাছোড় বান্দা, ভাই-বোনদের সামনে হিরো হবার চান্সনতো আমি ছাড়তে চাচ্ছি না।
একদিন সম্পর্কে ভাই হয় (সোজা ভাই) এর সাথে মাহফিলে যাবো এটা আম্মাকে রাজি করিয়ে ফেললাম। মা প্রথমে রাজি ছিলেন না কিন্তু মাহফিলটা ছিলো বাড়ির কাছেই আর আমার এতো আগ্রহ দেখে আর না করতে পারলেন না। গেলাম মাহফিলে, মাহফিল সাধারণত সন্ধ্যার পরেই শুরু হলেও প্রথম দিকে স্থানীয় বক্তারা ওয়াজ করতে থাকলেন। রাত ১১টার পর আসলেন প্রধান বক্তা। রাতটাকে অনেক লম্বা মনে হচ্ছিলো। অবশেষে তিনি মোনাজাতের জন্য হাত তুললেন, আমি খুশি হলাম, কিন্তু না- তার লম্বা ওয়াজের মতা তার মোনাজাতও যে অনেক লম্বা। আমি ছোট মানুষ অতখন কি আর হাত তুলে রাখতে পারি! হাত নামিয়ে রাখলাম।
রাত ১২টার পর সবাই সারি ধরে বসলো। আমি বুঝলাম আমি আমার গন্তব্যে এসে গেছি। কলাপাতা হাতে দেওয়া হলো তার পর তাতে দেওয়া হলো বহু কাঙ্খিত সেই তবারক। কিন্তু একি এ যে পরিমানে অনেক কম আশেপাশের লোকেরা যতটা পেয়েছে আমি ছোট বলে তার চেয়েও কম দিয়েছে। এর থেকে আমি খাবো কতটুকু আর বাড়িতে নিয়ে ভাই-বোনদের সামনে পাঠই বা নিবো কতটুকু।
আসলে দাদা বসতেন আমন্ত্রিত অতিথিদের সাথে। সেখানে এমনিতেই বেশি পেতেন আর বাড়িতে নাত-নাতনী আছে বলে নিজের চেষ্টাতেও একটু বেশি নিয়ে আসতেন অপরদিকে আমি বসেছিলাম গন কাতারে তার মধ্যে আবার ছোট পোলাপান।
যাই হোক নিজের জিহ্বার চেয়ে ভাই-বোনদের সামনে হিরো হবার লোভ বেশি কাজ করলো। পুরোটা তবারক গামছায় বেঁধে বাড়ির দিকে চললাম। বাড়ি গিয়ে দেখি দাদাও এসে গেছে এবং যথারিতি দাদাকে ঘিরে পোলাপানদের চিল্লাপাল্লা। আমাকে দেখে আমার দিকেও এগিয়ে এলো কিন্তু গামছা খুলে তবারকের পরিমান দেখে হতাশ হলো আর আমি বুঝলাম অন্যকে একটু অনন্দ দেবার জন্য নিজেকে কতটা ছাড় দিতে হয়।
২| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:৩৭
ইমতিয়াজ ১৩ বলেছেন: ছাড়া দেয়ার মধ্যেই অনন্দ ।
১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৩
আহমেদ আলিফ বলেছেন:
"ছাড় দেয়ার মধ্যেই অনন্দ" ঠিক
কিন্তু ঐ বয়সে ছাড় দেওয়া একটু কঠিন.....
ধন্যবাদ!
৩| ১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৫:০৭
বঙ্গভূমির রঙ্গমেলায় বলেছেন:
আপনার দাদার প্রতি সালাম জানাই। আল্লাহ আপনার দাদাকে বেহেশত নসীব করুক।
১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৫:৩৪
আহমেদ আলিফ বলেছেন:
আমীন!
আপনাকে ধন্যবাদ!
©somewhere in net ltd.
১|
১৩ ই জানুয়ারি, ২০১৫ বিকাল ৩:৩৫
আহমেদ আলিফ বলেছেন:
আজ দাদা নেই, কিন্তু তার স্মৃতি আমাদের প্রেরণা হয়ে আছে!