নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সমৃদ্ধ আগামীর প্রত্যেয়

আনিসুর রহমান এরশাদ

আমি আমার দেশকে অত্যন্ত ভালবাসি ।

আনিসুর রহমান এরশাদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

সমুদ্র বিজয়: একটি বিশ্লেষণ

২৫ শে মে, ২০১২ সন্ধ্যা ৬:৫৪

শেখ হাসিনার ‘বঙ্গোপসাগর জয়’ উপলক্ষে তাকে অনেক জৌলুসপূর্ণ সংবর্ধনার এক হুলুস্থুল অবস্থা বঙ্গকন্যাকে সমুদ্রকন্যা বানায়ে ফেলেছে।এ ধরনের সীমানা নির্ধারণ এক প্রচলিত ব্যাপার। কিন্তু এর আগে কোনো দেশকেই একে সমুদ্র জয় হিসেবে আখ্যায়িত করে বিজয় উত্সব পালন করতে দেখা যায়নি। ১৯৫৮ সালের আগ পর্যন্ত সমুদ্র সংক্রান্ত কোনো আইন ছিল না। ১৯৫৮ সালে সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় প্রথমবারের মতো চারটি কনভেনশন বা সনদ গ্রহণ করা হয়। এগুলো হচ্ছে রাষ্ট্রীয় সমুদ্র ও নিকটস্থ অঞ্চলবিষয়ক কনভেনশন, উন্মুক্ত সমুদ্রবিষয়ক কনভেনশন, মহীসোপান বিষয়ক কনভেনশন ও মৎস্য শিকার ও প্রাণিজসম্পদ রক্ষণাবেক্ষণ বিষয়ক কনভেনশন। এসব কনভেনশন পরে অনেক রাষ্ট্রের অনুমোদন পেয়ে আন্তর্জাতিক আইনে পরিণত হয়। জার্মানির হামবুর্গভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল ট্রাইব্যুনাল ফর দ্য ল অব দ্য সির (আইটিএলওএস) বিচারক হোসে লুই জেসাস এর দেয়া রায় এসব আন্তর্জাতিক আইনের আলোকেই হয়েছে।



সমুদ্র বিজয়ের (!) প্রেক্ষাপট:

ট্রাইব্যুনালে যাওয়ার সিদ্ধান্তটি সঠিক : তিনভাবে সমুদ্রসীমার বিরোধ নিষ্পত্তি হয়ে থাকে। প্রসঙ্গত, সমুদ্র আইনবিষয়ক আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল, দ্বিতীয় আন্তর্জাতিক আদালত ও তৃতীয়ত আরবিট্রয়াল ট্রাইব্যুনাল। ভারত প্রথম দুটাতে আগেই আপত্তি দেয়ায় ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমা নির্ধারণে আমাদের তৃতীয় অপশনে যেতে হয়েছে। এখন মিয়ানমারের সঙ্গে বিরোধ নিষ্পত্তিতে ন্যায়পরায়ণতার (বা ইকুইটি) দাবি স্বীকৃত হওয়ায় ধারণা করছি ভারতের সঙ্গেও বিরোধ নিষ্পত্তিতে এ দাবি টিকে যাবে। ভারত ও মিয়ানমার প্রথম থেকেই 'ইকোডিসটেন্স' বা সমদূরত্বের কথা বলে আসছিল। এ দাবি মেনে নেয়া হলে বঙ্গোপসাগরের ওপর যথাক্রমে দক্ষিণ-পশ্চিম ও দক্ষিণ পূর্ব দিকে দুটি সীমারেখা টানা হতো। এর ফলে বাংলাদেশ সমুদ্র অঞ্চলের ওপর তার অধিকার হারাত। বাংলাদেশ চেয়েছে 'সমতা ও ন্যায়পরায়ণতার' ভিত্তিতে একটি সমাধান। এ পদ্ধতিতে সোজা দক্ষিণ দিকে এ সীমারেখা টানতে হবে। ট্রাইব্যুনালে বাংলাদেশের এ দাবিকে স্বীকৃতি দিল। বাংলাদেশ যদি মিয়ানমারের দাবি অনুযায়ী 'সমদূরত্বর' দাবি মেনে নিত, তাহলে বাংলাদেশের ৪৮ হাজার ২৫ বর্গ কিলোমিটার এলাকা মিয়ানমারের হাতে চলে যেত। একইসঙ্গে ৩১ হাজার ৭৪৩ বর্গ কিলোমিটার এলাকা চলে যেত ভারতের হাতে। ফলে সমুদ্রের যে বিশাল সম্পদ সেই সম্পদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হতো বাংলাদেশ। তাই ট্রাইব্যুনালে যাওয়ার সিদ্ধান্তটি তখন সঠিক বলেই বিবেচিত হবে।



সমুদ্রসীমাটা কোত্থেকে শুরু তা নিয়ে বিরোধ: আন্তর্জাতিক সমুদ্র আইনে একে বিশেষ পরিস্থিতি বলা হয়েছে। সমুদ্র সম্পদে পরিপূর্ণ হলে আন্তর্জাতিক আইনে সমুদ্রের ওপর নির্ভরশীল রাষ্ট্রের অগ্রাধিকার বেশি থাকে। তবে এখানে সমুদ্রসীমাটা কোত্থেকে শুরু হয়েছে, এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ও ভারতের ব্যাখ্যা ভিন্ন ভিন্ন। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে আন্তর্জাতিক নদী হাড়িয়াভাঙ্গার মধ্য স্রোত হবে বাংলাদেশের সীমানা। অন্যদিকে ভারত চাইছে রায়মঙ্গল, যমুনা এবং হাড়িয়াভাঙ্গা নদীগুলো বঙ্গোপসাগরে গিয়ে যেখানে মিশেছে, সেখানে গভীর চ্যানেলের কোনো এক জায়গায় সীমানা নির্ধারণ হোক। তবে বাংলাদেশের যুক্তি- রায়মঙ্গল ও যমুনা অভ্যন্তরীণ নদী। সমুদ্রসীমা শুরুর পয়েন্ট নিয়ে বিরোধ থাকায়, ভারত দক্ষিণ তালপট্টি দ্বীপকে নিজের বলে দাবি করে আসছে। ২০০৯ সালের ২৯ জুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি সংসদকে জানিয়েছিলেন যে ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে ২৮ হাজার ৪৭৬ বর্গ নটিক্যাল মাইল অমীমাংসিত সীমান্ত রয়েছে। এখানে ভারতের দাবি ৮ হাজার ৭১৪ বর্গ নটিক্যাল মাইল ও মিয়ানমারের দাবি ১৯ হাজার ৭০২ বর্গ নটিক্যাল মাইল। সম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশ সমুদ্রে গ্যাস ব্লক (৫, ১০ ও ১১) ইজারা দিতে গেলে ভারত (৫ ও ১০) এবং মিয়ানমার (১১) একযোগে আপত্তি তোলে। শুধু তাই নয় গভীর সমুদ্রে বাংলাদেশের ২৮টি ব্লকের মাঝে ভারতের দাবি রয়েছে ১০টিতে, আর মিয়ানমারের দাবি ১৭টিতে। বাংলাদেশের গভীর সমুদ্র ব্লক ১৩, ১৭, ১৮, ২২, ২৩, ২৭ ও ২৮ এর ভেতর মিয়ানমারের গভীর সমুদ্র ব্লক এডি-৭, এডি-৮, এডি-৯ ও এডি-১০ ঢুকে পড়েছে। ২০০৮ সালের নভেম্বরে মিয়ানমার এডি-৭ (বাংলাদেশের ব্লক ১৩) ব্লকে গ্যাস অনুসন্ধান চালাতে গেলে (কোরিয়ার দেওউ কোম্পানি) দু'দেশের নৌবাহিনী পরস্পর পরস্পরের মুখোমুখি হয়েছিল। আমাদের সমুদ্র অঞ্চল নানা ধরনের খনিজ পদার্থ ও গ্যাস সম্পদে ভরপুর। বাংলাদেশের তার উপকূল থেকে ১২ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ নৌসীমা রয়েছে।



আন্তর্জাতিক সালিসি আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত : বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর ২০০৯ সালের ৮ অক্টোবর আন্তর্জাতিক সালিসি আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এরই ধারাবাহিকতায় সমুদ্র আইনবিষয়ক জাতিসংঘের কনভেনশন (আনক্লস) মেনেই বাংলাদেশ জার্মানির হামবুর্গে অবস্থিত ইটলসে যায়। ১৪ ডিসেম্বর ২০০৯ সালে ইটলসে মামলা দাখিল করে বাংলাদেশ। ২০১০ সালের ১ জুলাই বাংলাদেশ নিজের পক্ষে সব দালিলিক প্রমাণ আদালতে উপস্থাপন করে। আর মিয়ানমার তাদের প্রমাণ জমা দেয় সে বছরের ১ ডিসেম্বর। মিয়ানমারের দাবির বিপক্ষে বাংলাদেশ বক্তব্য উপস্থাপন করে ২০১১ সালের ১৫ মার্চ। বাংলাদেশের যুক্তির বিপক্ষে মিয়ানমার তাদের বক্তব্য তুলে ধরে ২০১১ সালের ১ জুলাই।গত বছরের ৮ থেকে ২৪ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ও মিয়ানমার দুই দফায় মৌখিক শুনানিতে নিজেদের পক্ষে দাবিগুলো তুলে ধরে। ট্রাইবু্যনালে বাংলাদেশের পক্ষে আইনি লড়াই করার জন্য ব্রিটিশ নাগরিক ও আন্তর্জাতিক আইন বিশেষজ্ঞ ভন লুই কিউ সি-কে আর্বিট্রেটর হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়। মিয়ানমার সরকারও বাংলাদেশের বিপক্ষে আইনি লড়াইয়ে ভারতীয় নাগরিক বিচারপতি চন্দ্র শেখর রাওকে আর্বিট্রেটর হিসেবে নিয়োগ দেয়।



আন্তর্জাতিক সালিসি আদালতের চূড়ান্ত রায়: জার্মানির হামবুর্গে ইন্টারন্যাশনাল ট্রাইব্যুনাল ফর ল অব দ্যা সি’র (ইটলস) বিচারক ট্রাইব্যুনালের প্রধান জোসে লুই জেসাস বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে ৫টায় রায় পাঠ শুরু করেন। রাত পৌনে আটটার দিকে তার রায় দেয়া শেষ হয়। এ সময় বিচারক ১৫১ পৃষ্ঠার রায় পড়ে শোনান। রায়ে দেখা যায়, বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের উপকূল রেখায় মোট ১১টি ভিত্তিবিন্দু ধরা হয়েছে। বাংলাদেশের অংশের ভিত্তিবিন্দুগুলো থেকে ২০০ নটিক্যাল মাইলের বেশি সীমানা বাংলাদেশ কোন কোন অংশে পাবে তার বিবরণ দেয়া হয় রায়ে। এর আগে বাংলাদেশের মামলার পরিপ্রেক্ষিতে দুই দেশের তরফে গত বছর শুনানি শেষে রায়ের জন্য এ দিন ধার্য করেছিল আইটিএলওএস। ১৯৯৪ সালের ১৬ নবেম্বর কার্যকর হওয়ার পর থেকে আইটিএলওএসে দায়েরকৃত ১৬তম মামলা হচ্ছে বাংলাদেশ-মিয়ানমার মামলা। এ ঐতিহাসিক মামলার শুনানিতে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের প্রধান হিসেবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি এবং মিয়ানমার প্রতিনিধি দলের প্রধান হিসেবে সে দেশের এ্যাটর্নি জেনারেল ড. তুন শিন উপস্থিত ছিলেন।



[b]রায় নিয়ে আওয়ামীলীগের কমর্কান্ড : বিভ্রান্তির সম্ভাবনা[/b]

জার্মানির হামবুর্গে ইন্টারন্যাশনাল ট্রাইব্যুনাল ফর ল অব দ্যা সি’র (ইটলস) বিচারক হোসে লুই জেসাস ১৫১ পৃষ্ঠার ৫০৬ অনুচ্ছেদসংবলিত এই রায় পড়ে শোনান। মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা বিরোধ সংক্রান্ত এই মামলাটি ছিল আন্তর্জাতিক আদালতের ১৬তম মামলা। মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা বিরোধ নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন আন্তর্জাতিক সমুদ্র আইন বিশেষজ্ঞ থমাস মেনসাহ এবং মিয়ানমারের পক্ষে মামলা পরিচালনা করেন অধ্যাপক বার্নার্ড এইচ অক্সম্যান। এই মামলায় সারা বিশ্ব থেকে ২৩ জন বিচারক নিয়োগ করা হয়। বিচারকরা সর্বসম্মত রায় দিলেও কয়েকজন বিচারক কয়েকটি বিষয়ে ভিন্নমত পোষণ করেন বলে জানায় এএফপি। রায় ঘোষণা করে বিচারক প্যানেলের জার্মান বিচারক রুডগার উলফ্রাম বলেন, ‘উভয় পক্ষই কিছুটা পেয়েছে এবং কিছুটা হারিয়েছে।’ অথচ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেন,এটি বাংলাদেশের জন্য আনন্দ এবং গৌরবের। বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, রায়ের পর প্রতিক্রিয়ায় দীপু মনি বলেন, এর ফলে ‘উভয় পক্ষ জয়ী হয়েছে।’



অভূতপূর্ব বিজয় ঘোষণা: বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরা ও সাগরের তলদেশে তেল-গ্যাসসহ খনিজ সম্পদের ওপর বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যেকার অধিকার নিয়ে বিবাদের মীমাংসার জন্য আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে বাংলাদেশ সরকার ২০০৯ সালে মামলা দায়ের করেছিল। এই মামলার রায়ে মিয়মানমার সরকার সন্তোষ প্রকাশ করলেও বাংলাদেশ একে আখ্যায়িত করেছে সমুদ্র জয়,বাংলাদেশের অভূতপূর্ব বিজয় হিসেবে। অথচ উপকূলবর্তী দেশগুলোর সমুদ্রসীমা নির্ধারণের জন্য সুনির্দিষ্ট আইন আছে। বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের দাবির যথার্থতা বিচার করে এই আইন অনুযায়ীই ট্রাইব্যুনাল রায় দিয়েছেন। কাজেই এই রায় দ্বারা কোনো দেশের জয় হওয়ার প্রশ্ন ওঠে না।



বাড়ছে বিভ্রান্তির সম্ভাবনা: ২৮ এপ্রিল সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় এক বিরাট মঞ্চ তৈরি করে প্রধানমন্ত্রীর সংবর্ধনার আয়োজন হলো। গত ১৪ মার্চ মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমাবিষয়ক আন্তর্জাতিক আদালতের রায়ে বঙ্গোপসাগরে এক লাখ ১১ হাজার ৬৩১ বর্গকিলোমিটারের ওপর বাংলাদেশ অধিকার লাভ করে। আন্তর্জাতিক ট্রাইবুন্যাল ইটলস-এর রায়ে প্রতিবেশী মিয়ানমারের সঙ্গে বিরোধপূর্ণ এই বিশাল সমুদ্র এলাকায় বাংলাদেশের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়। ১৪ মার্চ আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনালে (ইটলস) সমুদ্রসীমা বিরোধের রায় বাংলাদেশের পক্ষে যাওয়ার পর যেভাবে প্রশংসার ঝড় সর্বত্র বয়ে যাচ্ছে,তাতে বিভ্রান্ত হওয়ার একটা বড় ধরনের সম্ভাবনা রয়েছে।



সমস্যার সমাধান কতটুকু হয়েছে? আমরা সমুদ্রসীমা নির্ধারণ না করেই সমুদ্রে গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য ২৮টি ব্লকে ভাগ করেছিলাম এবং বিদেশি কোম্পানিগুলোর সঙ্গে বস্নক বণ্টনের ব্যাপারে আলোচনা ও বস্নক বণ্টন (কনকো ফিলিপ ও তুল্লো) শুরু করে দিয়েছিলাম। ফলে আপত্তি উঠেছিল মিয়ানমার ও ভারতের কাছ থেকে। যে কারণে আমরা বাধ্য হয়েছিলাম হামবুর্গের ট্রাইব্যুনাল ও হেগের আন্তর্জাতিক আদালতে যেতে। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে আমরা যা চেয়েছিলাম, তার চেয়ে বেশি পেয়েছি। এতে সব প্রশ্নের সমাধান হয়েছে, এটা জোর দিয়ে বলা যাবে না। যেমন, যে ২৮টি ব্লক আমরা নির্ধারণ করেছি, তার সব কটাতে আমাদের অধিকার রক্ষিত হবে কিনা বলা মুশকিল। কেননা ইটলস এ বাংলাদেশ যেসব ম্যাপ উপস্থাপন করেছে কিংবা নটিক্যাল চার্ট ও আনক্লজ-৩ এর বিভিন্ন সূত্র ব্যবহার করে বিশ্লেষণ করার পরই বোঝা যাবে বাংলাদেশের অধিকার ওই ২৮টি বস্নকে কতটুকু রচিত হয়েছে। তবে জার্মানির কোনো কোনো সংবাদপত্র আভাস দিয়েছে ওই রায়ে বাংলাদেশের পাশাপাশি মিয়ানমারও লাভবান হয়েছে।



রায়ের ফলে আসলে কারা লাভবান হলো?

আমেরিকান তেল কোম্পানিগুলো: সমুদ্রযুদ্ধে বাংলাদেশের জয় অর্থাত্ তার সীমানা নির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত হওয়ায় আসল লাভ হয়েছে সাম্রাজ্যবাদীদের, আমেরিকানদের, তাদের তেল কোম্পানিগুলোর। তেল কোম্পানি তাল্লো এবং কনোকো ফিলিপসকে বাংলাদেশ গ্যাস উত্তোলনের ইজারা দিয়েছে। কিন্তু জলসীমা নিয়ে বিবাদ থাকায় বাংলাদেশের এ কাজ আইনসিদ্ধ ছিল না। এখন সীমানা চিহ্নিত হওয়ার ফলে বাংলাদেশের সীমানার মধ্যে ইজারাপ্রাপ্ত তেল-গ্যাস কোম্পানিগুলো পরম নিশ্চিন্তে গ্যাস উত্তোলনের কাজ এগিয়ে নিতে পারবে।



আওয়ামী লীগ: বিবাদ নিষ্পত্তির কাজটি করেছে বৈদেশিক মন্ত্রণালয়ের সমুদ্র ডেস্ক। এ কাজ করতে গিয়ে কারও ওকালতির কোনো প্রয়োজন হয়নি। সমুদ্রে গ্যাস কোম্পানিগুলোর ইজারা কার্যকর করার তাগিদই এক্ষেত্রে কাজ করেছে। এখন এর ফলে ইজারা থেকে শত শত কোটি আইনি-বেআইনি ডলার লেনদেন হবে। আওয়ামী লীগের আগামী নির্বাচনের খরচও এর থেকে তোলার ব্যবস্থা হবে। আওয়ামী লীগের সমুদ্র বিজয় উত্সবের এটাই হলো মূল কারণ।



লাভবান হয়েছে মায়ানমার: মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা মামলার রায়ে বাংলাদেশ হারিয়েছে বেশি। সমুদ্রসীমা নির্ধারিত হওয়া ছাড়া সবক্ষেত্রেই হেরেছে দেশটি। মিয়ানমারের সব দাবিকেই প্রাধান্য দিয়েছে আন্তর্জাতিক আদালত। এক্সক্লুসিভ ইকোনমিক জোনের একটি বড় অংশ হারিয়েছে বাংলাদেশ। সমুদ্রে তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে নির্মিত ছয়টি ব্লক পুরোপুরি হাতছাড়া হয়ে গেছে। আরও চারটি ব্লকের আংশিক পেয়ে গেছে মিয়ানমার। এতে সমুদ্রে সম্ভাব্য তেল-গ্যাসের এক-তৃতীয়াংশ হারাল বাংলাদেশ। ২০০ নটিক্যাল মাইল সমুদ্রসীমা প্রাপ্তির মাঝেও রয়েছে শুভঙ্করের ফাঁকি। সেন্টমার্টিন ইউনিয়নকে দেশটির ভূখণ্ডের মূল সীমানার বাইরে ধরেই সমুদ্রসীমার হিসাব করা হয়েছে। টেকনাফকে সর্বশেষ সীমানা ধরে ২০০ নটিক্যাল মাইল সমুদ্রসীমা দেয়া হয়েছে বাংলাদেশকে। ইন্টারন্যাশনাল ট্রাইব্যুনাল ফর দ্য ল’ অব দ্য সি (ইটলজ)-এর বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের সমুদ্রসীমা বিষয়ক বিরোধ নিষ্পত্তির রায় পর্যালোচনায় এসব তথ্য পাওয়া গেছে।



রায় পরবর্তী বাংলাদেশ; করণীয়

মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করা : হামবুর্গের এ ট্রাইব্যুনালের রায় আমাদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেননা বাংলাদেশের তিনিটি দাবি ছিল। এগুলো হলো ১২ নটিক্যাল মাইল রাষ্ট্রীয় স্বতন্ত্র সাগর এলাকা(টেরিটোরিয়াল সি), ২০০ নটিক্যাল মাইল নিবিড় অথনৈতিক এলাকা(ইইএজড) এবং বধিত মহীসোপান (আউটার কনটিনেন্টাল শেলফ)। এছাড়াও ধারণা করা হয় গভীর সমুদ্রে বাংলাদেশের এলাকায় ১৮ বিলিয়ন ব্যারেল তেল ও ২০০ ট্রিলিয়ন কিউসিক ফিট প্রাকৃতিক গ্যাস মজুদ রয়েছে। বাংলাদেশ যে বড় ধরনের জ্বালানি সঙ্কটের মুখোমুখি পড়তে যাচ্ছে, এ রিজার্ভে আমাদের জন্য একটা সমাধান বয়ে আনতে পারে। বাংলাদেশ সরকারের ভূমিকা তাই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আত্মতুষ্টিতে না ভুগে বাস্তবতার নিরিখে মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নত করা এই মুহূর্তে জরুরি। বড় ধরনের জ্বালানি সঙ্কটের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে বাংলাদেশকে আজ প্রয়োজনে যৌথ উদ্যোগে গ্যাস, তেল ও খনিজ সম্পদ আহরণের উদ্যোগ নিতে হবে। আমাদের সীমানায় তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানে বিদেশি কোম্পানির সঙ্গে পিএসসি ২০০৮ এর অধীনে চুক্তি করলেও তাতে যেন বাংলাদেশের স্বার্থ রক্ষিত হয়, সে বিষয়টি নিশ্চিত করা জরুরি।

আমাদের জাতীয় স্বার্থে মিয়ানমার আমাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মিয়ানমারের সঙ্গে সম্পর্ক বৃদ্ধিতে চট্টগ্রাম-মিয়ামারের কাঁচামালভিত্তিক ব্যাপক শিল্প-কারখানা স্থাপিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কৃষিনির্ভর মিয়ানমারে বাংলাদেশি সারের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। মিয়ানমার সীমান্ত সংলগ্ন চট্টগ্রাম এলাকায় দ্রুত বেশ কিছু সার কারখানা স্থাপন করে বাংলাদেশ মিয়ানমারে সার রফতানি করতে পারে। মিয়ানমারের আকিয়াব ও মংডুর আশপাশের অঞ্চলে প্রচুর বাঁশ, কাঠ ও চুনাপাথর পাওয়া যায়। এসব কাঁচামালের ওপর ভিত্তি করে চট্টগ্রাম অঞ্চলে সিমেন্ট ও কাগজ শিল্প বিকশিত হতে পারে। মিয়ানমারের মাইআউংমিয়া দ্বীপে প্রায় ৪০ মিলিয়নের বেশি মেট্রিক টন চুনাপাথর রয়েছে। এই দ্বীপটি আকিায়ব বা সিটওয়ে থেকে আরো দক্ষিণ-পশ্চিমে অবস্থিত। আর সিটওয়ে-ইয়াঙ্গুন হাইওয়ের পথ ধরে সামনে এগুলেই ইয়েউমা পাহাড় শ্রেণী, যেখানে রয়েছে পৃথিবীর বৃহত্তম বাঁশঝাড়। আয়তনে সাড়ে সাত হাজার বর্গমাইল। বাংলাদেশ এই বাঁশ আমদানি করতে পারে অথবা বাঁশের মন্ডও আমদানি করা সম্ভব। মিয়ানমারে প্রচুর জমি অনাবাদি রয়েছে। এ অবস্থায় মিয়ানমারের ভূমি লিজ নিয়ে বাংলাদেশের জন্য চাল উৎপাদনের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা যেতে পারে। অতীতে জমি লিজ দেয়ার ব্যাপারে মিয়ানমার আগ্রহ দেখিয়েছিল। কিন্তু এ ব্যাপারে তেমন অগ্রগতি হয়নি। এটা কার্যকর করা গেলে ইরাবতির দুকূলজুড়ে উর্বর শস্যক্ষেত বাংলাদেশি কৃষকরা সেনার ফসলে ভরে দিতে পারবে। আর সহজেই এ ফসল বাংলাদেশে বহন করা যাবে ঘুমধুমমুসে হাইওয়ে ধরে। মান্দালয়-ম্যাগাওয়ের তুলা আমদানি করে বাংলাদেশ ভারতের ওপর থেকে তুলার নির্ভরতা কমিয়ে আনতে পারে। সাম্প্রতিক সময় ভারত থেকে তুলা আমদানি নিয়ে কিছুটা জটিলতার সৃষ্টি হয়েছিল। মিয়ানমারের এ অঞ্চল ভুট্টা চাষের জন্যও উপযুক্ত। গবাদিপশু আমদানি করার সম্ভাবনাও রয়েছে। মিয়ানমারে রয়েছে প্রচুর রফতানিযোগ্য গবাদিপশু। বাংলাদেশ যৌথ উদ্যোগে মিয়ানমারে গবাদিপশুর খামারও গড়ে তুলতে পারে, যাতে করে আমরা ভারতনির্ভরতা হ্রাস করতে পারি। মিয়ানমারের সেগুন কাঠ পৃথিবী বিখ্যাত। আমাদের বিকাশমান ফার্নিচার শিল্পের প্রয়োজনে আমরা মিয়ানমার থেকে সহজে মূল্যবান কাঠ আমাদনি করতে পারি, যা কি-না আমরা মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপে রফতানি করতে পারব। চাল, ডাল, ছোলা, আদা, পেঁয়াজ, রসুনসহ নানা জাতের মসলা মিয়ানমার থেকে আরো সহজে আমাদনি করা যাবে সড়ক যোগাযোগ স্থাপিত হলে। ব্যাংকক বা সিঙ্গাপুর হয়ে হাজার হাজার পর্যটক মান্দালয়, কাম্পেইন ও ইয়াঙ্গুন ভ্রমণ শেষে মায়োহং আসেন। বর্তমানে এই পর্যটকরা মায়োহং থেকে পুনরায় ইয়াঙ্গুনে ফিরে যেতে বাধ্য হন। মায়োহং থেকে তাদেরকে কক্সবাজার, চট্টগ্রাম ও পার্বত্য চট্টগ্রামে ভ্রমণের ব্যবস্থা করা যায়। কেননা অনেক পর্যটকই আর একই পথে ইয়াঙ্গুনে ফিরে যেতে চান না। বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্কের পরিপ্রেক্ষিতে অদূর ভবিষ্যতে ভারত-মিয়ানমার গ্যাস পাইপলাইন প্রজেক্টের সম্ভাবনা উজ্জ্বল, যা মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশের ওপর দিয়ে ভারতে গ্যাস রফতানির পরিকল্পনা নির্দেশ করে। এই পাইপলাইন প্রজেক্টের মাধ্যমে বাংলাদেশে মিয়ানমারের গ্যাস রফতানিও সম্ভব (মোহনা হোল্ডিংস এ ধরনের একটি প্রস্তাব করেছিল ১৯৯৬ সালে)। মিয়ানমারের কালাদান মাল্টিমুডাল রিভার প্রজেক্ট থেকেও বাংলাদেশ উপকৃত হতে পারে।



প্রাকৃতিক সম্পদকে যথাযথভাবে কাজে লাগানো: আমাদের উচিত হবে সমুদ্র অঞ্চলে তৈল, গ্যাসসহ অন্যান্য সম্পদ আহরণের ক্ষেত্রে এ বিষয়টিতে বিশেষভাবে নজর দেওয়া। বাংলাদেশে প্রাকৃতিক সম্পদের ঘাটতি রয়েছে। সমুদ্রে যে বিপুল পরিমাণ প্রাকৃতিক সম্পদ রয়েছে, তা দ্রুত উত্তোলন করে দেশের সার্বিক উন্নয়নে কাজে লাগানোর সিদ্ধান্ত নেয়া দরকার। দ্রুত সময়ে বিরোধ নিষ্পত্তি করে সমুদ্রে খনিজ সম্পদ আহরণ করে তা দেশের উন্নয়নে কাজে লাগানোর মধ্যেই কল্যাণ।



জরিপ চালানো: আমাদের এই মুহূর্তে যা প্রয়োজন তা হচ্ছে, ওই রায়কে সামনে রেখে জরিপ চালানো। কেননা গভীর সমুদ্রে জলরাশিতে যেমনি রয়েছে প্রচুর মৎস্যসম্পদ ঠিক তেমনি সমুদ্রের তলদেশে রয়েছে প্রচুর খনিজ সম্পদ। বলা হয় কপার, ম্যাগনেসিয়াম, নিকেল ও কোবাল্টের মতো খনিজ সম্পদ রয়েছে সমুদ্র তলদেশে।



দক্ষ জনশক্তি আমাদের গড়ে তোলা: এই সম্পদ আহরণের জন্য দক্ষ জনশক্তি আমাদের গড়ে তুলতে হবে। দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার জন্য সমুদ্রের কাছাকাছি বরিশালে একটি মেরিন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করাও জরুরি। বেশ কটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সমুদ্রবিদ্যা বিষয়টি চালু করা যেতে পারে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এই বিষয়টি রয়েছে। এই বিভাগকে (ইনস্টিটিউট) আরো আধুনিক করা প্রয়োজন। সেই সঙ্গে সাগরঘেঁষা পটুয়াখালী বিশ্ববিদ্যালয়েও এই বিভাগটি চালু করা যেতে পারে।



প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ: অত্যাধুনিক কোনো জরিপ জাহাজ বাংলাদেশের হাতে নেই। এটা সংগ্রহ করা জরুরি হয়ে পড়েছে এখন। বাংলাদেশের সমুদ্রসীমায় মারাত্মক পরিবেশ দূষণ হয়। বিদেশি জাহাজ আমাদের সমুদ্রসীমায় দূষিত পদার্থ ফেলে চলে যায়। ফলে মৎস্যসম্পদ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বাংলাদেশ। দ্বিতীয়ত, বিদেশি মাছ ধরা জাহাজ আমাদের এলাকায় মাছ ধরে চলে যায়। এ জন্য নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ডের জনবল বাড়ানো প্রয়োজন।



সমুদ্র সংক্রান্ত রায় প্রসঙ্গে নানাধরনের বক্তব্য এসেছে। অধ্যাপক ড. মো. আবদুর রব বলেছেন,মিয়ানমারের সঙ্গে সমুদ্রসীমা নিষ্পত্তিতে আমরা মোটেই লাভবান হইনি বরং ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছি। আন্তর্জাতিক আদালতের রায়ে বাংলাদেশের মূল দাবিকৃত বিপুল সমুদ্রাঞ্চল পেয়েছে মিয়ানমার। ফলে মিয়ানমার তার দাবিকৃত মহীসোপানের হাইড্রো-কার্বনসমৃদ্ধ (গ্যাস ও খনিজ তেল) বেশিরভাগ ব্লকের মালিকানা পেয়েছে। পক্ষান্তরে বাংলাদেশ দূরবর্তী গভীর সমুদ্রের তুলনামূলকভাবে কম সম্ভাবনাময় অঞ্চলেই এক্সক্লুসিভ ইকোনমিক জোনের মালিকানা পেয়েছে। অন্যদিকে মিয়ানমারের সঙ্গে যেভাবে বাংলাদেশ সমুদ্রসীমানা নিয়ে জয়লাভ করছে, একই ভাবে ভারতের সঙ্গেও জয়লাভ করবে বলে অনেক বিশেষজ্ঞ অভিমত দিয়েছেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম ‘শুভঙ্করের ফাঁকি’ আবিষ্কার ও ‘বিসর্জনের’ তালিকা প্রকাশের দাবি করেছেন। ড. মোশাররফ হোসেন প্রেসক্লাবে মিয়ানমারের কাছে ‘ঠকে আসার’ তত্ত্ব হাজির করেছেন। ফলে সরকার ও বিরোধী দলের বিপরীতমুখী বিশ্লেষণ জনমানসকে বিভ্রান্ত করছে।





তথ্যসূত্র:

http://www.shokalerkhabor.com/

কিসের সমুদ্র জয়? ব দ রু দ্দী ন উ ম র

http://tsrahmanbd.blogspot.com/

দৈনিক ডেসটিনি,৪ এপ্রিল ২০১২

বাংলাদেশের সমুদ্র জয় অধ্যাপক ড. তারেক শামসুর রেহমান

http://www.kalerkantho.com/

http://www.banglanews24.com/

বাংলাদেশের সমুদ্র জয় ও প্রিন্সিপাল অব ইক্যুইটি ইমদাদুল হক

http://www.dailysangram.com/

http://www.dailynayadiganta.com/

http://jugantor.us/enews/issue/

http://www.amardeshonline.com/

http://www.bd-pratidin.com/

http://www.dailyjanakantha.com/

http://www.amardeshonline.com/pages/

http://sorejomin.com

http://www.kalerkantho.com/

http://www.sonarbangladesh.com/

http://www.prothom-alo.com/detail/

বাংলাদেশের সমুদ্র জয় যেতে হবে অনেক দূর, ড. তারেক শামসুর রেহমান. সুত্র যায় যায় দিন০৩/০৪/১২

http://www.somewhereinblog.net/blog

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে মে, ২০১২ সন্ধ্যা ৭:১১

খুজে পা্ওয়া হিরা বলেছেন: Click This Link

১২ ই জুন, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:১৪

আনিসুর রহমান এরশাদ বলেছেন: বন্ধুহীন বাংলাদেশ, বিদেশ ঘুরছেন দীপু মনি-শিরোনামে আপনার লেখাটি পড়েছি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.