![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি
জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক সমঝোতার আবশ্যকতা যখন বড় হয়ে উঠেছে ঠিক তখন প্রধানবিরোধী দল বিএনপির শীর্ষ নেতাদের কারাগারে পাঠিয়ে সরকার জনগণকে আরও হতাশ ও ক্ষুব্ধ করেছে। গতকাল পৃথক সাত মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক, স্থায়ী কমিটির সদস্য, ভাইস চেয়ারম্যান, যুগ্ম মহাসচিবসহ ১০ শীর্ষনেতার জামিন নামঞ্জুর করেকারাগারে পাঠায় নিম্ন আদালত। এদের অধিকাংশই উচ্চ আদালতের জামিনে থাকাঅবস্থায় নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেছিলেন। সাধারণত উচ্চ আদালত থেকে জামিন লাভের পর জামিনের অপব্যবহার না করলে নিম্ন আদালত জামিন দেয়—এটাই কনভেনশন। তার ওপর অভিযুক্তরা প্রধান বিরোধী দলের শীর্ষ পর্যায়ের প্রবীণ ও দায়িত্বশীল নেতা, যাদের মধ্যে সংসদ সদস্যও রয়েছেন। অথচ তাদের বিরুদ্ধেই হরতালে পুলিশের কর্তব্য কাজে বাধা, হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর, গাড়ি ভাংচুরসহ ককটেল বিস্ফোরণের মতো হাস্যকর অভিযোগে পুলিশ মামলা দায়ের করেছে। এসব অভিযোগের সত্যতা যাচাই নাকরে যেভাবে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে তাতে নিম্ন আদালতের স্বাধীনতা নতুন করে প্রশ্নবিদ্ধ না হয়ে পারে না।
তার চেয়ে বড় প্রশ্ন হচ্ছেপ্রধান বিরোধী দলের প্রতিক্ষমতাসীনদের এমন অকল্পনীয় প্রতিহিংসামূলকআচরণ আসন্ন জাতীয় নির্বাচন নিয়ে সৃষ্ট অনিশ্চয়তাই কি আরও গভীর করে তুলছে না? সম্মানজনক ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য যখন সংসদীয় গণতন্ত্রের সবপক্ষেরই সমঝোতার পথ গ্রহণকরা ছিল অপরিহার্য তখন সরকার বিরোধী দলকে ধ্বংস করার যে আত্মঘাতী পদক্ষেপনিয়েছে তা চলমান রাজনৈতিকসহিংসতাকেই আরও উস্কে দেবে, বলার অপেক্ষা রাখে না। শীর্ষস্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের এভাবে হামলা-মামলার শিকারে পরিণত করে আর যাই হোক গণতন্ত্র রক্ষা পাবে বলে বিশ্বাস করা কঠিন।
দেশজুড়ে সৃষ্ট অনিয়ন্ত্রিত সংঘাত-সহিংসতা যখন জনজীবনকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে, অর্থনীতির ধস ভয়াবহ করেছেতখন সরকারের দায়িত্ব ছিল পরিস্থিতি শান্ত ও স্বাভাবিক করাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দেয়া। এটা উপলব্ধি করার ক্ষমতা হারিয়ে উল্টো বিরোধী দলেরগুরুত্বপূর্ণ প্রায় সব নেতাকে কারাগারে পাঠিয়ে দেয়ার পেছনে যে ভিন্ন উদ্দেশ্য কাজ করছে সেটা বুঝতে কারও অসুবিধা হওয়ারকথা নয়। গণতন্ত্রের কফিনেপেরেক মারার এমন ঘটনা খুবকমই দেখা গেছে। এ অবস্থায়মুমূর্ষু গণতন্ত্র রক্ষায় দেশবাসীকেই এগিয়ে আসতে হবে। রাজনৈতিক আন্দোলনের সব পথ একে একে যেভাবে রুদ্ধ করে দেয়া হয়েছে তাতে মানুষের সামনেঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলা ছাড়া উপায় নেই। গণতন্ত্রবিনাশী অপশক্তিকে যথাযথভাবে মোকাবিলা করতে না পারলে অন্ধকার ভবিষ্যত্ আমাদের সামনে অপেক্ষা করছে।
©somewhere in net ltd.